সুরা আল ইমারানের আয়াত ও আমার সহকর্মি ।
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারর ০১ মার্চ, ২০১৪, ১০:৪২:৩৩ রাত
আস্-সালামু-আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ।
আমি তখন চাকরী করতাম । আমাদের প্রতিষ্ঠানে এক ষাট উর্ধ্ব বয়ষ্ক লোক চাকরি করতেন । তিনি এক সময় চট্টগ্রামের ঐতিহ্য বাহী আমিন মার্কেটে কাপড়ের দোকানের মালিক ছিলেন । তখন সেখানে কাপড় বিক্রি হত সের মাপা । সেখানে তিনি নামকরা ব্যাবসায়ী ছিলেন । সাধারন কর্মচারী থেকে তিনি দোকানের মালিক হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি নিজের সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেন নি। যে কোন একটি বদ অভ্যাসের কারনে তার ব্যাবসায় ধ্বস নামে যার কারনে তাকে শেষ বয়সে চাকরি করত হয় । যাই হোক উনার জীবনি এখানে উল্লেখ করার কারন হল উনি আমার সাথে চাকরিরত অবস্থায় সুরা আল ইমারানের একটা আয়াত তিনি সব সময় পড়তেন । তখন আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও কোরআন শরীফ পড়লেও কোরআনের আয়াত ও তার ভাবার্থ নিয়ে তেমন একটা ভাবতাম না। তিনি যেই আয়াতটি পড়তেন তা ছিল
قُلِ اللَّهُمَّ مٰلِكَ المُلكِ تُؤتِى المُلكَ مَن تَشاءُ وَتَنزِعُ المُلكَ مِمَّن تَشاءُ وَتُعِزُّ مَن تَشاءُ وَتُذِلُّ مَن تَشاءُ ۖ بِيَدِكَ الخَيرُ ۖ إِنَّكَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
تولِجُ الَّيلَ فِى النَّهارِ وَتولِجُ النَّهارَ فِى الَّيلِ ۖ وَتُخرِجُ الحَىَّ مِنَ المَيِّتِ وَتُخرِجُ المَيِّتَ مِنَ الحَىِّ ۖ وَتَرزُقُ مَن تَشاءُ بِغَيرِ حِسابٍ
বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান কর।
আমার কাছে আয়াতটা শুনতে খুব ভাল লাগত আর মনে মনে ভাবতাম আয়াতটা শিখতে হবে ।
সেই লোকের মৃত্যুটা হয়েছিল খুব নেক মৃত্যু । রমজান মাসে আছরের নামায পড়ে জায়নামাজে বসে থাকা অবস্থায় ষ্ট্রোক করে মারা যান। আল্লাহ তাকে বেহেশত ও তার নৈকট্য দান করুক।
তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগত কেন তিনি এই আয়াত এত বেশি পড়তেন ? উনার মুখে শুনতে শুনতে
সেই আয়াতটার প্রতি আমার এক ধরনের ভালবাসা তৈরী হয়ে গেল । তারপরও সেই আয়াত মুখস্থ করতে পারলাম না । যদিও তখন এর চেয়ে অনেক বড় বড় সুরা মুখস্থ করে ফেলেছি । কিন্তু আল্লাহর কি মহীমা তখন এই আয়াতটি আমার আর তখন মুখস্থ করা হয়নি।
এরপর অনেক বছর পেরিয়ে গেল । প্রায় চার-পাঁচ বছর । তখন নিজে ব্যাবসা করি । এই অবস্থায় আমার ছোটকালের এক পুরাতন নেশায় পেয়ে বসল কবুতর পালন। এই কবুতের নেশা এমন এক নেশা । শুধু নতুন নতুন প্রজাতির সংগ্রহের নেশা । সেই নেশায় কোথায় কোথায় না যেতাম । কখনও নুপুর মার্কেট , কখনও দেওয়ান হাট কখনও বিবির হাট , কখনও বহদ্দার হাট খাজা রোড , কখনও ইছিন্নার হাট , কখনও কেরানী হাট আরও কত জায়গা তার ইয়াত্তা নাই।
এমনই একদিন কবুতর কিনতে গেলাম ইছিন্নার হাটে । সেখানে কবুতরের হাট বসে খালের পাশে। রাস্তার উপর হাট । রাস্তার দুই পাশে গাছের দোকান । আমি ফার্ণিচারের ব্যাবসা করি , তাই গাছের দোকান দেখে গাছের ব্যাপারে খোজ খবর নেওয়ার জন্য কয়েকটা দোকানে ঢু মারতে লাগলাম । এমন সময় এক দোকানে এক ব্যাক্তি ডাক দিল। আমি উনার ডাকে সাড়া দিয়ে দোকানে ঢুকলাম । পন্চাশ উর্ধ্ব বয়সের ছোটখাট হালকা পাতলা গড়নের এক হুজুর টাইপের লোক। মুখে থুতনিতে এক মুঠি সমান দাড়ি । পড়নে সাদা পায়জামা-পান্জাবী । মাথায় টুপি । কয়েকদিনের ব্যাবহারে কিছুটা মলিন। আমিও মোল্লা না হলেও মোল্লা টাইপের তাই আমার সাথে ভাব জমতে বেশি সময় লাগল না।
উনার বাড়ি ফেনী জেলায় । আলেম মানুষ । উনার সাতটি মেয়ে কোন ছেলে নাই । সব মেয়েই আলিয়া মাদ্রাসায় পড়া লেখা করে।
কথায় কথায় আমি উনাকে জিগ্গাসা করলাম "এইটা কি আপনার দোকান ? "
তখন উনি এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন " না আমার দোকান নয় আমি চাকরি করি । তবে এক সময় আমারও গাছের বিশাল ব্যাবসা ছিল । এখন কিছুই নাই তাই চাকরি করি । "
আমি উনার অবস্থা শুনে দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে গেলাম। তখন মনের কোনে চকিতে আমার সাথে চাকরি করা সেই সহকর্মির কথা মনে পড়ে গেল।
"আমি বল্লাম সবই আল্লাহ ইছ্ছা ।"
" হ্যাঁ ভাই সবই আল্লাহ ইছ্ছা । আপনি সুরা আল ইমারানের সেই আয়াতটা জানেন ?
উনার এই প্রশ্নে বিব্রত হয়ে গেলাম। মনে মনে নিজের মাথার চুল ছিড়তে লাগলাম কেন যে আলসে করে আয়াতটা শিখলাম না । একজন মুসলমান হয়ে এটাকে আমি নিজের ব্যার্থতা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারলাম না।
"এই আয়াতটা নিয়ে একটা মশহুর ঘটনা আছে জানেন ?"
আমি বললাম " না জানি না ।"
আছরের নামাযের পর বাইরে তখন ঘন হয়ে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হছ্ছিল । পাশে খালটা জোয়ারের পানিতে টইটুম্বুর। কবুতরের হাটটাও তেমন জমে উঠেনি ।
" তাহলে শুনুন । সময় আছেত ?
আমি বাইরে আকাশটা দেখে নিয়ে বললাম " মাগরীবের নামাযের আগ পর্যন্ত ।"
" অনেক সময় ।
এক দেশে বাদশাহ ছিল । উনার অধীনে সাতটা রাজ্য ছিল। সেই রাজ্যের সাত রাজা উনার অনুগত ছিল। বাদশাহ্ ছিলেন খুবই ন্যায় পরায়ণ আর ধার্মিক । উনার প্রতিদিন আছরের নামাযের পর কিছু সময় কোরআন তেলোয়াত করার অভ্যাস ছিল ।
একদিন কোরআন তেলোয়াত করতে যেয়ে হঠাৎ এই আয়াতটা পড়ে মনের চকিতে একটু সন্দেহ লাগল । এটা কি ভাবে সম্ভব ? এই আমি সাতটি রাজ্যর বাদশাহ্ । এই বাদশাহী কি হঠাৎ করে কেউ কেড়ে নিতে পারবে ?
শুধু এই টুকুই । উনি উনার এই মনের সন্দেহের জন্য আল্লাহ কাছে কোন ক্ষমাও চাইলেন না অনুতপ্ত ও হলেন না । এরপর উনি কোরআন তেলোয়াত শেষ করে রাজ পোষাক খুলে সাধারন পোষাক পড়লেন । তারপর ঘোড়ায় চড়ে বের হলেন, একটু ঘুরে বেড়াবেন । এই সময় কাউকে সাথে নেননা । কারন এই সময়টা উনার একান্ত নিজস্ব সময়। ঘোড়ার লাগাম ঢিলা করে আস্তে আস্তে চলছিলেন আর কোরানের সেই আয়াতের অর্থটা নিয়ে বার বার ভাবছিলেন। এইভাবে আনমনে চলতে চলতে কখন যে নিজের রাজ প্রাসাদের সীমানা পার হয়ে জংগলে প্রবেশ করেছেন টেরও পাননি । যখন টের পেলেন তখন পথ হারিয়ে ফেলেছেন । বাদশাহ মনে মনে কিছুটা শংকিত হয়ে পড়লেন। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে । পাখিরা কলরব করে ক্লান্ত পাখায় ভর করে বাসায় ফিরছে। উনিও পথ খুজে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন । অনেক চেষ্টার পরও তিনি আর পথ খুজে পেলেন না । তবে পথ খুজতে যেয়ে গভীর জংগল থেকে বের হতে পারলেন । সন্ধ্যার আবছা আলোয় জায়গটা ঠাহর করতে পারলেন না। কোথায় এসেছেন ?
যাই হোক তারপরও চলতে লাগলেন যদি কোন লোকালয় পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকক্ষন চলার পরও কোন লোকালয় পেলেন না । এদিকে অনেক রাত হয়ে গেছে ঘোড়াটাও ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তিনি এবার লোকালয় পাওয়ার আশা বাদ দিয়ে পরিষ্কার মত ফাকা একটা জায়গা দেখে ঘোড়া থামালেন । নেমে কিছু শুকনা গাছপালা যোগাড় করে আগুন জ্বালালেন। তারপর এশার নামায পড়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় শুয়ে পড়লেন ।
সকালে বাদশাহর ঘুম ভাংগল অপরিচিত দুইজন সৈন্যর অশ্রাব গালি গালাজে । বাদশাহ ঘুম হতে তাড়াতাড়ি উঠে বসলেন । বসে সৈন্যদের প্রশ্ন করলেন " কি হয়েছে? "
সৈন্যরা বাদশাহ কথার জবাব না দিয়ে তার দুই দিকে দুই বাহু ধরে বেধে ফেলতে লাগল। বাদশাহ যথেষ্ঠ শাক্তিশালী ছিলেন তারপরও ওদের সাথে লড়তে গিয়েও থেমে গেলেন , কারন আরও দশ-বারো জন সশস্ত্র সৈন্য এগিয়ে আসছে। সৈন্যরা বাদশাহকে বেধে ফেলার পর ওদের নেতা এল । এসে বাদশাহকে দেখে বলল " এই কি সেই লোক যে আমাদের রাজার ঘোড়া চুরি করেছে? "
একজন সৈন্য বলল " জ্বী উনার মাথার পাশেই আমাদের রাজার ঘোড়াটাকে ঘাস খাওয়া রত অবস্থায় পাওয়া গেছে। "
বাদশাহ বলল " আমি কোন চোর নই আর কোন রাজার ঘোড়াও চুরি করিনি । গতরাতে পথ হারিয়ে আমি এখানে এসে পড়েছি। "
বাদশাহ ইছ্চে করেই নিজের পদবীর কথা চেপে গেলেন । কারন সৈন্যদের পোষাক দেখেই বুঝতে পেরেছেন এরা উনার অধিনস্ত নয়। তার মানে উনি অন্য কোন রাজ্য এসে পড়েছেন । এখন যদি বলেন আমি বাদশাহ তাহলে ওরা ওর পাগলামি ভেবে গায়ে আঘাত করতে পারে । যদিও ইতিমধ্যে কয়েকটা আঘাত খাওয়া হয়ে গেছে।
বাদশাহ নিজেকে ভাগ্যর উপর সোপর্দ করে দিল।
সৈন্যরা বাদশাহকে কাজির কাছে নিয়ে গেল । কাজি বাদাশাহকে দেখে বলল " তোমরা কি সঠিক ঘোড়া চোর কে ধরেছ ?
পুর্বের সৈন্য টা বলল " জ্বি কাজি সাহেব আমি নিজে ঘোড়াসহ একে ধরেছি। "
বাদাশহ কাজির কাছেও তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করল না ।
কাজি বলল " লোকটা কেমন জানি ঘোড়া চোর মনে হছ্ছে না । জনাব তোমার কি কিছু বলার আছে ? "
বাদাশাহ কাজিকে পূর্বের কথাই বলল "" আমি কোন চোর নই আর কোন রাজার ঘোড়াও চুরি করিনি । গতরাতে পথ হারিয়ে আমি এখানে এসে পড়েছি। "
" তুমি কোন রাজ্যর নাগরিক ? "
বাদশাহ নিজের রাজ্যর নাম বলল ।
কাজি তখন বলল " যাও একে কারাগারে ঢুকিয়ে রাখ । পরে তদন্ত করে দেখা যাবে।
এরপর থেকে সাতটি রাজ্যার বাদশাহ কারাগারেই থাকতে লাগল । কারাগারে প্রবেশ করার পর অন্য কয়েদির থেকে জানতে পারল এই রাজ্যর নাম কি ? নাম শুনেই বুঝতে পারল এই রাজ্য তার অধিনস্ত রাজ্য।
কারাগারে থাকা অবস্থায়ও প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করতেন। এভাবে কারাগারের ভিতর তেলাওয়াত করতে করতে যেদিন সুরা আল ইমারানের সেই আয়াতে আসল তখন হঠাৎ করে বাদশাহর সেই দিনের ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেল । বুঝতে পারল যেই দিন এই আয়াত পড়ার পর আল্লাহর সিফতের ব্যাপারে চকিত সন্দেহ করেছিল । সেই দিনই তার কাছ হতে রাজ্য ক্ষমতা সম্মান সবই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে । সাতটি রাজ্যর বাদশাহ আজ ঘোড়া চোর হয়ে কারাগারে বন্দি । বাদশাহ সাথে সাথে অঝোর ধারায় কাঁদতে কাঁদতে সিজদায় পড়ে গেল । দুই চোখের নোনা জলে জায়নামাজ ভিজিয়ে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাইতে লাগল । এই ভাবে বাদশাহ প্রতিদিন সুমধুর কন্ঠে কোরআন তেলওয়াত করেন আর আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে ক্ষমা ভিক্ষা করেন।
একদিন সেই দেশের রাজা কারাগার পরিদর্শনে এলেন । সেই সময় রাজা কারাগারে বাদশাহর কন্ঠের সুমধুর কোরআন তেলোয়াত শুনে কারাগার প্রধানকে প্রশ্ন করলেন। " লোকটি কে ? "
কারাগার প্রধান সব কিছু বলল ।
রাজা বলল " ওর কোরআন তেলোয়াত শুনেছ ?
হ্যাঁ হুজুর এই কয়েদি প্রতিদিন কোরআন তেলওয়াত করে । এমন কি রাতে তাহাজ্জুদও আদায় করে । খুবই পরহেজগার ব্যাক্তি।
রাজা বললেন ওকে প্রাসাদে পাঠিয়ে দাও । ওখানে সে আমার মেয়েকে কোরআন তেলওয়াত শেখাবে।
রাজার হকুম পালন হতে দেরী হল না ।
সেই থেকে প্রতিদিন বাদশাহ তার অধিনস্ত রাজ্যর রাজার মেয়েকে কোরআন শেখাতে লাগলেন। এইভাবে কোরআন তেলোয়াত শিখাতে যেয়ে যখন সেই কোরআনের আল ইমারানের আয়াত এল বাদশাহ বরাবরের মত এইবারও চোখের পানি ধরে রাখতে পারল না । বাদশাহর কান্না দেখে রাজকন্যা অবাক হয়ে গেল । সে সেই দিন আর পড়ল না অন্দর মহলে চলে গেল। সেখানে ব্যাপারটা তার পিতা রাজাকে বলল । রাজা শুনেই বাদশাহকে দরবারে ডেকে পাঠালেন। বাদশাহ দরবারে হাজির হতেই নিজের স্বরুপ ধারন করলেন । কারন রাজা এর আগে কয়েদি বাদশাহকে দেখেননি । বাদশাহকে কয়েদির পোষাকে দেখে রাজা চমকে গেলেন। থরথর করে কাঁপতে লাগল। দরবারে বাদশাহরও মন্ত্রী পরিষদের কয়েকজন সদস্য ছিল। তারাও বাদশাহকে দেখে অবাক হয়ে । এ কি করে সম্ভব !? সাত রাজ্যর বাদশাহ কয়েদির পোষাকে এখানে কেন ? রাজা বাদশাহ কে দেখে তাড়াতাড়ি সিংহাসন ছেড়ে নিচে নেমে এলেন। বাদশাহ ভীত কম্পিত রাজাকে সান্তনা দিয়ে বললেন " ভয় পেও না এ তোমার দোষ নয় । এ আমার আমল নামার পুরষ্কার। বাদশাহ রাজার সিংহাসনে যেয়ে বসলেন । রাজা মন্ত্রী পরিষদের সাথে হাত জোড় করে নিচে দাড়িয়ে রইল। নিজের মন্ত্রী পরিষদ বর্গদের বললেন তোমরা কেন এসেছ।
" হুজুর আমরা সবাই আপনারই খোজে চারদিকে বেড়িয়ে পড়েছি। আপনি বিহীন রাজ্য আমীর -প্রজা সবাই কান্নাকাটি করছে। আপনার সৈন্যরা যুদ্ধের বর্ম পড়ে নাংগা তলোয়ার নিয়ে আপনার খোঁজে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে । ওরা সবাই এই শপথ নিয়েছে যতদিন জীবিত বা মৃত আপনাকে না পাবে ততদিন এই তলোয়ার খাপে প্রবেশ করবে না ।
গল্প শেষ। জানিনা এই গল্প সত্য না মিথ্যা তবে উপদেশ হিসেবে উত্তম ।
ইছিন্নার হাটের মসজিদে তখন মাগরীবের আজান শুরু হয়ে গেল । আমি উঠে দাড়ালাম । লোকটি থেকে বিদায় নিলাম । বললাম আমার জন্য দোয়া করবেন তিনিও দোয়া চাইলেন। আজকে আর কবুতর কেনা হবে না । দোকান থেকে বের হয়ে মসজিদের দিকে রওয়ানা হলাম।
হাটতে হাটতে অনেক আগের সেই প্রশ্নের উত্তরটা পেয়ে গেলাম আমার সেই সহকর্মী কেন বার বার এই আয়াতটা পড়ত । যেন এখনও কানে বাজে তার কন্ঠে শোনা সুরা আল ইমরানের সেই আয়াত " কুলিল্লা হুম্মা মালিকিল মূলকি তুতিল মুলকা মাতনশা-উ ..........।
( সত্য ঘটনা। )
বিষয়: বিবিধ
২৪৪২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারণ লেখা।
যাযাকাল্লাহু খাইরান।
আমি আমার অল্প সময়ের মধ্যেই অনেককে দেখেছি এভাবে উপরে উঠতে আবার নিচে নামতে। নিজেও কিছুটা এর শিকার হয়েছি। এই আয়াত এর বক্তব্যটিই আমাকে সর্বাবস্থায় শান্ত রেখেছে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটির জন্য।
আর তখন কোরআনই হবে কষ্ট উপশমের ১০০% নিখুঁত ও কার্যকরি মহৌষধ
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
সংগৃহীত
অসাধারণ লেখা। আরো লিখুন ।
অনেক ধন্যবাদ ।
গতকাল আপনাকে স্বরণ করেছিলাম । মোবাইল বন্ধ পেয়েছি ।
Wish every body realize the meaning also who feel proud for his position.
Jazakallah khair.
সূরা আলে ইমরানের উল্লেখিত আয়াতটির মত কোরআনের প্রত্যেকটি আয়াতই একেকটি জ্বলন্ত শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। কোরআনের মজা যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য জীবনের কোন কিছুই কঠিন নয়। প্রত্যেক কিছুই অতি সহজ ভাবেই আয়ত্ব করা যায় কোরআনিক দিক নির্দেশনায়। কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে এতো বড় মহামূল্যবান নেয়ামতটি থেকে মানব জাতি কিছুই নিতে চেষ্টা করছে না। অথচ কোরআন মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে সিরাতুল মোস্তাকিমের দিকে। কিন্তু আমরা সেই ডাকে কতটুকু সাড়া দিচ্ছি? বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে গাফেলতির পরিচয় দিচ্ছি। এই গাফেলতি একদিন মানুষের জন্য কাল হতে পারে! কারণ রাসুল (সা) নিজেই বলেছেন- আল কোরআনু হুজ্জাতুন লাকা আউ আলাইকা। অর্থাৎ কোরআন হয়তো মানুষের নাজাতের উসিলা হতে পারে। নতুবা ধ্বংশের কারণ হতে পারে।
এখন আমাদের বুঝতে হবে- আমরা কি নাজাতের উসিলা হিসেবে গ্রহণ করবো নাকি ধ্বংশের কারণ হিসেবে কোরআনকে বর্জন করবো? আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে কোরআনকে নাজাতের উসিলা হিসেবে গ্রহণ করার তাওফীক দেন- আমিন।
আসলে এটা আমার লেখার কেরামতি নয় । এটা হল আপনাদের ঈমানের কারনে । আপনারা কোরাআন কে ভালবাসেন তাই মাশুক কোরাআনের কথা শুনে আপনাদের আশেকদের ভাল লেগেছে। দোয়া করবেন ।
আমার জীবনের বাস্তব ঘটনা। অনেক দিন ধরে এই লেখাটা শেয়ার করব ভাবছিলাম। সেদিন আল্লাহ তৌফীক দিয়েছে তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি । দোয়া করবেন ।
আশা করি আল্লাহ আমাকে এই আয়াতটা মুখস্থ করতে সাহায্য করবেন।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন