অাল্লামা ইকবােলর িশকোয়া এবং জবাব এ িশকোয়া
লিখেছেন লিখেছেন আবু মাহফুজ ২৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৩৩:২১ রাত
১৯০৯ সালে আলস্নামা ইকবাল শিকওয়া কবিতা লিখেছিলেন, শিকওয়া শব্দের অর্থ হলো অভিযোগ। আলস্নামা ইকবালের শিকওয়া কবিতা আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল, আলস্নামা ইকবাল আলস্নাহ তায়ালার বিরম্নদ্ধে অভিযোগ করছিলেন। যে আলস্নাহর দ্বীনই যদি সত্যি হবে তাহলে মুসলমানর কেন এত লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, মুসলমানরা কেন অপমানিত অপদস্তô। আলস্নামা ইকবালের কবিতা প্রকাশের পর স্বভাবতই মুসলমানরা ফুঁসে উঠেছিল, মোলস্নারা কাফির ফতোয়া দিয়েছিল আলস্নামা ইকবালকে।
আজ হঠাৎ আলস্নামা ইকবালের সেই কবিতা মনে পড়লো। অনেক দিন থেকেই রাগে দুঃখে অপমানে নিজেকে ধিক্কার দিতে মনে চাইছিল। লেখালেখি তো ছেড়েই দিয়েছি বেশ অনেক বছর আগেই। কি লিখবো, কোথায় লিখবো, কাকে নিয়ে লিখবো। সারা বিশ্বে একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে, মুসলমানরা মার খেয়েই যাচ্ছে, এবং নিজেরা নিজেদেরকে মেরেই যাচ্ছে। ঘটেই যাচ্ছে একের পর এক, চলেই যাচ্ছে ঘটনা পরম্পরা, তারপর আমরা ভুলে যাচ্ছি সব। ক’জনের মনে আছে গুজরাটের গনহত্যার কথা, ক’জন জানে বাবরী মসজিদ নামে কোন মসজিদ ছিল। কত লোককে হত্যা করা হয়েছিল বসনিয়াতে, কসভোতে। যে বেীদ্ধ ধর্মে জীব হত্যা মহাপাপ, ক’জন জানে সে বেীদ্ধ ধর্মের মায়ানমারে মুসলমানরা আসলেই কোন জীব কিনা, কত শত মানুষ নামের জীবগুলোকে জীবিত পুড়ে মারা হয়েছিল।
ক’জন মুসলমান জানে কি হয়েছিল আফগানিস্তôানে, আসল ব্যপারটা আসলেই কি, কেই এই বিন লাদেন, কারা এই তালেবান, পাহাড়ী গুহায় এত অস্ত্র কারখানা কোন ফেরেশতারা পাঠিয়েছিল সোভিয়েতের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য, কিংবা আমেরিকার সৈন্যের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য কোন কারখানায় তৈরি হয় তালেবানের ট্যংকগুলো। ক’জন জানে সাদ্দামের আসল পরিচয়, সাদ্দামের ইতিহাস, ইরাকে ইতিহাস। কত মুসলমান মরেছিল সিরিয়ায়, বাশার আসাদই বা কে? বোকো হারামই বা কারা, কি তাদের পরিচয়? তারপর হঠাৎ ইসলামই স্টেট এর অভ্যুদয়, হঠাৎ করেই, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের এই মহা সুযোগ।
আজ সত্যিই আলস্নামা ইকবালের শিকওয়া কবিতা মনে পড়ছিল, রাত এখন ২টা, শুয়েছিলাম, চোখের কোণে পানি এল, বাংলাদেশে একের পর এক কি ঘটছে এসব, আবদুল লতিফ সিদ্দীকি দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক সর্বশেষ যে নাটক শুরম্ন করেছেন বাংলাদেশ সরকার তার শেষ কোথায়, কোথায় মানবতা, কোথায় মূল্যবোধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিকে যখন প্রকাশ্যে বলা হয় ”কোথায় তো আলস্নাহ” তখন কি সত্যি সত্যিই আলস্নামা ইকবালের শিকওয়া কবিতার কথা মনে পড়ে না? তখন সত্যি সত্যিই কি কোন কোন তরম্নন বলতে চায় যে, তাহলে কি নাস্তিôক হয়ে যাওয়াই নিরাপদ!!
বাংলাদেশে যখন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী নাটক চলছে, সে মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রে মিজোরী রাজ্যের ফার্গাসনে ঘটে যাচ্ছে আরেক লংকা কান্ড। অপরদিকে মধ্যপ্রাচ্যে আইসিস নামক জানোয়ারদের আরেক লংকা কান্ড।
আলস্নামা ইকবাল শিকওয়া কবিতায় যখন এক গাদা অভিযোগ, অনুযোগ, নালিশ, দুঃখ বেদনার কথা নিয়ে আসলেন। কেন মুসলমানরা আজ এত অপদস্থ, অপমানিত, নিপীড়িত নির্যাতিত, আলস্নামা ইকবাল এই অভিযোগ নামা সঠিকভাবে মোলস্নারা যখন আলস্নামা ইকবালকে কাফির ফতোয়া দিয়েছিল। শিকওয়াহ কবিতা লিখার চার বছর পর ১৯১৩ সালে আলস্নামা ইকবাল জওয়াবে শিকওয়া নামে আরেকটি কবিতা লিখেন। জওয়াবে শিকওয়া ছিল আলস্নাহর পড়্গ থেকে জওয়াব। আলস্নাহর সেই বান্দা আলস্নাহর হয়েই জওয়াব দেন যে, হে বান্দা, পথ তো আমি দেখিয়েই দিয়েছি। ভুল পথে চললে পরিণতি তো তোমাকে ভোগ করতেই হবে। পরীড়্গা তো তোমার আসবেই।
আলস্নামা ইকবালের শিকওয়া এবং জওয়াবে শিকওয়া কবিতাদ্বয়ের সাথে পবিত্র কোরআনের দুটি আয়াত যোগ করেই আজকের এই ছোট্র লেখাটা শেষ করবো।
পবিত্র কোরআনে আলস্নাহ পাক বলেছেন, জাহারাল ফাসাদু ফিল বাররে ওয়া আল বাহরে বিমা কাসাবাত আইদি আন নাস। যার অর্থ হলো ”জলে স্থলে সর্বত্র আজ মহা বিপর্যয় ঘটে চলছে যা কিনা মানুষেরই কর্মফল। অন্য আয়াতে আলস্নাহ পাক বলেছেন, ”ইন্নালস্নাহা লা ইউগাইয়িরম্ন মা বি ক্বাউমিন হাত্তা মা ইউগাইয়িরম্ন মা বি আনফুসিহিম” যার অর্থ হলো, কোন ব্যাক্তি বা জাতিকে আলস্নাহ পাক পরিবর্তন করেন না, বা উন্নতি করেন না, যতড়্গন না তারা নিজে নিজেদেরকে পরিবর্তন করে বা উন্নতির জন্য প্রস্তুত করে।
বিষয়: বিবিধ
২২১৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি বলি কোথা ছিল মুসলিম তোমাদের এই দুনিয়া মাঝ?
অসনে বসনে খ্রিষ্ট তোমরা, হিন্দু তোমরা সভ্যতায়,
তুমি মুসলিম? যাহারে দেখিয়া ই্হুদিও লাজে মরিয়া যায়!
সৈয়দ কেহ মির্যা কেহ বা আফগান কেহ তুমি যে হও,
সব কিছু তুমি, বল তো এবার মুসলিম তুমি হও কি নও?
আল্লামা ইকবালের শিকওয়া এবং জওয়াবে শিকওয়ার প্রতিপাদ্য কোরআনের যে আয়াতদ্বয় আমি উদ্ধৃত করেছি তার সাথে সামঞ্জস্যশীল। আমরা যা ভোগ করি, এটা আমাদেরই কর্মফল, আল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা নিজেদেরই বোকামী। আল্লাহ পাক পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
ইবারহীম ইববে আদহামের দোয়া কেন কবুল হয়না সে আলোচনার প্রেক্ষিতে ছোটকালে পড়া একটা কেীতুক মনে পড়লো, এক ছেলে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে এসেছিল, "লন্ডন আমেরিকার রাজধানী", বাড়ী এসে দেখলো সবনার্শ!! লন্ডন তো আমেরিকার রাজধানী নয়্!! সাথে সাথে মাগরিবের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কেঁদে কেদেঁ দোয়া করতে লাগলো আর মাকেও বললো দোয়া করতে "হে আল্লাহ, আজ রাতের মধ্যে লন্ডনকে আমেরিকার রাজধানী বানিয়ে দাও।" এটাই হলো আল্লামা ইকবালের শিকওয়া কবিতার শিক্ষা, এবং ইবরাহীম ইবনে আদহামের বক্তব্য "দোয়া কেন কবুল হয় না"।
বিষয়গুলোর উপরে আপনার কাছ থেকে কিছু পোষ্ট কামনা করছি।
আচ্ছা আরেকটি প্রশ্ন, আচ্ছা আফগানিস্তানের পাহাড়ে কি অস্ত্র কারখানা আছে? সেখানে কি ট্যাংক বানানো হয়? আজকে যে আইসিস সারা বিশ্বকে কাপিঁয়ে দিচ্ছে এই আইসিসের পাহাড়ে কি কামানের কারখানা আছে? যদি না থাকে কামানগুলো কি ফেরেশতারা নিয়ে আসে? না হলে কারা যোগান দেয় এসব অস্ত্র শস্ত্র। ভাই, আমরা মুসলমানরা কিন্তু খুবই বোকা। আবার আসি আল্লামা ইকবালের কথায়, আল্লাহর বিরুদ্ধে শিকায়েত করে লাভ নেই। দোষটা আল্লাহর নয়, কিন্তু এতে ও যদি মুসলমানদের একটু হুশ হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন