সিরিয়ায় মুজাহিদদেরকে হত্যার পেছনের কারণ ও ঘটনা।
লিখেছেন লিখেছেন আলোর দিশা ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৩:৫৬:৪৭ দুপুর
সিরিয়ায় আসলে কী ঘটছে ! কারা মুজাহিদদেরকে হত্যা করেছে ? ইসলামের পক্ষে ও বিপক্ষে কারা ? কী তাদের পরিচয় ? কী তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ? কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক ? মুজাহিদদেরকে শেষ করে তারা কী অর্জন করতে চায় ?
এসব বিষয় বিস্তারিত(অনেক তথ্য সম্বলিত) জানতে নিচের এই (মেগা)পোস্টটি পড়ুন.......
********
সিরিয়ায় মুজাহিদদের বিজয়ের সম্ভাবনা যখন ক্রমেই আশার আলো দেখাচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে কুফুরী শক্তিগুলো তাদের পা চাঁটা গোলামদেরকে নিয়ে এক ভয়ংকর পরিকল্পনায় মতে উঠেছে ! পশ্চিমা যখন দেখলো এই মুহূর্তে আসাদকে সরালে আল-কায়েদার সাথে সম্পর্কিত সত্যিকারের মুজাহিদরা সেখানে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করবে । আর মুজাহিদরা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে পারলে ইসলামের চিরন্তন দুশমন দখলদার জায়নবাদী ইসরাইলের শেষ রক্ষা হবে না ইনশাআল্লাহ। এ জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার আজ্ঞাবহ মুসলিম শাসকবর্গ(সৌদি আরব,কুয়েত,কাতার ইত্যাদি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরিয়ায় কিছুতেই মুজাহিদদেরকে বিজয়ী হতে দেয়া যাবে না। এজন্য তারা সেখানে মুজাহিদদেরকে নির্মূল করার প্রকপ্ল হাতে নিয়েছে, এর অংশ হিসেবেই গত কয়েক দিনে সেখানে অনেক মুজাহিদকে শহীদ করে দেয়া হয়েছে।সিরিয়ায় কুফফারদের এই পরিকল্পনা কারা বাস্তবায়ন করছে,তা বুঝতে হলে প্রথমে সিরিয়ায় শিয়া কাফির বাশার আল-ফাসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর পরিচয় জানা যাক। আরব বসন্তের ছোয়ায় স্বৈরাচারী খুনী আসাদের বিরুদ্ধে সিরিয়ার সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। স্বৈরাচারীদের চিরাচরিত নীতি হিসেবে আসাদ ব্যাপক গণহত্যা চালায়। এবার মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। প্রথমদিকে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। এখানে ইসলামপন্থীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো।পরবর্তীতে বিভিন্ন দল একত্রিত হয়ে বিভিন্ন জোট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
****সিরিয়ার প্রধান প্রধান দল ও জোটের পরিচিতিঃ
১. ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশন বা SNC’, যা পূর্ববর্তী Syrian National Council এর বর্ধিত রূপ। এটি পশ্চিমা সমর্থিত একটি রাজনৈতিক জোট।দুনিয়ার কুফফার শক্তি এবং সৌদী শাসকসহ মধ্যপ্রাচ্যের শাসকেরা এদেরকে আসাদ বিরোধীদের অন্তর্বর্তী ‘সরকার’(!) বলে প্রচার করে থাকে। দেখুন... http://www.aljazeera.com/news/middleeast/2012/12/201212124541767116.html । ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বা FSA’ এর প্রধান সামরিক শাখা।প্রাথমিক অবস্থায় এটি আসাদের বাহিনী থেকে পক্ষত্যাগ করা সৈন্যদেরকে নিয়ে গঠিত হয়। SNC এর অধীনে বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে,যারা আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।SNC এর অধীনে এমন গ্রুপও রয়েছে,যাদের নাম দেখলে মনে হবে কতইনা ইসলামিক! কিন্তু তারা সরাসরি মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। SNC এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সিরিয়াকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে কায়েম করা। দেখুন... SNC এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ‘Ahmad Jarba’ বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, “SNC চায় পশ্চিমা বিশ্বে যে গণতন্ত্র আছে সিরিয়ায় ঠিক অনুরুপ গণতন্ত্র কায়েম করা।” লিংক দেখুন..... http://www.bbc.co.uk/news/24907751 সিরিয়ার ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’(Muslim Brotherhood) এই SNC এর গুরুত্বপূর্ণ শরীক। সিরিয়ার ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ এর উপপ্রধান ‘Mohammad Farouk Tayfour’ বর্তমানে SNC(Syrian National Coalition) এর পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং Syrian National Council এর মহাসচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। গতকাল(০৫/০১/২০১৪) SNC এর কমিটির নির্বাচন হয়েছে আর তাতে মুসলিম ব্রাদারহুডের এই নেতা ‘Vice President’ নির্বাচিত হয়েছেন দেখুন.. ( https://www.facebook.com/SyrianNationalCoalition.en )।
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাবশালী এই নেতা সিরিয়া ভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা ‘zaman alwasl’ এর সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, “মুসলিম ব্রাদারহুড সিরিয়ায় গণতন্ত্র কায়েম করতে চায়।তিনি ISIS ও আল-কায়েদার অন্য মুজাহিদদেরকে চরমপন্থী আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি চান দ্রুত ISIS এর সাথে মোকাবেলা করার, যেহেতু তারা সিরিয়ার বর্তমান আয়তন বাদ দিয়ে একটি রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।আর কারো জোর পূর্বক ইসলামের বিধান কায়েম করাও গ্রহণযোগ্য নয়।তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডকে সিরিয়ায় ‘মডারেট ইসলাম’এর নমুনা হিসেবে উল্লেখ করেন।তিনি সিরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।”
২. ‘জাবহা আল-ইসলামী’ বা ‘ইসলামিক ফ্রন্ট’ । এটি সিরিয়ার ৭ টি ইসলামী দলের একটি জোট। তারা সিরিয়ায় ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।পশ্চিমা সমর্থিত কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থা তারা মেনে নেবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে তারা আল-কায়েদার সাথে সংযুক্ত নয়। এমনকি কোন কোন দল আল-কায়েদার ঘোর বিরোধী। এ জোট সৌদি আরব,কাতার,কুয়েত এসব দেশের শাসকদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে চলে এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত।সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের শাসকরা তাদের সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে ‘Jaysh al-Islam’ যার পূর্ব নাম ‘Liwa al-Islam’ ইংরেজিতে ‘the Brigade of Islam’ এবং ‘Liwa Al-Tawhid’ দল দু’টি সৌদি সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত । এদের মাধ্যমে সৌদি সরকার তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
‘Jaysh Al-Islam’ এর প্রধান হচ্ছেন ‘Zahran Alloush’। তার পিতা ‘sheikh Abdullah Mohammed Alloush’ হচ্ছেন সিরিয়ার সৌদি আরব ভিত্তিক একজন সালাফী আলেম। সৌদি সরকারের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
৩। ‘জাবহাতুন-নুসরাহ বা নুসরাহ ফ্রন্ট’। এটি বিশ্বব্যাপী আল্লাহর বিধান কায়েমে নিয়োজিত আল-কায়েদার চিন্তাধারায় গঠিত। এরা কারো সাথে কোন জোট না করেই আসাদের বিরুদ্ধে দূর্বার জিহাদ গড়ে তুলেছে।সিরিয়ার একটা বিরাট অংশে তারা তাদের সুদৃঢ় নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে আল্লাহর বিধান কায়েম করেছে।সিরিয়ায় নুসরাহর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তাই বিভিন্ন দল ও জোটের অংশ দলে দলে নুসরাহর সাথে যোগ দিচ্ছে।
৪. ‘ইসুলামিক স্টেইট ইন ইরাক এন্ড শাম’ বা সংক্ষেপে ‘ISIS/ISIL’ ।এটিও নুসরাহর মতোই আল-কায়েদার চিন্তাধারায় গঠিত।বর্তমানে ‘ISIS’ কে সিরিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।এটি ইরাক থেকে নিয়ন্ত্রিত হলেও সিরিয়ায় এর খুবই প্রভাব রয়েছে। ISIS সিরিয়ার বিভিন্ন ফ্রন্টে আসাদ বাহিনীর সাথে জিহাদে অনেক সফলতা লাভ করেছে। ‘ISIS’ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। ‘ISIS’ কাজের দিক থেকে নুসরাহর মত হলেও তারা সিরিয়া,ইরাকসহ আশেপাশের এলাকা নিয়ে একটি পূর্ণাংগ ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। ‘ISIS’ রাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এ লক্ষে যার ফলে ইতোমধ্যেই তারা শিক্ষা,বিচার ব্যবস্থা,খাদ্য ব্যবস্থাপনাসহ রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। তাদের সুশৃঙ্খল নিয়ন্ত্রণের ফলে সিরিয়ার অনেক গ্রুপ ইতোমধ্যে ‘ISIS’ এর সাথে যোগ দিয়েছে। গত কিছুদিন পূর্বে সেক্যুলার FSA এর খুবই প্রভাবশালী কমান্ডার ‘সাদ্দাম জামাল’ বিপুল অস্ত্রশস্ত্রসহ ‘ISIS’ এ যোগ দিয়েছেন। দেখুন... http://www.aljazeera.com/indepth/features/2013/12/syrian-fighter-defects-qaeda-linked-group-201312158517493207.html#.UrMSnlzQ978.twitter
৫. ‘মুজাহিদীন আর্মি বা জাইশুল মুজাহিদীন’।এটি গত কয়েক দিন আগে গঠিত হয়েছে।মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য ইসলামের নাম ধারণ করে ‘FSA’ এর সাথে সংশ্লিষ্ট ৯ টি গ্রুপের সমন্বয়ে আলেপ্পো ভিত্তিক এই সংগঠন এটি। গঠিত হওয়ার পরপরই এটি আলা-কায়েদার মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। এরা ইসলামের নাম ধারণ করলেও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যই এটি গঠিত হয়েছে। https://www.zamanalwsl.net/en/news/3154.html
****বর্তমান অবস্থার পেছনের কারণঃ
সিরিয়ায় কুফফার আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ক্রমান্বয়ে সশস্ত্র যুদ্ধে রুপান্তর হওয়ার প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ দখলদার ইসরাইলকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য সিরিয়ায় ইসরাইলের বন্ধু রাষ্ট্র তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়। এ জন্য তারা গণতন্ত্রপন্থী SNC/FSA কে বেছে নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পরিকল্পনা অনুযায়ী SNC/FSA কে অস্ত্রশস্ত্র যোগান দেয়।কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ভিন্ন ছিলো বিধায় সেখানে ইসলামের পক্ষে জাগরণ শুরু হয়। ক্রমেই মুজাহিদরা সেখানে সংগঠিত হতে থাকে। SNC/FSA এর কমান্ডাররা মার্কিন ডলার পেয়ে তা দিয়ে চরম বিলাসী জীবন-যাপন শুরু করে।চরম দুর্নীতিবাজ নেতারা যুদ্ধের ময়দান থেকে নিরাপদ দূরত্বে আয়েশী জীবন কাটাতে থাকে। আর যুদ্ধের ময়দানে সাধারণ যোদ্ধারা আসাদ বাহিনীর হাতে নিঃশেষ হতে থাকে। এমতাবস্থায় ‘জাবহা আন-নুসরা’ এবং ISIS এর অধীনে সিরিয়ার মুজাহিদদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুহাজির মুজাহিদরা সংগঠিত হয়ে আসাদ বাহিনীর সাথে তুমুল জিহাদ চালিয়ে অনেক এলাকা বিজয় করতে সক্ষম হয়। নুসরা এবং ISIS সাথে সিরিয়ার অনেক গ্রুপ যোগ দেয়।ফলে নুসরা ও ISIS ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে। এমতাবস্থায় কুফফার বাশার আল-ফাসাদ রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করলে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান। যুক্তরাষ্ট্র তখন আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের তোড়জোড় চালাতে থাকে। কিন্তু তখন বাস্তবতা হলো এমন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা করে আসাদকে সরালে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে মুজাহিদদের হাতে,যা ইসরাইলের ধ্বংস ডেকে আনবে। SNC/FSA এতোটাই দূর্বল হয়ে পড়ে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ব্যাপারে একেবারে হতাশ হয়ে পড়ে।এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এক পর্যায়ে FSA কে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ স্থগিত করে দেয়।মুজাহিদদের ক্রমবর্ধমান শক্তিতে ভীত হয়ে তাদেরকে দমনের জন্য এবার চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র হাতে নেয়।তারা FSA কে জানিয়ে দেয়, আল-কায়েদার মুজাহিদদেরকে দমন করতে না পারলে FSA কে তারা সাহায্য প্রদান বন্ধ করে দিবে। অন্যদিকে মার্কিনীদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পা-চাটা গোলাম সৌদি সরকার ও মধ্য-প্রাচ্যের শাসকবর্গ আল-কায়েদার মুজাহিদদেরকে মোকাবিলার জন্য ‘ইসলামী ফ্রন্টে’র কিছু শীর্ষস্থানীয় নেতাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত রয়টার্সের এই রিপোর্টটিতে তার প্রমাণ দেখুন.... http://www.reuters.com/article/2013/10/01/us-syria-crisis-jihadists-insight-idUSBRE9900RO20131001
গত কয়েকদিন আগে ‘FSA’এর শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার ‘সাদ্দাম জামাল’ ‘ISIS’ এ যোগ দিয়েছেন। তিনি কুফফারদের উপরে বর্ণিত সমস্ত পরিকল্পনার কথা এক সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন। দেখুন..... http://www.aljazeera.com/indepth/features/2013/12/syrian-fighter-defects-qaeda-linked-group-201312158517493207.html#.UrMSnlzQ978.twitter
এরপর কুফফার মিডিয়া ‘ISIS’ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালায়। আর অন্যদিকে ‘FSA’ তার নিয়ন্ত্রিত এলাকার ৫০/৬০ জন মানুষ ‘ISIS’ এর বিরুদ্ধে মিথ্যা উস্কানি দিয়ে রাস্তায় নামায় এবং তা কুফফার মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার চালায়। ভিডিওতে তার প্রমাণ দেখুন.... http://revolution-news.com/leaders-isis-al-qaeda-killed-arrested-syria/
****মিথ্যা প্রোপাগান্ডার একটি উদাহরণঃ
গণতান্ত্রিক ‘FSA’ এর Secretary General(মহাসচিব)ক্যাপ্টেন Ammar al-Wawi গত ৪ জানুঃ প্রচার করে ‘ISIS’ নাকি আসাদ,ইরান এবং ইরাকের শিয়াদের স্বার্থরক্ষার জন্য সিরিয়ায় লড়াই করছে! এমনকি সে এও বলেছে ‘ISIS/ISIL’ নাকি আসাদের কাছ থেকে অর্থ ও অস্ত্র পাচ্ছে! দেখুন... http://english.alarabiya.net/en/News/middle-east/2014/01/04/FSA-official-Qaeda-group-ISIL-backed-by-Assad-Iran-Iraq.html
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ‘FSA’ যখন এই প্রোপাগান্ডা করছে ঠিক তখনও ‘ISIS’ কুফফার আসাদের নিজ শহর দখলের জন্য তীব্র লড়াই করছে। দেখুন... https://www.zamanalwsl.net/en/news/3146.html
****বর্তমান ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
গত ৩ জানুঃ ইসলামের নাম ব্যবহার করে সদ্য গঠিত ‘মুজাহিদিন আর্মি’(FSA এর অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি গ্রুপ নিয়ে গঠিত। যার বিবরণ পূর্বে দিয়েছি)সিরিয়ায় আল-কায়েদার মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। তারা ‘ISIS’ এর মুজাহিদদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিরিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার আলটিমেটাম দেয়।তারা আরো বলে, এরপর ‘ISIS’ এর কোন সদস্যকে পাওয়া গেলে তাদেরকে হত্যা অথবা বন্দী করা হবে। লিংক.... http://edition.cnn.com/2014/01/04/world/meast/syria-civil-war/ । ‘ISIS’ এর মুজাহিদরা যেহেতু বিভিন্ন ফ্রন্টে আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে,তাই তাদের পক্ষে সেসব ফ্রন্ট ছেড়ে দিয়ে আসা সহজ ছিলো না।এই সূযোগে ৪ তারিখ ভোরেই ‘FSA’, ‘মুজাহিদিন আর্মি’ এবং ‘ইসলামী ফ্রন্টের’ কিছু গ্রুপ যৌথভাবে ‘আলেপ্পো এবং ইদলিব’ এ অবস্থিত ‘ISIS’ মুজাহিদদের দপ্তরে হামলা করে কমপক্ষে ৩৪ জন মুজাহিদকে শহীদ করে দেয় এবং কমপক্ষে ২০০ জনকে বন্দী করে তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়।শহীদদের মধ্যে ৩ জন কমান্ডার রয়েছেন। এছাড়া আরো ২ জন কমান্ডার বন্দী হয়েছেন(উপরের লিংকে দেখুন)। এমনকি শহীদ করার পর একজন শহীদের দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ইসলামের দুশমনদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী 'FSA' মুরতাদরা ।মুনাফিক ও কুফফার ‘FSA’ সমর্থিত মিডিয়াগুলোই তা প্রচার করছে। দেখুন..... http://www.aljazeera.com/news/middleeast/2014/01/al-qaeda-linked-group-kills-aleppo-captives-2014175161198234.html
শুধু তাই নয়, গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী ‘FSA’ এবং তার সহযোগীরা মুজাহিদদের পরিবারের শিশু ও নারীদেরকেও বন্দী করেছে এবং তাদের উপর চরম নির্যাতন চালিয়েছে।কুফফারদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ‘FSA’ মুনাফিকরা মুজাহিদ পরিবারের একজন বোনের ইজ্জত পর্যন্ত লুটে নিয়েছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। এরপর ‘ISIS’ এর মুজাহিদরা পাল্টা আঘাত শুরু করে। এ পর্যন্ত বহু মুনাফিককে তারা হত্যা করেছে। সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে পশ্চিমা কুফুরী শক্তি ও আরব শাসকদের তাবেদারদের সাথে ‘ISIS’ এর মুজাহিদদের তুমুল যুদ্ধ চলছে।
****মুনাফিকদের মুখোশ উন্মোচনের একটি ঘটনাঃ
‘FSA’ এর অনেক গ্রুপের নাম দেখলে হয়তো কেউ তাদেরকে মুজাহিদ মনে করতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তারা মুনাফিক। যেমনঃ তাদের একটি গ্রুপের নাম “Liwa Shuhada e Bodor(লিওয়া শুহাদা-ই বদর)” এর অর্থ দাঁড়ায় ‘বদরের শহীদদের ব্রিগেড’ ! কিন্তু তারা গণতন্ত্র কায়েমের জন্য মুজাহিদদেরকে হত্যা করছে। এই গ্রুপের (সম্ভবত)কমান্ডার ৩ জন আহত ও বন্দী মুজাহিদকে উপস্থাপন করে একটি ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করেছে। ভিডিওটি দেখুন..... http://www.youtube.com/watch?v=uCiimzRgXoY ভিডিওতে সে এই আয়াতটি (وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّه –সূরাহ আনফাল-৩৯) তিলাওয়াত করতে গিয়ে আয়াতের প্রথমাংশ তিলাওয়াত করেছে... “ওয়া ক্বাতিলুহুম হাত্তা লা ইয়াকুনুদ-দ্বীনু ফিতনাহ” এর অর্থ হয় “তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত না দ্বীন ফিতনার মধ্যে নিঃশেষ হয়ে যায়” । তার উদ্দেশ্যের সাথে তার পঠিত অংশ মিলে গেছে ! অর্থাৎ তারা দ্বীনকে ফিতনার মধ্যে নিঃশেষ করে দিতে চায় ! এভাবেই আল্লাহ তায়ালা মুনাফিকদের মুখোশ উন্মোচন করেন।
(বিঃদ্রঃ সময় স্বল্পতার জন্য বানান ভালোভাবে দেখে দিতে পারিনি। পরে ঠিক করে দিব ইনশাআল্লাহ। সবাই লেখাটি শেয়ার করে সিরিয়া সম্পর্কে মানুষকে পরিষ্কার ধারণা পেতে সাহায্য করুন)
(অসমাপ্ত। এ ব্যাপারে আরো লিখবো ইনশাআল্লাহ। )
বিষয়: বিবিধ
২১১২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ আমাদের দীনী ভাইদের সহায়ক হোন। আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন