জামায়াতের সাথে বি এন পির বিচ্ছেদের ঘোষনা সময়ের ব্যাপার।
লিখেছেন লিখেছেন মাজহার১৩ ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৩২:৫২ সন্ধ্যা
জামায়াতের সাথে জোট ভাঙ্গার চিন্তাভাবনা করছে বেগম খালেদা জিয়া।
Click this link
বি এন পির রাজনীতির জন্য যেমন জরুরী, জামায়াতের জন্য আরও বেশী জরুরী। যদি এই জোট ভেঙ্গে যায় তা জামাত বিএনপির জন্য যেমন win-win solution, তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য win-win solution। নিচে জামাত, বি এনপি ও আওয়ামী লীগএর লাভগুলো বর্ননা করা হল।
বিএনপির লাভঃ
১। বাংলাদেশের একশ্রেনীর মানুষ আছে যারা জামাতের কারনে বি এনপি পছন্দ করেনা তাদের সক্রিয় সমর্থন পাওয়া যাবে।
২। জাসদ ও বিকল্প ধারার এবং বাম দলগুলো বি এন পির সাথে জোটবদ্ধ হবে।
৩। জামাত বিদ্বেসী ইসলামী দলগুলোর সমর্থন পাওয়া যাবে।
৪। গত ৫ বছরের সব সহিংসতার দায় জামাতের কাঁধে দিয়ে কলঙ্কমোচন করতে পারবে।
৫। গোপন সমঝোতার মাধ্যমে জামাতের সমর্থন পাওয়া যাবে।
৬। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বাচানোর বদনাম গুছানোর সুযোগ পাবে। এমনকি সুশীল সমাজের আকুন্ঠ সমর্থন পাওয়া যাবে।
৭। রাজনীতির মাঠে লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকার জন্য কর্মী বাহিনী গঠন করতে পারবে যা দীর্ঘমেয়াদে সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চার করবে।
৮। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ অথবা বিপক্ষের রাজনৈতিক মেরুকরনের হাত থেকে রেহাই পাবে।
৯। আমেরিকাসহ বহিবিশ্বের নিশ্চিত সমর্থন পাওয়া যাবে।
আওয়ামী লীগের লাভঃ
আওয়ামী লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশী হবে।
১। নির্বাচনী ইশতেহারানুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করার মত ঐতিহাসিক কাজটি করা সহজ হবে।
২। বি এন পির আন্দোলন ও মনোবল দুর্বল করা যাবে।
৩। ইসলামের পক্ষ অথবা বিপক্ষ ধারার রাজনৈতিক মেরুকরনের হাত থেকে রেহাই পাবে।
৪। আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিজয় হবে।
জামায়াতের লাভঃ
আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিটা বেশী মনে হলেও দীর্ঘ মেয়াদে লাভ হবে।
১। বি এনপির সাথে ক্ষমতার অংশীদার না হলে বি এন পি অপকর্মের দায় নিতে হবে না। খালেদা জিয়া বা নারীর নেতৃত্বে জোটবদ্ধ না হয়ে আন্দোলন করার ফলে দুষ্ট লোকের টিপ্পনীর হাত থেকে রক্ষা পাবে।
২। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হলে দলকে আর যুদ্ধাপরাধের গ্লানি অথবা কলঙ্ক বহন করতে হবে না। আওয়ামী লীগ এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না। ৭ জন বা ৭০ জন নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে খুন হলে শুধুমাত্র ৭০ টি ভোটই কমবে এর থেকে বেশী কিছু হবে না। তাই সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে উনাদের বলি দেয়া হলে লাভ বৈ ক্ষতি হবে না।
৩। জোট ভেংগে গেলে আরো বেশী সংখ্যক নেতা কর্মীকে কারাবরন করতে হবে। কঠিন পরিস্থিতিতে আন্দোলন করতে হবে। রসুল (সঃ) ও তাঁর সাহাবীদের তুলনায় গত ৫ বছরের জুলুম নির্যাতন কিছুই না। কোশলী আন্দোলন না করে সোজা সাপ্টা রাজনীতি করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কোন পরাজয় নাই। কারন মরলে শহীদ বাচলে গাজী। দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা। এখন হাজার হাজার কর্মী জেলখানায় আছে। এটার একটা ইতিবাচক দিক হল আন্দোলন করার জন্য ইস্পাত কঠিন ঐক্য ও মানসিক দৃঢ়তা অর্জনকারী কোয়ালিটি সম্পন্ন ও আল্লাহর উপর ভরসাকারী একদল কর্মীবাহিনী তৈরী হবে যারা অল্প সময়ের মধ্যে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্টা করতে হবে।
৪। গত ৫ বছরে ইসলামী দলগুলোর সাথে কিছুটা দুরত্ব কমে এসেছে, এমন কি কিছুটা বোঝা পড়া হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ বা বি এনপি সাথে জোট না বেঁধে জাতীয় ও ইসলামী ইস্যুতে ইসলামী দলগুলোর সাথে ঐক্যবদ্ধ জোট গঠন করলে তা অদূর ভবিষ্যতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭০ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জামাত নামের দলটি হয়তো থাকবেনা, কিন্তু যে চেতনার সৃষ্টি হয়েছে এর ফলে অন্য কারো নেতৃত্বে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্টিত হলে এটা তো জামাতেরই বিজয়।
কিন্তু জামায়াতের সমস্যা হচ্ছে জামায়াত সেটা কিছুতেই মেনে নিতে চাইবে না এবং মানতে চাচ্ছেও না। সেটা মেনে নিলে তাতে তাদের সম্মান বাড়ত বৈ কমতো না।
পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। এখন সেই অবস্থা বিরাজ করছে। রক্ষীবাহিনীর আদলে গোপালী বাহিনী। সুতরাং কি পরিণতি হয় সময় বলে দিবে। মানুষের বড় দোষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। আর আন্দোলনের ফলাফল সবসময় যে ভাবে চাওয়া হয় সেভাবে না হলে মন খারাপ করার কিছু নেই। এর থেকে ভালো ফলাফলও হতে পারে। ইতিহাস কথা বলে। ধৈর্য ধারন করতে হবে, কোশল পরিবর্তন করতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন