বাঙ্গালী পাগলা গারদ

লিখেছেন লিখেছেন নাইমুল হক ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:৪২:২১ রাত

গতকালকে বিকালে পল্টনে একটা প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলাম তাতে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলাম,ঢাকা শহরের নিত্যদিনের সাথী জ্যাম আরো প্রকট আকার ধারণ করছিল আর এমন কিছু দৃশ্য চোখে পড়ছিল তাতে মনে হচ্ছিল দেশে কয়েক হাজার পাগলা গারদ তৈরি হওয়া দরকার।কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি একটা হোটেল কর্তৃপক্ষ দুই-পিয়ার সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করে হোটেলের ডিসপ্লেতে ইকো মেশিনের সামনে অপারেটরকে বসিয়ে দিয়েছে,সে এলাকা প্রকম্পিত করে হিন্দি গানের মিউজিক বাজাচ্ছে উইথ হাই সাউন্ড,আমি বাঙ্গালিকে জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি?সে বলল এটাই আধুনিক ভাবে নববর্ষ উদযাপন।কিছুক্ষণ পরে গুলিস্তানে পৌঁছে দেখি অনেক গুলো বুনো ভূত ছুটা ছুটি করছে,কেউ চোয়ালে আলকাতরা দিয়ে কি যেন লিখেছে,কেউ হাড়ির কালির উপরে আটার প্রলেপ দিয়ে পেত্নী সেজে ডেটিং-রত,আবার গোলাপ শাহর মাজারের কাছে দেখি এক আধবুড়ো বেটি ঘরের পিলে গুলোকে গুছিয়ে রাজপথে এনেছে পরনে যা ছিল তা আমাদের গ্রামের ভিক্ষুক ছকিনাও পরেনা,বাঙ্গালিকে জিজ্ঞাসা করলাম এগুলো কি?সে বলল এটাই নববর্ষের ফ্যামিলি উদযাপন আর যে গুলো ভূতের মত দেখছো ওদের দেখে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই ওরা দেশ প্রেমিক।দৈনিক বাংলা মোড়ে দেখি রাস্তার মাঝখানে পিকাপ ভাড়া করে সাউন্ড বক্সে জোরে জোরো হিন্দি গান বাজে আর সেই তালে তালে কিছু টোকাই ছেলে যারা এটার আয়োজন করেছে ওরা পরনের কাপড় খুলে নেংটি পরে বাঁদরের মত ছন্দ-হীন ভাবে নেচে যাচ্ছে আর জ্যামে আটকে থাকা যাত্রীরা গাড়ির জানালা দিয়ে বিরক্তিকর ভাবে সেটা উপভোগ করছে।কিছুক্ষণ পরে হাউজ বিল্ডিং চত্বরে দাড়িয়ে ছিলাম ততক্ষণে ভয়ে আমার অবস্থা খারাপ,হটাত হটাত শুনি ভয়ংকর স্বপ্নের মত হাজার হাজার পেতনির উচ্চস্বরে অ্যা,আ্য্য্য...আ্য্য্য্য্..... আওয়াজের মিছিল হচ্ছে,ভয় ভয় চোখে আর জীবনে প্রথম ভুতের মিছিল দেখার কৌতূহল নিয়ে রাস্তায় তাকিয়ে দেখি আক্কেল গুড়ুম,বিশাল মোটা মোটা বিটা-বিটি আর ককি-কাচা পোলাপানেরা সামনে হিন্দুদের গজের মত বড় বড় হাতি ঘোড়ার মূর্তি নিয়ে শোভা যাত্রা করছে,বাঙ্গালিকে বললাম এগুলা কি?সে বলল আমার উৎসব গুলোর উৎস-ইতো এই গুলা।কাজ শেষ করে পল্টন মোড়ে দাড়িয়ে আছি শাহবাগের দিকে যাব,কিন্তু যাব কিসে বাস গুলাও যাচ্ছেনা,কেননা এপথে আজ অনেক ভিড়,দেখি রিকশায় একে অপরের ঘাড়ে চড়ে সং সেজে কত কিত্তি কলাপ করতে করতে কেন্দ্রে যাচ্ছে নবীনেরা,সেখানে আছে রমনা পার্ক,আছে বিশ্বের সর্ব প্রথম অবাধে যৌন ব্যবসার স্বীকৃতির দাবীতে আন্দোলনের ঐতিহাসিক শাহবাগ প্রাঙ্গণ।যতক্ষণ সেখানে দাড়িয়ে ছিলাম ততক্ষণে দেখলাম চতুর্দিক থেকে অর্ধ উলঙ্গ মেয়েরা বয় ফ্রেন্ডের সঙ্গে ম্যাচিংকরা ড্রেসে উচ্ছ্বাসিত মনে ব্যাপক কিছু করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নেশা গ্রস্থ হৃদয়ে যৌবনের টানে মাতাল গতিতে তারা ছুটে চলছে শাহবাগের পানে,বাঙ্গালীকে বললাম এরা কারা?সে বলল আরে এদেরকে চিননা?এরাই হল আমাদের গর্ব,এরাই দ্বিতীয় মুক্তি যোদ্ধা,এরাই আমার সর্বকালের সস.... আমি তাকে থামিয়ে দিলাম,বললাম অনেক্ষন কষ্ট করে ধৈর্য ধরে আছি এবার শুনো,ভাল রুচি-বোধ পয়দা হওয়ার জন্য ভাল কিছু ভেতরে থাকা লাগবে,যে পোকা গুলো পায়খানার মধ্যে জন্ম নেয় ওরা ওদের স্থানে যত বেশী পচা পায়খানা জমা হয় ওরা ততই আনন্দের গান গায় ওদের কল্পনাতে স্বচ্ছ পবিত্র বাসস্থানের কল্পনার অনুভূতিও নাই,আর সে জন্যেই বড় বড় ডিগ্রিধারী শিক্ষিত ভামেরা বিবেক বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে পাগল সেজে ভূত সেজে শোভা যাত্রা করছে আর তোমার কাছে এটা যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে,ভিতরে কি আছে এবার ভাবো?পরনের কাপড় খুলে অথবা অর্ধ উলঙ্গ হয়ে জিহ্বার সামনে তেঁতুল ঝাঁকাচ্ছে আর এটা তোমার কাছে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি,দেশে ওপেন বেশ্যা খানা তৈরি করতে আন্দোলন করছে তারদেরকে বলছো তরুণ মুক্তি যোদ্ধা হায়রে বাঙ্গালী আমারতো মনে হচ্ছে তোমার জন্য গবেষণা করে নতুন করে স্পেশাল পাগলা গারদ নির্মাণ করা দরকার,যাতে বাঙ্গালী ছাড়া অন্যের প্রবেশাধিকার বন্ধ।

বিষয়: বিবিধ

১২৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File