ধর্মীয় জাগরণের নাম উসকানী।
লিখেছেন লিখেছেন রায়হানমোসি ১৪ মে, ২০১৩, ১০:০৬:৩৯ সকাল
আমার দেশ বন্ধ করেছে সরকার এবং বলছে ধর্মীয় উসকানী দেবার জন্য পত্রিকাটি বন্ধ হয়েছে। দিগন্ত টেলিভিশন এবং ইসলামিক টেলিভিশনও নাকি একই কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু পত্রিকার কলাম, সম্পাদকীয় বা কোন নিউজ পড়লে অথবা টেলিভিশন দুটির ৫মে রাতের নিউজ দেখলে কোথাও ধর্মীয় উসকানীর নমুনা পাওয়া যাবে না। সরকার নিদ্দির্ষ্ট করে বলুক এই এই কথাগুলো ধর্মীয় উসকানীমূলক।
আসলে মুসলিমদের স্বার্থ কোথায় নিহিত, কোথায় তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কি ঘটছে, তাদের শত্র“রা তাদের বিরুদ্ধে কি ধরণের কর্মকান্ড চালাচ্ছে সে সব বার্তা মুসলিম জনগোষ্ঠির কাছে পৌছানো একজন মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ পূর্বে দেখা গেছে বৃটিশ(উগ্র খৃষ্টান সাম্প্রদায়িক শক্তি) ও সাম্প্রদায়িক বর্ণবাদী হিন্দুরা শোষণ নির্যাতন নিষ্পেষণ করতে করতে একপর্যায়ে এদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠিকে পথের ভিখারীর চেয়েও নিন্ম পর্যায়ে নামিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় ছিল তখনো তাদের ঘুম ভাঙ্গেনি। কিন্তু তবুও একসময়ে তাদের ঘুম ভাঙ্গানো হলো। কারা তাদের ঘুম ভাঙ্গিয়েছিল? সাংবাদিক। কবি। শিল্পি। কবি নজরুল ইসলামের একের পর এক কাব্যগ্রন্থ সরকার বাজেয়াপ্ত করতে থাকলো। কবিকে কারাগারে রাখা হলো। যেন মুসলিম জনগোষ্ঠির ঘুম না ভাঙ্গাতে পারেন। শিল্পি আব্বাসউদ্দীন সারা দেশ চষে বেড়ালেন। তাঁর গান মানুষকে জাগিয়ে তুললো। কিন্তু তারও আগে থেকে মওলানা আকরম খাঁ, মুনশী রেয়াজউদ্দীন, এবং আরো সব সাংবাদিকরা তাদের প্রত্রিকার মাধ্যমে (মোহাম্মাদী, সুধাকর, আজাদী ইত্যাদী) মুসলমানদেরকে জাগিয়ে তোলার কাজ করতে শুরু করেছিলেন। সে সময় মুসলিম যত শিক্ষক, সাহিত্যিক, আইনবিদ, রাজনীতিবিদ সবাই মুসলিম জাগরণে অক্লান্তভাবে কাজ করে গেছেন। তাঁদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। এ দেশে যতদিন মুসলমান থাকবে তাঁদের নাম স্মরণ করবে এবং প্রেরণা পাবে।
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছর ধরে মুসলমানদের বিভিন্ন স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। নবীজী স:-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষরা অসন্মানকর উক্তি করছে, পবিত্র কোরআনের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে, মহান আল্লাহর বিরুদ্ধেও বাজে কথা বলা হচ্ছে। মুসলিম নামধারী হয়েও বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা ধর্মের বিরুদ্ধে এমন সব কথা বলছেন যা মুসলিম নামবিশিষ্ট্য হয়ে বলাটা চরম অন্যায় এবং যা মুসলিম জনগোষ্ঠির সাথে প্রতারণার শামিল। পাঠ্য পুস্তকে দেবদেবীর নামে পশু জবাইকে হালাল হিসেবে দেখানো হচ্ছে। স্বয়ং সরকার প্রধান তৌহিদকে অস্বীকার করেছেন তার বিখ্যাত উক্তির মাধ্যমে ‘...গজে চড়ে...।’ ইসলামের এমন চরম অবমাননা সুলভ উক্তিতেও‘ তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এমন সব বহুবিধ অনাচার করা হচ্ছে। তবুও বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠির এদেশে মুসলমানরা নিরব। তাই মুসলমানদের জাগিয়ে তোলার জন্য কবি নজরুল ইসলাম, মাওলানা আকরম খাঁ, ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মত পত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছিলেন মাহমুদুর রহমান, দিগন্ত এবং ইসলামী চ্যানেল। একসময় যা ছিল মুসলমানদের জন্য জাগরণের বিষয়, আজ শব্দের মারপ্যাঁচে তাকে বলা হচ্ছে উসকানী। কারা বলছে? মুসলমান জনগোষ্ঠির যারা প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার নিয়েছেন তারাই। এই যে ভয়ানক একরকম কর্মকান্ড, নিজের পাত্র ছিদ্র করে তাতেই খাবার খাওয়ার মানসিকতা,
এইসব লোকদের স্থান ইতিহাসে কিভাবে হবে তা স্পষ্ট, কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন ঘটনা অতীতে ঘটেছে। তবে মাহমুদুর রহমানের সাথে কি মওলানা আকরম খাঁ, মুনশী রেয়াজউদ্দীন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লা, শেরে বাংলা, কবি নজরুল, আবুল মুনসুর আহমেদ... এমন সব যুগ নায়কদের বিরুদ্ধে আওয়ামী সরকার ধর্মীয় উসকানীর জন্য মামলা করবে! করতেও পারে।
এখনো ঘুমন্ত (কাপুরুষজনিত ঘুম) মুসলিম জনগোষ্ঠির সামনে অন্ধকার।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন