আমি আজ কেঁদেছি অনেক ! আরো কাঁদবো !!
লিখেছেন লিখেছেন আলোর দিশা ০৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৮:০৬ রাত
গণতন্ত্রের সেবকদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় মা হারা ৩ জন মাসুম কন্যার আহাজারি আমাকে ভীষণভাবে কাঁদালো। ৩ জনের একজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। বাকি দু’জনের একজন কোলের শিশু। সে তার অসহায় পিতার কোলে বসে শুধু মা মা করে আর্তনাদ করছে। আর অন্যজনের বয়সও হয়তো ৫/৬ বছরের বেশী হবে না। ঘটনাটি দেখে একা একা অনেকক্ষণ ভীষণ কাঁদলাম। অসহায় পিতা শুধু বারবার বলছিলেন, “আমার এই ৩ মেয়ে কোন অপরাধে তাদের মায়ের আদর,সোহাগ,মমতা থেকে বঞ্চিত হলো ! কী দোষ ছিলো আমাদের !” এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। কিন্তু এসবের কোনই বিচার হবে না। কিন্তু কেনো ?
কারণ বিএনপি,জামাত কিংবা আওয়ামীলীগ যারাই এ কাজ করে থাকুক না কেনো, তাদের কোনো বিচার হবে না ! কারণ তারা সুমহান গণতন্ত্রের সৈনিক।আর গণতন্ত্রের সৈনিকেরা গানপাউডার কিংবা পেট্রোল বোমা মেরে নিরপরাধ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করলেও তা সন্ত্রাসবাদী কিংবা জঙ্গীবাদী হয় না। যেহেতু তারা গণতন্ত্রের সৈনিক এবং মারা গেছে সাধারণ নিরীহ মানুষ, তাই তা সন্ত্রাসবাদী হবে না এবং বিশ্ব-শান্তির হোতারা তাদের নিষিদ্ধ কিংবা সন্ত্রাসের ‘ট্যাগ’ও দিবে না। এ অবস্থায় গণতন্ত্রী,সমাজতন্ত্রী কিংবা ইসলামী গণতন্ত্রীরা তাদের ব্যাপারে কোন উচ্চবাচ্য কিংবা ফতোয়া জারি করবেনা। এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে কোন মায়াকান্নাও করবে না ।
অপরপক্ষে যদি কোন চিহ্নিত খুনী,জালিমের জুলুমের বাস্তবায়নকারী,মানব সমাজকে পশু-সমাজের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে অপরাধী কোন ব্যক্তি কিংবা সন্ত্রাসের গডফাদার কোন ইসলামী সংগঠন কর্তৃক মারা যেতো, তবে তা হতো আন্তর্জাতিক সন্তাসবাদ ! কারণ, এবার মেরেছে ইসলামপন্থী কোন দল, আর মারা গেছে গণতন্ত্রের এমন সব সুমহান যোদ্ধা যাদের ছাড়া গণতন্ত্র অচল ! এবার সেই বিশ্ব-শান্তির হোতারা তাদেরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী বলে চেঁচামেচি করতে থাকবে । অবশেষে তাদেরকে মনুষ্যবিহীন বিমান হামলা করে মারা হবে অথবা তাদের স্থানীয় এজেন্ট কর্তৃক আটক করে বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হবে !
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, এ ২য় অবস্থায় গণতন্ত্রী,সমাজতন্ত্রী এবং ইসলামী গণতন্ত্রীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে। উল্লেখিত প্রত্যেক গোষ্ঠী তাদের স্ব স্ব ফতোয়া নিয়ে হাজির হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ইসলামী গণতন্ত্রীরা কয়েকগুণ বেশী সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেয়ালে দেয়ালে কুরআনের আয়াত সম্বলিত পোস্টার লাগিয়ে দিবে.... “যে ব্যক্তি কোন নিরীহ মানুষকে হত্যা করলো,সে যেন পুরো মানবজাতিকে হত্যা করলো”, “ইসলামের নামে এটা হারাম সেটা হারাম” ইত্যাদি ইত্যাদি ! তাদের এই অতি সক্রিয়তার একটি কারণ হচ্ছে, বিশ্ব-শান্তির সেই ঠিকাদাররা যেনো তাদের উপর সদা সন্তুষ্ট থাকেন ! কারণ তাদের সন্তুষ্টি ছাড়া সুমহান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না এবং ইসলামী গণতন্ত্রও টিকে থাকে না !
এই যখন অবস্থা ! তখন আমি কী করবো ? আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি কাঁদবো ! আমি আরো কাঁদবো !! আমার প্রতিটি অশ্রুবিন্দু একেকটা বুলেট জন্ম দিবে,যা জালিমের তখত-তাউস উড়িয়ে দিবে। বিশ্ব-শান্তির ঠিকাদারের বেশ ধরা বিশ্ব-সন্ত্রাসীর বিষদাঁত উপড়ে ফেলবে। পৃথিবীর দিকে দিকে ছড়িয়ে থাকা মাজলুমের আহবানে সাড়া দিয়ে জালিমের হাত থেকে তাদেরকে উদ্ধার করবে। নিরপরাধ মানুষের আহাজারি যাদের কাঁদায় তাদেরকে আমি আহবান করছি আমার সাথে কান্নায় শরীক হওয়ার জন্য। এক সাথে সেই কান্নার প্রতীক্ষায় রইলাম।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন