যে মহাসমাবেশ খোদাদ্রোহীদের ডায়রিয়ার কারণ!

লিখেছেন লিখেছেন স্বঘোষিত ব্লগার ০৭ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৪৩:৫৮ সকাল

দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ যেন বিস্ফোরিত হয়েছে শাপলা চত্বরের মহা সমাবেশে। ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী আলেমদের যোগ্য উত্তরসূরীদের ডাকে নজিরবিহীন সাড়া দিয়েছে এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী সফলভাবে পালনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়।মুসলিমদের নিকট ইসলাম এবং মহানবী (সা.) এর মর্যাদা সবকিছুর ঊর্ধ্বে, এ কথাটাই আবার প্রমাণ করে দেখিয়েছে নবীপ্রেমিক তৌহিদী জনতা। এ প্রসঙ্গে একটা হাদিস মনে পড়লো-

হযরত আনাস (রা.) হইতে বর্ণিত, রাসূলূ্ল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেহ ঐ পর্যন্ত মুমিন হইতে পারিবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাহার নিকট আমার মহব্বত ও ভালোবাসা তাহার পিতা, সন্তান-সন্ততি এবং সমস্ত মানুষ হইতে বেশী না হইবে

শুরু থেকেই সরকার এবং সরকারের গৃহপালিত কিছু নাম সর্বস্ব দল বিভিন্ন রকম মিথ্যা ট্যাগ লাগিয়ে জনতার ঢেউকে বালির বাঁধ দিয়ে রোখার ব্যর্থ চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু নবীপ্রেমের কাছে হার মেনেছে খোদাদ্রোহীদের সকল অপচেষ্টা, খড়কুটোর মতো ভেস্তে গেছে তাদের সকল কুটিল ষড়যন্ত্র। শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে, পায়ে হেঁটে, ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, ধর্মদ্রোহী নাস্তিকদের ফাঁসির দাবি নিয়ে শাপলা চত্বরে জড়ো হয়েছে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। জনতার এ স্বতঃস্ফূর্ত জোয়ার বাংলার মাটি এর আগে কখনও দেখেনি। এ গণজোয়ার এদেশের মাটিতে পবিত্র ধর্ম ইসলামের স্থায়িত্ব নতুন করে জানান দেয়।

এদিকে এ বিশাল জনসমুদ্র দেখে খোদাদ্রোহীদের ভিত নড়ে উঠেছে, মনে হচ্ছে যেন তাদের পাতলা পায়খানা শুরু হয়ে গেছে। ‘বাংলাদেশ আফগানিস্তান হয়ে গেল, পাকিস্তান হয়ে গেল’ বলে সেই বাসি পুরনো জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। তাদের সাথে সুর মিলিয়েছে এদেশের উগ্র নাস্তিকতার মুখপত্র কতিপয় হলুদ মিডিয়া। ব্লগ, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তাদের দেশের জন্য মায়াকান্না দেখে বোঝা যায় এরা ইসলামকে কতটা ভয় পায়। পবিত্র ধর্ম ইসলামই যেন এদের সকল মাথাব্যথার কারণ। এতদিন যে পবিত্র ধর্মের বিরুদ্ধে এরা মিথ্যা বিষোদগার করে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মনে আঘাত দিতো, আজকে নিজেদের লেজ বাঁচানোর জন্য এরা ধর্মের দোহাই দেওয়া শুরু করেছে। ইসলামী গণজাগরণের বিরুদ্ধে কুরআনের দু-একটা আয়াদের আংশিক অংশের বাংলা অনুবাদ তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ শরীয়াতের বিধি-বিধান পূর্ণাঙ্গ এবং অবিভাজ্য। এর কিছু অংশ গ্রহণ এবং কিছু অংশ বর্জন করা ইসলামে অনুমোদিত নয়। এদের এরকম কর্মকাণ্ডের জবাব দিয়েছেন আল্লাহ কুরআন মাজীদে-

– “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান কর? সুতরাং তোমাদের যারা এরূপ করে তাদের প্রতিফল পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা গঞ্জনা এবং কিয়ামাতের দিন তারা কঠিনতম শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে” (সূরা বাকারাহ; আয়াত: ৮৫)

মুসলমানদের ঘুমন্ত ঈমানকে জাগিয়ে তুলতে, ৯০ ভাগ মুসলমানের এ দেশে ইসলামি শক্তির জানান দিতে সর্বোপরি ধর্মদ্রোহীদের শিকড় উৎপাটনে এ মহা সমাবেশের তাৎপর্য অনেক। ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদরা এ দেশের আলেম-ওলামা, ইসলামি মূল্যবোধ এবং ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সমীহ করা শিখবে। কোনও কুলাঙ্গার উগ্র নাস্তিক ভবিষ্যতে ধর্মাবমাননার দুঃসাহস দেখাতে গেলে ৬ই এপ্রিলের কথা মনে করে তাদের অন্তরে নতুন করে হৃদকম্পন শুরু হবে। মুসলিমগণ তাঁদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার পদ্ধতিও শিখেছে এ আন্দোলন থেকে। ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হচ্ছে ৬ই এপ্রিলের মহা সমাবেশ। সব পেশার, সব শ্রেণীর মানুষ সেদিন একে অন্যের প্রতি অকৃত্রিম সাহায্য সহযোগিতার যে হাত প্রসারিত করেছিল তা মিডিয়া কাভার না করলেও বাংলার আকাশ বাতাস ঠিকই অবলোকন করেছে। Click this link

দাবি আদায়ের এমন অহিংস, অসহিংস এবং সুশৃঙ্খল আন্দোলনের নজির বাংলাদেশের মানুষ এর আগে দেখেছে কিনা সন্দেহ।

পরিশেষে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ‘আল্লাহু আকবার’ শ্লোগান বাতিলের দুর্গে আরও বেশি কম্পন সৃষ্টি করুক, ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাক তাদের সকল হীন প্রচেষ্টা এ কামনা করি।

বিষয়: রাজনীতি

১৩১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File