শেখ হাসিনা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যত মামলা এই ৫ বছরে করেছে এত মামলা পৃথিবীর কোন দেশে কখনোই হয় নাই।
লিখেছেন লিখেছেন রায়হানমোসি ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:১২:১৪ সন্ধ্যা
মমলা নিয়ে একটি অসাধারণ কবিতা।
মামলাবাজী
আব্দুল হাই শিকদার
আমিও মামলা করতে জানি।
মামলা কাহাকে বলে উহা কত প্রকার-
উদাহরণ সহকারে তোকে আমি বুঝিয়ে দেব।
হলুদ সবুজ লাল গোলাপি বেগুনি,
কমলা ও আকাশি কালার,
একটা দুইটা নয়শত শত হাজার হাজার,
লক্ষ ও অযুত নিযুত,
ছোট বড় মাঝারি ধারার অগণন মামলা।
তোর ঘুম আমি হারাম করে দেব।
তুই উঠতে বসতে জাগরণে ঘুমে
সকালে দুপুরে রাতে প্রতিদিন প্রতিটি প্রহরে,
কেবল মামলা দেখবি।
চোখ মেলে তাকালেই থোকা থোকা মামলা,
স্তুপ স্তুপ মামলা,
দিগন্ত বি¯তৃত মামলা-
পাহাড়ের পর পাহাড়ের মতো মামলা-
সমুদ্র গর্জনের মতো তোর উপর আছড়ে পড়বে মামলা।
হিংস্র হায়নার মতো তোকে খুবলে খুবলে খাবে মামলা।
ভয়াল অজগরের মতো তোকে গিলে খেতে আসবে মামলা।
গ্রামে গ্রামে তোকে খুঁজে বেড়াবে মামলার বন্য কুকুর।
লোকালয় থেকে তুই পালিয়ে যাবি বনে,
বনে তোকে খেতে আসবে মামলার রয়েল বেঙ্গল।
স্থল ত্যাগ করে জলে তুই খুঁজবি আশ্রয়,
তোকে আপ্যায়ন করতে আসবে দাঁতাল কুমির।
মামলার ভয়ে তুই ভিটেছাড়া হবি।
মামলার ভয়ে তুই গ্রামছাড়া হবি।
মামলার ভয়ে তুই শহরছাড়া হবি।
মামলার ভয়ে তুই দেশছাড়া হবি।
মামলার ভয়ে তুই বিশ্বছাড়া হবি।
বিশ্বছাড়া না হওয়া পর্যন্ত তোর নামে দেয়া হতে থাকবে,
একটার পর একটার পর একটা মামলা।
তোর ভাতের থালার উপর মাছি ভন ভন করবে।
তোর সময় নেই।
অভুক্ত তুই দৌড়াবি এক আদালত থেকে অন্য আদালতে।
তোর বউ ভাগিয়ে নিয়ে যাবে পাড়ার খলিল-
তুই দৌড়াবি এক আদালত থেকে অন্য আদালতে।
তোর হাহাকার হাপিত্যেস নিয়ে ইয়ার্কি করবে মহল্লার ছেঁচড়া মাস্তান,
তুই দৌড়াবি এক আদালত থেকে অন্য আদালতে।
দৌড়াতে দৌড়াতে তোর প্রাণ কন্ঠার কাছে চলে আসবে।
কিন্তু তুই মরবি না, তোকে বাঁচিয়ে রাখা হবে-
দৌড়াতে দৌড়াতে তোর জিহ্বা বাইরে বেরিয়ে আসবে একহাত।
তোর জীবন আমি মামলা দিয়ে ভরে দেব।
তোর কোলাহলের পরতে পরতে থাকবে মামলা।
তোর নিভৃতির শিরায় শিরায় থাকবে মামলা।
তোর কাপড় চোপড় আমি মামলা দিয়ে বানিয়ে দেব।
ক্ষুধার্ত তুই খেতে বসে দেখবি ভাত নেই-
ঋাতের বদলে থালাময় মামলার কাঁকর,
সেই কাঁকর তুই গিলতে থাকবি বেহুঁশের মতো,
আমি কাঁকর দিয়ে তোর দাঁত ভেঙ্গে দেব।
তোর ঘুমের বিছানা আমি মামলা দিয়ে বানিয়ে দেব।
মামলার বিছানায় শুয়ে তুই স্বপ্ন দেখবি-
ভয়াবহ, বিষাক্ত, ভয়ংকর বীভৎস সব মামলা,
তোর চৌদ্ধগুষ্ঠি যা কোনোদিন কল্পনাও করেনি।
পাছাড় চামড়া ওঠা নেড়ি কুত্তার মতো মামলা।
ক্রুর গোখরোর মতো হিসহিসে মামলা।
জাত কেউটের মতো মৃত্যুনীল মামলা।
রক্তপিপাসু ড্রাকুলার মতো মামলা।
পচা গলিত লাশের মতো মামলা।
আগুনে অর্ধদগ্ধ যন্ত্রণার মতো মামলা।
বিষ্ঠা ও পুঁজের মতো দুর্গন্ধময় মামলা।
অক্টোপাশের মতো জটিল কুটিল মামলা।
মামলার ভারে তোর মেরুদন্ড বাঁকা হয়ে যাবে
মামলার ভারে তোর দৃষ্টিশক্তি ঘোলা হয়ে যাবে।
মামলার চাপে তোর যৌনশক্তি লোপ পেয়ে যাবে।
শ্রান্ত ক্লান্ত তুই চিৎ হয়ে পড়ে যাবি গাছের ছায়ায়,
পাখিরা তোর মুখে হাগু করে দেবে।
সূর্যের আলো হয়ে উঠবে সীমারের তীর।
মোহন জোছনাও তোর গায়ের চামড়া পুড়িয়ে দেবে।
আর তোর জিহ্বা বাইরে বেরিয়ে আসবে কুকুরের মতো এক হাত।
আমার নাম স্বাধীনতা।
আমার মায়ের নাম দেশ।
আমি গণতন্ত্র বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা।
আমি এখন ভীষণ ব্যথিত শাপলা।
হাঙরের দাঁতের মতো ক্রুদ্ধ জাতীয় সৌধ।
আমি লাখো শহীদের রক্তে ভেজা নিশান।
আমি সিরাজের প্রাণদান,
আমি ঈশা খানের তরবারি,
আমি মজনু শাহর তসবি,
আমি শরীয়তুল্লাহর শুভ্রতা,
আমি বরকতের রক্ত,
আমি ১৯৭১ সাল,
-মামলার ঠেলায় তোর বাপের নাম আমি ভুলিয়ে দেব।
তোর নাক দিয়ে-
তোর চোখ দিয়ে-
তোর মুখ দিয়ে-
তোর কান দিয়ে-
তোর পিছন দিয়ে আমি মামলার পর মামলা ঢুকাবো।
-তোর মামলার সাধ চিরতরে মিটিয়ে
তবে আমি বাড়ি ফিরে যাব।
আমার শান্ত স্নিগ্ধ কোমল শ্যামল বাড়িতে।
আমার লাখো শহীদের স্বপ্নে গড়া বাড়িতে।
আমার ফুল্লরা, আমার শবরী,
আমার মলুয়া মদিনার গন্ধমাখা বাড়িতে।
সমাপ্ত
বিষয়: বিবিধ
১১০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন