বরিশালে রেজিস্টার্ড প্রা. বি. প্রতিবেদন তৈরির নামে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ

লিখেছেন লিখেছেন সোহানুর রহমান ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:০৩:১৬ দুপুর

সোহানুর রহমান, বরিশাল প্রতিনিধি :

রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয়গুলোর সার্বিক প্রতিবেদন তৈরির খরচের নামে লাখ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্যে নেমেছেন বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। কতিপয় শিক্ষক নেতার সহায়তায় সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২-৩ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এভাবে প্রতিটি উপজেলা থেকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং জেলার ১০ উপজেলায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সাধারণ শিক্ষকদের বলা হচ্ছে তাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা জেলা শিক্ষা অফিস ও মন্ত্রণালয়ে খরচ করা হবে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক সাধারণ শিক্ষক উপজেলা কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন তৈরির খরচ দেয়ার কথা স্বীকার করলেও অভিযোগ অস্বীকার করছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহআলম বলেছেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগ তিনিও শুনেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চাকরি জাতীয়করণে শিক্ষকদের কোন খরচ হওয়ার কথা নয়। যেসব শিক্ষা কর্মকর্তা উপর মহলে খরচের কথা বলে টাকা তুলছেন তাদের মুখোশ খুলে দেয়ার জন্য তিনি সাধারণ শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ১ জানুয়ারি ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে সারাদেশের রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয়করণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গত ডিসেম্বর থেকে বেতন পাচ্ছেন না।

জাতীয়করণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ করে বেতন নিশ্চিত করার জন্য আগামী ৬ এপ্রিলের মধ্যে সারাদেশের রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রতিবেদন (অবকাঠামো এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা) মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন তৈরির জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে প্রত্যেক উপজেলার প্রতিবেদন ৪ এপ্রিলের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দফতরে জমা দিতে হবে এবং জেলা থেকে ৬ এপ্রিলের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বরিশাল জেলায় ১০ উপজেলায় মোট ৫২৯টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতি বিদ্যালয়ে ৪ জন করে কমপক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ২১২৬ জন।

তাদের কাছ থেকে গড়ে ২ হাজার টাকা আদায় করা হলে মোট ৪২ লাখ ৩২ হাজার টাকা আদায় করবেন উপজেলা কর্মকর্তারা। ওই টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়া হবে।

মুলাদী উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজ আলম বলেন, কর্মকর্তারা কোন টাকা তুলছেন না। উপজেলা শিক্ষা অফিসের কিছুসংখ্যক কর্মচারী ও শিক্ষক নেতারা কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করছেন।

জেলা রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান জানান, তিনিও অভিযোগ শুনেছেন। তবে টাকা তোলার বিষয়ে শিক্ষক নেতাদের সহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, প্রতিবেদন তৈরিতে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করছেন শিক্ষক নেতারা।

বিষয়: বিবিধ

১১৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File