ইসলামে নারীর মর্যাদা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন

লিখেছেন লিখেছেন টোকাই বাবু ২৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৫৭:৩৫ দুপুর

সমাজে নারীর অবস্থান এবং অধিকার নিয়ে আমরা নানা কথা শুনে থাকি। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা বিষয়ে বর্তমানে যে কথাগুলো বলা হয়, তার মধ্যে অনেকগুলোই গ্রহনযোগ্য। আবার কিছু কিছু কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ আছে। নারী-পুরুষ সকলেরই অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়া অনস্বীকার্য। কারণ সমাজ দিনে দিনে সামনে এগুচ্ছে। তাই শুধু নারী বা শুধু পুরুষের নয় বরং সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।

গত পঞ্চাশ বছরে সমাজ অনেকটা এগিয়েছে। এ সময়ে পুরুষের সাথে নারীরাও সমান না হলেও, এগিয়ে এসেছে। বেগম রোকেয়ার সময়ে যে সমাজ ছিল, সে সমাজকে আমরা অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। তিনি দেখেছিলেন যে, সে সময়ে মেয়েরা লেখাপড়ার কোনো সুযোগই পেত না। সে সময়ে বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার ব্যাপারে সাহসী উদ্যোগ না নিলে আজ নারীরা কেউই কিন্তু পড়ালেখা শিখতে পারতো না। সারা পৃথিবীতে, বিশেষ করে আমাদের দেশে মানুষের উপর; বিশেষ করে নারীর উপর যে অত্যাচার চলছে তার একটা ফউন্ডেশন আছে, ভিত্তি আছে। অত্যাচারটা আকাশ থেকে আসছে না। নারীর উপরে পুরুষের, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীর যে অত্যাচার, তার আইডিওলজিক্যাল ফাউন্ডেশনটা (রফবড়ষড়মরপধষ ভড়ঁহফধঃরড়হ) হলো - সাধারণভাবে মানুষ বিশ্বাস করে, বিশেষ করে পুরুষরা বিশ্বাস করে যে নারী পুরুষের চেয়ে ছোট, তাদের কোয়ালিটি খারাপ এবং তারা নীচু। এই বিশ্বাস অবশ্য নারীর মধ্যেও কিছুটা বিদ্যমান। মানুষের মধ্যে কতগুলো বিভ্রান্তি থেকে এ বিশ্বাসের জন্ম। আর এই বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে আছে নারীদের প্রতি অবহেলা, বঞ্চনা এবং নির্যাতন।

আমাদের দেশ থেকে যদি নারী নির্র্যাতন বন্ধ করতে হয়, তবে ইসলামকে বাদ দিয়ে তা করা যাবে না। আমি এটা খুব পরিস্কারভাবে বলতে চাই যে, ইসলামকে বাদ দিয়ে আমাদের মতো শতকরা নব্বই ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশে চলা যাবে না। যারা ইসলাম থেকে বিদ্রোহ করেছে তারা কিন্তু টিকতে পারেনি, পারছে না। যারা বিদ্রোহ করেছিলেন তাদের পরিণতি ভালো হয়নি, খারাপ হয়েছে। আমি বিনীতভাবে বলতে চাই যে, ইসলামের কাঠামোর মধ্যে আমরা যদি এগুতে পারি, তবে তা সবচাইতে ভালো হবে। আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি, ইসলামে এ রকম একটি ফ্রেমওয়ার্ক আছে, যা নারীদের সামনে এগিয়ে দিতে পারে।

আমি ইসলামের কোনো সাময়িক (ঞবসঢ়ড়ৎধৎু) ব্যাখ্যা দেয়ার পক্ষে নই। সত্যিকার অর্থেই ইসলাম নারীকে ক্ষমতায়িত করেছে এবং নারীকে সম্মানিত করেছে। নারীকে অধিকার দিয়েছে। সেগুলো ব্যাখ্যা করার আগে আমি ‘আইডিওলজিক্যাল ফাউন্ডেশন’- এর নতুন ভিত্তি যেটা হতে পারে সেটা বলতে চাই।

কি সেই ভিত্তি যে ভিত্তির উপর নারী পুরুষের মৌলিক সাম্য বিদ্যমান। আল্লাহ মানুষের চেহারা এক রকম করেননি। সকল দিক থেকে, রহ বাবৎু ফড়ঃ যেকোনো দু’টি মানুষ সমান নয়। ওজন, উচ্চতা, রঙ, শিক্ষা ইত্যাদি সবকিছুতে একটি মানুষ থেকে আরেকটি মানুষ আলাদা। কিন্তু মৌলিকভাবে প্রতিটি মানুষ সমান। আল্লাহর কাছে সমান। তার চারটি প্রমান আমি আপনাদের দিচ্ছি।

প্রথমত, আল্লাহ তায়ালা এ কথা খুব স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, মূল মানুষ হচ্ছে ‘রুহু’। যাকে আমরা আত্মা বলি। মুল মানুষ কিন্তু শরীর নয়। দেহ তো কবরে পচে যাবে। আমরা যারা ইসলামে বিশ্বাস করি তারা জানি মূল মানুষ হলো ‘রুহু’। আল্লাহ সকল মানুষকে, তার রুহুকে একত্রে সৃষ্টি করেন, একই রকম করে সৃষ্টি করেন এবং একটিই প্রশ্ন করেন। আল্লাহর প্রশ্নের উত্তরও নারী-পুরুষ সকলে একই দিয়েছিল। সূরা আরাফের একটি আয়াত হলো:

স্মরণ কর, তোমাদের প্রতিপালক আদম সন্তানের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং বলেন ‘আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই’ ? তারা বলে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই তুমি আমাদের প্রতিপালক, আমরা এর সাক্ষ্য দিচ্ছি।’ এটা এজন্য যে তোমরা যেন কেয়ামতের দিন না বলো, ‘আমরা তো এ বিষয়ে জানতাম না।’ (সুরা আরাফ: আয়াত ১৭২)।


তার মানে আল্লাহর সঙ্গে একটি পয়েন্টে সকল নারী এবং পুরুষের একটি চুক্তি হলো যে, আপনি আমাদের প্রভু, আমরা আপনাকে মেনে চলবো। এক্ষেত্রে পুরুষের চুক্তি আলাদা হয়নি। নারীর চুক্তি আলাদা হয়নি। সুতরাং আমরা দেখলাম, আমাদের রফবড়ষড়মরপধষ ভড়ঁহফধঃরড়হ এর প্রথম কথা হচ্ছে এই যে, মূল মানুষ হচ্ছে ‘রুহু’ এবং তা সমান। এই সাম্যের পরে যদি কোনো অসাম্য থেকে থাকে তাহলে তা অত্যন্ত নগণ্য। রহংরমহরভরপধহঃ, াবৎু ংসধষষ, তার মানে হচ্ছে, মানুষের আধ্যাতিক ব্যক্তিত্ব এক এবং সে মানুষ হিসেবে এক। এটি হলো নারী-পুরুষের সাম্যের প্রথম ভিত্তি।

দ্বিতয়িত, আমরা পুরুষরা গর্ব করি যে, আমাদের শারীরিক গঠন বোধহয় নারীর তুলনায় ভালো, আল্লাহ বোধহয় আমাদেরকে তুলনামূলকভাবে শ্রেষ্ঠ করে বানিয়েছেন এবং মেয়েরা আনকোয়ালিফায়েড বা অযোগ্য। কিন্তু আল্লহ একটি কথা কুরআনে খুব পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন যে, সকল মানুষের মধ্যে পার্থক্য আছে, কিন্তু প্রতিটি মানুষ ফাষ্ট্ ক্লাস। যারা নামায পড়েন তারা এই আয়াত জানেন, সূরা ‘তীন’- এ আল্লাহ বলেছেন :

নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে, সর্বোত্তম কাঠামোয়।

(সূরা তীন: আয়াত ৪ ) ।


এখানে পুরুষকে বলেননি। তার মানে আমাদের গঠনে পার্থক্য আছে, আমরা এক নই, আমরা ভিন্ন কাঠামোর। কিন্তু সবাই ফাষ্ট ক্লাস।

সুতরাং নারী-পুরুষের মৌলিক সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য, নতুন নারী আন্দোলনের জন্য অথবা নতুন মানব আন্দোলনের জন্য এটা দ্বিতীয় ভিত্তি। পুরুষদের একথা বলা ঠিক হবে না যে, মেয়েদের স্ট্রাকচার খারাপ। আল্লাহ তাতে অসন্তুষ্ট হবেন। যারা মোমেন, যারা বিশ্বাসী-তারা এ কথা বলবেন না। সুতরাং নারী-পুরুষের মৌলিক সাম্যের এটা হল দ্বিতীয় প্রমাণ। মৌলিক এ কারণে বলছি যে, নারী-পুরুষের মধ্যে ছোটখাটো পার্থক্য বিদ্যমান।

তৃতীয়ত, আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, সকল মানুষ এক পরিবারের। আদম এবং হাওয়ার পরিবারের। সূরা নিসার প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলেছেন:

হে মানব জাতি, সেই রবকে তুমি মানো যিনি তোমাদেরকে একটি মূল সত্তা (নফস) থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই সত্তা থেকে তার সঙ্গীকে সৃষ্টি করেছেন এবং এই দুইজন থেকে তিনি অসংখ্য নারী ও পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। (সূরা নিসা: আয়াত ১)


তার মানে আমরা এক পরিবারের। আমরা হচ্ছি বনী আদম। আদমের সন্তান। আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে অন্তত ২০/৩০ বার বলেছেন ‘ইয়া বনী আদামা’ (হে আদমের সন্তানেরা)। বাপ-মা এবং সন্তানেরা মিলে যেমন পরিবার তৈরি হয়, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতে মানব জাতি একটি পরিবার। সব পরিবারের উপরে হলো মানব জাতির পরিবার। তার মানে আমাদের মৌলিক যে সম্মান ও মর্যাদা তা সমান। ছোটখাটো কারণে আমাদের মধ্যে পার্থক্য হয়ে যায়। তবে জাগতিক মর্যাদা আসল মর্যাদা নয়।

আইনের ভাষায় যেমন বলা হয়, আইনের চোখে সকল মানুষ সমান, তেমনি আল্লাহর কাছেও সবাই সমান। আল্লাহর কাছে সম্মানের একমাত্র ভিত্তি হলো তাকওয়া। আল্লাহ বলেননি যে, তার কাছে পুরুষ সম্মানিত বা নারী সম্মানিত। আল্লাহ বলেছেন:

তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল কিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন। (সূরা হুজুরাত: আয়াত ১৩)


আল্লাহর কাছেই যদি মর্যাদার এই ভিত্তি হয়, তাহলে মানুষের পার্থক্যে কি কিছু যায় আসে ? আল্লাহ বলেছেন তিনি তাকওয়া ছাড়া (আল্লাহকে কে মানে আর কে মানে না) কোনো পার্থক্য করেন না। অতএব আমরা এক পরিবারের সন্তান, আমাদের মৌলিক মর্যাদা সমান।

কুরআনের সূরা নিসার একটি আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ বলেছেন:

এবং ভয় পাও সেই আল্লাহকে, যার মাধ্যমে তোমরা এক অপরের কাছে অধিকার দাবি করে থাকো এবং ভয় পাও গর্ভকে বা মাকে।

(সূরা নিসা: আয়াত ১)।


আল্লাহ বলেছেন গর্ভকে ভয় পাও। কুরআন শরীফের এই আয়াতটির তাফসিরে মিশরের বিখ্যাত আলেম সাইয়েদ কুতুব লেখেন, ‘এই ভাষা পৃথিবীর কোনো সাহিত্যে কুরআনের আগে লেখা হয়নি। আল্লাহ গর্ভকে ভয় করতে বলে মাকে সম্মান করার কথা বলেছেন, নারী জাতিকে সম্মান করার কথা বলেছেন।’ (সূরা নিসার তাফসির - সাইয়েদ কুতুব)। সুতরাং আমাদের মৌলিক সামাজিক মর্যাদা এক্ষেত্রেও সমান বলে প্রতীয়মান হলো। এটা আমাদের নতুন আইডিওলজিক্যাল ফাউন্ডেশনের তৃতীয় প্রমাণ।

চতুর্থত, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সময় বলে দিলেন যে, ‘তোমরা সবাই খলিফা’। তিনি বলেন, ‘ইন্নি জায়েলুন ফিল আরদে খলিফা’। আল্লাহ বলেননি যে,তিনি নারী পাঠাচ্ছেন বা পুরুষ পাঠাচ্ছেন। এমনকি তিনি বলেননি যে, তিনি মানুষ পাঠাচ্ছেন; আল্লাহ বলেলন, তিনি খলিফা পাঠাচ্ছেন। পাঠালেন মানুষ, বলেলন খলিফা। মানুষকে তিনি খলিফা নামে অভিহিত করলেন। খলিফা মানে প্রতিনিধি। আমরা পুরো মানব জাতি হচ্ছি আল্লাহর প্রতিনিধি। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকে তার প্রতিনিধি - আল্লাহর প্রতিনিধি। তবে এ কথা ঠিক যে, যদি আমরা গুনাহ করি, অন্যায় করি, খুন করি, অত্যাচার করি, জুলুম করি ঈমান হারিয়ে ফেলি তাহলে আমাদের খলিফা মর্যাদা থাকে না। কিন্তু মূলত আমরা আল্লাহ পাকের খলিফা। (দ্রষ্টব্য: সূরা বাকারা: আয়াত ৩০, সূরা ফাতির: আয়াত ৩৯)।

এই খলিফার মর্যাদার মধ্যেই রয়েছে সকল ক্ষমতায়ন - যে ক্ষমতায়নের কথা আমরা বলি। ক্ষমতা ছাড়া কেউ কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারে না। খেলাফতের দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রত্যেক নারী এবং পুরুষের কিছু ক্ষমতা লাগবে। নারীর ক্ষমতায়নের ভিত্তি এই খেলাফতের মধ্যে রয়েছে। শুধু নারী নয়, খেলাফত শব্দের মধ্যে নারী, পুরুষ, গরীব, দুর্বল সকলের ক্ষমতায়নের ভিত্তি রয়েছে। সুতরাং নারী-পুরুষ এই মৌলিক সাম্যের এটি হলো চতুর্থ প্রমাণ।

ইসলাম চায় বাবৎু সধহ, বাবৎু ড়িসধহ, বাবৎু ঢ়বৎংড়হ ংযড়ঁষফ নব বসঢ়ড়বিৎবফ (প্রত্যেককে ক্ষমতায়িত করতে) কিন্তু এই মুহূর্তে যদি নারীরা বঞ্চিত থেকে থাকে, তবে তাদেরকে ক্ষমতায়িত করতে হবে। পুরুষরা কোনোদিন বঞ্চিত হলে তাদেরকে ক্ষমতায়িত করতে হবে। তবে যে বঞ্চিত তার কথা আমাদেরকে আগে ভাবতে হবে, নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য বর্তমানে আমাদের আগে কাজ করতে হবে।

আজকে মেয়েদের আসল কাজ কি তা নিয়ে কথা উঠছে। তারা কি ঘরে বসে থাকবে - এমন প্রশ্ন উঠছে। কোনো মেয়ে যদি তার স্বাধীন সিদ্ধান্তে ঘরে থাকতে চায়, তবে তার সেটা করার অধিকার আছে। পুরুষের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। কিন্তু আল্লাহ কোথাও বলেননি যে, নারীদের ঘরে বসে থাকতে হবে, বাইরের কাজ নারীরা করতে পারবে না। বরং আল্লাহ মূল দায়িত্ব নারী পুরুষের একই দিয়েছেন। সূরা তাওবার ৭১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, নারী পুরুষের দায়িত্ব ৬ টি। আয়াতটিতে বলা হয়েছে:
‘মোমেন পুরুষ এবং মোমেন নারী একে অপরের অভিভাবক (ওয়লী)’ একে অপরের বন্ধু, একে অপরের সাহায্যকারী।’ (সূরা তাওবা: আয়াত ৭১)


এই আয়াত কুরআন শরীফের সর্বশেষ সূরাসমূহের অন্তভুর্ক্ত। উল্লেখিত বিষয়ে আগে যে সকল আয়াত আছে সেগুলোকে এই আয়াতের আলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে। এই আয়াতে বলা আছে যে, নারী-পুরুস একে অপরের অভিভাবক, গার্জিয়ান। অনেকে বলেন যে, নারী গার্জিয়ান হতে পারে না; কিন্তু আল্লাহ বলেছেন নারী গার্জিয়ান হতে পারে। কুরআনে এক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই।

নারী পুরুষের নির্ধারিত ৬ টি দায়িত্ব হচ্ছে;

১. তারা ভালো কাজের আদেশ দিবে।

২. মন্দ কাজের ব্যাপারে নিষেধ করবে।

৩. উভয়ে নামাজ কায়েম করবে।

৪. যাকাত দিবে।

৫. আল্লাহকে মানবে।

৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মানবে।


এসব কথার মাধ্যমে আল্লাহ নারীদের সকর ভালো কাজে অংশগ্রহনকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। এটাই ইসলামের নীতি। এ বিষয়ে আল্লাহ সিদ্ধান্ত দিয়েচেন যে, যারা এই ৬ টি দায়িত্ব পালন করবে তাদের উপর আল্লাহ তায়ালা রহমত করবেন। [b]কুরআনের বেশ কয়েকটি তাফসির পড়ে এবং পবিত্র কুরআন ও সুন্নাতে রাসূলে পুরোপুরি বিশ্বাসী একজন মানুস হিসেবে আমি বিশ্বাস করি যে, এই ৬ টি দায়িত্বের মধ্যে নারী পুরুষ সবাই সমান। রাজনীতি, সমাজসেবা, ইত্যাদি সব কাজই এ ৬ টির আওতায় পড়ে।

আজ আমরা ইসলামের মূল জিনিস পরিত্যাগ করে ছোটখাটো জিনিস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। মানুষের তৈরি বিভিন্ন কিতাবের ওপর নির্ভর করছি। আল্লাহর মূল কিতাবকে আমরা সেই তুলনায় গুরুত্ব দিচ্ছি বলে মনে হচ্ছে না। এখানে একটি কথা বলা দরকার, ইসলামকে কেউ যদি অন্যের মাধ্যমে শেখেন তবে তারা কখনো মুক্তি পাবেন না। তাই প্রত্যেককে কুরআনের পাঁচ ছয়টি তফসির নিজে পড়তে হবে। অনেকে অনুবাদের মধ্যে তাদের নিজেদের কথা ঢুকিয়ে দেয়। ফলে পাঁচ ছয়টি তাফসির পড়লে আমরা বুঝতে পারবো কোথায় মানুষের কথা ঢুকেছে; আর আল্লাাহর কথাটা কি ? কয়েক রকম ব্যাখ্যা পড়লে আমরা ঠিক করতে পারবো, কোন ব্যাখ্যাটা ঠিক। মেয়েদের মধ্যে বড় তাফসিরকারক হয়নি। মেয়ে তাফসিরকারক থাকলে হয়তো লিঙ্গ পক্ষপাতিত্ব (মবহফবৎ নরধং) হতো না। তবে কুরআন শরীফের কিছু তাফসির আছে যেগুলো লিঙ্গ পক্ষপাতিত্ব মুক্ত (ভৎবব ভৎড়স মবহফবৎ নরধং); যেমন মোহাম্মদ আসাদের ‘দি ম্যাসেজ অব দি কুরআন’।



লেখক

শাহ্ আব্দুল হান্নান

সাবেক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

বিষয়: বিবিধ

১৬২৪ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

213465
২৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:২৭
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : ইসলামে নারীর মর্যাদা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন Rolling on the Floor Rolling on the Floor

মালিকের মুয়াত্তা হাদিস ২.২৩.৯০: ইয়াহিয়া—মালিক—নাফি থেকে। ইয়াহিয়া বললেন যে আবদুল্লাহ ইবনে উমরের ক্রীতদাসীরা তাঁর পা ধৌত করতো এবং তাঁর কাছে খেজুর পাতার তৈরি এক মাদুর নিয়ে আসত। সে সময় তারা ঋতুমতী ছিল। মালিককে জিজ্ঞাসা করা হল কোন এক ব্যক্তি গোসল করার আগেই কি তার সব ক্রীতদাসীদের সাথে যুগপৎ সহবাস করতে পারবে? তিনি (অর্থাৎ মালিক) উত্তর দিলেন যে গোসল ছাড়াই পরপর দুইজন ক্রীতদাসীর সাথে সহবাসে কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু যখন কোন স্বাধীন স্ত্রীর সাথে সহবাসের দিন থাকবে সেদিন অন্য আর এক স্বাধীন স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করা যাবে না। কিন্তু এক ক্রীতদাসীর সাথে যৌন সঙ্গমের পর সাথে সাথে অন্য ক্রীতদাসীর সাথে সহবাস করা আপত্তিকর নয়—যদিও তখন লোকটি জুনুব (সহবাসের পর তার কাপড়ে অথবা দেহে বীর্য ও অন্যান্য কিছু লেগে থাকা)।
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৩
162198
টোকাই বাবু লিখেছেন : খেলাঘর বাধঁতে এসেছি, দুষ্টরা সবসময় এরকমই ব্যার্থ চেষ্টা করে থাকে।
তবে আপনার ঙাতার্থে জানাচ্ছি এখন আর দাসপ্রথা চালু নেই। ওটা ছিলো ইসলামের প্রাকযুগে অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল (সা.) তখন মাত্র ইসলাম প্রচার শুরু করেছেন।
বিস্তারিত জেনে নিয়েন
213545
২৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:০৮
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : জাজাকাল্লা খাইরান.. অনেক ভালো লাগলো পড়ে অনেক সুন্দর হয়েছে ... অপূর্ব, চমৎকার
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৩
162199
টোকাই বাবু লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Praying Praying Praying Praying Praying
213556
২৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:১৪
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : ইসলামই পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান যেখানে নর নারীর সমান বিধান করা আছে।
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৪
162200
টোকাই বাবু লিখেছেন : Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause Applause
213721
২৭ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:৩৪
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৫
162201
টোকাই বাবু লিখেছেন : ধন্যবাদ আফরামনি,
স্টাডী কেমন চলছে। ডাক্তার হতে পারবে তো।
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২০
163240
আফরা লিখেছেন : দুয়া করবেন ভাইয়া ।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:১৭
163672
টোকাই বাবু লিখেছেন : হুম সে তো অবশ্যই। ডা. হবার তো আবার ফি চাইবা
213740
২৭ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০২:৫৯
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : লেখাটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই ভালো লেগেছে।
২৭ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৬
162202
টোকাই বাবু লিখেছেন : কষ্ট করে পড়া শেষে মন্তব্যর জন্য স্পেশাল থ্যাংকস Love Struck Love Struck Love Struck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File