সঙ্ঘাত এড়াতে দ্রুত সমঝোতায় আসুন
লিখেছেন লিখেছেন নদীকন্যা ১৪ মে, ২০১৩, ০৭:৪৮:৩১ সন্ধ্যা
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দেশে এখন গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। এই সঙ্কট নিরসনে জাতিসঙ্ঘের একজন প্রতিনিধি ঢাকা সফরে আছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতার সাথে বৈঠক করছেন। অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথেও বৈঠক করেছেন তিনি। বিরোধী দলগুলো তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ক্ষমতাসীন দল এ ব্যবস্থা বাতিল করে এখন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ফর্মুলা দিয়েছে। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে এ ধরনের কোনো সরকারের অধীনে বিরোধী দলের নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এর আগে বিএনপি সরকারের আমলেও এ ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তখন বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তা প্রত্যাখ্যান করে তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের জন্য কঠোর আন্দোলন করেছিল। ্েসই আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সরকার তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল।
বিরোধী দল এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে এক দফার আন্দোলন শুরু করেছে। একই সাথে কূটনৈতিক পর্যায়েও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: দীপু মনি বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকে আবারও নির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথাই বলেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিরোধী দলের তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের দাবি যদি মেনে নিই তাহলে সংলাপের কী দরকার। অর্থাৎ সরকার আগের অবস্থানে অটল রয়েছে। সরকারের এ ধরনের মনোভাবে বিদেশী মধ্যস্থতায় আলোচনায় খুব একটা অগ্রগতি হবে বলে মনে হয় না। সে ক্ষেত্রে রাজপথে সঙ্ঘাত ও সংঘর্ষ আরো প্রবল আকার ধারণ করবে। ইতোমধ্যে এর আলামতগুলো সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিরোধী দল হরতাল ও অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিচ্ছে; অপর দিকে সরকার কঠোরভাবে বিরোধী দলকে দমনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সভা-সমাবেশ করার অনুমতি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না।
ক্ষমতাসীন দল এখন জনমতের দিকটি কোনোভাবেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। দেশের মানুষ চায় সবার অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ ধরনের নির্বাচন কোনোভাবেই ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সম্ভব নয়। এ কারণে যে নামেই হোক না কেন দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনকালীন সরকার ছাড়া বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোতেও দেখা যাচ্ছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীনদের বিরোধী দলের সাথে দ্রুত নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা জরুরি। মনে রাখতে হবে, বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব নয়। এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আরো বাড়বে। আমরা আশা করব, সরকার অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন