আমি এখনই ব্রেক আপ নিতে চাচ্ছি, জাস্ট লিভ মি এলোন
লিখেছেন লিখেছেন শাহজাদা ইয়ামেন ১৮ জুন, ২০১৪, ০৯:১১:০৬ রাত
মেঘ আমি এখানেই ব্রেকআপ নিতে চাচ্ছি! জাস্ট লিভ মি এলোন,,,,
:-ব্রেকআপ কেন নিবে? আমাদের তো ব্রেকআপ নেয়ার মত তেমন কিছুই হয় নি নিলা!
:তোমার সাথে আমি আর এক মুহুর্ত ও থাকতে পারবো না। I said just leave me
:-তাঁড়িয়ে দিচ্ছ? বাঁধা দিব না, তবে কারণ টা যদি বলতে
:নিজের চেহারা একবার আয়নায় দেখেছ? তোমার মত হাবার সাথে আমি প্রেম করবো কিভাবে ভাবতে পারলে রাবিস?
:-তবে আমিতো আগে থেকেই এমন ছিলাম তখন তো কিছু বলোনি? আর তুমি নিজে থেকেই আমার সাথে প্রেম করেছ আমি তোমাকে তো ডেকে আনি নি।
:আর শুন তোমার সাথে ভার্চুয়াল লাইফে চলে বাস্তবে না। আর রেদার আমাকে ডিস্টার্ব করবে না বাই।
:-যদি তাতেই খুশি হও তবে তাই হবে। ভাল থেক। আর হ্যাঁ আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি, বাসবো জানিয়ে গেলাম।
:হাহাহা বসে বসে দিবাস্বপ্ন বন্ধ কর।
চশমার লেন্সের ফাঁক দিয়ে দূর নিলিমা রেখার সাথে একটি মেয়ের অবয়ব মিশে যাচ্ছে আর অশ্রুশিক্ত নয়নে তা দেখতেছে মেঘ। অভিকর্ষের টানে চোখের নোনতা পানি গড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে । সম্ভবত এটাই তাদের শেষ দেখা।
বন্ধুদের হাজার বুঝানি ব্যর্থ হয় তাও তারা থেমে নেই তাকে বুঝাচ্ছে লাইফে হাজারো মেয়ে আসবে যাবে। ঘাড়তেড়ার মত আমিও জিদ করে বসে আছি মুখে সুপার গ্লু এর আঠা দেয়া যাতে কারও কথার উত্তর না দেই। সব রাগ দেখাচ্ছি বন্ধুদের যদিও দেখানোর কথা নিলাকে যার সাথে নাকি ভার্চুয়াল লাইফে মানায়।
আর নিলাতো দূর নিলিমার মেঘের মত ধোয়াছোঁয়ার বাহিরে আছে । তাকে শুধুই দেখা যাচ্ছে ছোঁয়া যায়না আগে অবশ্য যেত।
১৫ দিন ধরে গ্রামে আছি। ছেড়ে দিলাম আধুনিকতা। দেশতো আমার জন্য অনেক করেছে এবার দেশের জন্য কিছু করি। কিছু করতে হবে গ্রামের জন্য, কি করা যায় ভাবছি। যাতে আমিও চলতে পারি গ্রাম ও এগুতে পারে। হ্যাঁ অবশেষে গ্রামের চেয়ারম্যান নিজেই চলে এলো আমার কাছে।
:-বাবা তুমি তো এখন থেকে গ্রামেই থাকবা তাইনা?
:সহজ সরল লোকটির চোখের ভিতরের কালো মনিটাতে কি যেন জ্বলছে আর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে আমার উত্তর এর। তবে উনাকে নিরাশ না করে হ্যাঁ সূচক সম্মতি দিলাম।
:-তাহলে বাবা তোমার কাছে একটি আবদার আছে। কথা দাও রাখবা।
:কি আবদার আগে বলেন তো চেয়ারম্যান কাকা।
:-না আগে কথা দিতে হবে বাবা তাহলে বলবো।
:আচ্ছা চাচা কথা দিলাম এবার বলেন?
:-বাবা গ্রামে তো কোন স্কুল নাই। তা তো তুমি ভাল করেই জান। যদি তুমি পড়াও তাহলে আমরা সবাই মিলে স্কুল ঘর তৈরি করে দিব।
:চাচা আমাকে আজ রাত সময় দেন আমি ভাবিই?
:-সমস্যা নাই তোমার থাকা খাওয়া বেতন সব ফ্রি।
:কাল আপনাকে আমার মতামত জানাব।
স্কুল হলো সব হলো। শিক্ষার্থী ও হলো কিন্ত মনের ঘরের আগুন যে নিভেনা। নিলা কি আগুন লাগালে তুমি। হাহাহাহাহা তোমার টাইম পাস আর আমার সর্বনাশ।
রাতের বেলা খোলা আকাশের নিচে বসে থাকাটা কতটা মজার তা বলতে পারবো না তবে আমার কোন মজা লাগছেনা। কেউ একজন সাথে থাকলে ভালই হতো সম্ভবত নিলা । তবে আমার এই ক্ষুদ্র চাওয়া পাওয়া তে তার কিছুই আশে যায় না।
নিলা বসলো আমার পাসে পছন্দের নীল শাড়িটা পড়ে। কত কথা তার সাথে বললাম। কেন এলে কল্পনাতে বাস্তবেই বা কি দোষ করেছি আমি। কেন এ খেলা খেললে আমার সাথে।
ছোট্ট করে চিমটি কেটে দিল আমার হাতে। কল্পনা নয় এবার মনে হচ্ছে স্বপ্ন কারণ স্বপ্নও বাস্তবের মত চিমটি কাটলে ব্যথা পায়। নিলা একটা কথা বলি
:-হুম বলো
:জানো তোমাকে বাস্তবে অনেক ভালবাসি কিন্তু তুমিতো তা বুঝলেনা। প্লিজ তুমি যেওনা আমার এই স্বপ্নের ভিতরে থাক।
:-মেঘ আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না।
:নিলা কেন স্বপ্নে এলে? বাস্তবে আমি কি দোষ করেছি?
:-পাগল একটা
:হুম আমি তোমার খুব পাগল কিন্ত তা তো তুমি বুঝলেনা।
:-মেঘ তুমি ভাবতেছ এটা স্বপ্ন কিন্ত তোমার ভাবনা ভুল।
খুব জোরে একটি আত্ন চিতকার দিয়ে জেগে উঠলাম। সামনে নীল শাড়ী পড়া একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর মিটিমিটি হাসছে।
:-স্বপ্নটি বুঝি আমাকে নিয়েই দেখলে? ভাগ্যিস তুমি ঘুমের ভিতরে কথা বল নইলে তো জানতাম ও না তুমি আমাকে এতটা মিস কর।
:তুমি আমার গ্রামের বাড়িতে কিভাবে এলে আর কেন এলে?
:-জিনা এইটা আমার শ্বশুর বাড়ি আর আমি আমার স্বামীর সাথে দেখা করতে এসেছি তোমার কোন সমস্যা আছে?
:না আমার সমস্যা নেই। তবে তোমার স্বামীটি কে?
:-বিছানায় বসা চশমা পরা হাদারাম টা।
:সরি আমার সাথে ভার্চুয়াল লাইফেই মানায় তাই যেতে পার।
:-ওকে প্রথম বার তো বিশ খেয়েও বেঁচে গেছি এবার আর কেউ বাঁচাতে পারবেনা।
চলে যাচ্ছে নিলা, বাহির করতেছে বিষের বোতল। আলতো করে তার হাতটা চেপে ধরে কেড়ে নিলাম অই বোতল।
:-কেন করছো এসব?
:তুমি আমাকে একটুও ভালবাস না।
:-আমি বাসি তুমি বাস না নিলা। আর বাসবেই বা কেন আমাকে তো ভার্চুয়াল লাইফে মানায়।
:সেদিন এর সবটাই ছিল সাজানো নাটক তোমার ভালবাসার পরীক্ষা নিয়েছিলাম আর তুমি কিনা আমাকে ফেলেই চলে এসেছ। জানো আমি কত বার সুইসাইড করতে চেয়েছিলাম তোমাকে কোথাও না পেয়ে। সবার কড়া পাহারায় ছিলাম। আর শেষে সবাই পরাজিত হোল। তীব্র জেদী বাবাও হার মানলো আর বহু কস্টে তোমার ঠিকানা নিলাম। এর পরেও ফিরিয়ে দিবে?
চোখের চশমাটা ভিজে গেছে চোখের বৈশাখী বৃষ্টি তে। আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না নীল শাড়ি পড়া মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরলাম আর সেও তার নরম হাতটা দিয়ে আকড়ে ধরলো তার হাদারামকে।
জাকির আমানত
বিষয়: সাহিত্য
১১৬১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ '':-জিনা এইটা আমার শ্বশুর বাড়ি আর আমি আমার স্বামীর সাথে দেখা করতে এসেছি তোমার কোন সমস্যা আছে?''
# পুরাই ফাঁপড় বাজি
মন্তব্য করতে লগইন করুন