একটু সতর্ক হতে দোষের কি?????

লিখেছেন লিখেছেন ভালো পোলা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:৪৮:৫৭ সন্ধ্যা

নতুন কিছু প্রতারনার কৌশল।

নিজে প্রতারণা থেকে বাঁচুন,

অন্যকে জানাতে শেয়ার করুন।

==============================

========================

১) বিক্রয় ডট কমে একটা অ্যাড দেখল

ফারহান, ম্যাকবুক এয়ার ল্যাপটপ মাত্র

২৫০০০টাকা,দেখেই মাথা খারাপ। এত কম

কেন? অ্যাডে আবার লেখা বিদেশ

থেকে পাঠিয়েছে ব্যবহার

করতে পারিনা বলে সেল করে দিচ্ছি।

ফারহান ভেবে নিল অন্তত আর যাই হোক

নষ্ট তো না, ইউজ

করতে পারেনা বলে সেল করে দিচ্ছে।

অ্যাডের নাম্বারে ফোন দিতেই এক

সুকন্ঠি মেয়ে ফোন ধরে বলল, বিদেশ

থেকে গিফট দিয়েছে আঙ্কেল, ইউজ

করা হয়না বলে কম দামে সেল

করে দিবে। ফারহান আর অত চিন্তা করল

না, তাকে বলে দিল সে নিবে।

মেয়েটি জানাল মগবাজার

থেকে কালেক্ট করতে হবে।

ভালো লাগলে ক্যাশ টাকা দিতে হবে।

খুশিতে বাগবাকুম হয়ে মগবাজার গেল।

ল্যাপটপ তো দূর সাথে যা ছিল সব

রেখে দিল সেই অ্যাড

দেয়া ছিনতাইকারী দল।

২) সেল-বাজারে আইফোন ৫ এর অ্যাড

দেখে ফোন দিল ওমর ফারুক। দাম অনেক

কম মাত্র ১৬ হাজার। লোকেশন চট্টগ্রাম।

এত কম দামে পেয়ে সাথে সাথেই

ফোন। কথা হল সব কিছু ঠিক ঠাক। ৩০%

টাকা এডভান্স বাকিটা এস এ

পরিবহনে পণ্য পেয়ে। অ্যাডভান্স

দিয়ে দিল।

তারপর অ্যাড উধাও, নাম্বার অফ !আর

আসেনি তার আইফোন ৫।

৩) রিক্সায় করে ফার্মগেট

থেকে বসুন্ধরা সিটিতে শপিং করতে যাচ্ছিল

সবুজ।

হঠাৎ রিক্সাওয়ালা নীরব এক

জায়গাতে রিক্সা থামাল। ভয়

পেয়ে গেল সবুজ। রিকশাওয়ালার শরীর

কাঁপছে। লুঙ্গির

কাছা থেকে একটা ছোট্ট প্যাকেট বের

করে বলল এক

মহিলা যাত্রী ফেলে গেছে এই

গহনা টা। স্বর্ণের! ১ ভরির উপরে হবে।

রিক্সাওলা বলে কোন দোকানে সেল

করতে পারব না। সবুজ কিনবে কিনা?

যা দিবে তাই নেবে। দেখে আর

না করতে পারলনা। পকেটে ১১ হাজার

টাকা ছিল, সব দিয়ে কিনে নিল। ১১

হাজার টাকায় ৪৫ হাজার টাকার

উপরে পাবে। শপিং তো হবেই

সাথে একটা দামি মোবাইলও

নেয়া যাবে।

বসুন্ধরা সিটি তে গিয়ে জুয়েলারি দোকানে এটার

দাম জিজ্ঞেস করতেই সেলসম্যান

বলে দিল আমরা ইমিটিশন কিনি না !!!

৪) ফার্মগেটে হাঁটছে রাজীব।

পথে একলোক দাড়া করিয়ে বল আমার

কাছে ২০ ডলার আছে, আমি ড্রাগ নেই

তাই ইমার্জেন্সি টাকা দরকার। মাত্র

৫০০টাকা দিলেই হবে। রাজীব ভাবল

নিয়ে নেই বন্ধুর মানি একচেঞ্জ

থেকে ক্যাশ করে নিব। লাভ হবে অনেক

টাকা। ৫০০টাকায় নিয়ে নিল। জিজ্ঞেস

করল আর আছে কিনা। লোকটা বলল এসব

সাথে নিয়ে ঘুরল পুলিশ ধরবে, জানেনই

তো টানা মাল। এক

বিদেশীরে পাইছিলাম, মালদার পার্টি।

ফোন নাম্বার নিয়ে নিল রাজীব, বলল ওই

ডলার যাতে কাউকে না দেয়, সব

সে নিবে। ফোন করে জানালেই কত

ডলার সে পরিমাণ টাকা নিয়ে আসবে।

ওই ২০ ডলার ক্যাশ করে নিল, কোন

সমস্যা হয়নি। পরের দিন ধার টার করে ২০

হাজার টাকার মত নিয়ে আসল, ৫০০ ডলার

দিবে। এবার দাম

বাড়িয়ে দিয়েছে কারণ তার নেশা নাই

এখন আর। রাজীব ভাবল তারপরেও প্রায়

ডাবল লাভ। ফার্মগেট পার্কের

সামনে দাঁড়িয়ে আছে, লোকটার

দেখা নেই,

মনে মনে ভাবছে লোকটা বেচে দিল

না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর দূর

থেকে লোকটাকে দেখা গেল।

কাছে আসতেই একটা খাম ধরিয়ে বলল

পুলিশ পিছনে পরছে তাই

টাকা টা দিয়ে কেটে পরতে। রাজীব

তাই করল। বাসায় আসার আগে খুলেও

দেখেনি খামে কি আছে।

কি আর হতে পারে একগাদা কাগজ ছাড়া !

৫)গাবতলি বাস

স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে কথা বলছে রাজু,

বাসা থেকে ফোন দিয়েছে মা,

মা জিজ্ঞেস করছে টাকা ঠিকঠাক

রেখেছে কিনা। সেও মাকে জানাল

হা টাকা ঠিক আছে, সাবধানেই

যাচ্ছে সে। যাবে আদাবর, বোনের

বাসা, সেখান থেকে পরের দিন

আইডিবি থেকে ছোট ভাইয়ের ল্যাপটপ

কিনবে। একটু পরেই

একটা মেয়ে আসল,টুকটাক কথা বার্তায়

রাজু তাকে জানাল আদাবর যাবে,

মেয়েটি বলল আমি ঢাকার তেমন কিছু

চিনি না, যাবো আঙ্কেলের বাসায়,

বাসাটা শ্যামলীতে। কিভাবে যাব?

রাজু প্রস্তাব দিল তার সাথেই যেতে।

শ্যামলীতে নামিয়ে দিয়ে যাবে।

মেয়েটা সামনের

সিএনজি দেখেয়ে প্রস্তাব দিল

সিএনজি তে যাবে এবং রাজুকে ভাড়া দিতে দিবেনা।

হাসি মুখে রাজু মেনে নিল।

ফলাফল - দিনে দুপুরে পথে পিস্তল

ধরে ব্যাগ মানিব্যাগ, মোবাইল সহ

যা যা ছিল

রেখে নামিয়ে দিয়ে সিএনজি উধাও ...!

৬) শফিক সাহেব

বাসে করে অফিসে যাচ্ছেন হঠাৎ তার

ফোনে অদ্ভুত নাম্বার থেকে কল আসল।

বলা হল রবি কাস্টমার কেয়ার

থেকে বলছি। আমাদের সিগনালে কিছু

সমস্যা হচ্ছে,আপনার মোবাইল ঠিক মত

সিগনাল ধরতে পারছেনা এতে এমন

হতে পারে যে সেটের

ব্যাটারি শর্টসার্কিট হয়ে আগুন

ধরে যেতে পারে।

আপনি দয়া করে আগামী ২ ঘণ্টা মোবাইল

অফ করে রাখবেন। ভুলেও মোবাইল অন

করবেন না। সাময়িক এই অসুবিধার জন্য

আমরা দুঃখিত। শফিক সাহেব অত কিছু

না ভেবে মোবাইল বন্ধ করে দিলেন।

কি দরকার অন রেখে বিপদে পরার। ওই

দিকে উনার ওয়াইফের কাছে ফোন দিল

কেউ, বলল শফিক সাহেবের বাস

এক্সিডেন্ট করেছে।

উনি ইমার্জেন্সিতে আছেন, জরুরী কিছু

ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং অক্সিজেনের জন্য

টাকা লাগবে। ৩০ মিনিটের মধ্যেই কিছু

টাকা বিকাশে দিতে হবে তা না হলে সাহায্যকারী কিছু

করতে পারবেন না, তিনি স্টুডেন্ট

হাতে টাকা নেই। ভদ্র

মহিলা দিশেহারা হয়ে তার

মেয়ে কে বললেন শফিক সাহেবের

মোবাইলে কল দিতে, মোবাইল বন্ধ।

উনারা বিশ্বাস করলেন যে শফিক সাহেব

আসলেই এক্সিডেন্ট করেছেন যেহেতু

উত্তরা থেকে মতিঝিল আসতেই অনেক

সময় লেগে যাবে তাই বাসায় যা ছিল

বিকাশ করে দিলেন

এবং মা মেয়ে আত্মীয় স্বজন

কে জানিয়ে সিএনজিতে করে মতিঝিলের

উদ্দ্যেশে রওয়ানা দিলেন।

টাকা পাঠানোর পর কথা হলেও

সিএনজি থেকে কল দিয়ে আর ওই

লোকের ফোন অন পাওয়া যায়নি।

মতিঝিল

যে ঠিকানা দিয়েছিলসেখানেও কোন

হাসপাতাল নেই। অনেক পরে শফিক

সাহেবের ফোন অন পাওয়া গেল

এবং বুঝতে পারলেন

যে উনারা প্রতারিত। শফিক সাহেব সুস্থ

আছেন।

৭) স্যামসাং এস ৪

কিনতে বসুন্ধরা সিটিতে গিয়েছিল

সাদি। অনেক দোকান ঘুরেও যখন দাম

কমাতে পারছিল না তখন

একটা ছেলে বলল একটা টানা সেট

আছে লাগবে কিনা? মাত্র ১৫হাজার

টাকা দিলেই হবে। সাদি চিন্তা করল কম

দামে যখন পাওয়া যাচ্ছে খারাপ কি।

দরদাম করে ১০ হাজার টাকাতে ঠিক

করে ফেলল। যে বসুন্ধরা সিটির পেছন

থেকে সেট টা হাতে নিবে এমন সময়

দেখল আরও কয়েকজন বখাটে মতন

ছেলে ওই দিকে আসছে। ভয়

পেয়ে গেল সাদি। কিছুক্ষণের মধ্যেই

পেটে ছুড়ি ধরে টাকা, মোবাইল, এটিএম

কার্ড সহ যা পেল নিয়ে গেল সাদি কিছুই

করতে পারল না!

৮) ফেসবুকে রিয়ার পরিচয় নিলয়ের

সাথে। দেখতে অনেক স্মার্ট,

বড়লোকের ছেলে। ঈদের

শপিং সাথে নিলয়ের সাথে দেখা ২টাই

হবে ভেবে নিলয়কে বসুন্ধরা সিটিতে আসতে বলল।

যদিও নিলয় বলেছিল পিঙ্ক

সিটিতে দেখা করতে।

বসুন্ধরা সিটি তে দেখা হল দুজনের।

দেখতে বেশ স্মার্ট। নিলয় জানাল

সে মোবাইল কিনবে। রিয়া যেটা চয়েস

করবে সেটাই কিনবে। খুশীতে বাকবাকুম

হয়ে রিয়া নিলয়ের সাথে মোবাইল

দেখতে গেল, কয়েকটা দোকান

ঘুরে রিয়ার পছন্দ হল

সনি এক্সপেরিয়া জেড। নিলয়ও বলল

এটা নিয়ে নিবে। দাম দর হয়ে গেল।

মোবাইলে সিম লাগিয়ে নিলয় বলল

তুমি একটু বস আমি সামনেই আছি,

এখানে নেটওয়ার্কে সমস্যা। কল

করে চেক করে আসি। দোকানের

সামনে থেকে কখন যে হারিয়ে গেল

নিলয়, রিয়া টেরও পেল না। নিলয়ের

নাম্বার ও বন্ধ। ফেসবুক আইডিও ডিএকটিভ।

কোন ছবিও সেভ করে রাখিনি সে।

দোকানদার কিছুক্ষণ পরপর জিজ্ঞেস

করছে যে সাথের লোক কই? এখন

রিয়া কিভাবে বলবে সে নিলয়ের

প্রতারণার স্বীকার। ওর শপিং এর

টাকা এবং জমানো টাকা থেকে মোবাইলের

দাম দিতে হবে।

৯) নিউমার্কেট থেকে জিনস কিনল

আতিক। দোকানে মারাত্মক ভিড়। ১

হাজার টাকার নোট দিয়ে পে করল সে।

কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসবে এমন সময়

জাঁদরেল মত এক লোক হাত চেপে ধরল।

বলল টাকা না দিয়ে কই যান? আতিক যতই

বলে টাকা দিয়েছে সেলস-ম্যান গুলোও

বলে না টাকা দেয়নি। আতিক

কোনভাবেই

বুঝাতে পারে না টাকা টা সে আসলেই

পে করেছিল। জাঁদরেল মত লোকটি বলল

তাড়াতাড়ি টাকা দেন নাহলে চোর

বলে গণধোলাই দিব। দিশেহারার মত

চারদিকে তাকালেও

কারো চোখে তার প্রতি সহমর্মিতার

ছোঁয়া দেখতে পেল না। এভাবেই কিছু

মানুষ সহজ সরল পেয়ে টাকা রেখে দেয়।

১০) আসলাম বাবুর অভিজ্ঞতা: জুলাই ১২,

২০১৪, রাত ১০;৩০ মিনিট এ মহাখালি ফ্লাই

ওভার ব্রিজ এর গোঁড়া থেকে বাস এ

উঠবো, অপেক্ষায় আসি ২৭ নাম্বার বাস

এর জন্য। এই মুহূর্তে একটা বাস আসল অন্য

একটা বাস,খালি বাস দেখে আমার

সাথে আরও ২ জন ছিল, তাদের

সাথে আমিও বাস

এ উঠলাম, একটু পরে বাস ভাড়া দিলাম ১০

টাকা, খিলখেত নামবো। শুধু দেখলাম বাস

এর মেইন দরজা লাগিয়ে দিল আর

সাথে সাথে ৪-৫ জন লোক আমার

গলা চেপে ধরল হাত আর চোখ

বেধে ফেললো সাথে থাকা iphone,

3000 tk নগত, নরমাল symphony mobile,

নিয়া নিল। আর

ফেলে দিলো আশুলিয়া এর

মধ্যে একটা ঝোপ এর ভিতর। সাথে আর ও

২ জন কে। কোন রকম

জানে বেঁচে ফিরলাম। কিছু দূর

সামনে এসে একটা চা এর দোকান এ কিছু

লোককে বললাম তারা সাহায্য করলো, রুম

মেট কে কল দিলাম, আজিমপুর

থেকে নিয়া আসল বাসায়। গলায় দাগ

হয়ে আছে। এখন সুস্থ আছি।

বিষয়: বিবিধ

১২৬৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268728
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:২০
ফেরারী মন লিখেছেন : Surprised Surprised Surprised ও মাই গড। সতর্ক করার জন্য Rose Rose Rose
268866
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:৩৮
ওরিয়ন ১ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভাবতে গা শিউরে উঠে, আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি। এর শেষ কোথায়?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File