নারীর দৌড় বাড়ীর দরজা পর্যন্ত!
লিখেছেন লিখেছেন ভালোবাসার পচা গন্ধ ০১ মে, ২০১৩, ০৩:৪৮:৫৪ দুপুর
বিশ্ব দরবারে আরেকটি নতুন ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। ভাবছেন চার বছর পর ক্রিকেট দল টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ জিতেছে সেটাই ইতিহাস? মোটেও না। বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, সংষদ উপনেতা এবং স্পিকার ‘নারী’। পৃথিবীতে আর কোন দেশ কতো বছর পর এই বিরল রেকর্ড ভাঙবে সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, ড. শিরিন শারমিনকে স্পিকার করার ব্যাপারে আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ সদস্যেরই নাকি দ্বিমত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু চেয়েছেন সুতরাং সংসদ সদস্যদের অপছন্দের কোন মূল্যই নেই! আবার সরকারের মন্ত্রীসভার সবচেয়ে বেশি আলোচিত ব্যক্তি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছেন, “একজন নারীকে স্পিকার বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গালে চপেটাঘাত করেছেন।”
দেশের প্রগতিশীল পরিচয়ধারী নারীরা সবসময় বলে থাকেন পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত এবং নির্যাতিত। কিন্তু যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদের উপ-নেতা এবং স্পিকার নারী, úররাস্ট্রমন্ত্রী, স্বরাস্ট্রমন্ত্রী নারী, কৃষিমন্ত্রী নারী সেই সমাজকে পুরুষ শাসিত বলাটা কতোটা যুক্তিযুক্ত? আসলেই কি বাংলাদেশের সমাজ পুরুষ শাসিত? এটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারতে। তবে, রূঢ় বাস্তবতা হলো- দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাসহ গুরুত্বপূর্ন জায়গায় নারীদের প্রাধান্য বা নেতৃত্ব থাকলেও সেটা কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ। একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, বিরোধী দলের নেতা হতে পারেন, স্পিকার বাং সংসদের উপনেতা হতে পারলেও নিজের ঘরে তিনি কারো না কারো বউ। সারাদেশের মানুষ তার অধীনে, তার হুকুমে চলতে বাধ্য হলেও বাড়ীর চৌকাঠ পার হলেই তিনি আর প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বা বিরোধী দলের নেতা নন। তখন তিনি একজন পুরুষের বউ। কথায় যেমন বলে, “মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত” ঠিক তেমনি ‘নারীদের দৌড় বাড়ীর চৌকাঠ পর্যন্ত।’
আল্লাহ নারীদের নেতা হিসেবে নির্বাচন করতে নিষেধ করেছেন। তাদের নেতৃত্বকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমাদের নবী করিম (সা.) বলছেন, “মেয়েদের জ্ঞান পুরুষের অর্ধেক।” সুতরাং নারীদের দিয়ে অনেক কিছুই সম্ভব হলেও রাস্ট্র পরিচালনার মত গুরুত্বপূর্ন কাজ তাদের দিয়ে সঠিকভাবে পরিচালনা মোটেও সম্ভব নয়। বাংলাদেশ গত প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দু’জন মহিলার শাসন দেখে আসছে। তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করেছেন এবং করছেন তা কারো অজানা নয়। বর্তমান সরকারের আমলে চার জন নারীকে রাস্ট্রের গুরুত্বপূর্ন পদে বসিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেও তাদের পারফমেন্স মোটেও খূশি হওয়ার নয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না এটা তাঁর দলের লোকেরা স্বীকার করে। বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে সঠিকভাবে পালনে ব্যর্ধ হয়েছেন সাহারা খাতুন। পররাস্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে অযোগ্য প্রমাণ করেছেন ডা. দিপু মণি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে মতিয়া চৌধূরি জাতিকে খুব বেশি কিছু দিতে পেরেছেন তাও নয়। নবনির্বাচিত স্পিকার ড. শিরিন শারমিন এর আগে একটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে পেরেছেন বলে কারো জানা নেই। সুতরাং নতুন দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সক্ষম হবেন এ বিশ্বাস নেই অনেকেরই। অতএব, রাস্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে জাতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্তম্ভ গুলোতে নারীদের বসিয়ে যতই বিশ্ব রেকর্ড গড়ি না কেন উপযুক্ত লোককে যথাযথ স্থানে বসাতে না পারলে এই দেশের উন্নয়ন কোন দিনই সম্ভব হবেনা।
বিষয়: বিবিধ
১৫৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন