জনসভা, সমাবেশ, সম্মেলন, মহাসম্মেলন, মহাসমাবেশ নয় এটা মহাবার্তা। ১৬ কোটি শান্তিপ্রিয় ধর্মপ্রাণ মানুষের পরিস্কার মেসেজ। আল্লাহু আকবার। গুড লাক বাংলাদেশ।

লিখেছেন লিখেছেন পাললিক মন ০৮ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:০০:২২ সকাল



না, আমার মত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সুবিধাবাদী শ্রেণীর লেজের দিকে বাস করা কর্মজীবির নয়; কাজ নেই কাম নেই ঘরের খেয়ে পরের মোষ তাড়ানো তথাকথিত সংস্কৃতি কর্মী-কাম-ভবঘুরের নয়; হালে লোম গজানো বাপে খেদানো মায়ে তাড়ানো ব্লগারের নয়; তিলকে তাল আর তরমুজকে তিসি বানানো গণবিরোধী প্রথমআলো, ডেইলিস্টার, কালের কন্ঠ, সমকাল, একাত্তর টিভি, মুন্নি টিভি, ভূমিদস্যু২৪.কমের নয়; শতভাগ ক্রিমিনাল শামীমওসমান, ইলিয়াস মোল্লার নয়; ভাটারা কিবা বছিলা ইউনিয়নের মেম্বার হতে না পারার গ্যারান্টিযুক্ত ইনু, মেনুর নয়; দুটি বোমা আর একটি সিনেমা মেরে মহান মুক্তিযোদ্ধের একক লিজহোল্ডার বাচ্চুর নয়- এ বাংলাদেশ অন্যদের, সবার, আমাদের। কাকভোরে হাল নিয়ে মাঠে যাওয়া কৃষকের, মুয়াজ্জিনের আজানধ্বনি শুনে ঘোমটা টানা তরুনীর, দু' প্রস্থ সাদা জামার অধিকারী মাদ্রাসার শিক্ষকের, মরচে ধরা সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাওয়া শিক্ষকের, হাটবারে সবজির পসরা নিয়ে বসা দোকানীর, স্বল্পবেতনে ঘামঝরা গার্মেন্টস কর্মীর, সীমিত বেতনে দিনগুজরান কারী সরকারী বেসরকারী চাকুরে পিতার, প্রায় অবৈতনিক সেবাদানকারী ইমাম, মুয়াজ্জিনের, গাঁয়ের বাইরে পা না দিয়ে জীবন কাটিয়ে দেয়া দাদী-নানীর।

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের রব, মহান আল্লাহ। আরবের মহাপুরুষ মুহাম্মদ (স) তাঁর প্রতিনিধি। কুরআন আল্লাহর রচিত কিতাব এবং রসুলের (স) যাপন করা জীবন আমাদের প্রিন্সিপাল অব লাইফ। ভৌগলিক, প্রযুক্তিক ও সাংস্কৃতিক কালান্তরে যেটার প্র্যাকটিস অব লাইফ নির্ধারিত হচ্ছে। আমাদের অলসতা, বেখেয়ালী, ত্রুটি আছে কিন্তু বিশ্বাস ও সম্মান জানানোয় নয়। না, কখনোই না। ঘোর বিপদে আমরা তাঁরই সাহায্য চাই, আমরা বিশ্বাস করি তার করুনায়, ক্ষমায়, ন্যায়বিচারে। আমরা বিশ্বাস করি এক মহাবিচার দিবসে, পুরস্কার বা শাস্তিতে।

বাংলাদেশ আমাদের অতি প্রিয় মাতৃভূমি। নানান পরাশক্তির বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে তা আজ স্বাধীন। আমাদের আকাংখা ছিল মৌলিক মানবাধিকার, স্বাধিকার, কর্মসংস্থান, সম্মান, ন্যায়বিচার। পরাশক্তিরা পড়িয়েছিল গোলামীর জিন্জির। আমরা তা ছিন্ন করেছি। কালে কালে ঘরোয়া পরাশক্তি

আবার তা পড়ানোর চেস্টা করে/করছে। এটাও ছিন্ন হবে। হবেই।

অতি দু:খের সাথে বলতে হয়, চরম সংখ্যালঘু, চরিত্রহীন, মিথ্যাবাদী, অপশিক্ষিত, দেশী-বিদেশী নানাবিধ ধান্ধাবাজগোস্ঠির মদদপুস্ট একটি অন্ধকারের কীটশ্রেনী এ দেশের শতভাগ মানুষের সাথে "বেঈমানী"র রাস্তা বেছে নিয়েছে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন, ইন্টারনেট নিউজ চ্যানেলে, ব্লগ, ফোরামসাইট, নাটক, সিনেমা, মঞ্চ নাটক, চিত্রকলা ইত্যাদি মানব হিতৈষী প্রযুক্তি মাধ্যমের চরম অপ-ব্যবহার করছে। যেমন-

আমাদের ঘরে ঘরে ভারতীয় টিভিচ্যানেল চলে। তাতে অহর্নিশি সিরিয়াল, শো, সিনেমা চলছেই। কেহ কি দেখছেন ৩৩ কোটি হিন্দু দেবতার কাউকেও কস্মিনকালে কটাক্ষ করা হয়? কখনোও না! বরং পূজা, দেব দেবতা তাদের প্রতি সম্মান রেগুলার থিম। তবে কেন সোনারবাংলার এ দশা! কোনো মুক্তিযোদ্ধারই কি দাঁড়ি ছিলনা? সকল রাজাকারই কি শশ্রুমন্ডিত ছিল? গ্রামের মসজিদের হুজুরকে কি বাধ্যতামূলক নারীলোলুপ হতে হবে? হায়রে অভাগা দেশ!

যাহোক, ধর্মীয় মাসয়ালা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অনগ্রসরতা নানান কারণে সংখ্যাগরিস্ট উদারমনা ধর্মপ্রাণ মানুষেরা নিজের অজান্তে বক্ষ্যমান সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি পরিমন্ডলে চরম নিগৃহীত সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। ব্যাপারটা এ পর্যায়ে গড়িয়েছে ১ শতাংশেরও কম মানুষের চিন্তা চেতনা বচন ভাবনা দেশের প্রধান ভাবনা, বক্তব্য, হাসি, কান্নায় পরিণত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী, ক্যান্টিনবয় কোনটাই না হয়েও সমাজের এসব ক্ষুদ্র অপনৃতাত্তিক গোস্টী টি.এস.সি. কে তাদের বাপদাদার সম্পত্তিতে পরিণত করেছে। প্রথম আলো ও ডেইলীস্টার কাঁদতে বললে আমরা কাঁদি, হাসতে বললে হাসি। দবিরকে চোর বললে আমরা তারস্বরে চোর বলে চিৎকার করি, খবির ডাকাতকে মহামানব বললে আমরাও হুজুরে আ'লা বলে আহা! উহু! বলতে থাকি। ভাবনা চিন্তার সময় কই? কঠিন সত্য নির্মোহভাবে প্রকাশের ব্রত বাদ দিয়ে এসব ঘৃণিত গণমাধ্যম সত্যকে চাপা দেয়া, বিকৃত খবর প্রচার করে। মুক্তচিন্তার ফেরী করে তবে ভিন্নমতের পত্রিকার গলাটিপে ধরলেও রা'টি করেনা।

জনবিরোধী, চরিত্রহীন, মিথ্যাবাদী, অপশিক্ষিত, দেশী-বিদেশী নানাবিধ ধান্ধাবাজগোস্ঠির মদদপুস্ট এ অন্ধকারের কীটশ্রেনীর সর্বশেষ অপব্যবহারের শিকার মানুষের অন্যতম আবিস্কার স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও ইন্টারনেট। একাত্তর টিভি, এটিএন নিউজ, চ্যানেল নাইন, এটিএন বাংলা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সময় টিভি এগুলো ঠিক কি জেনেরার চ্যানেল তা সুস্থমানুষের বিবেকে কুলোবেনা। গতকালের ঢাকার মহাসমাবেশ ছিল শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বই সম্ভবত: গতকালকের বৃহৎ মানবসমাবেশ। নিজ দেশের এহেন মস্তবড় নিউজকে পাশ কাটিয়ে শাহবাগের কতিপয় প্রাণীবিশেষের 'পাদ, হিসু, হাগু' সম্প্রচার করার জন্য মুখিয়ে আছে! হায়রে নিউজ সেন্স!! এসব বস্তাপঁচা চ্যানেলের বেশীর টক শো ও এংকররা বাসায় কাপড় চোপড় রেখে আসেন। তারপর সুশীলের ভেক ধরেন। জাতিকে বোঝানোর চেস্টা করেন ইসলাম, ধর্ম, জামাত, হুজুর, বি এন পি, পাকিস্তান কত খারাপ। আর শুয়োরপুজা, চীনাবাম, আ'লীগ, নাস্তিক, ইন্ডিয়া কত ভাল! বল হরি বল। যুদ্ধাপরাধী বিষয়ে এত এত টকশো হল, একজন যুদ্ধাপরাধী জামাত নেতাকেও তারা জোগাড় করতে পারলনা ভিনমতের যৎসামান্য কথা বলার জন্য। সামিয়া, নবনীতা, মুন্নী, খালেদরা এ্যাংকরিং/হোস্টিং শব্দটাও কোনদিন শুনেছেন কিনা ঘোর সন্দেহ! দল ও মত বিশেষের প্রতি বিনয়াবনত, অপরের প্রতি রুস্টতার যে চিত্র তারা ক্যামেরা অন করার ১ মিনিটে ডিসপ্লে করেন তা নজিরবিহীন। এরা বেয়াদবও!

পত্রিকা ও টিভির ন্যায় অনলাইন নিউজপোর্টাল, ব্লগ, নাটক, সিনেমা, মঞ্চ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলো মানুষের মানবিক উন্নতি বিকাশ, তথ্য, মতপ্রকাশের দারুন প্লাটফরম। অথচ হীনতর এ গোস্টি বাংলাদেশের গরিস্টমানুষের অসচেতনার সুযোগে এগুলোর চরম অপব্যবহার করেছে। বেইলীরোডের নাটকগুলোতে ঘুরে ফিরে ধর্মবোধকেই কটাক্ষ করা হয়। সাবকনশাস মাইন্ডে সত্যবাদী, ধর্মপ্রান অনেক তরুন তরুনীও অন্যকিছুর অ্যাবসেন্সে এসব গিলছে। টিভি নাটক ও সিনেমা কোনকালেই বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেনি। উপরেল্লিখিত সকল কারণ ও প্রেক্ষিতের সামারি করে বলতে হয় চৌকোনা মনিটর ও ব্রডশীট কাগজে শতভাগ বাংলাদেশী আমরা 'প্রায়' বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছি।

আমরা জনমে আজান দিই শিশুর কানে, আল্লাহু আকবার; মরণে বিদেয় দিই, ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন; আমরা ঝড়ঝণ্ঝায় ডাকি, আল্লাহু আকবার; পাকিস্তান, ভারত, রাশিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা নয় আমরা মুখ করি কা'বার দিকে; কাক ভোরে আমরা মক্তবে যাই; মসজিদ আমাদের প্রিয় স্থান....এভাবেই এগোয় আমাদের জীবন। আমরা বাংলায় কথাবলি, বাংলায় লিখি, বাংলায় শুনি। ইমিগ্রেশন পার না হতেই বাংলাদেশ নামক হাজারো সমস্যাযুক্ত ভুখন্ডটির জন্য আমাদের মন হাহাকার করে উঠে! এমনই আমরা।

এ দেশ আমাদের। বাংলাদেশ। গুডলাক বাংলাদেশ। এ ধর্ম আমাদের। আল্লাহু আকবার। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের।বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। মঙ্গলপ্রদীপ নয়, নীরবতা নয়, সুরা ফাতেহা ও ইখলাস আমাদের প্রার্থনা। আমরাই বিজয়ী হব। বানর সংস্কৃতির আমদানিকারক, উৎপাদক, বিপননকারী অজ্ঞ, মূর্খ, গণবিরোধী, গণ্জিকাসেবী, খোদাদ্রোহী অপশক্তি, তাদের সর্বশেষ গণতকমা শাহবাগিদের প্রতি একটাই আবেদন- তোরা দুরে গিয়ে মর! আর ঘটনার প্রযোজক আওয়ামীলীগকে বলি, মেসেজ গিভেন। গ্রেট মেসেজ। মহাবার্তা। থিংক ইউরসেলফ!

বিষয়: রাজনীতি

১০৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File