এখানে কি শিক্ষণীয় ? ***০১***
লিখেছেন লিখেছেন জাইদী রেজা ২২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৫৯:৫৭ বিকাল
মিঃ মাইকেল ক্যারিট, ১৯২৯ সালে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের ক্যাডার। অতি সজ্জন ও ব্যতিক্রমী মানুষ ছিলেন ।
তার পিতা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন পড়াতেন । নিজেও অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের আণ্ডারে তৎকালীন মেদিনীপুর জেলায়
চাকুরী শুরু করেন । চাকুরীর প্রথম বছরেই তারই সামনে
জাতীয়তাবাদী-উগ্রপন্থী-স্বাধীনতাকামীদের হাতে পর পর
দুইজন জেলা প্রশাসক নিহত হন ।
তৃতীয় জেলা প্রশাসক চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসর নিয়ে ভারত থেকে পালিয়ে যান । মেদিনীপুর উপদ্রুত অঞ্চলে মিঃ মাইকেল ক্যারিট নীতিহীন, বিবেকহীন, নিষ্ঠুর সম্রাজ্জ্যবাদী শাসনের চণ্ডরুপ প্রত্যক্ষ করেন । পরবর্তীতে তিনি যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করতে যান, তখন ইংরেজ শাসনের কপটতা ও কুটিলতা দেখে স্তম্ভিত, বিস্মিত ও
মর্মাহত হন । এক পর্যায়ে তিনি চাকুরী ছেড়ে লন্ডনে চলে যান ।
তাঁর স্মৃতিকথায় জনৈক পাঞ্জাবী ঠিকাদারের সাথে সাক্ষাৎকারের ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন এভাবে-
“ইতিমধ্যে পাঞ্জাবী লোকটি কপট বিনয়ের সঙ্গে মাফ চাইল। তারপর সে শান্ত অথচ গম্ভীর কণ্ঠে তার মুখস্হ বক্তৃতা ঝাড়লো: হুজুর হচ্ছেন মহানুভব ব্যক্তি। এই দুর্ভাগা দেশে তিন কিসিমের লোক আছে। আছেন সজ্জন যাঁরা ঘুষ খান না, যেমন আপনি। আছে বদলোক যারা ঘুষ খায় এবং (আমার চোখের দিকে তাকিয়ে) আছে শুয়রের বাচ্চারা। যারা ঘুষ খায় অথচ ঘুষ প্রদানকারীকে কোন সাহায্য করে না। সালাম। সালাম হুজুর।”
স্মৃতিকথার উপসংহারে ক্যারিট লিখেছেন যে তিনি তাঁর দীর্ঘ জীবনে এই দেশে সজ্জন, বজ্জাত ও শুয়রের বাচ্চা- তিন কিসিমের লোকই দেখেছেন।
তথ্যসূত্র: পরার্থপরতার অর্থনীতি,
লেখক: আকবর আলি খান,
প্রকাশক: ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড,
প্রথম প্রকাশ: ২০০০ খ্রি.
বিষয়: রাজনীতি
১৩৮৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন