আমাদের দুই শ্রেষ্ঠ নেতা ও আদর্শ। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মৃত্যুশয্যায় এবং ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন এখন নির্যাতিত হচ্ছে অজ্ঞাত স্থানে!!! এ কোন আজব দুনিয়ায় আমাদের বসবাস??????

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তি পেতে চাই এই অসহায়ত্ব থেকে ১৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:২৭:৫৫ রাত



আবারো অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রাখা হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলাওয়ার হোসেনকে। রিমান্ডে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সে সম্পর্কে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কেউ তথ্য দিতে পারেননি। যেসব থানার মামলায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ওই সব থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ বলেছে তাদের থানায় শিবির সভাপতি নেই। এর আগে ১৪ দিন রিমান্ড শেষে গত ১৬ এপ্রিল শিবির সভাপতিকে আরো ১৮ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। প্রথম দফায় রিমান্ডে থাকাকালীনও শিবির সভাপতিকে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়।

গত ৩১ মার্চ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতিকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পর দিন তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে থাকাকালীন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি কোথায়, কিভাবে ছিলেন তা জানা যায়নি। এ সময় ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় শিবির সভাপতিকে রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন তার বৃদ্ধ মা তৈয়বা খাতুন। তিনিও বলেছেন, তার ছেলেকে অজ্ঞাত স্থানে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি তার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় ফেরত চান। গত ১৬ এপ্রিল দেলাওয়ারকে যখন আদালতে হাজির করা হয় তখন তিনি হাঁটতে পারছিলেন না। পুলিশ ধরে ধরে তাকে আদালতে উঠায়। ওই দিন তার আইনজীবী মো: আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, দেলাওয়ারকে পুলিশ নির্যাতন চালিয়েছে। ওই দিন তিনি বলেন, চরম নির্যাতনের ফলে দেলাওয়ার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হাত-পা ও চোখ বেঁধে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাকে যাতে পুনরায় রিমান্ডে দেয়া না হয় সে জন্য আইনজীবীদের মাধ্যমে আবেদনও করা হয়েছিল। আদালত ওই দিন ছয়টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে দেলাওয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এর মধ্যে মতিঝিল থানার একটি মামলায় পাঁচ দিন, রামপুরা থানার একটি মামলায় তিন দিন, তেজগাঁও থানার একটি মামলায় তিন দিন, কলাবাগান থানার পৃথক দুটি মামলায় পাঁচ দিন এবং হাজারীবাগ থানার একটি মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এই ১৮ দিনের রিমান্ড চলাকালীন শিবির সভাপতি কোথায় আছেন তা কেউ বলতে পারছে না। যেসব থানার মামলায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ওই সব থানার সাথে যোগাযোগ করা হলে থানার ডিউটি অফিসাররা বলেন, তাদের থানায় নেই। এক থানা থেকে বলা হয় অপর কোনো থানায় রাখার কথা। এভাবে সব থানা থেকেই রিমান্ডে শিবির সভাপতির তাদের থানায় অবস্থানের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। ডিবির সাথে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে ওই সব থানার সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

সূত্র জানায়, আবারো প্রশ্ন জেগেছে তাহলে শিবির সভাপতি এখন কোথায় আছেন? কোথায় রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে? যে দিন ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয় সে দিনও দেলাওয়ারের আইনজীবীরা আবারো তার ওপর নির্যাতন চলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিবির সভাপতির সাথে আগেরবার রিমান্ডের সময় দেখা করার অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, নিয়ম রয়েছে একটি মামলায় রিমান্ড শেষ হলে আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। সেই নিয়ম পুলিশ মানেনি। দু’টি মামলায় ১৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে তারা টানা ১৪ দিনেরও বেশি নিজেদের হেফাজতে রাখে শিবির সভাপতিকে। ৩১ মার্চ শিবির সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়। ১ এপ্রিল আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই দিন তার ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। রিমান্ড শেষে ১৬ এপ্রিল তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আইনজীবীরা বলেছেন, শিবির সভাপতি ইললিগ্যাল ডিটেনশন ভোগ করেছেন। আইনজীবীরা বলেন, এজাহারে নাম নেই এমন তিনটি মামলায় শিবির সভাপতিকে ১৬ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। প্রথম দফায় মোহাম্মদপুর থানার যে দু’টি মামলায় শিবির সভাপতিকে রিমান্ডে নেয়া হয়, ওই মামলা দু’টির এজাহারে তার নাম নেই। পরের দফায় হাজারীবাগ থানার যে মামলায় তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ওই মামলায়ও তার নাম নেই।

একইভাবে,

ঈমান ও দেশ রক্ষার আন্দোলন-EMAN O DESH ROKKHAR ANDOLON

অনশনের ৪র্থ দিনে মাহমুদুর রহমানের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি: বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে ভতি : তিন দাবিতে অনড়, দাবি না মানলে আমৃত্যু অনশন চলবে

মাহাবুবুর রহমান

আমার দেশ

অনশনের চতুর্থ দিনে আমার দেশ-এর মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। গতকাল বিকালে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। চিকিত্সকরা তার জীবনের ঝুঁকির কথা জানিয়ে অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করলেও সন্ধ্যার পরে আরও অবনতি ঘটে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চিকিত্সকরা তাকে সিসিইউতে ভর্তির সুপারিশ হয়েছে। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।

সাত দিনের রিমান্ডে বর্বর নির্যাতন ও চার দিনের অনশনে মাহমুদুর রহমানের ব্লাডপ্রেসার স্বাভাবিকের চেয়ে মারাত্মকভাবে কমে গেছে। তিনি ইসকেমিক হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছেন। হৃদস্পন্দনের হার অত্যন্ত কম। এ পরিস্থিতিতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে বলে দাবি করেছেন মাহমুদুর রহমানের আইনজীবীরা।

সূত্র জানিয়েছে, শারীরিক নির্যাতন ও অনশনের কারণে মাহমুদুর রহমান এ পর্যন্ত ছয়টি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে তার মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে। রোগগুলো হলো আনস্টেবল অ্যাঞ্জেইনা, ব্রাডিকার্ডিয়া (হার্ট রেট কমে গেছে), ইলেকটোলাইট ইমব্যালেন্স (সোডিয়াম বেড়ে গেছে, পটাশিয়াম কমে গেছে), সিভিয়ার লো ব্যাকপেইন, অলিগো ইউরিয়া (প্রস্রাব না হওয়া), ইউরোমিয়া (ব্লাডে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে)।

মাহমুদুর রহমানের হার্টবিট ৪৮-এ নেমে গেছে। একটি কিডনি যথাযথভাবে কাজ করছে না। প্রেসার ৪৯ থেকে ৯০-এ নেমে গেছে। অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। দ্রুত অনশন ভাঙাতে না পারলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এসব সত্ত্বেও তিন দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন জননন্দিত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন বলে কারাকর্তৃপক্ষ ও চিকিত্সকদের জানিয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হলে গতকাল কারাকর্তৃপক্ষ তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানেও চিকিত্সকরা খাবার খাওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তার মা, আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম, সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের নামে দায়ের করা উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ছাপাখানা খুলে দেয়া ও সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করে আমার দেশ প্রকাশের সুযোগ করে দেয়া এবং প্রেসের গ্রেফতার করা ১৯ কর্মচারীকে মুক্তি দেয়ার পরই তিনি অনশন ভাঙবেন। দাবির বাস্তবায়ন না হলে আমৃত্যু তিনি অনশন করবেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমার দেশ-এর সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে যোগাযোগ করলে তিনি ২১ এপ্রিলের আগে ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান। এর পরে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমানের শারীরিক অবস্থার এমন চরম অবনতিতে তার জীবন নিয়ে আশঙ্কা করেছেন আমার দেশ পরিবার। গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তার সহধর্মিণী ফিরোজা মাহমুদ দেখা করতে পারেননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মাহমুদুর রহমানের শারীরিক চরম অবনতি হয়েছে বলেই তাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। মাহমুদুর রহমানের কিছু হলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায় নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে অনশনের ব্যাখ্যায় মাহমুদুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, অনশনের মাধ্যমে শরীরকে কষ্ট দেয়া ইসলামে বৈধ নয়। কিন্তু সরকারের জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি না খেয়ে থাকছেন। তার মতে, পবিত্র কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী জালিম শাসকের বিরুদ্ধে মুসলমানদের প্রতিবাদ করতে হবে। শক্তি থাকলে হাত দিয়ে, তা না পারলে মুখ দিয়ে এবং তা-ও না পারলে অন্তর থেকে ঘৃণা করতে হবে। মাহমুদুর রহমান বলেন, যেহেতু আমি বন্দি এবং রিমান্ডে নির্যাতনে রয়েছি, তাই আমার প্রতিবাদের সর্বোচ্চ শক্তি হিসেবে অনশন করছি। তার অক্ষমতার পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ এ ত্যাগের চেষ্টাকে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারওয়ানবাজারে অবস্থিত পত্রিকা কার্যালয় থেকে কমান্ডো স্টাইলের এক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতির স্কাইপ সংলাপ প্রকাশের মামলায় প্রথম সাত দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি পুলিশ। মিন্টোরোডের ডিবি কার্যালয়ে তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। ১৭ এপ্রিল আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ এবং চিকিত্সার নির্দেশ দেয়।

এদিকে ১১ এপ্রিল রাতেই তেজগাঁওয়ে অবস্থিত আমার দেশ-এর ছাপাখানায় তল্লাশি শেষে অধিকতর তদন্তের অজুহাতে তালা ঝুলিয়ে দেয় পুলিশ।

পরে ওই রাতে বিকল্প ব্যবস্থায় বিধি অনুযায়ী জেলা প্রশাসনকে অবহিত করে আল-ফালাহ প্রিন্টিং প্রেসে আমার দেশ পত্রিকা ছাপানো হয়। পুলিশ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আল-ফালাহ প্রেসে অভিযান চালিয়ে প্রকাশিত আমার দেশ পত্রিকা জব্দ এবং ১৯ কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মা ও আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম এবং সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের নামে মামলা দায়ের করে। এ মামলায় তারা উচ্চ আদালতে ছয় সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন।

এমতাবস্থায় আমাদের করনীয় কি হতে পারে সেটা আমাদের সবার কাছেই এখনো অজানা। তবে এভাবে আমাদের আরও কতদিন বসে থাকতে হবে? আমাদের আন্দলন তীব্র থেকে তীব্রতর কবে হবে?? এভাবে আর কতকাল নির্যাতিত হবো আমরা??

বিষয়: বিবিধ

১২৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File