আাস্তক, নাস্তিক ও আমি
লিখেছেন লিখেছেন ক্ষ্যাপা পাগল ২৬ মে, ২০১৩, ১১:৫৪:৩৪ সকাল
আজকাল নাস্তিকতা একটি ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে। একদল জোর করে নাস্তিক আখ্যা দিচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আরেক দল ইচ্ছাকরে নাস্তিক হচ্ছে নিজেকে চেনানোর জন্য। এই দুই দলই কি জানে আসলে নাস্তিক কি? ওরা না জানুক আমরা একটু জানি নাস্তিক কি?
ইংরেজি ভাষায়: Atheism; অন্যান্য নাম: নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ একটি দর্শনের নাম যাতে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়না এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়া হয়। আস্তিক্যবাদ এর বর্জন কেই নাস্তিক্যবাদ বলা যায়। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস নয় বরং অবিশ্বাস এবং যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাসকে খণ্ডন নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতিই এখানে মুখ্য।
ইংরেজি ‘এইথিজম’(Atheism) শব্দের অর্থ হল নাস্তিকক্য বা নিরীশ্বরবাদ। এইথিজম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রিক ‘এথোস’ শব্দটি থেকে। শব্দটি সেই সকল মানুষকে নির্দেশ করে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে এবং প্রচলিত ধর্মগুলোর প্রতি অন্ধবিশ্বাস কে যুক্তি দ্বারা ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করে। দিনদিন মুক্ত চিন্তা, সংশয়বাদী চিন্তাধারা এবং ধর্মসমূহের সমালোচনা বৃদ্ধির সাথে সাথে নাস্তিক্যবাদেরও প্রসার ঘটছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম কিছু মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে স্বীকৃতি দেয়। বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এবং ১১.৯% মানুষ কোন ধর্মেই বিশ্বাস করে না। জপানের ৬৪% থকে ৬৫% নাস্তিক অথবা ধর্মে অবিশ্বাসী। রাশিয়াতে এই সংখ্যা প্রায় ৪৮% এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নে ৬% (ইতালী) থেকে শুরু করে ৮৫% (সুইডেন) পর্যন্ত।
পশ্চিমের দেশগুলোতে নাস্তিকদের সাধারণ ভাবে ধর্মহীন বা পরলৌকিক বিষয় সমূহে অবিশ্বাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের মত যেসব ধর্মে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় না, সেসব ধর্মালম্বীদেরকেও নাস্তিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিছু নাস্তিক ব্যক্তিগত ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, হিন্দু ধর্মের দর্শন, যুক্তিবাদ, মানবতাবাদ এবং প্রকৃতিবাদে বিশ্বাস করে। নাস্তিকরা কোন বিশেষ মতাদর্শের অনুসারী নয় এবং তারা সকলে বিশেষ কোন আচার অনুষ্ঠানও পালন করে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে যে কেউ, যে কোন মতাদর্শে সমর্থক হতে পারে,নাস্তিকদের মিল শুধুমাত্র এক জায়গাতেই, আর তা হল ঈশ্বরের অস্তিত্ব কে অবিশ্বাস করা।
আপনি নাস্তিক তাতে আমার কোন সমস্যা নাই। কিন্ত সমস্যা সেখানে, যখোন আপনি আমার ধর্ম নিয়ে কটু কথা বলেন। আর যতোক্ষন সেটা না করছেন আপনি নিরাপদ। আপনাকে কেউ জোর করছে না আমার ধর্ম বিশ্বাস করার জন্য। আবার আমাকে কেউ নাস্তিক বলে গালি দিচ্ছে তাতেও কোন সমস্যা নাই। কারণ আমি জানি আমি কি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখাযায় যে এই ধর্মে অবিশ্বসীগন শুধুমাত্র ইসলামী দল জামাত/হেফাজত এর মত ভন্ড ইসলামী দলগুলার কারনে পুরা ইসলামী সমাজ ব্যাবস্থাকে দোষী করতে পারেন না। কুরআন, হাদিস এর পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যাবস্থাই যে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির তা আপনি একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন। কিন্তু মওদুদী জাতীয় কিছু নরপশুর কারনে ইসলামে আজ বিভোক্তি। ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারনা।
আমার সবচেয়ে খারাপ লাগে যখোন দু একজন ধর্মে অবিশ্বাসীদের জন্য পুরা শাহাবাগ আন্দলোন কলুষিত হয়। যখোন দু একজনের জন্য নামাজ পড়েও আমাকে নাস্তিক ট্যাগ খেতে হয়। আপনার মানার দরকার নেই সৃষ্টিকর্তাকে বা ঈশ্বরকে। শুধু দেশকে এবং দেশের আইনকে মেনে চলুন। দেশে ব্লাসফেমি বলে একটা আইন আছে। সেটা মেনে চলুন। আপনার বা আপনাদের একেটু কথা হয়তো ২০১৩ এর আন্দলোনকে পেছনে ঠেলেদেবে। অনেক সময় আমার মনে হয় ছাগু হয়তো কোন প্রজন্মকে ব্যাকগিয়ারে ঠেলে দেবার জন্য এগুলা লেখে।
এই লেখা পড়ার পর অনেকে হয়তো আমাকে ছুগু জাতীয় কিছু ভাবতে পারেন। তাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি কাঠালপাতা কেন কাঠালও খাই না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন