ঐতিহাসিক বালাকোট দিবস (৬ই মে ১৮৩১)
লিখেছেন লিখেছেন টোকাই বাবু ০৬ মে, ২০১৪, ০৫:০০:৩১ বিকাল
প্রিয় ব্লগার ভাই-বোনেরা, মেহেরবানি করে ধৈর্য্য ধরে পড়ার অনুরোধ রইল।
স্ম র ণ
সাইয়েদ আহমদ বেরেলভি,
উপমহাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ইতিহাসে ৬ মে একটি স্মরণীয় দিন। ১৮৩১ সালের এই দিনে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের বালাকোট প্রান্তরে শাহাদতবরণ করেন সাইয়েদ আহমদ বেরেলভি ও শাহ ইসমাইলসহ ১৩৫ জন মুজাহিদ। মুসলিম বাহিনীর পক্ষে ছিলেন মাত্র ৯০০ মুজাহিদ, অন্য পক্ষে ছিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ও প্রশিক্ষিত ২০ হাজার সৈন্যসংবলিত শিখবাহিনী এবং স্থানীয় বিশ্বাসঘাতক চক্র।
বালাকোট যুদ্ধের প্রধান নায়ক ছিলেন সাইয়েদ আহমদ বেরেলভি। তিনি ১৭৮৬ সালের ২৯ নভেম্বর উত্তর প্রদেশের রায় বেরেলিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮০৪ সালে দিল্লি গিয়ে শাহ আবদুল কাদেরের কাছে আরবি-ফারসি ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। একপর্যায়ে নবাব আমির খানের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু কয়েক বছর পর আমির খান ইংরেজদের সাথে সন্ধি সূত্রে আবদ্ধ হওয়ায় তিনি শাহ আবদুল আজিজের খেদমতে হাজির হন। তিনি আধ্যাত্মিক সাধনায় অনেক উচ্চশিখরে আরোহণ করেছিলেন। আবদুল আজিজের ভ্রাতুষ্পুত্র শাহ ইসমাইল ও জামাতা আবদুল হাই তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। তার দাওয়াতে প্রায় ৪০ হাজার হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ইসলাম গ্রহণ করেন। ১৮২২ সালে তিনি ৭৫৩ জন যাত্রী নিয়ে পবিত্র মক্কা নগরীতে যান। হজ করে ১৮২৪ সালে রায় বেরেলি ফিরে আসেন।
মুসলিমসমাজে যেসব কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অনৈসলামিক রীতি-রেওয়াজ ঢুকে পড়েছিল; সেগুলো দূর করে ইসলামি রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় স্থানীয় শাসক, সরদার ও সাধারণ জনতা তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। ৯০০ মুজাহিদ একটি বৃহৎ শিখবাহিনীকে পরাজিত করেন। এতে মুজাহিদ বাহিনীর প্রভাব চার পাশে ছড়িয়ে পড়ে। দিন কাটত তাদের যুদ্ধের ময়দানে আর রাত কাটত জায়নামাজে। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হতে পেরেছিলেন। সর্বদাই তারা একমাত্র আল্লাহর ওপরই নির্ভর করতেন।
বালাকোটের যুদ্ধ পর্যন্ত ১১টির অধিক যুদ্ধে মুজাহিদ বাহিনী শত্রুর মোকাবেলা করেছিল। মুসলিম বাহিনী ৩০ হাজার শিখ সৈন্যের এক বিশাল বাহিনীকে পরাজিত করে। প্রায় এক লাখ স্থানীয় মুজাহিদ সাইয়েদ আহমদের পতাকাতলে সমবেত হন। কিন্তু শিখ সেনাপতি বুধ সিংহের প্রলোভনে পেশোয়ারের সরদারেরা ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা সাইয়েদ আহমদকে বিষপানের মাধ্যমে হত্যা করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়। সম্মুখসমরেও তারা শিখদের সাথে যোগ দেয়। ফলে মুজাহিদ বাহিনী পরাজিত হয়।
সাইয়েদ আহমদ বেরেলভি আন্দোলনের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল এ উপমহাদেশকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করা। তাদের পথ ধরেই স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছেন উপমহাদেশের মানুষ। অবশেষে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। অথচ উপমহাদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবনদানকারী এ মহান শহীদেরা আজো উপেক্ষিত।
বালাকোটের বিপর্যয় ও কারণ :
বালাকোট দেখেছি। সেই সাথে সৈয়দ আহমদ বেরেলভি শহীদ বর্তমান পাকিস্তানের যেসব জায়গায় ঘুরেছিলেন সেসব জায়গাও। পেশোয়ার, সোয়াত তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য। সৈয়দ সাহেব বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ ও লèৌ শহরের মাঝে রায়বেরেলি শহরে ১৭৮৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পরে বড় হয়ে তিনি অবশ্য দিল্লি, বাংলা, মক্কা-মদিনা প্রভৃতি শহর ও এলাকা সফর করেন এবং তার প্রভাব ছড়িয়ে দেন।
সৈয়দ সাহেব ও তার অনুসারীদের অমুসলিমরা ‘ওয়াহাবি’ বলে প্রচারণা চালায়, যেমনভাবে তারা সব মুসলিমকে ‘মোহামেডান’, ইসলাম ধর্মকে ‘মোহামেডান ধর্ম’ বলে প্রচার করত। না আরবের আবদুল ওয়াহাব নিজের ইসলামি কার্যক্রমকে ওয়াহাবি বলেছিলেন, না তথাকথিত ওয়াহাবি কার্যক্রম মূলত ইসলামবিরোধী ছিল। আবদুল ওয়াহাব ইসলামের সেবা করেছেন, যদিও কেউ কেউ তার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেন। দ্বিমত থাকতেই পারে কিন্তু মৌলিক বিষয়ে না হলেই হলো।
যাই হোক অ্যাবোটাবাদ-কাকুল শহর পেরিয়ে ছোট্ট একটা পাহাড়ি নদীর পশ্চিম পাড় ধরে বালাকোটে পৌঁছি। ছোট্ট একটা পাহাড়ি শহর এটি। বাজারের এক পাশে নদীর ধারে একটা মাজার। মানুষেরা সেখানে যায় দোয়া করতে। এটাই সৈয়দ সাহেবের মাজার নামে মশহুর। এ নিয়ে মতভেদও আছে, জানালেন স্থানীয়রা আমাকে। আসলে সৈয়দ আহমদের কর্তিত শির নদীর পানিতে বাহিত হয়ে বালাকোটের দক্ষিণে গরহি হাবিবুল্লাহ গ্রামে পৌঁছলে সেখানে তা দাফন করা হয়। সেখানে মাজার আছে নদীর ধারে। বালাকোটেও আছে মাজার। মনে হয়, বালাকোটের মাজারটা তার দেহের অবশিষ্টাংশের। মানুষ দুই জায়গাতেই যায় দোয়া-দুরূ পড়তে।
বালাকোটের উত্তরে একটা ছোট ঝিল পার হয়ে বালাকোটের কয়েকজন প্রখ্যাত শহীদের কবর আছে। তন্মধ্যে শাহ মাওলানা ইসমাইল শহীদের কবর অন্যতম। কবরের নামফলকে তার নাম স্পষ্ট দেখলাম। ১৮৩১ সালের ৬ মে বালাকোটের বিপর্যয়ে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরাট ক্ষতি হয়েছিল। বালাকোট বিপর্যয় না হলে ইংরেজদের হয়তো তথাকথিত সিপাহি বিদ্রোহের আগেই উপমহাদেশ ছাড়তে হতো।
সৈয়দ সাহেব সরাসরি ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ না করে শিখ অধিকৃত এলাকায় কেন জিহাদ শুরু করলেন? যতটুকু বুঝতে পেরেছি তা হলো, এই উপমহাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ইংরেজ হানাদারদের বের করতে হলে পশ্চিমের মুসলিম উপজাতিদের সাহায্য প্রয়োজন ছিল। অথচ এ সময় শিখরা সেখানে ক্ষমতায়। তারা আবার স্থানীয় মুসলিমদের ওপর, এমনকি নারীদের ওপরও জুলুম করছিল। অন্য দিকে তারা ইংরেজদের মিত্র। এ জন্যই হয়তো সৈয়দ আহমদ পশ্চিমে তার শিবির স্থাপন করেছিলেন। কিছুটা কাজও হয়েছিল। পেশোয়ারকেন্দ্রিক ইসলামি স্বাধীন প্রশাসন তিনি শুরুও করেছিলেন; কিন্তু স্থানীয় মুসলমানদের কিছু লোক শিখ ও ইংরেজদের ফাঁদে পড়ে সৈয়দ সাহেবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। পরে ইংরেজরা শিখদের সেই মিত্রতার ‘প্রতিদান’ দেয় শিখ রাজ্যটাই দখলে নিয়ে। সৈয়দ সাহেবের ইচ্ছা ছিল মুসলিম উপজাতিদের নিয়ে শিখ ও ইংরেজদের মোকাবেলা করা; কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছাই চূড়ান্ত। বালাকোটের বিপর্যয়ের পরও ঈমানদার মুসলমানরা ১৮৫৭ সালে সশস্ত্র সংগ্রাম করেন। এর পরও ইংরেজরা না যাওয়া পর্যন্ত খোরাসানিরা শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিল। সীমান্তের ইপির ফকিরের ব্রিটিশবিরোধী জিহাদের কথা কে না জানে।
আল্লাহ কুরআনে বলেন :
‘যুদ্ধে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যারা আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ মান্য করেছে তাদের মধ্যকার পুণ্যাত্মা ও মুত্তাকিদের মহাপুরস্কার রয়েছে।’ (৩ সূরা, আলে ইমরান : ১৭২ আয়াত)।
বালাকোটের ‘আঘাত’ পাওয়ার পরও মুমিন মুসলমানেরা ব্রিটিশ দখলদারবিরোধী লড়াই চালিয়ে গেছে।
ইসলাম জয়-পরাজয়কে কমই গুরুত্ব দেয়। দায়িত্ব পালনে আল্লাহ নিয়ত দেখবেন। তাই বালাকোটের পরাজয়কে পরাজয় বলা যেতে পারে না। ওহুদ ও কারবালাকে কি পরাজয় বলা হবে? আল্লাহ কুরআনে বলেন :
‘পরকালের মুক্তির বিনিময়ে যারা পার্থিব জীবন বিক্রয় করে, তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করুক, যে আল্লাহর পথে জিহাদ করে নিহত অথবা হয় বিজয়ী, সর্ব অবস্থায়ই আমি তাকে মহাপুরস্কার প্রদান করব।’ (৪, সূরা নিসা; ৭৪ আয়াত)।
‘বলো, তোমরা অপেক্ষা করতে থাকো আমাদের দু’টি মহলের (শহীদ বা গাজী) একটির জন্য।’ (৯, সূরা তাওবাহ : ৫২ আয়াত)।
‘মুসলমানদের কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূরণ করেছে, ওদের কেউ শহীদ হয়েছে, কেউ প্রতীক্ষায় আছে; কিন্তু তারা তাদের লক্ষ্য পরিবর্তন করেনি।’ (৩৩, সূরা আহজাব : ২৩ আয়াত)।
‘তোমাদের আঘাত লেগে থাকলে অনুরূপ আঘাত তো ওদেরও লেগেছিল, মানুষের মাঝে এ দিনগুলো আমিই ক্রমান্বয়ে আবর্তন করাই, যাতে আল্লাহ জানতে পারেন বিশ্বাসীগণকে এবং রাখতে পারেন তোমাদের কতককে সাক্ষী (শহীদ); জালেমদের আল্লাহ ভালোবাসেন না।’ (৩, সূরা আলে ইমরান : ১৪০ আয়াত)।
সৈয়দ আহমদের আন্দোলন সাময়িকভাবে ব্যর্থ হলেও তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলা যায় না। বালাকোটের পরও মুসলমানেরা চুপ থাকেনি। পরে জেলজুলুম, ফাঁসি, দ্বীপান্তর, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, জঘন্য নিত্য নির্যাতন ইত্যাদি তাদের ঈমানকে টলাতে পারেনি। তাই না শেষ পর্যন্ত হানাদার ইংরেজকে চলে যেতে হয়। তবুও আমরা বালাকোটের পরাজয়ের কারণগুলো বিশ্লেষণ করব___
(১) উপমহাদেশের মূল ভূখণ্ড বাংলা, বিহার, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চল থেকে এক থেকে দুই হাজার অনুসারী সৈয়দ সাহেবের সাথে পশ্চিম সীমান্তে যায়। তারা ইসলামি চেতনাসম্পন্ন ছিল। স্থানীয় পাঠানরা তিন লাখ লোক দিয়ে সহায়তা করলেও এরা সরদার বা গোত্রীয় শাসকের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। এই সরদার ও শাসকদের অনেককেই শিখ ও ইংরেজ কর্তৃপক্ষ ‘কিনে ফেলে’। ফলে দরিদ্র ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন পাঠান সিপাহিরাও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে।
(২) আধুনিক রণকৌশলের প্রশিক্ষণ তেমন ছিল না মুজাহিদ বাহিনীর।
(৩) সৈয়দ সাহেব পাঠান নেতা সুলতান মুহাম্মদ খাঁ ও তার ভাইদের বিশ্বাস করে সুলতানকে পেশোয়ারের প্রশাসক বানান। সে বিশ্বাসঘাতকতা করে কয়েক শ’ উঁচুস্তরের মুজাহিদকে এক রাতে শহীদ করেছিল। ফলে পেশোয়ার হাতছাড়া হয়ে যায় সৈয়দ সাহেবের।
(৪) কিছু পাঠান জিহাদ করার চেয়ে লুটপাটে বেশি আগ্রহী ছিল।
(৫) পাঠানেরা অনেক ক্ষেত্রে শরিয়তি আইনের চেয়ে স্থানীয় কবিলার প্রচলিত আইন পালন করত বেশি। যেমন, গরিব পাঠানেরা মেয়েকে বিয়ে দিত যা অনেকটা মেয়ে বেচার মতো, বলপূর্বক বিয়েও সেখানে ছিল, কেউ কেউ চারের অধিক বিবি রাখত, মৃতের ওয়ারিশানের মধ্যে বিধবাদের বাটোয়ারা করত ইত্যাদি।
সৈয়দ আহমদ এগুলো সম্পর্কে শরিয়তের আলোকে ফয়সালা দিলেন, যা পাঠানদের মনঃপূত হলো না। এ দিকে ওশর (ফসলের দশমাংশ) ও জাকাত (শতকরা আড়াই ভাগ) বায়তুলমালে দিতে বলা হলে পাঠানেরা রাজি হলো না। পাঠানেরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কমই মানত। সৈয়দ আহমদ সংস্কারমূলক আইনগুলো একসাথে সব বাস্তবায়ন না করে ধীরে ধীরে করলে হয়তো প্রতিক্রিয়া এত উগ্র হতো না।
(৬) সৈয়দ সাহেবকে আসলেই মোকাবেলা করতে হয়েছে (যদিও পরোক্ষভাবে) ইউরোপীয়দের, যাদের সূর্য সেই সময় মধ্যগগনে। প্রায় সমগ্র বিশ্বকে তারা কবজা করে ফেলেছিল। সেখানে ছিল স্বার্থপর, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও বিশ্বাসঘাতক সরদার ও তাদের অনুসারীরা।
হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী ও তার চার ছেলে এবং ভ্রাতুষ্পুত্র শাহ মাওলানা ইসমাইল প্রমুখসহ প্রায় ত্রিশ লাখ মুজাহিদ উপমহাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নানা মহলে কাজ করছিলেন। মাওলানা আসাদ মাদানীর তথ্যানুযায়ী, সেই সময়ে প্রায় দুই লাখ মুসলিম শহীদ হন জিহাদে, যার ভেতর সাড়ে সাতান্ন হাজার ছিলেন আলেম (বরাত গোলাম আহমদ মোর্তজা, ইতিহাসের ইতিহাস পৃষ্ঠা ২৫৪)।
হান্টার তার দি ইন্ডিয়ান মুসলমানস বইয়ে মুসলমানদের প্রতি কিছু মেকি দরদ দেখালেও মুজাহিদদের ইংরেজ বৈরিতা দেখে অবাক হয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সব সময় জিহাদিরা সীমান্তের আদি বাসিন্দাদের ব্যস্ত রেখেছিল ব্রিটিশ শক্তির সাথে বিরামহীন সংগ্রাম সংঘর্ষে। ১৮৫০ থেকে ১৮৬৩ সালের মধ্যে আমরা ষোলোবার যুদ্ধ চালাতে বাধ্য হয়েছি। এ জন্য তেত্রিশ হাজার সৈন্যের দরকার হয়েছে। আর ১৮৫০ থেকে ১৮৬৩ সালের মধ্যে এই যুদ্ধ হলো ২০ বার। তার জন্য দরকার হয়েছে ষাট হাজার স্থায়ী সৈন্যের। তা ছাড়া অস্থায়ী সৈনিক ও পুলিশ তো আছেই। হিংসার বশবর্তী হয়ে কেমন করে (বিপ্লবীরা) যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ জানাতে সাহসী হতে পারে এটি মোটেই কঠিন ব্যাপার নয়; কিন্তু এটি বোঝা খুবই শক্ত যে একটা সুসভ্য দেশের (ইংল্যান্ডের) সেনাবাহিনীর সুকৌশল ও সমরনীতির বিরুদ্ধে কিভাবে তারা বহু যুগ ধরে টিকে থাকতে পারে।’ (দি ইন্ডিয়ান মুসলমানস)।
হান্টারের কথাই প্রমাণ যে, সীমান্তে সৈয়দ আহমদ শহীদের জ্বালানো প্রদীপ জ্বলছিলই। একটা ‘সুপিরিয়র’, সুসজ্জিত ইউরোপীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো বিরতি না দিয়ে সীমান্তে জিহাদ চলতেই থাকে। কাজেই বালাকোট একেবারে ব্যর্থ হয়নি।
Daily Nayadiganta
নয়াদিগন্ত থেকে সংগৃহীত
বিষয়: বিবিধ
২২৯৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বালাকোট এর ইতিহাস থেকে আমাদের জন্য শিক্ষনিয় আছে অনেক কিছু।
ধন্যবাদ আপনার তথ্যপুর্ন পোস্টের জন্য। শিক্ষাবিমুখ মুসলমানদের কাছে এসব এখন গাজী কালুর কিসসা মাত্র। আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন