ব্লগের রমজান আলোচনার লেখা: পড়তে পারা না পারার কৈফিয়ত
লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ২০ জুন, ২০১৬, ০৬:২২:৫৮ সকাল
প্রিয় ব্লগার দ্যা স্লেভ কঠিন কিন্তু একটা সঠিক মন্তব্য করেছেন ব্লগের পাঠকদের রোজা নিয়ে কিছু লেখায় যথাযথ সাড়া না দেয়ায় | এই অভিযোগ অবশ্য অন্য সময়ের জন্যও সত্যি | মাঝে মাঝেই ব্লগের অনেক ভালো লেখাও না পড়া বা খুবই কম পড়া হয়ে থাকে | যাহোক, আমি নিজে এই অভিযোগটা মেনে নিয়েছি যে সময়মত সব লেখায় মন্তব্য করা হয়নি আমার | আসলে অনেক লেখা তখন পর্যন্ত পড়াও হয়নি | তারপর ধীরে ধীরে কতগুলো লেখা অবশ্য পড়া হলো | রোজায় এবার রুটিন বেশ খানিকটা উলট পালট হয়েছে | আসলে রাত এত ছোটো যে তারাবি পরে বাসায় ফিরে আসতে আসতেই সরে বারোটা বা তার বেশি বেজে যাচ্ছে || রাতে খুব বেশি কিছু করার সুযোগ থাকছে না | দিনটা বড়ই কিন্তু দিনেও নানান ব্যস্ততার কারণে খুব যে পড়া হচ্ছে তাও না |
দ্যা স্লেভের লেখাটা পড়ার পর থেকে আমার অন্য আরেকটা ভাবনাও মাথায় এলো | কেন লেখাগুলো পড়তে দেরী হচ্ছে ? কিছু কিছু খুব সুন্দর লেখা, খুব সুন্দর শিরোনাম তবুও পড়তে পারছি না | কিন্তু কেন ? ভাবতে গিয়ে দেখলাম রোজা নিয়ে লেখাগুলোতে কিছুটা রিপিটেশন হয়ে যাচ্ছে | তিন বছর আগে ২০১৪ সাল থেকে এই রমজান আলোচনাটা মনে হয় ব্লগে শুরু হয়েছে | যতদুর মনে হয় ব্লগার ভিশুর উদ্যোগে এটা ২০১৪ সালে প্রথম শুরু হয়ে ছিল | পুরনো কিছু লেখা দেখলাম ২০১৪ সালের | সেই একই হাদিস ঘুরে ফিরে আসছে এবারের প্রতিটা লেখাতেও | কোনো নতুনত্ব নেই আলোচনায় | রোজা নিয়ে কিছু হাদিস বারবার প্রতিটা লেখাতেই চলে আসছে | কিছু কিছু লেখাকে রোজার হাদিস সংকলনের মত মনে হচ্ছে | অনেক হাদিস একটার পর একটা উল্লেখ করা হচ্ছে কিন্তু খুব ব্যাখ্যা করা হচ্ছে না বা একেবারেই কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই |
এটা অবশ্য আমাদর ব্লগেই হচ্ছে তা নয় | রোজা নিয়ে আমাদের দেশের নিউজ পেপারগুলোর, কিছু বাংলা ইসলামিক ওয়েব সাইটের লেখা পড়ে দেখলাম সেখানেও একই অবস্থা | কিছু হাদিস মনে হয় সব লেখাতেই আছে | এই হাদিসগুলো যে সবই অর্থের দিক থেকে একেবারে জলবত তরলং তা কিন্তু নয় | এগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাখ্যার যথেষ্ঠ অবকাশ আছে | কিন্তু সেই ব্যাখ্যাগুলো কোনো লেখাতেই আর পাওয়া যাচ্ছে না | কিছু কিছু লেখার লেখকদের নাম আগে মাওলানা, শায়খ ইত্যাদি শ্রদ্ধা জাগানিয়া টাইটেল | কিন্তু তারা রোজা নিয়ে লেখাগুলোতে হাদীসগুলোকে খুবই সরলীকরণ করে ফেলেছেন |কিছু ক্ষেত্রে রোজার মহত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে এমন সব কথা বলছেন যে অনেক ক্ষেত্রেই তা কোরান এবং অন্যান্য হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে পরছে |
যেমন বিডি নিউজ ২৪.কম -এর ইসলাম বিষয়ক পাতায় মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ “রমজান মাসে সবকিছুতেই শুধু বরকত আর বরকত” শিরোনামে এক নিবন্ধে লিখেছেন, “রমজান মাস এমন একটি মহান মাস; যার সম্মানে জান্নাতের সব দরোজা খুলে দেওয়া হয়। একটি দরজাও বন্ধ থাকে না। জাহান্নামের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি দরজাও খোলা থাকে না। সুতরাং কেউ যদি এ মাহে রমজানে মারা যায় তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত তার কবরে কোনো আজাব হবে না। যেহেতু সে এমন সময় মারা গেছে, যখন জাহান্নামের সব দরোজা বন্ধ "। কি সাংঘাতিক কথা ! এই কথা বলে কি রোজায় মানুষকে নেক আমলের দিকে আহবান করা হলো না মানুষকে নেক আমলের প্রতি বিমুখ করা হলো ? রোজায় কি নন প্রাকটিসিং কোনো মুসলিম মারা যেতে পারে না ? পারে না কোনো মুনাফিক মারা যেতে ? কোনো এথিয়িস্ট কি রোজায় মারা যেতে পারে না ?রোজার মাসে কেউ মৃত্যু বরণ করলেই জান্নাত ! দোজখের দরজা বন্ধ বলে ! দোজখের দরজা কি আর খুলবে না ? যেখানে আল্লাহ কুরআন শরীফে শিরকের গুনাহ কখনো মাপ করবেন না বলেছেন (যার মানে শিরক করা অবস্থায় মারা গেলে নিশ্চিত জাহান্নাম) সেখানে এই রকম একটা মন্তব্য কোরান হাদিসের কোনো রেফারেন্স ছাড়া দেওয়া কতটা সঙ্গত তা আশাকরি পাঠকরাই বুঝবেন |
"উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু রামাদানে প্রতিদিন একবার কুরআন খতম করতেন। সালাফে সালেহীন নামাযে ও নামাযের বাইরে কুরআন খতম করতেন। রামাদানের কিয়ামুল লাইলে তাদের কেউ তিনদিনে, কেউ সাতদিনে এবং কেউ দশদিনে কুরআন খতম করতেন"। এই রকম একটা বক্তব্য রেফারেন্স ছাড়াই উল্লেখ করা হয়েছে বাংলা এক ইসলামিক ওয়েব সাইটে | ব্লগার আবু জান্নাত সেই তথ্যটা তার রোজা নিয়ে ব্লগের আয়োজনের একটি লেখায় উল্লেখ করেছেন | খুবই কনফিউজড হলাম এটা পড়তে গিয়ে | কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এক সপ্তাহের কম সময়ে কুরআন খতম করতে নিষেধ করেছেন | তাই একদিন বা তিনদিনে কোরান খতম করা রাসুলুল্লাহর (সাঃ) নির্দেশনার লঙ্ঘন | এছাড়া কুরআন শরীফেও তারাহুড়া না করে তেলাওয়াত করতে বলা হয়েছে (“লা-তুহাররিক বিহী লিসানাকা লিতা’জালা বিহী। ইন্না আ’লাইনা জামআ’হ ওয়া কোরআনহু” অর্থ-“আপনি তাড়াতাড়ি মুখস্থ করার উদ্দেশে ওষ্ঠদ্বয় নাড়াবেন না… ) | সাহাবীরা (রাঃ) কি কুরআনের নির্দেশ (একদিনে খতম করতে গেলে যা হওয়াই স্বাভাবিক ) বা রাসুলুল্লাহর (সাঃ) নির্দেশনা অমান্য করেছেন নাকি বেশি ফজিলতের জন্য শুধু রোজায় একদিনে বা তিন দিনে কোরান খতম করা যাবে বলে রাসুলুল্লাহর (সাঃ) বিশেষ কোনো নির্দেশনা আছে ? যদি থাকে তবে তার রেফারেন্সে দেয়া ছিল লেখকেরই দায়িত্ব | কিন্তু সেটা হয় নি |
আবু জান্নাত প্রবাসের আর বিশেষ করে রোজার ব্যস্ততার মধ্যেও অনুগ্রহ করে আমাকে সেই ওয়েব সাইটের লিঙ্কটা দিয়েছেন যাতে আমি নিজে সেই ওয়েব সাইটে গিয়ে তথ্যটা চেক করতে পারি | আমি গেলাম সেই ওয়েব সাইটে | মাশাল্লাহ খুবই সুন্দর বাংলা ইসলামিক ওয়েব সাইট| দুইজন ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ব্যক্তি লেখাটার সাথে জড়িত | লেখাটা লিখেছেন ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী আর সম্পাদনা করেছেন ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া | আমি উনাদের কাজের সাথে পরিচিত নই | তাই উনাদের সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না | কিন্তু যেখানে সহীহ বুখারী শরীফে বিখ্যাত সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) -এর বর্ণনায় পরিস্কার ভাবেই হাদিসে বলা আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)কে বললেন, "...তাহলে প্রতি সাত দিনে একবার খতম করো এবং এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে খতম করো না" (সহীহ বুখারী, ইসলমিক ফাউনডেশন, হদিস নং ৪৬৮৫) অথচ এই সহীহ হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয় যেমন একদিন বা তিনদিনে কুরআন শরিফ খতমের কথা আমাদের স্কলাররা কোন সুত্র ছাড়াই বলছেন । রোজার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকি একদিনে বা তিনদিনে খতম কে এলাউ করেছেন ? একটি সহিহ হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক এমন তথ্য দিচ্ছেন কিছু ইসলামিক স্কলার কিন্তু সেগুলোর রেফারেন্স কেন তারা দিচ্ছেন না সেটাই আমাকে আশ্চর্য করছে |
রোজায় বেহেস্তের সব দরজা খুলে দেওয়া হয় আর দোজখের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় | এই হাদিসটা মনে হয় রোজা নিয়ে সব লেখাতেই দেখতে পাচ্ছি | এই হাদিসটা শুনে আমদের এখানকার এক স্কুল বয়ের জিজ্ঞাসা "ওকে সো হোয়াট? আই এম নট গোয়িং টু ডাই নাউ |সো হোয়াই এই আম গননা বদার এবাউট দিস হাদিথ? | ওপেনিং আপ ডোরস অফ জান্নাহ নট গননা বেনিফিট মি এনিথিং নাউ " | এই ছোটো ছেলের সরল এই প্রশ্নের উত্তর কি এই হাদিসের আক্ষরিক বক্তব্য থেকে পাওয়া যায় যা বেশির ভাগ লেখায় বলা হচ্ছে ? অথচ এই হাদিসের বক্তব্য থেকে একটা জিনিস খুবই ক্লিয়ার তা হলো এই হাদিসটা আক্ষরিক অর্থে সত্যি হলেও এর একটা পরোক্ষ মানেও আছে আমাদের মত মানুষের জন্য যারা এই বর্তমান সময়ে বেচে আছি | সেই অর্থের ব্যাখ্যা বা খোজার ব্যাপারে কোনো আন্তরিক প্রচেষ্টা ব্লগের বা বাংলা ইসলামিক ওয়েব সাইটে কোনো লেখাতেই আর পাওয়া গেল না |
এই গেল জুম্মাতে এই হাদিসটা উল্লেখ করে আর পরোক্ষ অর্থ নিয়ে আমাদের ঈমাম সাহেব কিছু বিষয় উল্লেখ করলেন | সাধারণত আমাদের ঈমাম সাহেব রেফারেন্স উল্লেখ করেন হাদিসের বা কোনো ফতওয়ার ক্ষেত্রে | খুতবাতে সেই সুযোগ অনেক সময় থাকে না সময়ের অভাবে | যাহোক শনিবারের ফজরের নামাজের পর তার সাথে আমার কথা হলো এই নিয়ে | এই হাদিসের পরোক্ষ অর্থ সম্পর্কে উনি যা বলেছিলেন তার বক্তব্ব্যের রেফারেন্সে কি সেটা জানতে চাইলাম | মাশাল্লাহ, প্রায় আধা ঘন্টা আমাদর কথা হলো সে বিষয়ে | এই হাদিসের পরোক্ষ অর্থ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেল্ভি (রঃ) তার বিখ্যাত “হুজ্জাতুল্লাহ -ইল – বালিগাহ” ( Hujjatullah-il-Balighah) বইয়ে | অনেকেই হয়তো শাহ ওয়ালিউল্লাহ সম্পর্কে জানেন | ব্রিটিশ পূর্ব ভারতের ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে তাকে অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয় | মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়কালে ইসলামিক শরিয়া আইন ভিত্তিক যে বিখ্যাত গ্রন্থ "ফতোয়া এ আলমগীরী" সংকলন করা হয় তার অন্যতম সদস্য হিসেবে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল | শাহ ওয়ালিউল্লাহই (রঃ)প্রথম কুরআন তখনকার ভারতের মুসলিমদের প্রধান ভাষা ফার্সিতে অনুবাদ করেন |“হুজ্জাতুল্লাহ -ইল – বালিগাহ” বইয়ে হাদিসের বিভিন্ন বিষয়ের উপর শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রঃ) ব্যাপক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন | তার এই অসাধারণ বইটি এখনো হাদিস শিক্ষায় উপমহাদেশ সহ আরো অনেক দেশেই ব্যবহত হয় |
এই বইয়ে শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেল্ভি (রঃ) এই হাদিসের বেহেস্তের সব দরজা খুলে দেওয়া হয় বা দোজখের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় সম্পর্কে বলেছেন যে এই হাদিসটা শুধু আক্ষরিক অর্থে নিলেই সব অর্থ বোঝা যাবে না | এই হাদিসটার পরোক্ষ অর্থ বোঝাও জরুরি | রাসুলুল্লাহর (সাঃ) অন্য হাদিসকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে এই হাদিসের পরোক্ষ অর্থের চমত্কার ব্যাখ্যা করেছেন শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রঃ)|তিনি বলেছেন, বেহেস্তের সব দরজা বলতে শুধু আক্ষরিক বেহেস্তের দরজায় বোঝায় না রাসুলুল্লাহ (সাঃ)যেমন বিভিন্ন হাদিসে বলেছেন মা বাবা হলো সন্তানের জন্য জান্নাতের দরজা, সদকা হলো জান্নাতের দরজা ইত্যাদি | এই হাদিসের বেহেস্তের দরজা বলতে এই দরজাগুলোকেই বোঝানো হয়েছে | আল্লাহ রোজায় ব্যক্তির ফরজ আর নফল ইবাদতের জন্য সাত গুন থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত সওয়াব নির্ধারণ করেন | সারা বছর মা বাবার বাধ্য থাকলে যে সওয়াব ছেলে মেয়ে পাবে তার চেয়ে অনেক বেশি সওয়াব পাবে শুধু রোজার মাসে মা বাবার দেখাশুনা করার বা বাধ্যতার কারণে | এই অপরিসীম সওয়াব হাসিলের জন্যই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের দরজা খোলা হয়ে যায় | সারা বছর সদকা করলে যত সওয়াব পাওয়া যাবে তার থেকে বহুগুন বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে এই রোজায় সদকা করলে | এই হাজার গুন বেশি সওয়াব অর্জনের সুযোগই ব্যক্তির জন্য বেহেস্তের দরজা খুলে যাবার কারণ | খুবই যুক্তি সঙ্গত ব্যাখ্যা | এই ব্যাখ্যাতে আমাদের স্কুলের ছোটো ছেলেটির প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল |
বেহেস্তের দরজা খোলার ব্যাখ্যাতো পওয়া গেল দোজখের দরজা বন্ধের বিষয়টা কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায় তবে ? শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রঃ) তাও ব্যাখ্যা করেছেন সেই একই বইয়ে | তিনি বলেছেন শয়তান বা ইবলিস মানুষকে যে বিভ্রান্তিতে ফেলে বিপথগামী করে তা করে তার ইন্দ্রিয় গুলো দিয়ে | যেমন মুখের কথা দিয়ে আমরা কাউকে আঘাত করি,কেও মুখ দিয়ে হারাম খেল, কান দিয়ে অপ্রয়োজনীয় (হারাম) কথা শুনলো, চোখ দিয়ে কেও হারাম জিনিস দেখলো | শরীরের এই যে এত এত হারাম কাজ (যা দোজখের দরজা গুলো খুলে দেয় ব্যক্তির জন্য) কারবার আমাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়েই করা যায় এই রোজায় আল্লাহ মুমিন বান্দার জন্য দোজখের সেই দরজা গুলো বন্ধ করে দেন | কারণ হাদিস থেকে আমরা জানি রোজায় শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় | তাই নিজের হাত, পা, মুখ, চোখ যে সব ইন্দ্রিয় দিয়ে নিষিদ্ধ কাজ মানুষ সহজেই করতে পারে শয়তানের অবর্তমানে সেসব ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করা মুমিন বান্দার জন্য সহজ হয়ে যায় | তাই ব্যক্তি যে কাজগুলো দিয়ে সহজেই দোজখের দরজাগুলো খুলে ফেলতে পারে সেই দরজা গুলো আল্লাহ এই রোজায় এভাবেই বন্ধ করে দেন মানে দোজখেরই দরজাগুলো বন্ধ করে দেন | রোজায় আমাদের ব্লগের, বাংলাদেশের নিউজ পেপারের, আর বাংলা ইসলামিক ওয়েব সাইটগুলোর অসংখ্য লেখাতে "রোজায় বেহেস্তের সব দরজা খুলে দেওয়া হয় আর দোজখের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়" এই হাদিসটার যে ব্যাখ্যাটা খুঁজে পাইনি সেটা শাহ ওয়ালীউল্লার (রঃ) বইয়ে পেয়ে খুব ভালো লাগলো | আশা করছি বাকি রোজায় প্রিয় ব্লগাররা আরো সুন্দর সুন্দর লেখা লিখবেন রোজা আর তার ফজিলত নিয়ে | সেই লেখাগুলো থেকে নতুন কিছু জানব সেই আশায় থাকলাম |
সবাইকেই অনুরোধ করছি এই লেখাটাকে কারো লেখার সমালোচনা হিসেবে না দেখার জন্য | আসলে আমি কেন সব লেখাগুলো পড়তে পারছিনা প্রিয় ব্লগার দ্যা স্লেভের কঠিন সমালোচনা শুনে নিজের ভেতর থেকেই একটা তাগিদ আসলো কারনটা তাকে জানাবার | আমার এই লেখাটাকে রমজান আলোচনার সব লেখার সমালোচনা হিসেবে না দেখে, লেখাগুলো না পড়তে পারার কৈফিয়ত হিসেবে দেখলেই আমি বেশি খুশি হব |
বিষয়: বিবিধ
২৩০১ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলে প্রবাস জীবনে কিতাব সংগ্রহ ও অধ্যায়ন খুবই কঠিন ব্যপার।
তাই বাধ্য হয়েই অনলাইন থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়।
আপনার পোষ্ট পড়ে সতর্কতার প্রয়োজন অনুভব করছি। জাযাকাল্লাহ খাইর
রমযান সম্পর্কীয় লিখাগুলো পড়তে পারা এবং না পারার সুন্দর বিশ্লেষণধর্মী লিখা মাশাআল্লাহ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন