হেফাজতের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যা বললেন

লিখেছেন লিখেছেন রায়হানমোসি ০৪ মে, ২০১৩, ০৮:২৮:২৩ সকাল



(মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তাতে ইসলাম সম্পর্কে তাঁর অনীহা জনিত অজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ অশিক্ষিত মানুষের ব্যপারে ইসলাম সম্বন্ধে অজ্ঞতা সাজে। আর তারা অবলীলায় স্বীকার করেন যে তারা সে সম্পর্কে তেমন জানেন না। কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বহু বিষয়ে ডক্টরেট কেনা ব্যক্তিত্ব , তিনি সবই জানেন। কিন্তু সাধারণ মগজহীন মাথায় অনেক সময় তার কথায় লজ্ঝা লাগে, সে লজ্জা এই কারণে যে পুরো বাংলাদেশের মানুষকে তখন অসভ্য নিকৃষ্ট অশিক্ষিত মনে হয়, তারাই তো প্রধানমন্ত্রীকে তাদের শাসন করার অধিকার দিয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর মাত্র দুটি কথার উপর মন্তব্য করবো...)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হেফাজতের ১৩ দফা দাবির অনেকগুলো বাস্তবায়ন করা আছে। বাকি দাবিগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

আজ শুক্রবার গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের ১৩ দফা দাবি নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি হেফাজতের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে আলোচনা করেন।

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে

হেফাজতের প্রথম দাবি, সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং ‘কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা’ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্ম সংবিধান থেকে বাদ যায়নি। বিসমিল্লাহ বলেই সংবিধান শুরু হয়েছে। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম লেখা রয়েছে।

ধর্মের অবমাননার শাস্তির বিধান আছে

আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুত্সা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে, হেফাজতের এই দাবির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের অবমাননার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান আমাদের স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে আছে। ২০০৯ সালে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন করা হয়েছে। সেখানেও বিধান আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্ম ও আমাদের প্রিয় মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে কুত্সা রটনার জন্য এখন পর্যন্ত চারজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সবার শাস্তি হবে।

নিরীহ আলেমদের গ্রেপ্তারের তালিকা দিন

শান্তিপ্রিয় নিরপরাধ আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, শাস্তিও হয়নি বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইসলাম পবিত্র ধর্ম। কেউ যদি ধর্মকে ব্যবহার করে জঙ্গিবাদী কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি হেফাজতের উদ্দেশে বলেন, ‘নিরীহ আলেম ওলামা গ্রেপ্তারের তালিকা থাকলে জানাবেন, ব্যবস্থা নেব।’

ধর্ম পালনে কোথাও বাধা দেয়নি সরকার

বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধা বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে—হেফাজতের এই দাবি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদসহ দেশের কোথাও ধর্ম পালনে কাউকে বাধা দেয়নি সরকার।

মোমবাতিতে অনীহা কেন?

হেফাজতের ইসলামের একটি দাবি হলো, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। এই দাবির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, মোমবাতির প্রতি তাঁদের এত অনীহা কেন? বিদ্যুত্ চলে গেলে সবাইকে মোমবাতি জ্বালাতে হয়। মোমবাতি ও মশাল ধর্মবিরোধী কোনো বিষয় নয়। পবিত্র মক্কা শরিফেও তাঁবুতে তাঁবুতে আলোর জন্য মশাল জ্বালানো হতো। ব্যভিচার আমরা পছন্দ করি না। ব্যভিচারের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

সৌদি আরবে অনেক ভাস্কর্য আছে

হেফাজতের আরও একটি দাবি হচ্ছে, মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সৌদি আরবে অনেক ভাস্কর্য আছে। এ ব্যাপারে তারা অনেক পারদর্শী। এ ছাড়া সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও আরব রাষ্ট্রগুলোতে ভাস্কর্যের উত্কর্ষ সাধিত হয়েছে। মূর্তি বানানো হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার জন্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কোনো অশ্লীল ভাস্কর্য তৈরি করা হবে না।

মন্তব্য

সৌদিআরব কি ইসলামের মানদন্ড? প্রধানমন্ত্রী ইসলাম বিরোধী কিছু দেখলে কেউ যদি সৌদিআরবের উদাহরণ দেয় তবে প্রধানমন্ত্রীরই উচিত উক্ত কথাটি বলা। দ্বিতীয়ত: যে আলো মনে জ্বালাবার কথা তা বাইরে মিথ্যা প্রতিকি রূপে মানুষ যখন অভ্যস্ত হয় তখন সে হয় মিথ্যাচারী, শুধু বাইরের আলো জ্বালাবার এই ভন্ডামী তাকে ভন্ড এবং প্রতারক করে তোলে। তার অন্তর হয়ে যায় অন্ধকার।

ধর্মের পাশাপাশি পার্থিব শিক্ষা নিতে হবে

ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে—এই দাবির ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়ে প্রথম শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে আমরা ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছি। যখন এটা করেছি, তখন তো কেউ এর বিরোধিতা করেন নাই।’ তিনি বলেন, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পার্থিব শিক্ষাও নিতে হবে।

মন্তব্য

ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পার্থিব শিক্ষা নয়, বরং পার্থিব শিক্ষাকে ধর্মের পবিত্রতায় সাজাতে হবে। যেখানে একজন আমলা ঘুষখোর এবং শাসকের দালাল হবে না সে হবে সৎ , যার মনে আল্লাহর ভয় থাকবে।



নারীর অবমাননা হয়, এমন নীতি নয়

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী নীতিতে সংশোধন করে একটি লাইন যুক্ত করা হয়েছে। আমরা নারীর অবমাননা হয়, এমন কোনো নীতি প্রণয়ন করব না।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ইসলাম ধর্ম প্রথম কে গ্রহণ করেছে? হজরত খাদিজা (র.)। তিনি একজন নারী। বিবি আয়শা নবীজির সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করেছেন। হজরত খাদিজার ব্যবসা পুরো আবর বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছিল। ইসলামের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে যিনি প্রথম শহীদ হন, তিনি একজন নারী, তাঁর নাম সুমাইয়া।

মন্তব্য

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সব মহিয়ষী নারীদের কথা আপনি বলেছেন তারাঁ ইসলামের জন্য করেছেন, ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য করেছেন। আপনিও ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য করেন তখন আপনার মুখে এই কথাগুলোর একটা তাৎপর্য থাকবে। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে অমুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে প্রশংসার বাণী, শুধু পার্থক্য আপনার নামটা মুসলিম নাম।

ইমাম, খতিবকে হুমকি দিলে ব্যবস্থা নেব

সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ এবং মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখানোসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে—এ দাবির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের যদি কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলেম ওলামাদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক প্রচার বন্ধ করা হবে

হেফাজতের অন্যতম একটি দাবি হলো—রেডিও, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেন ধর্মের বা ধর্মীয় লোকদের ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন না করা হয়, সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। রেডিও-টেলিভিশনে আলেম-ওলামাদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কোনো কিছু করা হলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং তা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘শরীয়া আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো, বা মদীনা সনদ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করবো’ এসব উক্তি কি ব্যঙ্গাত্মক নয়?



ধর্মের নামে জঙ্গিবাদী কাজ যেন না হয়

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারিদের ধর্মান্তকরণসহ সব অপতত্পরতা বন্ধ করতে হবে—হেফাজতের এই দাবির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পার্বত্য এলাকায় জোর করে ধর্মান্তরিত করা বন্ধে আইন অনুযায়ী কাজ করা হবে। পবিত্র ধর্মের নামে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড যেন কেউ করতে না পারে, এ জন্য আলেম-ওলামাসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

মন্তব্য

এ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব লোক মির্জা আযমের ভগ্নিপতি ছাড়া ধর্মের নামে কেউ জঙ্গিবাদী কার্যক্রম করেছে বলে দেশবাসি জানে না। এদেশে কোথাও জঙ্গিবাদ আছে বলে জনগনও মনে করে না। এই শব্দটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠেই শোনা যায়, তবে কি তিনি মা খাদীজা, মা আয়শা বা হযরত সুমাইয়া রা: দের মত যারা ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য যারা অর্থ ব্যয় করেছেন, জীবন দিয়েছেন যুদ্ধে গিয়েছেন তাদেরকে জঙ্গি বলছেন?

বিষয়: বিবিধ

১১৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File