ফিরে আসবে কি এই সোনার বাংলার হারানো অতীত???

লিখেছেন লিখেছেন এম কে মোস্তাক ৩১ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৩৬:২৮ সন্ধ্যা

এ দেশের শিল্প বাণিজ্য ধ্বংস করে বৃটিশ বেনিয়ারা। আজকের এই তলাবিহীন ঝুড়ির এক প্রান্তে বসে আমরা কল্পনা করতে পারি না বিপুল ঐশ্বর্যের ভান্ডার এই বাংলা কি বিশাল সম্পদের অধিকারী ছিল এদেশের মানুষ! কি গতিশীল অর্থনীতি বিরাজমান ছিল এখানে।

ফরাসী ডাক্তার ব্যবসায়ী পর্যটক বার্নিয়ার তৎকালীন বাংলা মুলুক সফর করে লিখেছেন, "বাংলার মত দুনিয়ার অন্য কোথাও বিদেশী বণিকদের আকৃষ্ট করার জন্য এত বেশী রকমের মূল্যবান সামগ্রী দেখা যায় না...(সুত্রঃ দুই পলাশির দুই মিরজাফর)

বাংলার এই বিপুল সম্পদের কারনেইতো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক বাংলাকে সোনার বাংলা বলে আখ্যায়িত করেছে।

এই বাংলা এতটাই সম্পদশালী ছিল যে আপনি আশ্চার্য হবেন। কারন তখনকার বাংলা আর এখনকার বাংলা পুরোটাই বিপরীত (69 এর মত)।

"১৯৫৭ সালের আগে আরমেনিয়াসহ ইউরোপের ৭টি দেশের হাজার হাজার নাবিক শত শত জাহাজ নিয়ে বাংলার নদীতে পণ্য খরিদ করে ফিরতো অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে কেবল মসলিন, মোটা সূতী বস্ত্র, রেশম ও রেশমী বস্ত্র ইউরোপ ও জাপানসহ সারা বিশ্বে রফতানি হতো দশ/বার হাজার কোটি টাকার। বাংলাকে বলা হতো সারা ইউরোপের বাজারগুলোর কাপড়ের গুদাম; নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-কিশোর মিলিয়ে ন্যূণ ২৫ লাখ বস্ত্রশিল্পী নিয়োজিত থাকতেন কাপড় তৈরীর কাজে। গংগার পথে পাটনা হয়ে মধ্য ভারতে এবং করোমন্ডল উপকূলে, এমনকি পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে চাউল রফতানি হতো; আফিম রফতানি হতো চীন জাপানে, চিনি রফতানি হতো আরব, ইরান, ইরাক অঞ্চলে। সল্টপিটার প্রেরিত হতো ইউরোপে। লবণ চালান হতো মধ্য ভারত ও আসামে। মরিচ, আদা ও দারুচিনি রফতানি হতো ইউরোপে ও মধ্যপ্রাচ্যে- সব মিলিয়ে ন্যূণ ১৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য বাংলা থেকে বিশ্বের বাজারে ছড়িয়ে পড়তো।"(ইতিহাসের অন্তরালে ফারুক মাহমুদ, পৃঃ২১৮)

সূত্রঃ দুই পলাশির দুই মিরজাফর।

আর এই বিশাল রপ্তানির বিপরীতে যা আমদানী হতো তা শুধু ধনী বাংগালীদের আরাম-আয়েশ ও বিলাশিতা করার জন্য।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজ এই সোনার বাংলার মানুষ না খেয়ে মরে। যে বাংলা এক সময় সম্পদে ভরপুর ছিল, যে বাংলা থেকে বৃটিশরা সম্পদ লুট করে নিজেদের চাহিদা মেটাতো আজ সেই বাংলাকে কেন সাহায্যের জন্য হাত বাড়াতে হয় সারা বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর নিকট ???

কেন এত সুন্দর গৌরবোজ্জল বাংলার এই করুন পরিনতি, কোন উত্তর আছে আপনাদের কাছে???

এর কারন কি বলতে পারবেন আপনারা???

আমার দৃষ্টিতে এর কারন হলো এই বাংলায় যুগে যুগে মিরজাফরের মতো কিছু বিশ্বাসঘাতক কুলাঙ্গারের আগমন ঘটেছিল যারা দেশের স্বার্থকে জ্বলান্জ্বলি দিয়ে নিজেদের স্বার্থটাকে সবসময় বড় করে দেখেছে।

আর এই বিশ্বাসঘাতকতা এখন বন্ধ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।

তাই আজ সময় হয়েছে আমাদেরকে একতাবদ্ধ হয়ে এসকল বিশ্বাসঘাতকদের চিন্হিত করে এমন শাস্তি দেয়া যেন আগামিতে বাংলাদেশের আর কোন ক্ষতি করার সুযোগ না পায়।

বিষয়: বিবিধ

২০৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File