নারী স্বাধীনতা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন বড় ভাইয়া ০৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:২১:৪২ দুপুর
আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব বেশী পড়া লেখা করার সুযোগ তেমন একটা পাইনি। টেনেটুনে মাস্টার্স। তবে আরো আরো পড়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আর্থ-সামাজিক অবস্থায় বাধ্য হয়েই কর্ম জীবনে। সেই সূত্রে একাডেমিক পড়া লেখার ধার যেমনটি থাকা প্রয়োজন তা আমার নেই বললেই চলে। তবে বাস্তবচিত্রে আমি অনেক বেশী বিশ্বাসী।
‘নারী স্বাধীনতা’ এই বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তি কথা বলেছেন। কিন্তু আমি আমার দৃষ্টি ভঙ্গিটা শেয়ার করছি।
সেই স্কুল জীবনে ক্লাসের অর্ধেক ছিল ছাত্রী। তাদের মাঝে ৩/৪ জন সব সময় আমার রেজাল্টে ধাক্কা দিত। এই প্রতিযোগিতা চলেছে নবম শ্রেণী পর্যন্ত। ৯ম-১০ম শ্রেনীতে আর সামনে থাকতে দিই নাই। এক কথায় তারা আমার চেয়ে মেধাবী ছিল। এখন কর্মক্ষেত্রে এসেও দেখি আমার চেয়ে অনেক নারীর মেধা অনেক প্রখর। তারা তাদের জায়গা করে নিয়েছেন।
একটা দলকে নিয়ে লিখব শুধু। জামায়াতে ইসলামী। মাওলানা নিজামী জামায়াতের প্রধান হওয়ার অনেক আগেই তার স্ত্রী মহিলা জামায়াতের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ঐ মহিলা আবার দেশের সেরা একটি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। জামায়াতের আদর্শিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নারী কর্মকর্তা আছে। এখন আমি পুরুষ, সাধারণ একটা বিষয়ে পড়া লেখা করেছি। বিপরীতে এক জন নারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা করে, ভাল রেজাল্ট করলে তার পদবী আর আমার পদবী কীভাবে এক হবে? কীভাবে এক হবে প্রশ্নটাও জামায়াতীরা কঠোরভাবে ম্যানেজ করে। যার যেখানে অবস্থান হওয়া উচিত তাকে সেখানেই সুযোগ করে দেয়।
বেশী দূর যেতে হবে না। ইসলামী ব্যাংকের দিকে তাকালেই একটা ইসলামী রাষ্ট্রে নারী মূ্ল্যায়ন কী হবে তা স্পষ্ট বুঝা যাবে। ইসলামী ব্যাংকের অনেক অফিসার, সিনিয়র অফিসার এবং আরো বড় পোস্টে নারী আছে। তার বিপরীতে গ্রেড-৩, গ্রেড-২, গ্রেড-১তে অনেক পুরুষ আছে। যারা ঐ নারীদের থেকে বেতনও কম পায়, সুযোগ সুবিধাও পদবী অনুযায়ী পায়।
চোখের টিনের চশমাটা খুলুন...
এক শ্রেণীর ভোগবাদী বুদ্ধিজীবী আছে যারা নারীকে ভোগ্য পন্য হিসেবে সব সময় দেখতে চায়। টিভি চ্যানেলগুলোতে চোখ রাখুন। তথাকথিত চ্যানলটিতে নারী সাংবাদিক ও সংবাদ উপস্থাপিকা কাজ করছে। আর অন্য চ্যানেলেও নারীরা কাজ করছে। এই দু’টো প্রতিষ্ঠানকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করলেই সব প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
যে নারী সাংবাদিকগণ অপমানিত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি নিয়েই বলছি- নারী নারী হয়ে পুরুষের সামনে আসুন। ভোগ্য পন্য হিসেবে এসেছেন বলেই হুজুররা আপনাদের ভোগ করেনি। ভোগ শুধু গা’য়ে গা মিলিয়ে হয় না, চোখেরও ভোগশক্তি আছে!!! চট্টগ্রাম ওয়াসা মোড়ে ৫ এপ্রিল ২০১৩ যেই মঞ্চ হয়েছে তার পাশ দিয়ে, মাঝদিয়ে অনেক নারী হেটে গেছেন, যারা বোরকা ছাড়া ছিলেন। মুখও ডাকেন নি। শুধু ‘শালীন’ ছিলেন। আপনি নারী হয়ে শালীন হতে সমস্যা কোথায়? আপনার শরীরের সাইজ আপনার আপনজনের জন্য। রাস্তার মানুষের জন্য কেন? আপনি ইচ্ছে করলেই পুরুষত্ব অর্জন করতে পারবেন?
সর্বশেষে বলব- কোন ফাঁদে পা না দিয়ে ভাবুন একদিন এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া ছাড়তে হবে। শুরু হবে অনন্ত কালের জীবন। সেখানে এখানকার সকল কর্মে জবাব দিহি করতে হবে। যাদের লেখায়-কথায় নাচেন তারা কেউ সাথে থাকবে না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন