অভিব্যাক্তি
লিখেছেন লিখেছেন আবু মাহফুজ ২৭ মে, ২০১৪, ১১:১৭:০৪ সকাল
অভিব্যাক্তি প্রকাশ করার মত নয়। কোন বিষয়ে সীমাতিরিক্ত ব্যাথিত, ক্ষুব্ধ হলে আমার মাথা ব্যাথা হয়, বমি বমি ভাব হয়। রাগে দুঃখে ঘৃণায় বাধ্য হয়ে নিরিবিলি একান্ত নিজের জীবন যাপন করার চিন্তা করি।
আজকের বাংলাদেশের এবং বিশ্ব পরিস্থিতি কমবেশী সবারই জানা, এ বিষয়ে কার কতটুকু প্রতিক্রিয়া বলা মুশকিল। এটা অবশ্য নির্ভর করবে কে কিভাবে দেখেন। তবে, যিনি বা যাঁরা এই লেখাটি পড়ছেন, যেহেতু বাংলা পড়ছেন, ধরে নিচ্ছি আপনি বাঙালী। ওহ সরি, বাঙালী না বাংলাদেশেী সে আবার আরেক বিতর্ক। ফরগেট এবাউট ইট। আমি সে বিতর্কে যেতে চাই না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি, বিশ্বের পরিস্থিতির দিকে তাকালে বমি আসে। রাগে দুঃখে ক্ষোভে যখন বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা হয় তখন আবার নতুন বিতর্কের কথা শুনলে মনে হয় আমার মাথাটা কি ব্লো আপ করে কিনা।
আমার এক বন্ধু পরামর্শ দিলেন, খুব কম কনজিউম করতে। সোজা বাংলায় বলতে গেলে, খবরের কাগজ পড়বো, ইন্টারনেটে যাব না, ফেইসবুকে হাত দেব না, বন্ধু বান্ধবের সাথে দেশ বিদেশ সম্পর্কে কোন কথা বলবো না।
ভালই তো, ক'দিন সত্যি সত্যিই ফলো করলাম ঐ বন্ধুর পরামর্শ। আমার ঐ বন্ধু কিন্তু অসম্ভব মেধাবী ছিলেন এবং আছেন, বাংলাদেশের বলা যায় সবচে' খান্দানী যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র এবং প্রফেসর ছিলেন, এখন বিশ্বের নামকরা দেশের আরেক নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। তাই বন্ধুটির পরামর্শ একটু সিরিয়ারলিই নিলাম।
মনোযোগ দিলাম ব্যাক্তিগত জীবনে, নিজ পরিবারে। আমার ১৩ বছরের ছেলে টিন এজে পা দিল, নতুন একটা মেয়ে জন্ম নিল বয়স মাত্র একমাস, ছেলে এবং মেয়েকে একটু আধটু সময় দিচ্ছি। বাকি সময়, চাকুরী, প্রফেসনাল পড়াশোনা, এবং নিয়মিত জিমে যাওয়া শুরু করেছি। যখন সময় হয় মসজিদে যাই, চুপ চাপ নামাজখানা পড়েই বাসায় চলে আসি।
মাঝে মধ্যে চিন্তা করছিলাম তবলিগে যোগ দেব কিনা। দুনিয়া নিয়ে চিন্তাটা বন্ধ হতে পারে, আল্লা বিল্লাহ করবো, বিশ্বাসটা যদি তাদের মত করতে পারি তাহলে বেহেশতেরও একটা আশা করতে পারি।
কিন্তু না, আমার তো আসলে খাসলতই খারাপ। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ১৮ বছর কাটিয়েছি, সেখানে শিক্ষকতা, রাজনীতি (আমেরিকার মুলধারার রাজনীতি, ডেমোক্র্যাটিক পাটি), সাংবাদিকতা, ইলেকশন সবই করলাম, এক দৃষ্টিতে বলা যায় জীবনটাকে ম্যাসাকার করে দিলাম, দশ বছর গাঁটের পয়সা খরচ করে পত্রিকা বের করলাম। পরিশেষে মিশিগান ছেড়ে ওয়াশিংটন ডি.সি'র উপকন্ঠে ভার্জিনিয়ায় চলে এলাম অনেকটা এই ভেবেও যে, দেখিনা জঞ্জাল থেকে দুরে ব্যাক্তিগত জীবনটা সুন্দর করতে পারি কিনা।
কিন্তু না, ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান বান্দে। আমি তো চোখ কান বন্ধ করে চলতে পারি না। গাড়ি ড্রাইভ করতে গেলে রেডিওতে বিশ্বের খবর শুনে ফেলি, দোকানে গেলে বাংলা পত্রিকা চোখে পড়ে যায়। মসজিদে গেছি নামাজ পড়তে একজন এসে খোঁচা দিয়ে বললো, কি সাংবাদিক সাব, নারায়নগঞ্জের ঘটনা শুনেছেন, আপনার বাড়ি কি ফেনী?
বন্ধুটি বেশ ঘনিষ্ঠ, চার পাশে একনজর তাকিযে দেখলাম নাহ, বাঙালী কেউ নাই, তখন খুব খারাপ ভাষায় বন্ধুটিকে একটা গালি দিলাম, যত নীচে যাওয়া যায়, যত খারাপ ভাষায় গালি আমার মুখ দিয়ে আসা সম্ভব এ ব্যাপারে আমার পুরো শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যাবহার করে বাংলাদেশে সবগুলো প্রধান রাজনৈতিক দলকে নাম ধরে ধরে গালি দিলাম। বন্ধুটি হাসলো, বললো আস্তাগফেরুল্লাহ। আমি কিছুটা মুখ ভেঙচিয়ে বললাম, "হাসো কেন মিয়া, আমি কি তোমার দুলাভাই লাগি নাকি। তুমি কি মনে করো আমি মশকারি করছি।"
বন্ধুটিকে বিদায় দিয়ে গাড়িতে উঠতে উঠতে বললাম, শালা দিলিতো মাথাটা আবার নষ্ট করে। (অসমাপ্ত)
বিষয়: বিবিধ
১১৬৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন