কোন ভারতের দালালী করতে চান
লিখেছেন লিখেছেন আবু মাহফুজ ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:০৩:৪৪ রাত
কোন ভারতের দালালী করতে চান
একটা বিষয়ে লিখার ইচ্ছা ছিল বেশ কয়েকদিন থেকে। কিন্তু সে লেখাটা গুছিয়ে ভালভাবে না লিখলে কথাটা স্পষ্ট হবে না। তাই শুরু করতে পারিনি। আমার লেখার শিরোনাম ভেবেছি "সম্ভাব্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং আধুনিক তরুনদের করণীয়"। বর্তমান বিশ্বে এখন যা চলছে তা যে এক ধরনের অঘোষিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধই চলছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ব্যাপারে কেউ যদি দ্বিমত পোষন করেন সে ব্যাপারে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে।
আমার সেই লেখার একটি অংশ ভারতীয় আধিপত্যবাদ সম্পর্কে। বলার অপেক্ষা রাখেনা। সারা বিশ্বের সেই মহাপ্রলয়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে যে ভয়ানক পরিস্থিতি সে জন্য অন্য যতগুলো কারণ রয়েছে তারচে বেশী অন্যতম প্রধান কারণ হলো ব্রাম্মন্যবাদী ভারতের আধিপত্যবাদী উদ্ধত্য। বাংলাদেশকে গ্রাস করার ব্রাম্মন্যবাদী ভারতের সে চক্রান্ত চলে এসেছে অনেক অনেক বছর থেকে। এবং সাম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশের এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ, আমলা, লেখক সাংবাদিক এবং সংবাদ মাধ্যমকে কিনে নিয়েছেন। যারা এখন নিজেদেরকে ভারতের গোলাম হিসেবেই তাদের পুর্ণ আনুগত্য করছেন এবং ভারতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পা চাটা গোলামের মত এক পায়ে দাঁড়িয়ে।
কিন্তু এই দালালরা যারা ভারতপ্রেমে এত গদ গদ, ভারতকে মনিব মনিব বলতে মুখের ফেনা তুলেন, এমনকি যারা ভারতীয় সিরিয়াল মুভি, হিন্দি গান প্রেমে বিভোর তাদের কাছে স্বভাবতই কিছু প্রশ্ন। তারা কি বিবেক বা বুদ্ধিকে একেবারেই বিক্রি করে দিয়েছেন? কোন ভারতকে আপনার মনিব মেনেছেন। যে ভারতে আজো মানুষকে মানুষ হিসেবে মুল্যায়ন করা হয় না। যে ভারতে আজো শতকরা ৫০ ভাগ বাড়ীতে আজো পায়খানা নাই। যারা রাস্তার পাশে গিয়ে সে কর্মটি সম্পাদন করে। ২০১২ সালে বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে শতকরা ৪৯.৮০ ভাগ ভারতীয় রাস্তার পাশে খোলা যায়গায় পায়খানা করে। রিপোর্টটির জন্য দেখুন
http://www.bbc.com/news/world-asia-india-17362837
যে দেশে নারীরা সবচে বেশী নির্যাতিত। আমরা ২০১২ সালের সেই গ্যাঙ রেইপের কথা জানি সারা বিশ্ব জানে, ২০১২ সালের ১২ই ডিসেম্বর দক্ষিণ দিল্লিতে জোতি সিং নামে ২৩ বছর বয়সী এক পিজিও থেরাপিস্টকে প্রকাশ্যে বাসের মধ্যে গনধর্ষন করে। পরে সেই ভিক্টিম জোতি সিং চিকিৎসা অবস্থায় সিংগাপুরে মারা যায়।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ক্রাইম রিপোর্ট ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৩ সালে
২৪,৯২৩ জন রেইপ ভিক্টিম রিপোর্ট করে। তবে ক্রাইম রিপোর্টে আরো বলা হয় যে, ভারতে মাত্র প্রতি এক লাখ জনে মাত্র ২ জনে রিপোর্ট করে। সে হিসেবে রেইপ ভিক্টিম এর সংখ্যা ২৪ হাজার এর পরিবর্তে ২৪ কোটি হতে পারে।
এবার আসি অন্য প্রসংগে। গত ২০শে জানুয়ারী একটা রিপোর্ট দেখলাম সাথে সাথে এক টক শোতে এক আলোচকের আলোচনা। আলোচনার টাইটেল ছিল ঃ "ভারতীয় দূতাবাসে যে পরিমাণ অপমান অবহেলা করে, ওখানে গেলে সব জামাতী হয়ে যাবে: ড. সলিমুল্লাহ খাঁন"
দেশের বেসরকারী টেলিভিশন আর টিভির 'কেমন বাংলাদেশ চাই' টকশোতে অংশগ্রহণ করে সমাজ তাত্ত্বিক ও গবেষক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খাঁন বলেছেন,
'ভারতীয় দূতাবাস আমাদের সারাদিন লাইনে দাড় করিয়ে রাখে, ওরা আমাদের মানুষই মনে করেনা, ওখানে গেলে সব জামাতী হয়ে যাবে'
ණ☛ তিনি বলেন, আমার অভিজ্ঞতা আছে, আপনি যদি ভারতীয় দূতাবাসে যান ভিসার জন্য। বাংলাদেশে পাসপোর্ট অফিসে যে রকম অত্যাচার করে, আমাকেও অত্যাচার করেছে। আমার একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আমাকে বলেছে, ভারতীয় দুতাবাসে গেলে লোক জামায়াতে ইসলামী হয়ে যাবে। ওখানে গেলে যে পরিমাণ অপমান অবহেলা করে।
ණ☛ তিনি আরো বলেন, কোন কারণ ছাড়াই একজন ছাত্রকে সকাল থেকে সারাদিন লাইনে দাড় করিয়ে রেখেছে। তারা খাইতে পায়নাই, বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় বলছে এখন তোমার এটা হবে না। কারণ আমাদের একটা ফর্ম নাই। তো আপনি দাড় করিয়ে রাখছেন কেন? আমাদের যে মানুষ হিসেবে দেখা হচ্ছে না এই কথাটা বলার সাহস আমাদের নাই কেন? আমি বলি, আমরা এখন নিউ কলোনিয়াল যুগে আছি এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নাই। কিন্তু মনে রাখতে হবে আমরা স্বাধীন হয়েছি। লড়াই করে স্বাধীন করেছি।
আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, তাদের অনেকেই ভারতীয়দের সাথে কাজ করতে হয়। বিশেষত যারা ইনফরমেশন টেকনলজিতে চাকুরীতে তারা নিঃসন্দেহে চারপাশে প্রচুর ভারতীয় দেখতে পান।
এই ব্রাম্মণ্যবাদীদের অনেকগুলো গুণের মধ্যে একটা বড় গুণ হলো এরা প্রচন্ড কঞ্জুস এবং প্রচন্ড ছোটলোক। পৃথিবীতে এত কৃপণ কোন জাতি আছে কিনা সন্দেহ।
ছোটকালে গল্প শুনেছিলাম এই কঞ্জুসদের। কলকাতায় অন্যদেশ দেশ থেকে মেহমান এসেছে, বাড়ীর মালিক বলছে, দাদা এতদুর থেকে এসেছেন অনেক কষ্ট করে, জানি থাকবেন তো না, তো একটু চা পানি খাবেন?
আমি একসময় চাকুরী করতাম ফোর্ড মোটর কোম্পানীতে। আমার অফিস ছিল দ্বিতীয় তলায় আই.টি ডিপার্টমেন্টে, যেখানে বেশীর ভাগ ভারতীয়, দুপুরে লাঞ্চের সময় র্দুগন্ধে থাকা যেত না। বলা বাহুল্য আমি যেহেতু আই.টিতে কাজ করি, আমার ডানে বামে, সামনে পিছনে এই দাদারাই। আমার এই ৮-১০ বছরের দাদাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে থিসিস লেখা যাবে।
আমার গত বছরের যে প্রজেক্টে কাজ করতাম স্বভাবতই সে প্রজেক্টেও অধিকাং ভারতীয়, তবে ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আমেরিকান সাদা। ম্যানেজার অনেকবার চেয়েছেন সব টিম মেম্বারদের নিয়ে দুপুরে লাঞ্চ করবেন। তবে আমেরিকায় বিশেষ কোন অনুষ্ঠান ছাড়া সবার লাঞ্চের টাকা নিজকেই পরিশোধ করতে হয়। যেদিনই একত্রে লাঞ্চ করার দিন আসে পয়সা খরচ করার ভয়ে সবাই ভাগে। আমরা যে টিম রুমে কাজ করি, মাঝে মধ্যে আমরা কেউ কেউ চানাচুর, বিস্কুট জাতীয় হালকা খাবার নিয়ে আসি রুমে মধ্যে। মজার ব্যাপার হলো আমরা কেউ যখনই চানাচুর বিস্কুট জাতীয় কিছু নিয়ে আসি সবগুলো দাদা এমনকি অন্য টিম রুম থেকে এসেও হুমড়ী খেয়ে একদিনেই হয়তো বিস্কুটের প্যাকেটটা সাবাড় করে দেয় কিন্তু কোনদিন ২ ডলার দিয়ে একটা প্যাকেট কিনে আনে না। অথচ এদের অনেককে আমি জানি আমার চে প্রায় চারগুন বেশী বেতন পায়।
আমরা যারা আই.টি তে কাজ করি তারা জানি, কোন কোম্পানীতে যদি এরা একবার ঢুকতে তখন অন্যদেরকে মানুষও মনে করে না। অপরদিকে সাদা আমেকিানদের পা চাটতেও প্রস্তত। ভারতীয়দের উন্নতির পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে একটি প্রধান কারণ হলো এরা সাদা ইউরোপীয়দের পা চাটতে ওস্তাদ।
বাংলাদেশীদের যারা হিন্ডি সিরিয়াল হিন্ডি মুভি আর দাদা প্রেমে তাই তাদের কাছে প্রশ্ন হলো কিসের পেছনে দেীড়াচ্ছেন?! কাদের গোলামী করছেন? যাকে প্রভু মানছেন, তাদের বাড়ীতে পায়খানা আছে কিনা দেখে নিন।
বিষয়: বিবিধ
১৫২৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন