দেখিয়ে দিল হেফাজতে ইসলামঃ তুমি কে আমি কে?
লিখেছেন লিখেছেন আস্লাম ২২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৩৯:৫১ দুপুর
আমি একজন মুসলিম ঘরের সন্তান, আর দশ’জন ধর্মপরায়ণ মুসলমানের মত এখনও আমি ধর্মীও রীতি-নীতি ও অনুশাসন গুলোতে সম্পূর্ণ ভাবে নিজেকে তৈরি করতে পারিনি, এটা আমার ব্যর্থতা কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আজ না হোক কাল আমাকে সেই অনুশাসনে ফিরতেই হবে। বয়স বারার সঙ্গে সঙ্গে মুখে দাঁড়ি রাখতে হবে, হজ্জ জাকাত পালন যদিও অনেকটা নসীবের ব্যাপার কিন্তু দিনে পাঁচবার মসজিদে যাওয়া, হাতে তসবি, শেষ বয়সে দাড়িতে মেহেদীর লাল রঙে লম্বা পাঞ্জাবী পরে হেটে যাচ্ছি এমনভাবে নিজেকে দেখতে পাওয়া খুবই স্বাভাবিক কারন আমার পূর্ব পুরুষরা তাই করেছে, আবার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এর ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য হলেও আমাকে তাই করতে হবে।
কথাগুলো আমি এজন্যই অবতারণ করলাম কারন আমার জানা মতে এটাই হচ্ছে আমাদের ১৪শত বছরের আবাহমান বাংলাদেশী মুসলমানদের সংস্কৃতি। এখন কথা হচ্ছে এই আবাহমান সংস্কৃতি’র মধ্যে আমাদের দেশের কিছু উদয়মান উগ্র প্রগতিশীল যারা নাকি লবণ আদা খেয়ে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে যার চূড়ান্ত আস্ফলন দেখলাম গত ৫ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া সাহাবাগি আন্দলনের মধ্যে। যুদ্ধ অপরাধীদের ফাঁসির দাবীর অন্তরালে তারা মুলত প্রতিপক্ষ হিসাবে দ্বার করাল আমাদের দেশের ধর্ম পরায়ন মুসলমানদের। তাদের ভাষায় দাঁড়ি টুপিঅওলা মানেই ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, পশ্চাৎপদতা, অশিক্ষিত আরও কতকি। শুধু তাই নয়, এই টুপিঅওলারাই হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক, ধর্ষণকারী, খুনি, লুটেরা, কুলাঙ্গার, জঙ্গিবাদী। শুধু এখানে থামলেও কথা ছিল তাদের আস্ফলনের সর্ব চুড়ায় গিয়ে যখন তারা আমাদের আল্লাহ্- মহানবী হযরত মহঃ (সঃ) ও আমাদের পবিত্র ধর্মীও উপাসনালয় গুলোকে নিয়েও কুতুক্তি করা শুরু করলো তখন আর এদেশের ধর্মপরায়ন মানুষগুলোর পক্ষে ঘরে বসে থাকা সম্ভব হলনা। তাদের বঞ্জনা ও ক্ষোপের বহিঃপ্রকাশ তারা দেখাল দেশের সর্বজন স্রদ্ধেও ৯৩ বছর বয়স্ক আল্লামা আহমদ শফী’র নেতৃত্বে শাপলা বিপ্লবের মাধ্যমে। সেদিন শাপলা বিপ্লবে ঢাকায় শুধু কয়েক লক্ষ মানুষের অংশগ্রহণেই ছিল না, অংশগ্রহণ ছিল দেশের আপামর সর্বস্তরের মুসলমানদের। প্রতিটি জেলায় উপজেলায়, গ্রামে-গঞ্জে, পাড়ায়-মহল্লায়, অলিতে-গলিতে, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শহরের সবচেয়ে বড় টিভি শো-রুমের সামনে উৎসুক মানুষের ভীর, সবার চোখ শুধু ঐ দিগন্ত টেলিভিশনের ভিতরে থাকা লক্ষ লক্ষ সাদা মানুষের কাফেলার দিকে, যেখান থেকে উচ্চারিত হচ্ছে ‘লারাই-তকবির আল্লাহুয়াকবর’ স্লোগান, যে স্লোগান ঢাকায় শুরু হচ্ছে আর তা যেন ছড়িয়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে।
শেষ হল ৬ এপ্রিল, কাঁপিয়ে দিল শাসক শ্রেণীর ভীত, জানিয়ে দিল সারা বিশ্বকে এই ছাপান্ন হাজার বর্গকিলোমিটারের দেশটি কোন উগ্র প্রগতিশীলদের নয়, কোন ফ্যসিস জালেম শাসক শ্রেণীর নয়, কোন বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশকারিদেরও নয়। এই দেশ ঐ সাদা মানুষগুলোরই, এখানে থাকতে হলে আবহমান বাংলাদেশী সংস্কৃতিকে মেনে নিয়েই থাকতে হবে।
চলমান...।
বিষয়: বিবিধ
১৯২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন