আমার দৃষ্টিতে হেফাজতে ইসলামীর ১৩ দফা দাবী; পর্ব-০২ (দাবী ৬-১৩)
লিখেছেন লিখেছেন বড় ভাইয়া ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:০০:৩৬ রাত
যদিও ইতোমধ্যে হেফজতের পক্ষ থেকে এর ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। তবুও আমার ওয়াদাছিল আমিও আমার দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করব তাই কথা রাখার চেষ্টা করলাম।
৬। সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
# এই ষষ্ঠ দফা এই দেশের মুসলমানদের প্রাণের দাবী। এই দফা মানতে সরকারের সমস্য কোথায়? তবে মতিউর রহমানদের সমস্যা হতে পারে। কাদিয়ানীদের একমাত্র দোষর হিসেবে ২০১২ সালে প্রথম আলো বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে।
৭। মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরীতে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।
# ভাস্কর্যের নামে যেখানে সেখানে মূর্তি নির্মাণ অবশ্যই নিন্দনীয়। চিত্র-কলার ইসলামী ঐতিহ্য আছে। যদি এই শিল্পকে উৎসাহিত করতেই হয় তবে কেন নয় ইসলামী চিত্রকলা? জন্তু-জানোয়ারের ভাস্কর্য নয়, আল্লাহ, রাসুল সা. কুরআন, হাদীস নিয়ে নিয়ে চিত্রকলা চর্চা হোক।
৮। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।
# এই দাবী ব্যাখ্যার কী প্রয়োজন?
৯। রেডিও, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।
# এই দাবীটা দীর্ঘ দিনের। মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত। এক শ্রেণীর টাউট-বাটপার-পরগাছা ধরনের প্রযোজক মিডিয়াতে খারাপ মানুষের চরিত্রে সব সময় ইসলামী পোশাকের মানুষকে উপস্থাপন করে। তারা সফলও। আজকের একটা প্রজন্ম তাদের নবী বলতে শাহরিয়ার কবির জাতীয় লম্পটদেরই বুঝে। কুরআনের বানী আর শাহরিয়ারের কথা পাশাপাশি রাখলে প্রথমে শাহরিয়ারদের কথাই মেনে নিবে। তারপর কুরআনের কথা ভাবলেও ভাবতে পারে। আল্লাহ আমাদেরকে এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করুন।
১০। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মান্তকরণসহ সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
# এটা একটা অন্ধকার বিষয়কে সামনে এনেছেন হেফাজতে ইসলামী। বছরের পর বছর পার্বত্য জেলাগুলোতে ঐ এলাকার মানুষের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে খ্রিস্টান মিশনারীগুলো হাজার হাজার মানুষকে সহযোগিতার নামে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করছে। সেখানে রবিউল নামের ১২ বছরের ছেলেটি কোন সহযোগিতা ঐসব এনজিও থেকে পায় না। পায় মাইকেল, অমিত আর উপল’রা। যার ভবিষ্যৎ হলো তারা এক পর্যায়ে গণ ভোটের মাধ্যমে ৩টি জেলাকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করা। এটা এখনি হস্তক্ষেপ না করলে আমাদের এই ছোট্ট মাতৃভূমিরও অঙ্গহানি ঘটবে।
১১। রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র এবং তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
# পুলিশকে দলীয় ক্যাড়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করলে এই দাবী মানতে কষ্ট হবে না। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই দাবী সময়ের দাবী। সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান যেমন- পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, আইন-আদালত এগুলো যত স্বাধীন হবে জাতির জাতিগত ভিত্তি তত স্ট্রং হবে। এটা সরকারও বুঝে, কিন্তু দলী সংকীর্নতার উর্ধ্বে উঠতে হবে শুধুমাত্র জাতির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে।
১২। সারা দেশের কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ এবং মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
# অবশ্য কওমী মাদসার লোক জন হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি নতুন পাচ্ছে। তারাও অভ্যস্থ হয়ে যাবে। তবে এটা কারো কাম্য নয়। শান্তিপূর্ন সহ অবস্থান দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য একান্ত প্রয়োজন।
১৩। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সকল আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদেরকে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
# ১৩ নম্বর দাবীও যৌক্তিক।
বিষয়: বিবিধ
১৫৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন