কি লাভ হল আমাদের মতো সাধারন জনগণদের? সংশোধিত ফলাফল বাঙ্গালিকে হাইকোর্ট দেখানোর মতোই নয়কি? এতে আন্দোলন আরও চাঙ্গা হবে বলে অনেকেই মনে করছে।
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তি পেতে চাই এই অসহায়ত্ব থেকে ১৪ জুলাই, ২০১৩, ১১:২৪:০৫ রাত
সংশোধিত ফলাফল বাঙ্গালিকে হাইকোর্ট দেখানোর মত। এবারো কোয়ালিফাইং নম্বর মেধা ও কোটার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরা হয়েছে, যা কোনো অসভ্য দেশেও নেই। কোটায় উত্তীর্ণ ৬৬১৬ জনকেই রাখা হয়েছে। কেবল সাধারনের ক্ষেত্রে ৫৪১৭ স্থলে ৩৯৬৩৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। অবশ্য এতে আন্দোলন আরও চাঙ্গা হবে। কারন দেশ ও নিজেদের স্বার্থেই উত্তীর্ণ ও অনাগত তরুণ প্রজন্ম তাদের সাংবিধানিক অধিকার করেই ছাড়বে।
কোনো অসহায় বা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে প্রয়োজনে বসিয়ে বেতন দেয়া হোক কিংবা পরিবারপ্রতি মাসে ১ লাখ করে টাকা দেয়া হোক তাতে কোনো আপত্তি নেই কিন্তু প্রথম শ্রেণীর চাকরি তথা জাতির পরিচালকের আসনে কোটার নামে ৫৬% অযোগ্য নিয়োগ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নিয়োগ বন্ধ করে দেশকে প্রতিবন্ধী হওয়া থেকে বাঁচাতে তারুণ্যে অভিযান চলবেই।
কোটার নামে বৈষম্য পবিত্র সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধ কি বৈষম্য বাড়ানোর জন্য হয়েছিল?
এদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়ে বিশেষ বিবেচনায় একবার কোটার মাধ্যমে সুযোগ তো দেওয়াই হয়েছে, যোগ্যতায় মাধ্যমে টিকতে না পারলে আবার সুযোগ কেন??
কোটার মাধ্যমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়া, ডাকাত দিয়ে রোগীর অপারেশনের নামান্তর মাত্র।
সমাজের যেকোনো শ্রেণীর মানুষকে বিশেষ সুযোগ দেয়ার প্রয়োজনটা যেকোনো সমাজের জন্য অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেটা কখনো ৫০ শতাংশ বা ৫৫ শতাংশ হতে পারে না। আর প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তো অবশ্যই নয়। কারণ গাড়ির চালকের আসনে কোনো হেলপারকে বসানোর পরিণতি কী হতে পারে তা আমাদের প্রশাসনের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। কোনো সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীকে যেখানে সহযোগিতা করার অনেক উপায় রয়েছে সেখানে অসংখ্য মেধাবীকে বাদ রেখে কম মেধাবীদের সুযোগ ড্রাইভার রেখে হেলপারকে চালকের আসনে বসানোর নামান্তর মাত্র।
আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিশেষ সুবিধা পাওয়ার আশায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও কিছু স্বঘোষিত সুশীলরা সম্পূর্ণ আবেগ ও অযৌক্তিক কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না কমানোর দাবি করছেন। পাশাপাশি বর্তমানে আমাদের দেশের মেয়েরাও কোটা নয় বরং তাদের যোগ্যতার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। কোনো কোটা ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী নারী। প্রায় ২৬.২ শতাংশ নারী তাদের যোগ্যতায় শিক্ষক হতে পেরেছেন। সেখানে ১০ শতাংশ কোটা রাখা তাদের জন্য অমর্যাদাকর ও অপ্রয়োজনীয়।
এর পরও কোনো বিশেষ শ্রেণীকে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণীর চাকরির কিংবা আর্থিক সুবিধা দেয়া যেতে পারে। কিন্তু জাতির নীতিনির্ধারক ও দাতারা কোন যুক্তিতে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনে ৫০ শতাংশ কোটার সুপারিশ করেন তা মোটেই বোধগম্য নয়। এর অর্থ কি তারা আমাদের সিভিল সার্ভিসকে উন্নত দেশের তুলনায় অদক্ষ ও অযোগ্য রাখতে চায়? দেশের মেধাবীরা কোটার ব্যাপারে পিএসসি’র বর্তমান সুপারিশে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছে।
পরিশেষে বলতে চাই একবিংশ শতাব্দীর অগ্রসরমান বিশ্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে অযৌক্তিক আবেগ পরিহার করে বাস্তবমুখী হওয়া দরকার।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন