কুরআন অধ্যয়নের সময় লক্ষ্যণীয় ৬টি পয়েন্ট_____
লিখেছেন লিখেছেন টোকাই বাবু ২৯ মার্চ, ২০১৪, ১১:০৮:৪২ রাত
আমরা যারা কুরআন পড়ি তাদের মধ্যে একটি বড় সংখ্যক আছেন, যারা শুধুই পড়েন/তেলাওয়াত করেন। আমরা অনেক সময় ব্যায় করি কিন্তু সেই তুলনায় অর্জনটা খুবই সামান্য।
কুরআন হচ্ছে গভেষনা করার জন্য, জানার ও মানার জন্য। হযরত আহনাফ বিন কায়েস নামে একজন আরবীয় সর্দার ছিলেন। তিনি একজন যোদ্ধাও। ইসলাম গ্রহণ করার পর আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে দেখার সৌভাগ্য হয়নি, তবে তিনি অনেক সাহাবীকেই দেখেছেন। হযরত আলী (রা.)-এর প্রতি তার অপরিসীম শ্রদ্ধা ছিলো। একদিন কুরআন পড়তে পড়তে তার চোখ এসে একটি আয়াতে থেমে গেলো- ''আমি তোমাদের কাছে এমন একটি কিতাব নাযিল করেছি, যাতে 'তোমাদের কথা' আছে, অথচ তোমরা চিন্তা করো না।'' (আল আম্বিয়া : ১০)
আহনাফ আরবী সাহিত্যে গভীর পারদর্শী ছিলেন। তার কাছে মেনো হলো সে নতুন কিছু পেযেছে। কুরআনে নিজেকে খুজতে শুরু করলেন________
'এরা রাতের বেলায় বেলায় খুব কম ঘুমায়, শেষ রাতে আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহখাতার জন্য মাগফেরাত কামনা করে।' (আয যারিয়াত: ১৭-১৯)
কিছুদুর গিয়ে আরেকদল লোক সম্পর্কে বলা হচ্ছে- 'এরা দারিদ্র ও সাচ্ছন্দ উভয় অবস্থায় (আল্লাহর নামে) অর্থ ব্যায় করে, এরা রাগকে নিয়ন্ত্রন করে, এরা মানুষদের ক্ষমা করে, বস্তুত আল্লাহ এসব নেককার লোকদের ভালোবাসেন।' (আলে-ইমরান : ১৩৪)
নাহ, আহনাফ যেনো নিজেকে খুজেই পাচ্ছেন না। এবারও হতাশ হলেন না, নিজেকে খুজতে থাকলেন।এবার একদল সম্পর্কে বলা হচ্ছে- 'যখন এদের বলা হয়, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তখন তারা গর্ব ও অহংকার করে এবং বলে, আমরা কি একজন পাগল ও কবিওয়ালের জন্যে আমাদের মাবুদদের পরিত্যাগ করবো।' ( আছ ছাফফাত : ৩৫-৩৬)
আরেক দল---'যখন এদরে সামনে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় তখন এদরে অন্তর অত্যান্ত নাখোশ হয়ে পড়ে, অথচ যখন এদর সামনে আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্যদের কথা বলা হয় তখন এদের মন আনন্দে নেচে উঠে।' ( আঝ ঝুমার: ৪৫)
আরো সামনে এগুলেন, এবার বলা হচ্ছে- 'তোমাদের কিসে এই জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করলো? তারা বলবে, আমরা নামায প্রতিষ্ঠা করতাম না, গরীব মিসকিনদের খাবার দিতাম না, কথা বানানো যাদের কাজ-আমরা তাদের সাথে মিশে সে কাজে লেগে যেতাম। আমরা শেষ বিচারের দিনটিকে অস্বীকার করতাম, এভাবেই একদিন মৃত্যু আমাদের সামনে এস যায়।' ( আল মোদ্দাসসের : ৪২-৪৬)
তিনি এখনো নিজেকে কুরআনের মধ্যে খুজে চলছেন কারণ তার দৃঢ় বিশ্বাস যেহেতু আল্লাহ বলেছেন, এ কুরআনে তোমাদের কুরআনে তোমাদের কথা আছে। কুরআনের পাতা উল্টাতে উল্টাতে এক জায়গায় সত্যিই আহনাফ বিন কায়েস 'নিজেকে' উদ্ধার করলেন, নিজেকে খুজে পেলেন মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনের মধ্যে। আনন্দে মন নেচে উঠল। বললেন, হ্যা, এইতো আমি!
'হ্যা এমন ধরনের কিছু লোকও আছে যারা নিজেদের গুনাহ স্বীকার করে। এরা ভালো মন্দ মিশিয়ে কাজকর্ম করে- কিছু ভালো আর কিছু মন্দ। আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা এদরে ক্ষমা করে দেবেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা বড়ো দয়ালু ও ক্ষমাশীল।' (আত তাওবা : ১০২)
সুরা মুহাম্মদে অনেক আয়াত সহ আরো অনেক জায়গাতেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- 'তোমাদের কি হলো যে, তোমরা কুরআন নিয়ে চিন্তা করো না।' (সুরা মুহাম্মদ :২৪)
কুরআনের নামকরণ, শানে নুযুল, বিষয়বস্তু ভালো করে বারবার পড়া দরকার। এর পাশাপাশি এ দিকে লক্ষ্য করে পড়লে ও চিন্তা করলে কুরআন নাযিলের যে উদ্দেশ্য তা আমাদের জন্য বুঝতে, জানতে ও আমল করতে সহজ হবে। সর্বোপুরি কুরআনের হক্ক আদায় করে তা অধ্যয়ন হবে।
কুরআন অধ্যয়নের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া ও অর্জন করা-----
* কুরআনের ভাবার্থ বুঝতে হবে।
**অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝার চেষ্টা করা।
***বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা (Implement).
**** অভিঙ্গতা অর্জন করা (Experience).
*****ব্যাখ্যা করার যোগ্যতা অর্জন (উপস্থাপন পদ্ধতী)।
****** ভবিষৎকে নিয়ে চিন্তা করে (Future Indication).
আসুন, আমরাও আমাদেরে নিজেদেরকে খুজে পাবার চেষ্টা করি। কুরআন পড়ি, আমলা করি, প্রচার করি আর নিজেকে গড়ে তুলি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আদর্শে।।।
বিষয়: বিবিধ
১৪২১ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
*অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝার চেষ্টা করা।
*বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা (Implement).
*অভিজ্ঞতা অর্জন করা (Experience).
*ব্যাখ্যা করার যোগ্যতা অর্জন (উপস্থাপন পদ্ধতি)।
*ভবিষৎকে নিয়ে চিন্তা করে (Future Indication).
যাজাকাল্লাহু খাইরান।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ
অসাধারন পোস্ট,ভাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন