ইসলামিক 'স্টুডেন্টদের' জন্য ১০ টি 'পরামর্শ'!
লিখেছেন লিখেছেন সত্য প্রিয় বাঙালী ২১ মার্চ, ২০১৪, ০৯:২৪:০৩ রাত
ইসলাম বিষয়ে যারা কথা বলতে চান, সেইসব ইসলামিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১০ টি টিপস।
০১।অল্প কয়েকবছর পড়াশোনাই করেই নিজেকে ‘পন্ডিত’ ভাববেন না। অন্যদের ওপর নিজের মতামত চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করবেননা। কিংবা আপনার সাথে কারো মতামত না মিললে তাকে ‘ভ্রান্ত পথযাত্রী’ বলে ঘোষনা দেওয়াও বোকামি। আর ‘আল্লাহই ভালো জানেন’ বলতে ভুলবেন না। “অতএব যদি তোমরা না জান তবে যারা স্মরণ রাখে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর”। (সূরা আম্বিয়া ৭)
০২। আদব ও সৌজন্যতা বোধ থাকতে হবে। মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করুন, সুন্দর ভাবে কথা বলুন। আপনি কাউকে ‘গালি’ দিলে সে ইসলাম সম্পর্কে ভূল মেসেজ পাবে। সহিষ্ণুতা অবলম্বন করুন। মনে রাখবেন, “মুসলিম ঐ ব্যক্তি যার কোন কথা ও কাজের দ্বারা অন্য মুসলিমের কষ্ট না ঘটে.........” (সহীহ বুখারী)। ভদ্র ‘ভাষা’ ব্যবহার করুন। “ আর তারা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের পূজা করে তোমরা তাদেরকে গালি দিওনা, কেননা তাহলে তারা সীমালঙ্ঘন করে অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহকে গালি দেবে.........” (সূরা আল আন’আম ১০৮)।
০৩। শুধুমাত্র শিক্ষাই কাউকে পাপমুক্ত করেনা। কেউ কেউ মনে করে শুধুমাত্র ইসলামী শিক্ষা তাকে পাপ থেকে দূরে রাখবে। “আল্লাহর কাছে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ যে তোমরা এমন সব কথা বলে বেড়াবে- যা তোমরা করবে না!” (সূরা ছফ ০৩)। আসলে যারা ইসলামী শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, তাদেরকে শয়তান আরো বেশী পরিমাণে কু-মন্ত্রণা দেয়। তাই ‘শিখুন’ এবং ‘পালন’ করুন।
০৪। লোকজন আপনাকে বিচার করবে। যখনই কেউ ইসলাম সম্পর্কে কথা বলবে, কিংবা পড়াশোনা করবে। তখনই লোকজন তাদের ভূল ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তাদের পোশাক-চাল-চলন নিয়ে কথা বলবে। এতে ভেঙ্গে পড়ার কিছু নেই। আপনি আপনার কাজ করুন। “(হে নবী, এদের) তুমি বলো, তোমরা (ভালো) কাজ করো.........(৯,১০৫)।
০৫। আপনি আপনার ‘বিশ্বাসের’ প্রতিনিধিত্ব করছেন। লোকজন আপনাকে দিয়ে ‘ইসলাম’ কে বিচার করবে। তাই, এমন কাজ করবেননা যা তাদের মধ্যে ‘ভূল’ কনসেপ্ট তৈরী করে।
০৬। আপনাকে পরীক্ষা করা হবে। কেউ যদি মনে করে, তিনি ইসলামের জন্য কথা বার্তা বলেন কিংবা ইসলামিক অনুশাসন মেনে চলেন বলে আল্লাহ তাঁর জীবন সহজ করে দিবে। এই কনসেপ্ট ভূল। বরং ইতিহাস বলে, সত্যিকার মুসলিমদের জীবন হয় চ্যালেঞ্জিং। “আমি তোমাদের পরীক্ষা করে থাকি মন্দ ও ভালো দিয়ে ...............” (২১; ৩৫)
০৭। ইসলামিক শিক্ষা ‘শেষ’ মনে করা উচিত না। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সর্বদা বলুন, “রাব্বি যিদনী ইলমান” (হে আমার মালিক! আমার জ্ঞান বৃ্দ্ধি করে দিন) –সূরা ত্বা হা ১১৪
০৮। আপনি সবাইকে পরিবর্তন করতে পারবেননা। অনেক লোকজন আপনার বিরুদ্ধে বলবে, আপনাকে ‘গালাগালি’ করবে। আপনাকে ‘নাস্তিক’ উপাধি দিবে কিংবা ‘ভ্রান্ত’ উপাধি দিবে। তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ‘হেদায়াত’ প্রার্থনা করুন। আপনার কাজ হচ্ছে পৌঁছে দেয়া।
০৯। আপনি ভূল করবেন, এটিই স্বাভাবিক। শয়তান আপনাকে উতসাহিত করবে। পথ হারাবেননা। আল্লাহর কাছে ‘ক্ষমা’ প্রার্থনা করুন। মনে রাখবেন, ‘ভূল’ আদম আঃ এবং ইবলিশ উভয়ই করেছিল। পার্থক্য এটাই আদম আঃ অনুতপ্ত হয়েছে, ফিরে এসেছে, বলেছে, “রাব্বানা যলামনা আনফুছানা অইল্লাম তাগফিরলানা অতারহামনা লানাকূনান্না মিনাল খাছিরীন” (হে আমাদের রব! আমরা আমাদের ঊপর জুলুম করেছি, যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব” (সূরা আল আ’রাফ-২৩) কিন্তু ইবলিশ অহংকার করেছে।
১০। আপনার জন্য অনেক বড় পুরষ্কার অপেক্ষা করছে। আপনি হয়তো জানেননা। আল্লাহর উপর ভরসা করুন। মুমিনদের তো শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর ই ভরসা করা উচিত। “তাঁর চেয়ে উত্তম কথা আর কোন ব্যক্তির হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহ তা’আলার দিকে ডাকে এবং সে (নিজেও) নেক কাজ করে এবং বলে, আমিতো মুসলমানদেরই একজন” (৪১;৩৩)।
সবশেষ কথা, “তুমি তোমার মালিকের পথে (মানুষকে) প্রজ্ঞা ও সদুপদেশ দ্বারা আহ্বান করো, (কখনো তর্কে যেতে হলে) তুমি এমন এক পদ্ধতিতে যুক্তি তর্ক করো যা সবচাইতে উতকৃ্ষ্ট পন্থা......” (সূরা আন-নাহল ১২৫)
বিষয়: বিবিধ
১৩০১ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Thanks
মন্তব্য করতে লগইন করুন