আর কখনোই গান শুনতে পাবো না

লিখেছেন লিখেছেন টোকাই বাবু ১০ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৯:১১:২৮ রাত

২০১০ সালের ১৮ই জানুয়ারী হল ভর্তি রুমে যখন সবাই মজা করছে, দুষ্টুমি করছে সেই সময়ের কথা খুব বেশী মনে পড়ছে। ভাতৃশিবিরের ওই সময়ে একে একে সবাই দুষ্টুমী করছে। একসময় এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ মাইকে ঘোষণা করলো-এই পর্যায়ে আমাদের সামনে একটি ইসলামী সংগীত পরিবেশন করবে মোল্লা (আব্দুল কাদের মোল্লা) ভাই। আব্দুল কাদের মোল্লা ভাই স্ট্যাজে মাউথ পিস হাতে নিয়ে বললেন-আমি গান গাইবো কিন্তু একটি মাত্র শর্ত আছে। আকন্দ ভাই বললেন- না আজ কোন শর্ত নয় বিনাশর্তে গাইতে হবে। হইচই শুরু হলো গান শুনার জন্য কিন্তু আব্দুল কাদের মোল্লা ভাই বারবার একই কথা একটি শর্ত- আমার জন্য দু'আ করতে হবে আমি যাতে শাহাদাত বরণ করতে পারি। আল্লাহ যাতে আমাকে শহীদের মৃতু্য দেন। অবশেষে গান শুরু হলো। গানটির কথা মনে নেই শুধু মনে আছে ওই গানটিও ছিলো শহীদের গান।

২০০৯সালের মাঝামাঝি প্রথম সামনাসামনি বসে উনার আলোচনা শুনার সুযোগ হই। অনেক আশা ছিলো হয়ত আরেকবার আব্দুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের কন্ঠে গান শুনতে পারবো। তা আর হলো না।

আমি আমার ভাই-বোনদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, ইনারা অনেকেই ভিবিন্ন জায়গায় স্ট্যাটাস বা লিখাতে বলছে আজ আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাসি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমার এইখানের শব্দে একটু দ্বিমত আছে। আসলেই কি ফাসি দেয়া হচ্ছে না কি একজন নিরঅপরাধ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে?

আব্দুল কাদের মোল্লার সাথে কি কথাবার্তা হয়েছে এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, তার মনোবল সম্পূর্ণ অটুট রয়েছে। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তার সত্যের লেশমাত্র নেই। তিনি মনে করেন একমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার কারণেই এবং বাংলাদেশ থেকে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আজ তাকে এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হযেছে। তিনি মনে করেন ইসলামী আন্দোলনের কারনে যদি তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয় তাহলে এটা তার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়, গর্বের বিষয়। মিসরসহ অনেক দেশের এ-বিষয়ক ইতিহাস তার সামনে রয়েছে। তিনি সারা জীবন শহীদী মৃত্যু কামনা করেছেন। তিনি বলেছেন তোমরা চিন্তা করো না। আমার মাথা সারা জীবন উঁচু ছিল এবং উঁচুই থাকবে। যদি আমার ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে তাহলে তোমরা আমার চোখে একটুও পানি দেখতে পাবে না।

ছাত্রজীবনে মিসরে সাইয়্যেদ কুতুব শহীদের শাহাদাতের কথা বলতে গিয়ে একদিন প্রফেসর গোলাম আযম আমার গলায় হাত দিয়ে বলেছিলেন, একদিন তোমার গলায়ও এ দড়ি পড়তে পারে।


ওয়া মাকারু ওয়া মাকারাল্লাহ ওয়াল্লাহু খাইরুল মাকিরিন...

বিষয়: বিবিধ

১৭৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File