“আমরা আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ কে রাসুল হিসেবে গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট” * -পর্ব 2
লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ১১ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৪৮:৪৬ সকাল
আগের একটা লেখায় বলেছিলাম যে ইসলাম ধর্মের কারণে আমেরিকায় আমার খুব একটা অসুবিধা হয়নি কখনই | খাবার দাবার নিয়ে মাঝে মাঝে একটু অসুবিধা হয় ঠিকই কিন্তু সেটা গুরত্ব দেবার মত বড় মনে হয়নি কখনই | খাবার দাবারের ব্যপারে আমি এখনো খুবই প্রাচীনপন্থী | ধর্মীয় কারণেই হালাল ছাড়া খাইনা-গোশ থেকে অন্য যেকোনো কিছুই | ম্যাকডোনালডস, বার্গার কিং, কেএফসি এগুলো খাইনা সহজে | শুধু বিপদে পড়ে ক'বার খেয়েছি এদের ফিস ও ফিলে মিল ( ফ্রায়েড ফিস দিয়ে করা বার্গার, ফ্রেন্চ ফ্রাই আর ড্রিংক) | এই দীর্ঘ প্রবাসী জীবনে কবার খেয়েছি হাতে গোনা যায় | পর্ক বা যেসব খাবারের মধ্যে জেলোটিন আছে, এই ইনগৃডিয়েন্টটা হ্যামের চর্বি ব্যবহার করে বানানো হয় আর এটা প্রধানত থাকে ইয়োগার্ট আর মিল্ক প্রডাকটে, সেগুলো এড়িয়ে যাই সব সময়ই | বাংলাদেশী অনেক বাসায়ই হালাল চিকেন বা বিফের পাশাপাশি নন হালাল মিটও খায় (এই নন হালাল মানে কিন্তু হারাম নয় | মার্কিন গ্রসেরী গুলোতে মিট পাওয়া যায় হয় ক্রিস্টিয়ান প্রথা মত জবেহ করা আর না হয় কোশার মিট যা জু প্রথা অনুযায়ী জবেহ করা | অনেক সময় মুসলিম দোকানগুলো কাছাকাছি না হয়ে অনেক বাংলাদেশীই এই গ্রসেরীগুলো থেকে মিট কিনে | আমার খাবার দাবার নিয়ে যে সামান্য ঝামেলাগুলো আমেরিকায় ফেস করেছি বা অনেক সময় এখনো করতে হয় সেগুলো এবার বলি |
বেশ কয়েক বছর আগের কথা | কিছুদিন মাত্র হলো আমেরিকার পেন্সিলভেনিয়ার পিটসবার্গের এক ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন নিয়ে এসেছি এমএস করার জন্য | ইউনিভার্সিটির কাছেই কোল্টার্ট স্ট্রীটে একটা রুম পেয়ে গেলাম এক বাসায় | ইউনিভার্সিটি থেকে মাত্র কয়েক ব্লক দূর | হেটেই যাওয়া যাবে | আর বাসা থেকে বেরুলেই একদমই কাছে সিটির পাবলিক বাস স্ট্যান্ডটা | জরুরি হলে ইজিলি পাবলিক বসে যাওয়া যাবে ইউনিভার্সিটিতে | বাসস্টান্ডের কাছেই সিভিএস ফার্মেসি যেখানে ডিম,দুধ, পাউরুটি, বাটার ধরনের ইমারজেনসি খাবারগুলো কিনতে পাওয়া যাবে (এখানে ফার্মেসি গুলিশুধু মেডিসিনই বিক্রি করেনা এগুলি নেইবারহুড গ্রসেরী স্টোরও) | একটা টাউন হাউজের দোতলায় আমার রুমটা | টাউন হাউজের সামনের দিকে আমার রুম | আমার রুমের সামনের রাস্তাটাই কোল্টার্ট স্ট্রিট | অল্প দুরেই ফর্বস এভিনিউ | আমার জন্য চমত্কার লোকেশন | দু'রুমের ফ্লোরের একটা রুমে আগে থেকেই থাকে কেন ইয়াং লিইয়াং নামের এক চাইনিজ ছেলে | কেমিস্ট কেন পিএইচডি হোল্ডার আর রিসার্চের কাজ করে ইউনিভার্সিটি অফ পিটসবার্গের কোনো একটা ল্যাবে |
যাহোক এই কেনের সাথেই আমার ঘর সংসার শুরু হলো | আমাদের দু'জনের আলাদা দুই রুম | কিচেন আর বাথ রুম শেয়ার করি আমরা | দিনের শুরুতেই দুজন যে যার মত স্কুলে চলে যাই | দুপুরে একঘন্টার মত সময় নিয়ে মাঝে মধ্যে আসি লাঞ্চ করতে | কোনো কোনো দিন লাঞ্চ নিয়ে যাই স্কুলে, রেখে দেই স্টুডেন্ট লাউঞ্জের রেফ্রিজারেটরে | মাইক্রো ওভেনে গরম করে লাঞ্চে খেয়ে নেই অন্য স্টুডেন্টদের সাথে বসে | বেশির ভাগ দিনই কেনের সাথে আমার দেখা হয় দিনারের সময় | উইকএন্ডে মাঝে মাঝে কেন মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরে যায়-সেখানে ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডে অর ওয়াইফ পিএইচডি করে সম্ভবত ফিজিক্সে | সন্ধায় তিন দিন আমার ক্লাস থাকে সব সময় দিনারেও অর সাথে দেখা হয় না | অল্প অল্প কথা হয় ওর সাথে | আস্তে আস্তে কেনের সাথে আমার কেমন করে যেন বেশ ভালো পরিচয় হয়ে গেল | কখনো ব্রেকফাস্টে বা ডিনারে আর যে উইকএন্ডে কেন বাল্টিমোরে যেত না তখন লাঞ্চেও খেতে খেতে আমাদের মধে অনেক গল্প হত |
আমার রান্না ছিল সহজ | রান্না খুব দুধর্ষ রকম ভালো না করতে পারলেও কাজ চলার মত রান্না করতে পারি | হালাল চিকেন স্কুল থেকে বাসায় আসার পথেই একটা আরাবিয়ান দোকান থেকে কিনে আনি | চাল ডাল মসলাও সেখানেই পাওয়া যায় | আমার রান্না খুবই নিয়মতান্ত্রিক | সপ্তাহের মেনু চিকেন, মুসুর ডাল আর রাইস | মাঝে মধ্যে আলু ভাজি বা ভর্তা | অসাধারণত মুসুর ডালের জায়গায় বুটের ডাল | রবিবার দিন একসাথে সপ্তাহের খাবার রাঁধি | ফ্রীজে রেখে তাদিয়েই সপ্তাহের খাওয়া চলে | রাইসটা শুধু প্রতিদিন রুমে ঢুকেই রাইস কুকারে চড়িয়ে দেই | কোনো দিন -কোনো কোনো উইকএন্ডে বা পরীক্ষার উইকগুলোতে ঝামেলা কমাতে আমি খিচুরী রাধতাম | আমার এই হলুদ খিচুরী দেখে কেন খুব অবাক হত | কেন আমার খিচুরীকে বলত ইয়েলো রাইস|
কেন ভোজন রসিক ছেলে | ভালো রান্না করত | বাহারি রান্না কেনের | মাস-গোশত, শাকসব্জী থেকে শুরু করে ক্রাব, শুটকি মাছ, অক্টোপাস সবই তার মেনুতে থাকে | চাইনিজ মসলার সুন্দর গন্ধ থেকেই ওর রান্না যে বেশ মজার ত়া বোঝা যেত | আমার একই রকম খাবার রান্না দেখে দেখেই মনে হয় আমাকে মাঝে মাঝে ওর রান্না করা খাবার খেতে বলত | আমি রাজি হতাম না খেতে | মাঝে মাঝে ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার সময় কেন বিয়ার খেত |আমাকেও বলত খেতে আমি সবসময়ই মাথা নেড়ে না বলতাম | কেন মুটামুটি চেইন স্মোকার | আমাকে বলত ওর সাথে সিগারেট খেতে | আমি তাতেও না বলতাম দেখে ওর বিস্ময়ের শেষ থাকত না | চাইনিজদের খাবার দাবারের অবিসশ্বাস্য অভ্যাসগুলো সম্পর্কে আমি কেনের থেকেই প্রথম জানতে পারি | জীবন্ত বানরের মাথার খুলি বিশেষ ভাবে ফাটিয়ে তাথেকে মগজ খাওয়া যে একটা খুবই এক্সপেনসিভ খাবার এবং চাইনিজ ডেলিকেসি এই অবিশ্বাস্য কথাটা আমি কেনের কাছেই প্রথম শুনি |
ও নিশ্চয় ভাবত এ বাঙগালটা বেঁচে আছে কিভাবে!আমার সাদাসিধে খাবারের অভ্যাস দেখে বিস্মিত কেন নানা ধরনের প্রশ্ন করত | এরকমই একদিন ওর সাথে আমার কথাহলো খাবারের টেবিলে:
কেন : তুমি ড্রিংক কর ?
আমি: নাহ
কেন: তুমি বিয়ার ড্রিংক কর না ?
আমি: না, নেভার ডিড |
কেন : বিস্মিত হয়ে জানতে চায় কেন ?
আমি: রিলিজীয়াসলি প্রহিবিটেড |
কেন: তুমি হ্যাম খাও না ? ডগ?
আমি: না |
কেন: হোআই?
আমি: ফর সেইম রিজন |
কেন: ক্রাব, স্নেক ?
আমি: নোপ্ |
কেন: হোয়াই ?
আমি: নট পারমিটেড |
কেন: রিলিজিআসলি
আমি: ইয়াপ |
কেন: আর ইউ এ মোজলেম (এটাই কেনের মুসলিমের বেস্ট প্রনানসিয়েশন)?
আমি: ইয়েস |
কেন: পুওর মোজলেম ! ( দু' দিকে মাথা নাড়িয়ে চুক চুক করতে করতে)
পিটসবার্গের আরেকটি ঘটনা | প্রথম সেমেস্টারে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টশীপের কাজ করি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের জাদরেল প্রফেসর ড: গ্রীফিনের ল্যাবে | প্রফেসর গ্রীফিনের ওয়াইফ লিন্ডা গ্রীফিন আমার কমিউনিকেশন ইনসট্রাকটর |তার সুপারিশেই কাজটা হয়েছে | সেমেস্টার শেষ হয়েছে | প্রফেসর গ্রীফিনের বাসায় সেমেস্টার এন্ড পার্টি | তার রিসার্চ আসিস্টান্টরাসহ তার আরো কিছু ছাত্র-ছাত্রী পার্টিতে ইনভাইটেড | আমি প্রফেসর গ্রীফিন আর লিন্ড দুজনেরই কাছ থেকে ইনভাইটেসন পেয়েছি |কথা হয়েছে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের ল্যাবের আমরা তিন রিসার্চ আসিস্টান্ট ড্রু ফাইনার, দক্ষিন ভারতের স্টুডেন্ট প্রকাশ মার্গবন্ধু একসাথে যাব পার্টিতে | ড্রু আর প্রকাশ আমাকে উঠিয়ে নেবে স্কুল থেকে কারণ এর আগে আমি কখনো প্রফেসর গ্রীফিনের বাসায় যাইনি |
নির্দিষ্ঠ দিনে আগের কথা মতই আমরা তিনজন হাজির হলাম প্রফেসর গ্রীফিনের বাসায় | প্রকাশ নিয়ে এসেছে সিক্স পাক ইউরোপিয়ান বিয়ার | ড্রু এনেছে স্ন্যাকস | আর আমি কিনেছি একটা চকলেট কেক | লিন্ডার মজার নুডুলস, চমত্কার সালাদ আর গল্প গুজবে ভালই কাটল সন্ধাটা | বাংলাদেশে ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসরদের সাথে আমাদের যেমন "বাঘে ছুইলে আঠার ঘ আর পুলিশ চুলে চত্ত্রিশ ঘা" সম্পর্কের মত ভয়ের সম্পর্ক ছিল এখানে তেমন নয় | প্রফেসর গ্রিফিন আমদের সবাইকে বিয়ার অফার করলেন আর নিজেও খুললেন প্রকাশের আনা বিয়ারের একটা ক্যান | ড্রু আর প্রকাশ আনন্দের সাথে বিয়ারের পাক থেকে তাদের ক্যান খুলে বসলো | আমি যথারীতি না করলাম | আমার মত ইয়াং একটা ছেলে বিয়ার ড্রিংক করে না শুনে প্রফেসর আর লিন্ডা দু’জনই অবাক | কেন খাইনা এর উত্তরে আমার ব্যাখা করতে হয় রিলিজিয়াস রিজন যার জন্য আমি খাই না | এরকম হয় মাঝে মাঝেই | ডিপারটমেন্টের অনেক মিটিং-এ হালাল খাবার না থাকায় হয়ত খেলাম না তখন অনেকেই জানতে চায় কেন খেলাম না (এখানে অবশ্যই বলতে হবে যে অনেক সময়ই যখন কি লাঞ্চ খাব সেটা বলার সুযোগ থাকে তখন সবসময়ই আমার জন্য সী ফুড থাকে |)
এছাড়াও অনেক সময় রোজায় মিটিং থাকত (এখনো থাকে) ডিপার্টমেন্টে | ওয়ার্কিং লাঞ্চ মিটিংগুলোতে আমি খেতাম না রোজা রাখার জন্য | এরকম একদিনের ঘটনা বলি: ডিপার্টমেন্টের মান্থলি মিটিং হচ্ছে | ডিপার্টমেন্টের ডক্টরেট্ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে আমি আর অন্য গ্রাজুয়েট রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টরাও আছে মিটিঙে | ওয়ার্কিং লাঞ্চের সাথে মিটিং চলছে | পাশেই বসা ডঃ চেন | তাইওয়ানিজ ডঃ চেন এশিয়ান বলে ইসলাম আর বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন বেশ | কিছু খাচ্ছিনা দেখে খানিকটা বিস্মিত | পাশে বসা ডঃ চেনের সাথে আমার নিম্নোক্ত কথাবার্তা হলো:
ডঃ চেন: হোয়াই আর ইউ নট ইটিং?
আমি: " আই এম ফাস্টিং"
ডঃ চেন: ফাস্টিং?
আমি:ইয়াপ
ডঃ চেন: ইজ ইট স্টিল রামাদান গোয়িং অন?
আমি:নোপ্
ডঃ চেন: আই থট সো|ইউর রামাদান হাজ এন্ডেড জাস্ট লাস্ট মান্থ, রাইট ?
আমি : ইয়াপ|
আমাদের উল্টো দিকে বসে ডিপার্টমেন্টের একমাত্র মুসলিম ফ্যাকালটি ডাক্তার রাজী খাচ্ছেন দেখে ড: চেন খানিকটা বিস্মিত |ডঃ চেনের বিস্মিত মুখের দিকে তাকিয়ে আমি ব্যখ্যা দেবার চেষ্টা করি “দিস ফাস্টিং ইজ অপশনাল|
ড: চেন: হাউ ম্যানি ফাস্টিং ইউ গনো ডু?
আমি: সিক্স |
ড: চেন:হাউ মেনি ম্যান্ডেটরি ফাস্টিং ইউ হাভে ফর রামডান?
আমি: ইট ইজ মান্থ লং ফাস্টিং | থার্টি অর টোয়েনটি নাইন ডিপেন্ডিং অন টি লুনার কালেন্ডার |
ড: চেন:আই গট ইট | ইউ আর আ ভেরি রিলিজিয়াস পারসন |
আমি হাসি, কোনো উত্তর দেইনা |
আমি অনেকের কাছেই শুনি খাবার ব্যাপারে এত কড়াকড়ি কেন | বিশেষ করে বাংলাদেশীদের বাসায় দাওয়াতগুলোতে | আমি নন হালাল মিট প্রিপারেশন গুলো না নিয়ে কিছু না বলে নি:শব্দে মাছ বা ভেজিটেবল দিয়ে খাওয়া শেষ করি | আমার এতে কখনই খারাপ লাগে না | আমি শুধু ভাবি আমিতো ভালই খাচ্ছি | অল্প কিছু খুবই মখরোচক খাবার না খেতে পারলেও বেশির ভাগ খাবার তো আমার জন্য অন্য মুসলমানের মতই হালাল | কিন্তু হাজার বছর আগে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহী আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় ইসলাম প্রচারের জন্য আদিষ্ট হলেন তখন তাঁর ডাকে সারা দিল ঈমানের শক্তিতে বলিয়ান কিছু অসাধারণ মানুষ | ঈমানের শক্তিতে বলিয়ান এই অসাধারণ মানুষগুলো ইসলাম প্রচারে কি অমনুশিক কষ্টই না সহ্য করেছেন | দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছেন | ক্ষুধায় পেটে পাথর বেধে রেখেছেন | কুতায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা একাধারে তিন রাত তরকারীসহ গমের রুটি পেটভরে খাননি ((সহীহ বুখারী, ইফা, হাদিস নং ৫০২২/৫০২৯)আরেকটি বর্ণনায় মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) কাতাদা(রাঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের আগে পর্যন্ত পাতলা নরম রুটি এবং ভুনা বকরীর গোশত খান নি এমনকি তিনি এ অবস্থায়ই আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হন (সহীহ বুখারী, ইফা, হাদিস নং ৪৯৯৩)।
হজরত খাব্বার ইবনে আরাত রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন একদম প্রথম দিকের মুসলিম | খুব সম্ভবত প্রথম পাঁচ বা ছয় জন মুসলিম পুরুষের মধে তিনি একজন | তিনি ছিলেন একজন অমুসলিম আরবীয় মহিলার ক্রীতদাস | সেই মহিলা ছিল খুবই অত্যাচারী আর তার উপর সে যখন জানলো যে তার ক্রীতদাস খাব্বার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ইসলাম গ্রহণ করেছেন তখন তার অত্যাচারের মাত্রা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেল | হজরত খাব্বারকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) খাবার না দিয়ে নগ্নদেহে দিনের পর দিন মরুভূমিতে উত্তপ্ত বালুর মধ্যে ফেলে রাখা হত | তপ্ত বালুর মধ্যে দিনের পর দিন ফেলে রাখায় তাঁর কোমরের মাংশ খুলে পরে যেত | অনেকদিন পর হজরত উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু ) যখন খলিফা তিনি হজরত খাব্বারের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কাছে তার উপর অত্যাচারের ঘটনা জানতে চাইলেন | হজরত খাব্বারের (রাদিয়াল্লাহু আনহু )তাঁর কোমর হজরত উমরকে দেখিয়ে বললেন "আমিরুল মোমেনিন, আমার কোমর দেখুন" | হজরত উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু ) আত্কে উঠে বললেন এত সরু কোমর তো কারো দেখিনি ! হজরত খাব্বার (রাদিয়াল্লাহু আনহু ) বললেন " আমাকে জলন্ত আগুনের উপর শুইয়ে রাখা হত | আমার শরীরের গলে যাওয়া চর্বি আর রক্তে সেই আগুন নিভে যেত" | এত নির্মম অত্যাচার সহ্য করার পরও যখন ইসলামে বিজয়ের দিন শুরু হলো তখন হজরত খাব্বার (রাদিয়াল্লাহু আনহু ) আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে দুয়া করতেন "ইয়া আল্লাহ আমার কষ্টের পুরস্কার আমাকে আপনি এই পৃথিবীতেই দিয়ে দিবেন না" |
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাহী আলাইহিস ওয়া সাল্লাম ) আর তাঁর সাহাবীদের কথা যখন আমি ভাবি আমাদের ঈমান কত দুর্বল ! পৃথিবীর বেশির ভাগ খাবারই আমাদের জন্য হালাল | হাতের কাছেই সব হালাল খাবারগুলো পেয়ে যাচ্ছি সবসময় | তবু অল্প কিছু হালাল না এমন খাবারের লোভ আমরা ছাড়তে পারিনা | যখন দেখি বাংলাদেশী মুসলিম নির্দ্বিধায় বিয়ার, বা জিলেটিন থাকা ইয়োগার্ট খাচ্ছে অথবা হাতের কাছের হালাল খাবার ফেলে নন হালাল ফার্স্ট ফুড কচ্ছে আর আমার দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে যেন আমি বাংলাদেশের সবচে অজ পারা গা থেকে এসেছি তখন খুবই খারাপ লাগে | আমি শুধু দুয়া করি নিজের জন্য যে দ্বীনের প্রতি আল্লাহ আমাকে যেন আরো বেশি অবিচল এবং যত্নশীল হবার ক্ষমতা দেন |
বিষয়: বিবিধ
১৫৫১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : হুমম! বাংলাদেশর ৯৫% ঘুষ, ভেজাল আর দূর্নীতিবাজের মুমিন মুল্লুকে আপনি হালাল খেতেন @ জনাব আশাবাদ!!A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : রং, ভেজাল, মরা, পচা, বাসি, ফরমালিন খাবেন তবু শুকরের চর্বি মিশ্রিত স্বাস্থসম্মত নিরাপদ পুষ্টিকর ইয়োর্গাড খাবেন্না। নিরেট মুস্লিম বলে কথা। ভাল আল্লার খপ্পরেই পরেছেন আপনি!!আমার আবারো প্রশ্ন- বাংলাদেশের প্রতি ৫০০ গজে/গজে মসজিদ, আজান, দোয়া, মোনাজাতে ভরপুর আল্লার ভূবন ছেড়ে আমারিকায় আস্তানা পেতেছেন ক্যান? নাকি আল্লা-মোহাম্মদের আবর্জনা মুক্ত শুনশান সভ্য ভব্য ইহুদী-নাসারর দেশেকে বেশি পছন্দ। উত্তর দিন??
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : না ভাই, ভুল বুঝবেন্না। আমি কিন্তু বারবার আপনাকেই সাহায্য করার চেষ্টা করছি। শত হলেও আপনি একজন আল্লা ভক্ত মুমিন, আল্লার কোরাণ ভক্ত মুমিন, আল্লার রাসুল ভক্ত মুমিন। আপনার আল্লা শুকরের মাংস হারাম করে দিয়েছেন বলে ন্যুনতম শুকরের চর্বির জিলোটিন প্রজারবেটিভের ভয়ে চিজ/দধি'তেও আপনার বেজায় অরুচি, বাছ বিচর। শুধু তাই না, অন্য বাংলাদেশী মুসলিমরা যখন নির্দ্বিধায় বিয়ার, জিলেটিন ইয়োগার্ট খায় তাতেই আপনার আল্লা আপ্লুত মন নিভৃতে কাঁদে। সাব্বাস, এই না হলে আল্লার ঈমানদার বান্দা?কিন্তু ভায়া অপনি অত্যন্ত সচেতন ভাবে ইহুদী, নাসারা, কাফের, নাস্তিক'দের সাথে মিলে মিশে আছেন। ওদের দেশে আস্তানা পেতে, ওদের ডিগ্রী/বিদ্যা/বই/পুস্তক/লেকচার/জার্নাল রপ্ত করে, ওদের প্রতিষ্ঠানে, ওদের আন্ডারে কাজ বাজ চাকরি বরাত করে দিব্যি আছেন। কিসের মোহে? কিসের টানে??
অথচ আপনার আল্লাপাক আল কোরাণে সুস্পষ্ট করে সাবধান বানী উচ্চারণ করেছেন- "আল্লাহ ইহুদী-নাসারা'দের প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন। ইহুদী-নাসারা কুল মুমিনের বন্ধু হতে পারেনা। তাদের মুখে এক অন্তরে আরেক। তারা জঘন্য। তারা অভিশপ্ত। তারা বিপদগামী। তারা বিভ্রান্ত। তাদেরকে আল্লা পথ প্রদর্শন করেন্না। তারা দোজকের খড়ি। " কিন্তু আপনি স্বয়ং সেই অভিশপ্ত, বিপদগামী, বিভ্রান্ত'দের স্কুলে তাদেরই লেখা বই পুস্তক মুখস্ত করে ডিগ্রীর হাক দিচ্ছেন। ডলার কামাচ্ছেন। নাউজুবিল্লা। নাকি আল্লার যত বাধা নিষেধ শুধু বিয়ারের বোতল আর জিলোটিনে??
আশাকরি উত্তর দেয়ার সৎ সাহস আপনার আছে।
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন @ জনাব আশাবাদী।
সূত্র-
৩:১১৮- " হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও।"
৫:৫১- হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
৫:৮০- আপনি তাদের অনেককে দেখবেন, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা নিজেদের জন্য যা পাঠিয়েছে তা অবশ্যই মন্দ। তা এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহ ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তারা চিরকাল আযাবে থাকবে।
Abu Dawud (41:4832) - The Messenger of Allah [said] "Do not keep company with anyone but a believer and do not let anyone eat your food but one who is pious."
ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
হজরত খাব্বারকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) খাবার না দিয়ে নগ্নদেহে দিনের পর দিন মরুভূমিতে উত্তপ্ত বালুর মধ্যে ফেলে রাখা হত | তপ্ত বালুর মধ্যে দিনের পর দিন ফেলে রাখায় তাঁর কোমরের মাংশ খুলে পরে যেত | ....
হযরত খাব্বাবকে(রাঃ) উত্তপ্ত কয়লার উপর শুইয়ে দেওয়া হত। কখনও চর্বী গলে যেত। আর ওমর(রাঃ) অনুরোধ করেন তা দেখানোর জন্যে্ ।..শ্বেতী রোগীদের মত দেখালো সেটা।.....ইসলাম প্রচারে বের হয়ে প্রতারনার শিকার হন...শেষে তাকে কাফিররা শুলে চড়িয়ে হত্যা করে...তিনি নির্ভিক ছিলেন...
মন্তব্য করতে লগইন করুন