“…আমরা আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ কে রাসুল হিসেবে গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট” -৪
লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ২৮ জুন, ২০১৫, ০৬:০৪:৩৯ সকাল
দেখতে দেখতে আরেকটা রোজার মাস এসে পড়ল | গত রোজার স্মৃতি এখনো মনে এতো গেঁথে আছে যে মনে হচ্ছে এইতো ক'দিন আগেই গত বছরের রোজাগুলো করলাম ! মনে হচ্ছে এই রোজাটা নানা করণেই ব্যস্ত যাবে | তাই ভেবেছি এবার রোজায় নিজে কিছু লিখবনা | যখন সুযোগ হবে রোজায় প্রিয় ব্লগারদের লেখাগুলো পরবার চেষ্টা করবো | রোজা শুরুর প্রথম কিছু দিনের মধ্যেই রোজা নিয়ে কতগুলো খুবই সুন্দর লেখা ব্লগে অলরেডি লিখেছেন কিছু প্রিয় ব্লগার | অন্যদের লেখার অপেক্ষায় রয়েছি | এই লেখাগুলো পরে খুবই ভালো লেগেছে এই ভেবে যে এখনো আমাদের মাঝে দেশে বিদেশে অনেক মানুষই আছেন যারা ইসলামী মূল্যবোধ, গ্রহণযোগ্য-অগ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন | ইসলামের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো অনুশীলনও করছেন যত কষ্টই হোক না কেন | বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোজার দৈর্ঘ্য হবে বিভিন্ন দশ ঘন্টা থেকে বাইশ ঘন্টা | এটা ভেবে খুবই ভালো লাগে যে গ্রীষ্মের এই গরমেও দীর্ঘ বাইশ ঘন্টা সময় ধরে অনেক মুসলমান রোজা রাখবেন | আল্লাহ বিশ্বব্যাপী তার এইসব বান্দাদের সর্বোচ্চ প্রতিদান দিন যারা এই গ্রীষ্মের এই দীর্ঘ সময়ের সব প্রতিকুলতার মধ্যেও তাকে খুশি করার জন্য রোজা রাখার নিয়ত করেছেন |
আমি আমেরিকার যে সিটিতে থাকি সেখানে তিনটে মসজিদ | আমি যে মসজিদটাতে যাই সেটা সিটির পশ্চিমে ডাউন টাউন এরিয়ায় | আমার বাসা থেকে মুটামুটি চৌদ্দ থেকে ষোলো/সতেরো মাইল দুরে (কোন রাস্তা ব্যবহার করে যাচ্ছি সেটার উপর নির্ভর করে )| আরেকটা মসজিদ উত্তর পূর্ব দিকে প্রায় বিশ মাইল দুরে | উত্তর দিকে প্রায় চব্বিশ মাইল দুরে আরেকটা মসজিদ ঠিক আই সেভেনটি ফাইভের পাশেই | আমদের সিটির মেট্রো এরিয়াতে এই তিনটা মসজিদকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশীদের রোজা, ঈদ এবং অন্যান্য উত্সব|এখানেই বাংলাদেশীরা জুম্মা, ঈদের জামাত পড়তে আসেন | খুব কম কিন্তু কিছু বাংলাদেশী অন্য জামাতের সময় আসেন এই মসজিদগুলোতেই | আমি ডাউন টাউন এরিয়াতে যে মসজিদ, সেটাতেই যাই জুম্মা আর অন্যান্য নামাজে | এটাই কাছে হয় | তাছাড়া কিছু সাব কন্টিনেন্টাল আর মিডিল ইস্টার্ন গ্রসারি আছে এই এলাকায় | অনেক সময় নামাজ শেষ করে সেগুলি থেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা গুলি করি| তাছাড়া আমার ইউনিভার্সিটি থেকে ক্লাস শেষ করে মসজিদে নামাজ পরে বাসায় যেতে একটু ঘুরপথ হলেও এই মসজিদটাই সবচেয়ে কাছে আর কনভেনিয়েন্টও হয় |এছাড়াও এক ঘন্টা ড্রাইভিং দুরত্বে আরো একটা সিটি আছে সেখানেও প্রায় জনা পঞ্চাশেক বাংলাদেশী থাকেন | সেই শহরেও দুটো মসজিদ |ওখানে বেড়াতে গেলে ওখানকার একটা মসজিদে মাঝে মাঝে যাওয়া হয় (বেড়াতে গেলে বেশির ভাগ সময় বাসাগুলোতেই জামাতে নামাজ পরা হয় এখানে) |
রোজায় আমার নিজের প্রত্যেক দিনের রোজনামচায় খুব যে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে তা অবশ্য নয় | নিজের ইউনিভার্সিটি আর ব্যক্তি জীবনের কাজ কর্মে তেমন পরিবর্তন খুব একটা আসলেই হয়নি | এই রোজায় পরিবর্তনটা হয়েছে আসলে সামারের জন্য | ইউনিভার্সিটিতে ক্লাসের লোডটা কমেছে | ছেলেমেয়েদর স্কুল থেকে পিক করার কাজটাও নেই | সেই দিক থেকে অনেকটাই ফ্রি বলা যেতে পারে | কিন্তু রোজার কারণে আমি অন্য সব বছরের মতই আমার যাতায়াতটা সীমাবদ্ধ করেছি|বিশেষ করে তারাবিহর নামাজের কারণে ইফতারের পর সন্ধ্যায় কোথাও বের হইনা |
এখানে প্রায় সতেরো ঘন্টা রোজা |সান সেট হয় এখন রাত নয়টা দশের দিকে |মাগরিবের নামাজ, ইফতার শেষ করতে করতেই সাড়ে নয়টা থেকে পোনে দশটা বেজে যায়|তারপর খুবই বিলাসিতার সুযোগ যেদিন পাই সেদিন দশ মিনিট সোফায় বা বিছানায় গাটা এলিয়ে শোবার খানিকটা সময় হয়তো পেয়ে যাই|তারপরই তারাবিহর জন্য প্রস্তুতি|প্রায় পচিশ মিনিট লেগে যায় মসজিদে যেতে ড্রাইভ করতে করতেই|পার্কিঙের ঝামেলাত আছেই|আমাদের মসজিদে প্রতিদিনই ইফতারের আয়োজন থাকে কমিউনিটি মেম্বারদের জন্য|প্রায় দেড় দুশো লোকের|আমি যখন তারাবিহর জন্য মসজিদের পার্কিঙে ঢুকি মাঝে মাঝেই পার্কিং লট এতো অকুপাইড থাকে যে পার্কিং করতেই আরো পাঁচ মিনিট লেগে যায়|সব মিলিয়ে সন্ধায় খুব বেশী সময় থাকেনা ইফতার আর তারাবিহর মাঝে| আমাদের মসজিদে ইশা শুরু হয় পৌনে এগারটায়| সুন্নত শেষ করে তারাবিহ শুরু হতে হতে প্রায় রাত এগারোটা|এই মসজিদে বিশ রাকাত তারাবীহ|তারাবীহর পর বিতর কোনো দিনই সাড়ে বারোটার আগে শেষ হয় হয় না|আধা ঘন্টা ড্রাইভ করে আমি প্রতিদিন যখন বাসায় ফিরে আসি তখন একটা দশ থেকে সোয়া একটা|এর জন্যই রোযার সন্ধ্যায় কোথাও যাবার বা বেড়ানোর সুযোগ থাকে না| রোযার সন্ধায় আমার এই বাইরে না যাওয়া নিয়েই খানিকটা ঝামেলা হয়ে গেল|
আমেরিকার বাংলাদেশীদের একটা ব্যাপার আমার সবসময়ই চোখে পড়ে | ত়াহলো এই বাংলাদেশীদের মধ্যে এদেশে বহু বছর থাকা প্রফেশনাল যারা খুব ভালো চাকুরীর কারণে খুবই উচ্চবিত্ত জীবন যাপন করছেন তারাও পুরোপুরি মার্কিন সমাজের সাথে একাত্ন হয়ে যেতে পারেননি |যদিও মার্কিন সমাজের প্রগার প্রভাব এদের প্রত্যেক দিনের জীবন যাপনে খুবই সুস্পষ্ট তুবুও সামাজিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে এরা কিন্তু মার্কিন সমাজের সাথে পুরোপুরি মিশে যেতে পারেননি নানা কারণেই| মার্কিন মূল সমাজটার থেকে খানিকটা বিছিন্ন থাকার কারণেই কিনা আমি জানিনা (এসব নিয়েও অনেক আলোচনায় হয় এখানকার গ্যাদারিঙে)এরা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো বাংলাদেশীদের সাথেই করেন| এই বাংলাদেশীরা খুবই ফেস্টিভিটি প্রিয়|পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারী, ষোলই ডিসেম্বর, ঈদ এসবই এরা খুবই উত্সাহ নিয়েই আন্তরিকতার সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথেই উদযাপন করেন| আমি আমেরিকার যে সিটিতে থাকি সেখানে প্রায় পচিশটি বাংলাদেশী ফ্যামিলি থাকেন|এদের সবাই-ই খুবই হাইলি কোয়ালিফায়েড প্রফেশনাল| ইউনিভার্সিটি টিচার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাইন্টিস্ট| সবারই এই শহরে খুবই ভালো ভালো নেইবরহুডে বড় বড় বাড়ি আছে|সবাই-ই খুবই দামী গাড়ি চালান মার্সিডিজ বেন্জ থেকে লেক্সাসের লাক্সারী এসইউভি| এই বাংলাদেশীদের অনেকেই এখানে আছেন প্রায় পঁচিশ ত্রিশ বছর ধরে| নিজেদর মধ্যে তাই যোগাযোগ, সম্পর্ক খুবই ভালো| আমি এই শহরে এসেছি এক বছরেরও কম সময়|সবার চেয়েই বয়সে ছোটো |এর জন্যই হয়ত সবাই সবসময় খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করেন সবসময়| তাছাড়া ফেসবুকের কারণে এই অল্প সময়ের মধ্যেই সবার সাথে আমাদের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠত়া হয়েছে দ্রুতই|সবার সাথেই বাসায় যাতায়াতের সম্পর্ক এখন|আমাদের বাসায়ও সবাই এসেছেন|
এই রোজায় আবার যোগ হয়েছে ইফতার পার্টি |রোজাদার বেরোজদার সবার জন্যই ইফতার পার্টি|যারা রোযা রাখেন না তারাও বড় সর আকারে আয়োজন করছেন ইফতার পার্টির|আমার ধারণা ইফতার পার্টিগুলো খানিকটা প্রেস্টিজ ইস্যুও অনেক ফ্যামিলির জন্য| এক ফ্যামিলি ইফতার পার্টির দাওয়াত দিচ্ছে তাই রোজা নামাজ নিয়মিত না করলেও ইফতার পার্টিটা করতেই হবে|যে কোনো জমকালো পার্টির মতই হই হুল্লোর করে চলছে খাওয়া দেওয়া| এই ইফতার পার্টিগুলোতে দেশী স্টাইলে বুট, পিয়াজু. বেগুনি সহ ভাজাপোড়া দিয়ে শুরু হয়ে পোলাউ বিরানীর ডিনার দিয়ে শেষ|সেই সাথে অজস্র ফটোসেশন|নানা রঙের পোশাকে(ছেলে মেয়ে) সবাই ডিনার টেবিলে, খাবার প্লেট হাতে নয়ে, সোফায় বসে অসংখ্য ফটো যাবে ফেস বুকে|কিছু অতি উত্সাহী আছেন যারা সেল ফোন দিয়ে ফটো তুলে তখনি ফেস বুকে পোস্ট করছেন(এই বর্ণনাটুকু দিলাম ফেস বুকে গত বছরের দেয়া ইফতার পার্টির সচিত্র পোস্টের বর্ণনা শুনে)|রোযার রাতে মসজিদে তারাবিহর নামাজ বা এর পরিবর্তে বাসায় একাকী নফল নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী বাদ দিয়ে খুবই উত্সব উত্সবের মধ্যে দিয়ে ইফতার পার্টিগুলো পালন করতে কি যে অফুরন্ত উদ্দম কিছু মানুষের মধ্যে(এরা কিন্তু সবাই সেক্যুলার শিক্ষা পদ্ধতির সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী)না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন| এখানে যেহেত সন্ধ্যাই মানে ইফতারের সময়ই হয় এখন নয়টা দশের দিকে তাই ইফতার করে ডিনার শেষ করতে করতেই রাত সাড়ে দশটা এগারোটা বেজে যায়| তারপর এইসব বাসাগুলো কোনটাই আমার বাসার খুব কাছে নয় পঁচিশ ত্রিশ মাইল দুরে |মানে রোযার প্রায় পুরো একটা রাতই শেষ|এইসব ইফতার পার্টিতে এটেন্ড করে মসজিদে ইশা আর তারাবীহর নামাজে যাওয়া অসম্ভব ব্যাপার |
এর মধ্যে একদিন আবার ছিল সেহেরি পার্টি| একজনের বার্থডেতে (ঠিক জানিনা তারাবিহ পড়ে যেতে পারবে বলেই না কি!)দাওয়াত ছিল সেহেরিতে!রাত একটার সময় তারাবিহ পড়ে এসে দেখি আমার ছেলের মন খুব খারাপ| তখনও টেক্সট করছে কার সাথে যেন| জানতে পারলাম তার বন্ধুরা (কোনো কোনো ফ্যামিলির প্যারেন্টরা আমাদের খুবই বন্ধু এদেরই ছেলেরা) সবাই সেই সেহেরি পার্টিতে আছে তাদের সাথেই চলছে টেক্সটস| যাহোক অনেক বলে কয়ে আমার ছেলেকে বিছানায় পাঠাতে হলো সেহেরিতে জাগবার জন্য|গতকালও পাশের শহরে আমার এক স্কুল বন্ধুর বাসায় ছিল সেহেরি পার্টি | আমার বন্ধুর দুই ছেলের সাথে আমার ছেলের আবার খুবই খাতির | বন্ধুর ছেলেরা টেক্সট এর পর টেক্সট করে যাচ্ছে আমার ছেলেকে কবে আবার ওদের বাসায় যাওয়া হবে জানতে| আমি আমর ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে খতম তারাবিহ বাদ দিয়ে আমি এই পার্টিগুলোতে যেতে চাইনা|আমার ছেলের কাছে তার আব্বুর আচরণ দুর্বোধ্য লাগে |
কোনো কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া হলেও বেশির ভাগ সময়েই নানা কারণে এসব অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়ে উঠেনা | মাঝে মাঝে এড়িয়েও যাই এইসব অনুষ্ঠান| রোজায় যাবার তো প্রশ্নই নেই |আমি এই সারা রোজায় ইফতারের পর কোথাও যাইনা সেটা এখানের অনেকেই জানেন না|তাই যথারীতি দাওয়াত পাচ্ছি অনেক|এখানে উইকএন্ড গুলোতেই পার্টিগুলো হয় উইক ডে গুলোতে সবাই ব্যস্ত থাকে বলে| কিছু দাওয়াত তাই আবার প্রায় মাস খানেক আগে থেকে এরেঞ্জড |ক্লোজ সার্কেলের সবাই এইসব পার্টিতে ইনভাইটেড থাকেন|অস্বীকার করা যাবে না সবাই পার্টিগুলোতে এটেনড করলে হোস্টরা খুশি হন| আবার বিনা কারণে কেউ না করলে এইসব পার্টি হোস্টরা নাখোশও হন |আমি মসজিদে খতম তারাবীহ পড়বো বলে এই সারা রোজায় ইফতারের পর কোথাও যাবোনা দেখে সব পার্টির ব্যাপারেই না করেছি| তাতে রোজায় এইসব পার্টি হোস্টরা নাখোশ হচ্ছেন|তাছাড়া আমার মত এই শহরে নতুন আর তাদের চেয়ে জুনিয়র কেও তাদের ইনভাইটেশন ফিরিয়ে দিচ্ছে এটাও হয়তো কারো কারো ঠিক পছন্দ হচ্ছে না|
আজ শনিবারের ইফতার পার্টিটা খানিকটা অভিনব |আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দলের ইদানিংকার সাড়া জাগানো পেস বলার মুস্তাফিজের খুবই ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয় থাকেন আমাদের শহরে | ভদ্রলোক ডাক্তার | আমাদের বাসায় আসা যাওয়া আছে | ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশে এই রিসেন্ট টুরে মুস্তাফিজের সাড়া জাগানো পারফরমেন্স গর্বিত ভদ্রলোক এখানকার সবাইকে আজকের ইফতার পার্টিতে ইনভাইট করেছেন| মুস্তাফিজের ক্রিকেট সাফল্যে ইফতার পার্টি!বেশ বড় পার্টি হবে বলে মনে হচ্ছে | আমি ক্রিকেটের খুবই ভক্ত| নির্মান আর ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে থাকা সময় অল্প ক্রিকেট খেলেছি | তখনকার বাংলাদেশ জাতীয় দলের অনেকের সাথেই ইউনিভার্সিটিতে খেলেছি | এটা এখানকার অনেকেই জানেন | তাই মুস্তাফিজের আত্মীয় ভদ্রলোক মনে করেছিলেন আমি যাব উনার বাসায় | যেতে পারব না বলাতে মনে হয় একটু মনক্ষুন্ন হয়েছেন| এই দশ রোজাতেই পাঁচটা ইফতার আর সেহরী পার্টিতে মানা করতে হয়েছে | শুনছি এখানে যারা ইনভাইটেড তারা সবাই-ই যাচ্ছেন এই পার্টিগুলোতে | আমি চূড়ান্ত একটা অড বল এই ফেস্টিভ বাংলদেশী কমিউনিটির মধ্যে| কিন্তু কি আর করা|তারাবিহ, নামাজ ছেড়ে এখন আর এত পার্টিতে যেতে ইচ্ছে আসলেই করে না| আমি এই রোজায় “…আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ কে রাসুল হিসেবে গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট” হতে চাই | আল্লাহ আমাকে যেটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন ততটুকু দিয়ে আল্লাহর নির্দেশ, তাঁর রাসুলের (সাল্লাহী আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখানো পথ অনুসরণ করেই এই রোজাটা কাটাতে চাই |
রোজার এই অসাধারণ রহমতের মাসেও কিছু মানুষ মুসলমান হয়েও কেন যে এই মাসের হেদায়েতের আহবান শুনতে পায়না সেটা ভেবে খুবই খারাপ লাগে | বিশেষ করে এই মানুষগুলো যদি নিজের পরিচিত হয় | আরো খারাপ লাগে যে এদের সবাই যে ইসলাম থেকে একদমই যে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তাও কিন্তু নয় | কিন্তু এরা রোজার এই অসাধারণ মাসটাতেও অন্য সময়ের অভস্থ্য আনন্দ, ফেস্টিভিটি গুলো ছাড়তে চায় না | রাতে তারাবিহ পড়ে পার্টির মজা হারানোটা এদের অপছন্দ | রাত বারোটায় তারাবিহ নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই আমি দু রাকাত নফল নামাজে দাড়াই | নিজের, নিজের ফ্যামিলি, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মুসলিম উম্মার জন্য সেজদায় মহান আল্লাহর কাছে রহমতের এবং সিরাতুম মুস্তাকিমের পথে চলার তৌফিক দানের দুয়া করি | আমার সামর্থ্য এত কম ! মানুষ ভুল পথে চলে যাচ্ছে তাও কাউকেই ফেরাতে পারিনা | আমার শুধু আছে আল্লাহ | তার কাছেই শুধু হাত তুলে দুয়া করতে পারি সবার হেদায়েতের জন্য | আমি এই রোজায় নিজের আর অন্যদের জন্য সেটাই করে চলেছি ক্লান্তিহীন | রাতের পার্টিগুলো বাদ দিয়ে সবাই যেন আবার রোজার অফুরন্ত রহমত লাভ করতে পারে |রাইয়ানের চাবিটা এত কাছে! সবাই সেই বন্ধ দরজাটা যেন রোজার চাবি দিয়ে খুলতে পারে সেই দুয়াই করে যাচ্ছি ! ইয়া আল্লাহ, আমাদের সবার জন্য আপনি আমার দুয়া কবুল করুন |
বিষয়: বিবিধ
১৬২৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার সকল প্রতিবেশীরই আপনার মত মনমানসিকতা গড়ে উঠুক। আল্লাহ তায়ালা তাওফীক দিক।
আচ্ছা ভাইয়া! ওখানে কি কোন দায়ী বা ইসলামের দিকে মানুষকে আহবান করে, বিশেষ করে মুসলিমদের মাঝে ইসলাহী কাজ করে এমন কোন দল বা ব্যক্তি নেই!
সংযমের মাসে শুধু খাওয়া দাওয়া ও পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকাটা খুবই দুঃখ জনক মনে হচ্ছে।
আপনাকে অনেক অনেক শুকরিয়া জানাই, নিজের মনের ভাবনা শেয়ার করার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন