রাসূল(স)এর যুদ্ধনীতি
লিখেছেন লিখেছেন সাগর কন্যা ১৮ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৫৭:০৮ রাত
একমাত্র আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই দুনিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। অতএব, জীবনে তথা মানবসমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠাই ইসলামের মূল লক্ষ্য। কিন্তু দুনিয়ায় কোনো কিছুই এমনি এমনি অর্জিত হয় না। কোন কিছু অর্জনের জন্য যেমন সাধনা দরকার, ত্যাগ-তিতিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি দৃঢ়চিত্তে তা অর্জনের জন্য কর্মপ্রচেষ্টা একান্ত অপরিহার্য। দুনিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও তেমনি অব্যাহত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। দুনিয়ায় যারা জুলুম-অন্যায় করে, শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত করে, তাদের প্রতিহত করা এবং প্রয়োজনে তাদেরকে বল প্রয়োগে নিবৃত্ত করা প্রয়োজন। অন্যথায়, সমাজে শান্তিপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই যুদ্ধের প্রসঙ্গ এসে পড়ে। কিন্তু যুদ্ধ স্বাভাবিকভাবে কারো কাম্য নয়।
এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে-------
“ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিত্না দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।” (সূরা আনফাল, আয়াত : ৩৯)
“যারা ঈমান আনে, হিজরত করে এবং সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা আল্লাহর নিকট মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ, আর তারাই সফলকাম।” (সূরা তওবা, আয়াত : ২০)
“ যারা পরকালের বিনিময়ে তাদের পার্থিব জীবন বিক্রয় করে তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করলে সে নিহত হোক অথবা বিজয়ী হোক তাকে মহাপুরস্কার দান করবো। ”(সূরা নিসা, আয়াত : ৭৪)
“ যারা আমার (আল্লাহ) উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করবো। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদিগের সঙ্গে থাকেন।” (সূরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৯)
আল কুরআন থেকে উদ্ধৃত উপরোক্ত আয়াতসমূহে জিহাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা অতিশয় তাৎপর্যপূর্ণ ও বিশেষভাবে অনুধাবনযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে, জিহাদ হলো এক নিরন্তর প্রচেষ্টা বা সংগ্রামের নাম। নিজেকে সংশোধন করা থেকে শুরু করে সমাজের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা ও বিজয়ী করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলানোর নাম জিহাদ। এ জিহাদেরই একটি বিশেষ দিক হলো যুদ্ধ। যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন যুগে, বিভিন্ন সমাজে ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা অনুসৃত হয়ে থাকে।
পৃথিবীতে সাধারণত ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা জাতিগত স্বার্থ, লোভ-প্রলোভন, হিংসা-বিদ্বেষ ও আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ ধরনের যুদ্ধে সর্বদাই ধ্বংস, হত্যা ও অশান্তি সৃষ্টি হয়। কিন্তু ইসলামে জিহাদ বা যুদ্ধ কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থ, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, আধিপত্য বিস্তার অথবা পার্থিব কোনো কিছু অর্জনের জন্য সংঘটিত হয় না। মানব সমাজে বা পৃথিবীতে শান্তি-শৃঙ্খলা, সত্য-ন্যায় ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই কেবল জিহাদ বা যুদ্ধ করা ইসলাম সমর্থন করে বা অপরিহার্য গণ্য করে। ইসলামের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় যে, শুধুমাত্র অপশক্তির হাত থেকে মানুষ বা সমাজকে নিরাপত্তা দানের উদ্দেশ্যেই রাসূলুল্লাহ (সা) আল্লাহর নির্দেশে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কতিপয় সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুসরণ করার জন্য মহান স্রষ্টা তাঁকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
মক্কায় ইসলাম গ্রহণের পর সেখানকার কাফিরগণ মুসলমানদের ওপর অকথ্য জুলুম-নির্যাতন চালায়। কিন্তু মুসলমানদেরকে তখন প্রতিরোধ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। আকাবার বাইয়াতের পরই আল্লাহর তরফ থেকে এ ব্যাপারে প্রথম অনুমতি আসে এবং হিজরতের পরে মদিনায় ক্ষুদ্র ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরেই তা কার্যকরী করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর ঘোষণা- “যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে, কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম; তারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ।’ আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিস্টান সংসারবিরাগীদের উপাসনাস্থল, গির্জা, ইহুদিদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ যাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহর নাম। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে সাহায্য করেন যে তাঁকে সাহায্য করে। (অর্থাৎ আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যারা সচেষ্ট)। আল্লাহ নিশ্চয়ই শক্তিমান, পরাক্রমশালী। আমি এদেরকে দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা দান করলে এরা সালাত কায়েম করবে, জাকাত দেবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে; সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর ইখতিয়ার।” (সূরা হজ, আয়াত ৩৯-৪১)
ইসলামের যুদ্ধনীতি সম্পর্কে আরো কতিপয় আয়াত :
অর্থ- যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; কিন্তু সীমা লংঘন করো না। আল্লাহ সীমালংঘনকারীগণকে পছন্দ করেন না। (সূরা বাকারা : ১৯০)
অর্থ- তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ ফিতনা দূরীভূত না হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হয়। যদি তারা বিরত হয় তবে জালিমদেরকে ব্যতীত আর কাউকে আক্রমণ করা চলবে না। (অর্থাৎ নারী, শিশু, বৃদ্ধ, পঙ্গু, রুগ্ণ, সাধু-সন্ন্যাসী, ধর্ম-যাজক প্রমুখ যারা যুদ্ধ করতে বা যুদ্ধে সহায়তা করতে অক্ষম তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি ইসলাম দেয়নি)। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৯৩)
পৃথিবীতে যত যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে থাকে সবই মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার, অর্থসম্পদ, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি লাভের উদ্দেশ্যে এবং নারীলিপ্সার কারণে। কিন্তু ইসলাম এ ধরনের ক্ষুদ্র ও জাগতিক স্বার্থ উদ্ধারে যুদ্ধ করার অনুমতি দেয় না। উপরিউক্ত আয়াতসমূহ থেকে স্পষ্টত উপলব্ধি করা যায় যে, কেবলমাত্র আক্রান্ত হলে বা জালেমের জুলুম থেকে বাঁচার জন্য এবং অন্যায়-অসত্যকে প্রতিহত করে ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত বা আল্লাহর দ্বীনকে কায়েম করা বা প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্যই শুধু যুদ্ধ করা সঙ্গত। আবার এরূপ যুদ্ধেও সীমালংঘন বা নীতিজ্ঞানবর্জিত হওয়া সঙ্গত নয়। অন্যায়-অসত্য বা জুলুম-নির্যাতনকে প্রতিহত করার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু শক্তি প্রয়োগই বিধেয়, তার অতিরিক্ত নয়। ইসলামের যুদ্ধ শুধুমাত্র অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধ, জুলুম-নির্যাতন বন্ধ, মানবিক বিপর্যয় রোধ, অরাজকতা-বিশৃঙ্খলা দূরীকরণ, শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা তথা সার্বিক মানবিক কল্যাণে সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই ইসলামের যুদ্ধ হত্যা, অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টি করে না, বরং সমাজের নিরাপত্তা বিধানের অপরিহার্য তাগিদেই তা সংঘটিত হয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (সা) দুনিয়ায় প্রচলিত যুদ্ধ সম্পর্কে যে ধারণা, নীতি-পদ্ধতি ও যুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তা সম্পূর্ণ বদলে দিতে সক্ষম হন। প্রচলিত যুদ্ধের লক্ষ্য হলোÑ ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো জাতির স্বার্থ চরিতার্থকরণ, দম্ভ-অহমিকা ও শক্তির পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন এবং বলপ্রয়োগে রাজ্য দখল বা অন্যের ওপর আধিপত্য বিস্তার। এ লক্ষ্য অর্জনে নির্বিচার হত্যা, রক্তপাত, ধ্বংস, লুটপাট, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ নানা মানবিক বিপর্যয় সংঘটিত হয়। এর পরিণতি হয় ভয়াবহ। এ ধরনের যুদ্ধে বিভিন্ন জনপদ ও সভ্যতা ধ্বংস হয়, ইতিহাসে পাশবিক বর্বরতার নিষ্ঠুরতম চিহ্ন অবলোকন করে মানবজাতি যুগ যুগ ধরে শঙ্কিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অন্য দিকে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সা) যে যুদ্ধনীতি ও যুদ্ধের রীতি-পদ্ধতি অনুসরণ করেন, তা মানবজাতির জন্য চির অনুসরণযোগ্য সর্বোত্তম আদর্শ। এর লক্ষ্য ব্যক্তি-গোষ্ঠী-জাতির স্বার্থ-দম্ভ-অহমিকা ও বর্বর শক্তি প্রদর্শন নয়, জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে কাউকে পদানত, পরাভূত ও অধীনস্থ করা নয়। এ যুদ্ধের একমাত্র লক্ষ্য স্রষ্টার প্রতি অবিচল আনুগত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা। অন্যায়-দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন, অসত্য-অবিচার ও মানবতাবিরোধী সব কিছুর মূলোৎপাটন করে সুখী-সুন্দর-কল্যাণময় সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বৃহত্তর কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে অতি স্বল্প ক্ষতির বিনিময়ে সর্বোত্তম সুফল অর্জন। এটাকে নিতান্ত যৌক্তিক বলা যায়। সাধারণত সমাজে যখন কেউ খুনখারাবি, চুরি-ডাকাতি, জুলুম-নির্যাতন বা অশান্তি-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তখন সমাজের প্রচলিত আইনে তা প্রতিষেধকের উপায় হিসেবে অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা হয়। এ শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে সমাজের বৃহত্তর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। তাই এটাকে যৌক্তিক ও কাম্য বলেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করাকে যারা নিষ্ঠুরতা বা বর্ববরতা মনে করেন তারা প্রকারান্তরে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। এটাকে কখনও সুবিবেচনাপ্রসূত মনে করা যায় না।
রাসূলুল্লাহর (সা) যুদ্ধনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল ন্যূনতম ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে মানবসমাজকে নিরাপদ করা। কোনোরূপ ধ্বংস বা অশান্তি সৃষ্টি করা কখনই তাঁর লক্ষ্য ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, ইসলাম যুদ্ধকে কখনো উৎসাহিত করে না, যুদ্ধ অপরিহার্য হলে কেবল তখনই রাসূলুল্লাহ (সা) যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেন এবং সে ক্ষেত্রেও আল্লাহর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুসরণ করতেন। রাসূলুল্লাহ (সা) প্রদর্শিত যুদ্ধনীতি অনুসরণ করার মধ্যেই মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ নিহিত এবং বর্তমান অশান্তি ও বিভীষিকাপূর্ণ এ পৃথিবীতে শান্তি ও কল্যাণের নিশ্চয়তা প্রদান করা সম্ভব। সংক্ষেপে রাসূলুল্লাহর (সা) যুদ্ধনীতির কয়েকটি মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ দিকের উল্লেখ করা হলো :
কেবলমাত্র আক্রান্ত হওয়ার পর আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করা জায়েজ।
সমাজের ফিত্না দূর করা এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করা বৈধ।
যুদ্ধে একমাত্র শত্র“পক্ষের অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করা জায়েজ।
নারী, শিশু, পঙ্গু, রুগ্ণ, সাধু-সন্ন্যাসী, ধর্মযাজক বা পুরোহিত এবং নিরীহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ বা তাদের কোনোরূপ ক্ষতিসাধন সম্পূর্ণ অবৈধ।
শত্র“-পক্ষের বাড়ি-ঘর, ফসল, গবাদিপশু ইত্যাদি ধ্বংস করা অবৈধ।
যুদ্ধাহত কোনো ব্যক্তিকে কষ্ট দেয়া নিষেধ।
যুদ্ধবন্দীদের সাথে মানবিক আচরণ করা বিধেয়। কোনো অবস্থাতেই তাদের ওপর নির্যাতন করা বৈধ নয়।
যুদ্ধবন্দী নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন বা কোনোরূপ জুলুম করা সম্পূর্ণ অবৈধ।
রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর জীবদ্দশায় অনুষ্ঠিত সকল যুদ্ধে মুসলমানদের সেনাপতি ছিলেন। বহিঃশত্র“র আক্রমণ থেকে মদিনার রক্ষাব্যূহ নির্মাণে, অভিনব রণকৌশল অবলম্বনে, সৈন্য পরিচালনা, সমরকৌশল বিনির্মাণে ও যুদ্ধ পরিচালনায় তাঁর অপূর্ব পারদর্শিতা এবং নৈপুণ্য ছিল অতিশয় বিস্ময়কর। এ ছাড়া যুদ্ধকালে এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শত্র“র সাথে কিরূপ ব্যবহার করতে হবে মহানবী (সা) সে ক্ষেত্রেও এক অনুসরণীয় আদর্শ রেখে গেছেন। তিনি জীবনে মোট সাতাইশটি যুদ্ধ পরিচালনা এবং ষাটটি সমরাভিযানের আয়োজন করেন। সাধারণত বিধর্মীদের সরাসরি আক্রমণের মোকাবেলায় এ সাতাইশটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সামরিক অভিযানগুলো প্রেরিত হয় প্রধানত মদিনার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং ইসলাম প্রচার নির্বিঘ্ন পরিচালনার উদ্দেশ্যে।
এ ছাড়া কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেরিত রাসূলের দূতকে অন্যায় অথবা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হত্যা করা হয়, কখনো বা বন্দী বা নিপীড়ন করা হয়। এমতাবস্থায় সমরাভিযান প্রেরণ করে বিরুদ্ধ-শক্তিকে সমুচিত শিক্ষা প্রদান অপরিহার্য হয়ে পড়ে। রাসূলুল্লাহ (সা) যুদ্ধবন্দীদের সাথে যে মানবিক আচরণ করেছেন, মানবজাতির ইতিহাসে তা এক অতুলনীয় আদর্শ হয়ে আছে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৬৭ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলামের যুদ্ধনিতি সম্পর্কে আমার পড়া শ্রেষ্ঠ বইটি হলো মাওলানা মওদুদির "আল জিহাদ"। এছাড়া জেনারেল আকবর খান এর "খালিদ বিন ওয়ালিদ" ও "ইসলামে প্রতিরক্ষা কেীশল" বইদুটিও চমৎকার। আপনার পো্ষ্টটি ইসলাম এর যুদ্ধ নিতি নিয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের জন্য উপযযক্ত জবাব।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
তারমানে- চীন, জাপান, মায়ানমার, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ইউরোপের মানুষের উপর আল্লার দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। কিন্তু ওরা যদি সামান্য নড়েচড়ে উঠে তো আপনার আল্লার মুমিন'দের কি দশা হবে ভেবে দেখেছেন কি??
২। "কেবলমাত্র আক্রান্ত হওয়ার পর আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করা জায়েজ।
সমাজের ফিত্না দূর করা এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করা বৈধ।
যুদ্ধে একমাত্র শত্র“পক্ষের অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করা জায়েজ।
নারী, শিশু, পঙ্গু, রুগ্ণ, সাধু-সন্ন্যাসী, ধর্মযাজক বা পুরোহিত এবং নিরীহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ বা তাদের কোনোরূপ ক্ষতিসাধন সম্পূর্ণ অবৈধ।
শত্র“-পক্ষের বাড়ি-ঘর, ফসল, গবাদিপশু ইত্যাদি ধ্বংস করা অবৈধ।
যুদ্ধাহত কোনো ব্যক্তিকে কষ্ট দেয়া নিষেধ।"
কিন্তু ভায়া, মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্বর ইসলামকে সুবোধ প্রমান করার কোন সুযোগ নেই। কোরাণের ১০৯টি আয়াতে অমুসলিম'দের কতল করে আল্লার(তথাকথিত) দ্বীন কয়েমের উস্কানি মুলক আয়াত আছে। নিচের সেম্পল দুটো দেখুন।
সূরা ৮ঃ১২- যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।
সূরা ৯ঃ২৯- "তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।"
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : হা হা, হাঃহাঃ............সূরা ৯ঃ২৯- "তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।"
Sahi Muslim (1:33) - The Messenger of Allah said: I have been commanded to fight against people till they testify that there is no god but Allah, that Muhammad is the messenger of Allah
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : সে ক্ষেত্রেও আল্লাহর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুসরণ করতেন।কি সেই নির্দেশনা? দেখে নিন।
Sunan Abu -Dawud,4390
"Narrated Atiyyah al-Qurazi:
I was among the captives of Banu Qurayzah. They (the Companions) examined us, and those who had begun to grow hair (pubes) were killed, and those who had not were not killed. I was among those who had not grown hair.
“কিন্তু ভায়া, মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্বর ইসলামকে সুবোধ প্রমান করার কোন সুযোগ নেই। কোরাণের ১০৯টি আয়াতে অমুসলিম'দের কতল করে আল্লার(তথাকথিত) দ্বীন কয়েমের উস্কানি মুলক আয়াত আছে।”
আপনি কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী জানিনা তবে এতটুকু বলতে পারি আপনার এই খোড়া যুক্তির মাধ্যমে বুজাতে চেয়েছেন কোরআন মানুষকে ভ্রান্ত ধারনা দিয়েছে, উসকানি দিয়েছে ইত্যাদি। বিরোধীতার জায়গা থেকে বিরোধীতা না করে বিরত থাকাই অধিক শ্রেয়। মুক্তিযুদ্ধের কন্যা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন