এই দিন দিন না আরো দিন আছে,এই দিন টেনে হেঁচড়ে ছেঁচড়ে নিয়ে যাবে সেই দিনের কাছে
লিখেছেন লিখেছেন নাইমুল হক ২৯ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:১৮:২২ রাত
নিজামি মুজাহিদ মাওলানা সাঈদী সাহেব বিয়াল্লিশ বছর আগে যুদ্ধের সময় একা কয়টা মায়ের বুক খালি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে?বেশী হলেও বিশ ত্রিশটা,কয়টা মানুষকে আহত করেছিল? একশত বা দুইশত?,তার জন্য এত যুগ পরে তাদের ফাঁসির ব্যবস্থা করে গভার্মেন্ট বিরাট জন দরদী ও দেশ প্রেম দেখাচ্ছে।কিন্তু রানা প্লাজার দুর্ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা পাঁচ ছয়শত জীবন্ত মানুষকে তিলে তিলে মেরেছে।সাভার ট্রাজেডিতে এত ভয়ংকর ও হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে যা মুক্তিযুদ্ধ কেন বরং তার থেকেও মর্মান্তিক ঘটনাকে হার-মানিয়েছে।তিনদিন পরে উদ্ধার হওয়া এক বোন এনাম হাসপাতালে চিকিৎসা-রত অবস্থায় কাতর কণ্ঠে বলেছে ক্ষুধার যন্ত্রণায় ছটফট করেছি একে অপরকে কামড়ে খেয়েছি প্রসব খেয়েছি।এত করুন ইতিহাস আমি কখনো শুনি নায়,কষ্টের কোন চূড়ান্ত সীমায় চলে গেলে মানুষ প্রসব খেতে বাধ্য হয় একটু ভাবুন।কত ভাইবোনেরা বিধ্বস্ত ছাদের নিচে চাপা পড়ে ছিল চার পাঁচদিন যেখানে ছিলনা কোন আলো, ছিলনা কোন আহার,ছিলনা নড়াচড়া করার মত পর্যাপ্ত জায়গা বা শক্তি কত মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে চির তরে নথর হয়ে গেছে তার কোন সংখ্যা জানা নাই।সব থেকে কষ্ট পেয়েছি এক মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদে,তার সন্তান বিধ্বস্ত ভবনের ভেতর থেকে মাকে ফোন করে বলছে ''ওমা আমাকে বাচাও,ওমা আমি চাপা পড়ে আছি মা,ওমা আমার পা দুটো আটকে আছে,আমি নড়তে পারছিনা মা,ওমা আমার মাথার কাছে একটা মেশিন পড়ে রয়েছে যা আস্তে আস্তে গড়িয়ে আমার মাথার দিকে আসছে ওমা দ্রুত আমাকে উদ্ধার না করলে ওটা আমার মাথার উপরে পড়বে মা আমাকে বাচাও''তার পরে ফোনের লাইনটা কেটে যায়।সেই মা বুক চাপড়ে আহাজারি করছে তার কলিজার টুকরা সন্তানের জন্য।মনে হচ্ছে কেন যে এই দেশে জন্মিলাম আর এই বীভৎস চিত্র গুলি অবলোকন করতে হচ্ছে?শুনলাম আজকে শেখ হাসিনা সাভারে গিয়ে উদ্ধার কর্মীদেরকে হুমকি দিয়ে এসেছেন যে আর একটি লাশ ও যদি বের করা হয় তাহলে সবগুলোর খবর আছে যে কারণে হতহতদের স্বজনেরা সেখানে দফায় দফায় মিছিল করছে,জাপান সরকার উদ্ধার কাজের সরঞ্জামসহ উদ্ধার কর্মী পাঠাতে চেয়েছিল কিন্তু সরকার তা গ্রহন করেনি,লাশ গুলো বাহির করা হোক এটা উনি চান না কেন?বিদ্ধস্ত ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষ গুলো মুক্তি পাক এটা সে কেন চায়না?।এ সরকার ক্ষমতাই আসার পরে বিডিয়ার বিদ্রোহ,মিরাছরাই এক্সিডেন্ট,আশুলিয়ার গার্মেন্টস ধস,মাওলানা সাঈদী সাহের ফাঁসির রায় ও সর্বশেষ সাভার ট্রাজেডি সহ আরো না বলা যতগুলো ঘটনার সূত্রে হাজার হাজার হত্যা কাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তার প্রত্যেকটির সাথে বর্তমান প্রাইম মিনিস্টার নিজে অথবা তার কোন সিদ্ধান্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।উনি এত রক্তপাত কেন চাচ্ছেন,নিজের পরিবার হত্যা কান্ডোর প্রতিশোধ গ্রহণ?উদ্দেশ্য যাই হোক একটা কথা মনে রাখতে হবে পাপে বাপেরে ছাড়েনা,আসলেই ছাড়েনা বহুত প্রমাণ আছে।আগের-দিন ফাটল দেখার পরে প্রকৌশলী বিল্ডিং ধসের সম্ভাবনার কথা জানায়,ঐদিন হরতাল থাকা সত্যেও হরতালের বিরোধিতা করতে এবং সরকারের নাকট সাজাতে নারী সমাবেশ করতে শ্রমিকদেরকে কারখানায় আসতে বাধ্য করে রানা প্লাজার সংশ্লিষ্টরা স্থানীয় এমপি তৌহিদ মুরাদ জং এর হুকুমে যা ইতি মধ্যেই রিমান্ডে রাণা স্বীকার করেছে।অতএব কুখ্যাত সোহেল রাণা,তৌহিদ মুরাদ জং,সাভারের ইউএনও ওসি সহ রাণা প্লাজার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তারা যুদ্ধাপরাধীদের থেকে হাজার গুন বেশী তাজা অপরাধী,সুতরাং আমি সরকারকে বলছি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সবকিছু নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করুন,অভিযুক্তদেরকে দ্রুত ফাঁসির ব্যবস্থা করতে যদি কোন রকম টালবাহানা করেন তবে মনে রাখবেন এই দিন দিননা আরো দিন আছে এই দিন আপনাকে টেনে হেঁচড়ে ছেঁচড়ে নিয়ে যাবে সেই দিনের কাছে।হাজার হাজার মা বোনের আর্তনাদ যে কতটা ভয়ংকর,শত শত যুবতী বিধবা বোনদের প্রিয়তম হারানোর বিরহ যে কতটা বেদনা বিধুর,সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ভাইটির মৃত্যু যে কতটা অসহ্য কষ্টের,মায়ের চোখের সামনে তার কলিজার টুকরা সন্তানের খণ্ড বিখণ্ড পচা লাশ যে কতটা বিভীষিকাময় হয়ে তোমার ঘাড়ে আসবে তা সময় হলে হাড়ে হাড়ে টের পাবে,সুতরাং দোহায় লাগে হাসিনা,আমি তোকে আল্লার কসম দিয়ে বলছি বেইমানি করিসনা,ওদের শাস্তি দিতে বিলম্ব করিসনা,একবার ভেবে দেখ পারভেজ মোশাররফ ছিল তোর মত ডাইনি মার্কা মোনাফেক শাসক এখন সে রিমান্ডের স্বাদ আস্বাদন করছে,যাদের খুশি করতে গাদ্দারী করেছিল তারা এখন তার পাশে নেই,সুতরা তৌহিদ মুরাদ জং ও সোহেল রাণাকে ফাঁসি দিয়ে পাপের প্রাশ্চিত্ব কর নয়তো তোর জন্য সত্যিই মহা প্রলয় অপেক্ষা করছে।
***নাঈমুল হক***
বিষয়: রাজনীতি
১২৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন