আইসিটি আইন ২০১৩ : আসুন বাকশালের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাই
লিখেছেন লিখেছেন স্বঘোষিত ব্লগার ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:০৫:২০ সকাল
শেষ পর্যন্ত মহাজোট সরকার বিএনপি সরকারের করা আইসিটি অধ্যাদেশ ২০০৬ এর সংশোধনী এনে শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এটাকে আইনে পরিণত করেছে। আইসিটি আইনের সবচেয়ে সমালোচিত দিকটি হলো, এ আইন (মূলত এর ৫৭ নং ধারা) লঙ্ঘণকারীকে পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার ও শাস্তিদিতে পারবে।
৫৭(১) ধারা
কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন,যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্টঅবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলেবা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানিঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতিঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বাধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানী প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটিঅপরাধ৷
৫৭(২) : কোন ব্যক্তিউপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক দশ বছরর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন৷
৪(১) ধারা: আইনের অতিরাষ্ট্রীক প্রয়োগঃ
যদি কোন ব্যাক্তি বাংলাদেশের বাইরেএই আইনের অধীনে কোন অপরাধ করেন যাহা বাংলাদেশে করিলে এই আইনের অধীনে দন্ডযোগ্য হতো তাহা হইলে এই আইন এইরুপে প্রযোজ্য হইবে যেন অপরাধটি বাংলাদেশেই করিয়াছেন ।
অর্থাৎ দেশে থেকে এই আইনের অধীনে অপরাধকরলে তো সেটা অপরাধ আর এখন যারা দেশের বাইরে আছে অর্থাৎ প্রবাসী তারাও যদি ইন্টোরনেটের যে কোনমাধ্যমে এই আইনের অধীন কোন তথ্য প্রকাশ করে তাহলেও উক্ত প্রবাসী এই আইনের অধীনে অপরাধী হিসাবেঅভিযুক্ত হবেন।
আইসিটি আইনে দুইটা বিষয় খুবই পজিটিভ;ধর্মাবমাননা এবং অশ্লীল বিষয় প্রচার । এটা ২০০৬ এর আইসিটি অধ্যাদেশেও ছিল। কিন্তু এর কার্যকারীতা একেবারেই নেই। ফেসবুকসহ ব্লগ ও দেশীয় সাইটগুলোতে অশ্লীল ও ধর্মবিরোধী পোস্টের ছড়াছড়ি। সুতরাং, আইসিটি আইন দ্বারা যে সরকার অশ্লীল ও ধর্মবিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে, এ আশা মোটেই করা যায়না, অন্ততঃ বাম-পোষক মহাজোট সরকারের কাছে নয়।
স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, আইসিটি আইন ভিন্ন মত দমনে সরকারের আরেকটি হাতিয়ার। সরকারের দূর্ণীতি আর জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বললেই আইসিটি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আপনাকে গ্রেপ্তার করা হবে। AKMWahiduzzaman এর ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে।
আমার প্রশ্ন হলো-
অনলাইনে আওয়ামীলীগের দালাল আর নাস্তিকরা থাকতে পারলে বিএনপির দালালরা কেন থাকতে পারবে না?
আসুন দেখি,কীভাবে আইসিটি আইন ২০১৩ কে ফাঁকি দিয়ে এর মাথায় আরাম করে কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবেন।
প্রথম ধাপ (সবার জন্য) –ফেক আইডি দিয়া লেখালেখিঃ
হ্যাঁ, আমিফেক আইডির কথাই বলছি। আপনারা অনেকেই জানেন, এর আগে আমি নিজে ফেইক আইডির বিরুদ্ধেকথা বলতাম। কিন্তু এখন আর নয়। যারা এত দিন নিজেদের রিয়াল আইডি দিয়ে লেখালেখি করতেন তাঁরা আর এটি করবেন না। তাই বলে দূর্ণীতির বিরুদ্ধে আপনার অবস্থানটাও থামানো যাবে না। আজই ভিন্ন নাম দিয়ে নিজের একটা ফেইকআইডি খুলে ফেলুন। ফেক আইডির প্রকৃত পরিচয়, ফোন নম্বর ইত্যাদি ভুলেও কাউকে বলবেননা, এমনকি বন্ধুদেরকেও না।
দ্বিতীয় ধাপ(সবার জন্য)- আইপি হাইডঃ
ফেক আইডি দিয়ে লেখালেখি করলেও বাকশালের পুলিশ আপনার আইপি ট্রেস/ট্র্যাক করে আপনার অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে। এজন্য আপনার রিয়াল আইপিকে হাইড করে অন্যদেশের আইপি ব্যবহারকরতে হবে। প্রথমে নিজের প্রকৃত আইপি জেনে রাখুন। এটা জানার অনেকগুলো পদ্ধতি আছে।আপনার জন্য সহজ পদ্ধতি হলো, http://www.whatismyip.com এ সাইটে ভিজিট করা। এ সাইটে গেলেই আপনার আইপি এবং লোকেশন দেখতে পাবেন। এবার আপনার এ আইপি হাইডের পালা-
১। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো, Tor Browser ব্যবহার করা। এটা ফায়ারফক্সের মতই, পার্থক্যহলো প্রতিবার ব্রাউজার ওপেন করলেই এটি আপনার অবস্থান বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্যকোনো প্রান্তে দেখাবে। যেমন এ মুহূর্তে আমার অবস্থান দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের Massachusetts রাজ্যের কোনো একটা শহরে। একটু আগে ছিলাম সৌদি আরবের কোনো এক মরুভূমিতে । Tor ব্রাউজার ফ্রী এবং পোর্টেবল, শুধু ডাউনলোড করে extract করে ব্যবহার শুরু করে দিন। টর ব্রাউজার দিয়ে আপনি বাংলাদেশ থেকে সহজেই টুডে ব্লগেও ঢুকতে পারবেন।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ
for windows- উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা এখানে ক্লিক করুন
for Linux: লিনাক্স ব্যবহারকারীরা এখানে ক্লিক করুন
অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা গুগল স্টোরেTor browser টি পাবেন। এছাড়া অন্য আইপি changer সফটওয়্যারও আছে।
২। দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সফটওয়্যারব্যবহার করে। সফটওয়্যার এর সাহায্যে আপনি নিজের ইচ্ছামত লোকেশন দিতে পারবেন।সফটওয়্যার পদ্ধতি আসলে Advanced দের উপযোগী। আইপি হাইডের অনেক সফটওয়্যার আছে। নিচে আমি Hide IP Easy সফটওয়্যারটির ক্র্যাকসহ ডাউনলোড লিঙ্ক দিলাম।
লিঙ্কঃ Hide IP Easy
সতর্কতাঃ
১। প্রতিবার ব্রাউজিং শেষে ব্রাউজিংহিস্ট্রি, কুকিজ পরিষ্কার করে ফেলুন।
২। আপনার ব্রাউজারে লগিন আইডি,পাসোওয়ার্ড সেইভ করবেন না ।
৩। সরকারের সমালোচনামূলক লেখা, ছবিইত্যাদি ভুলেও পিসিতে সেইভ করবেন না। বাকশালের পুলিশ তল্লাশি করলে ধরা খেয়ে যাবেন।মনে রাখবেন, গঠণমূলক সমালোচনাও সরকার সহ্য করবে না। আপনার লেখাগুলো একান্তই সংরক্ষণ করতে চাইলে তৃতীয় ধাপ দেখুন।
৪। বার বার আইপি পরিবর্তন করে ফেসবুকে ঢুকতে গেলে ফেসবুক আপনার আইডিকে সন্দেহ করে security check দিতে পারে। এজন্য নিজের(অর্থাৎ ফেক আইডির) সব তথ্য যেমন জন্ম তারিখ, পাসোয়ার্ড, ছবি, গোপন প্রশ্ন(security question) মুখস্থ রাখুন। ব্লগে লেখার ক্ষেত্রে এমন সমস্যা হবে না।
উপরের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে আর সতর্ক থাকলে বাকশালের পুলিশ আপনার টিকিটিরও নাগাল পাবে না।
তৃতীয় ধাপ (Advanced দের জন্য): ভার্চুয়াল বক্স তৈরি-
আপনি আপনার কম্পিউটারে পোর্টেবল ভার্চুয়াল বক্স অথবা এরকম কোনভার্চুযাল কম্পিউটার তৈরী করা যায় এরকম সফটওয়্যার ইনস্টল করবেন । বলাবাহুল্য এই সফটওয়্যারগুলো ফ্রি সফটওয়্যার । এগুলোতে উইন্ডোজ ইন্সটল করবেন একদম পিসির মতনকরে । ফেসবুক থেকে শুরু করে ব্লগে যত লেখালেখি করবেন সব করবেন এই পোর্টেবল ভার্চুয়াল বক্সে । পদ্ধতিটা যেহেতু Advanced দেরজন্য তাই এটা নিয়ে বিস্তারিত লিখলাম না। যাদের দরকার তারা কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন
আল্লাহ হাফেজ।
বিষয়: বিবিধ
১৮০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন