আমার দৃষ্টিতে হেফাজতে ইসলামীর ১৩ দফা দাবী; পর্ব-০১ (দাবী ১-৫)
লিখেছেন লিখেছেন বড় ভাইয়া ১২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৪০:৪৬ বিকাল
দাবী-০১. সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা পুন:স্থাপন ও কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী সব আইন বাতিল করা।
এদেশের ৯০% মানুষ আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থাবান। কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তৃতীয় কারো চাপে কালো বিড়ালকে দিয়ে এই । আস্থা মুচে ফেলা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী তখনও বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীরা বিরোধীতা করাতে তা কেউ শুনেনী। এই দাবীর প্রথম অংশ বাস্তবায়ন হলে দ্বিতীয় অংশ নিয়ে খুব একটা মাতা-মাতি হবে না। কারণ এই বিশাল সংবিধানের কোন অংশ কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী তা তারা স্পষ্ট করেনি।
দাবী-০২. আল্লাহ, রাসুল সা. ও ইসলাম অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার বিধান রেখে সংসদে আইন পাশ।
এই দাবীটা একটু সংশোধন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ইসলামের সাথে সব ধর্ম যোগ করা যেতে পারে। আমি মুসলমান বলে অন্য ধর্ম অবমাননা করার অধিকার আমার নেই। তবে যুক্তি দিয়ে ভুলের সমালোচনা করাটা এর আওতা মুক্ত রাখতে হবে। এই দাবী দ্বিতীয়াংশে রয়েছে মহা তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার। আজকে সমাজের সবচেয়ে খারাপ লোকটিকে দেখানো হয় সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবী-টুপি পরিহিত ব্যক্তি হিসেবে। যেটি মুসলমানদের প্রিয় পোশাকও বটে। আর এই কাজটি করা হচ্ছে আমাদের নাটক-সিনেমায়। এই দাবী মানাও খুব একটা কষ্টের কিছু না।
দাবী -০৩. শাহাবাগের নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিকদের সাজা সংক্রান্ত। আসিফ মহি উদ্দিন, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, মারুফ রসুলসহ যারা নেতৃত্বদিচ্ছে তাদের ব্লগ পড়লেতো কোন মন্তব্যের প্রয়োজন হয় না। রাজিব যেদিন মারাগেল সেদিন হলুদ মিডিয়াগুলো তার শানে যে প্রচারনা চালাল তাদেখেই মূলত আমি তার ব্লগে প্রবেশ করি। এখন বলা হচ্ছে জামায়াত-শিবির তার ব্লগে তা ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাদের গাঁজখুরী এই কথাটার প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। কোন লিখা এডিট করলে তারিখ থেকে যায়। অথচ এই কুলাঙ্গারদের লেখা অনেক পুরাতন। এই জাতীয় ব্লগারদের সর্বোচ্চ সাজার ব্যবস্থা করাটা একবারে কম সাজাই হবে। এদের একেক জনকে কয়েক’শ বার ফাঁসি দিতে হবে। আর তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আপাতত এক বার ফাঁসির ব্যবস্থা হোক।
দাবী ০৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়পনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলন সহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধের বন্ধের দাবী উঠেছে।
এই দাবীটা নিয়েই তাদের এখন চরম আপত্তি। এই দাবী বাস্তবায়ন করলে ছাত্রলীগ ধর্ষণের সেঞ্চুরী করবে কীভাবে? টিএসসিতে বাধনের কাপড় খুলবে কীভাবে? ইডেনের ছাত্রীদের দিয়ে ছাত্রলীগ দেহব্যবসা করাবে কীভাবে?
এতে বলা হয়নি মেয়েরা ঘরের বাহিরে যেতে পারবে না। চাকুরী করতে পারবে না, পড়া লেখা করতে পারবে না। অথচ গত ৬ এপৃল থেকে হলূদ মিডিয়াগুলো যা ইচ্ছে তাই প্রচার করতেছে। এর একটা কারণও আছে এই দাবী কার্যকর হলে ত্রপা মজুমদারের মত জারজ সন্তান প্রোডাক্ট বন্ধ হয়ে যাবে।
তারা এক নারীতে তৃপ্ত থাকতে পারবে না। তাদের বহুগামিতা বন্ধের এই ভয় থেকেই তারা এই দফার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে।
এই দফায় বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহারের কথাও বলা হয়েছে। সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালানো ভারতীয় সংস্কৃতি আমাদের নয়, ময়ুর ভারতের প্রতীক আমাদের দোয়েল। এখন এই প্রজন্ম ভুলতে বসেছে কোনটা আমাদের কোনটা দাদাদের। দাদাদের হাতের পুতুল এই দাবী নিয়ে কী করে তা এখন দেখার বিষয়।
দাবী ০৫. ইসলাম বিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
এই দাবীর দু’টো দিক। এক- নারী নীতি, দুই- শিক্ষা নীতি। নারী নীতিতো একজন নারীর প্রতি চরম জুলুম। ইসলাম নারীকে পিতার সম্পত্তিতে পুরুষের তুলনায় অর্ধেক দিলেও নারী যেসব জায়গা থেকে হক পায় তার যোগফল একজন পুরুষ থেকে অনেক বেশী। শুধু মাত্র জানা ও আদায় করাটা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন সময়ের দাবী। ইসলাম-বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক নয়। ইসলামকে বুঝতে হলে কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞান মনষ্কও হতে হয়। ইসলামে উচ্চতর গবেষনার জন্য বিজ্ঞানের কোন বিকল্প নেই। ধর্মহীন মানুষ পশুর সমান। এই কথাটা ঐকয়েক জন ব্লগার এবং কিছু জাতীয় নেতার দিকে তাকালেই বুঝা সহজ হয়ে যাবে।
(চলমান, দ্বিতীয় কিস্তির জন্য নিচের লিংকে যেতে পারেন) ১৯.০৪.২০১৩
http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/5216/Faruki/11781
বিষয়: বিবিধ
১১৬০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন