আসাদের গোয়েন্দাগিরি
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ হোসেন ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৬:৪৫:২৮ সকাল
ফজরের আযান হচ্ছে। আযানটা কানে আসছে। কিন্তু ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না।ঘুমাতে খুব দেরি হয়ে গেছে। প্রায় রাত ২ টা। ইন্টারনেট মানুষের জীবনে আর্শিবাদ না অভিশাপ এখন পর্যন্ত বুঝতে পারছি না। দেরিতে ঘুমানোর দখল আজ সারাদিন যাবে। আর একটু শোব চিন্তা করছি। এই সময় মা দরজার সামনে এসে আসাদ বলে ডাক দিল।
মা: আসাদ, বাবা ঘুম থেকে ওঠ। ফজরের আযান হচ্ছে মসজিদে যাবি না?
আসাদ: উঠছি মা।
মা: তাডাতাড়ি উঠ। নামাজের সময় চলে যাচ্ছে।
আর পারলাম না। উঠতে হল। ফ্রেশ হয়ে মসজিদের দিকে রওনা হলাম। বাসা থেকে মসজিদের ৫ মিনিটের রাস্তা। মসজিদে যাওয়ার সময় প্রতিবেশি আনিস চাচা সাথে দেখা হল।
আনিস চাচা: আসাদ নাকি?
আসাদ: জ্বি চাচা,আসসালামু আলাইকুম
আনিস চাচা : ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছ?
আসাদ: আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন?
আনিস চাচা : আল্লাহ রাখছে তবে শরীরটা ভাল না?
আসাদ: কি হয়েছে?
আনিস চাচা : চল, যেতে যেতে কথা বলি। আর কি বৃদ্ধ মানুষ শরীর ভাল থাকব কেমন? তোমার কি অবস্থা বল? কাজকর্ম কেমন চলছে?
আসাদ: ভাল চাচা। আজ নতুন অফিসে জয়েন করব। বলদি করা হয়েছে। দোয়া করবেন।
মসজিদে নামাজ শেষ করে কিছুক্ষন বসলাম। হুজুরে হাদীস পড়চ্ছে মন অন্যদিকে চলে যাচ্ছিল জোর করে হাদীস টা শুনলাম। হাদীসটার সারর্মম হলো কেয়ামতের পূর্বে ফেতনা এতটা ভয়াবহ হবে যে মানুষ সকাল বেলা ঈমান নিয়ে বের হলে বিকালে আসবে ঈমান ছাড়া। বিকালে ঈমান নিয়ে বের হলে রাএে আসবে ঈমান ছাড়া। হাদীসটা শুনে মনে মনে চিন্তা করলাম এখন সেই সময় চলতেছে? মাঝে মাঝে মনে হয় চলতেছে। কর্ম জীবনে এখন যে ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা লাখতেছে ভয় হয় কখন খারাপ ফাদেঁ পড়ে যায়। অফিসে গত সপ্তাহ মল্লিক ভাই অপার দিল ৪ লাখ টাকার যদি মাল সরানো যায় তাহলে আমি ৫০ percent ভাগ পাবে। এই লোকটা জানে আমি এগুলোর ধারে কাছে যায় না তবু ও আমাকে বলার মানেটা কি?
মসজিদ থেকে বের হলাম। আজকের সকলটা খুব ফ্রেশ মনে হচ্ছে। কেন জেন সবকিছু নতুন নতুন মনে হচ্ছে? প্রতিদিন এই রকম মনে হয়। আসলে মসজিদে ফজরের নামাজের যে ধরনের তৃপ্তি আছে মনে হয় দুনিয়ার কোন কিছু দিয়ে হয় না। তখন দুনিয়াটাকে নতুন মনে হয়।
বাসায় এসে দেখি মা কুরআন পড়ছে। মার কুরআন পড়াটা এত সুন্দর মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় সারাদিন শুনি। মা কুরআন হাফেজী। নানার এক মাএ আদরের মেয়ে। নানার দুই ছেলে মেয়ে। মা হল ছোট। মা নাকি খুব আদর পেয়ে বড় হয়েছিলেন। বাসায় নানাজান হুজুর রেখে হাফেজী পড়িয়েছিলেন। সবাই নাকি খুব আদর করতেন। কখন দুঃখ ব্যাপারটা আছ করতে দেয়নাই। কিন্তু মার ভেতর কখনও অহংকার দেখি নাই। খুব সহজ সরলভাবে চলে এবং মানুষকে দেখি যথেষ্ট পরিমান উপকার করে। আমাকে তার মতে করে মানুষ করার চেষ্টা করেছে। আমি তার মত মানুষ হয়েছে কি না জানি না।তবে প্রত্যক মানুষের জগত আলাদা। মার বিয়ে হয় ১৬ বৎসর বয়সে। বার বৎসর পর মা বিধবা হয়। মার পুরো নাম সালাম আক্তার। তার পর ১৮ বৎসর কেটে গেল। আমি বড় হলাম। মা কুআন পড়া শেষ করে নাশতা বানাতে গেল। ঘড়ির দিকে তাকালাম। সাতটা বাজতে ১০ মিনিট বাকী। কিছুক্ষন কুরআন পড়ব নাকি চিন্তা করতে তখন মনে হল হেড অফিসে একটা email করার কথা। সাথে সাথে laptop on করে ম্যানজারকে email করি। ফেসবুকটা চেক না করার লোভ সামলাতে পারলাম না। তেমন কোন update পেলামনা। শুধু দেখলাম এক friend ছবি update দিয়েছে। ছবিটা লন্ডনের টাওয়ার বিজ্রের সামনে থেকে তোলা। তকে খুব হ্যান্ডসাম দেখাচ্ছে। ফেসবুকে আমার ছবিটা update করার দরকার। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু বিষয় confuse হয়ে যায়। ছবি কি মানুষকে দেখানোর জন্য না নিজেকে refresh হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য। সব সমর এই complex এর জন্য ছবি আর পরিবতন করা হয়ে ওঠে না। হঠাৎ সময়ের দিকে চোখ পড়ে। ৭.৩০ বাজে। ৮ টার ভেতর বাহির হতে হবে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাশতা করতে বসি। মাকে জিজ্ঞাসা করি আমার সাথে নাশতা করবে কিনা।
মা: আমি রোজা রেখেছি। তুই নাশতা কর।
চুপচাপ নাশতা করতেছি। হঠৎ মনে হয় মাকে বদলি কথাটা বলতে ভুলে গেছি।
আসাদ: মা আমি বদলি হয়েছি।
মা আতকে ওঠে
মা : কবে হলি?
আসাদ: গতকাল হয়েছি। তোমাকে বলতে ভুলে গেছি।
মা : কোথায়?
আসাদ: এখন হেড অফিসে। মূলত আমাকে একটা তদন্ত করার জন্য নেওয়া হয়েছে।
মা: ঠিক আছে বাবা। সাবধানে থাকিস।
মা আর কোন কিছু জিঞ্জাসা করলো না। অন্যকেউ হলে সব details জানতে চাইত।
নাশতা শেষ করে বাহির হয়ে গেলাম। রাস্তা যাওয়ার সময় আনিস চাচার ছোট ছেলেটাকে দেখলাম। রাহাত নাম সাথে বাতিজা পেলুকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমি সালাম দিলাম। লজ্জা পেয়ে গেল।
আসাদ: কি ব্যাপার রাহাত? কেমন আছ?
রাহাত: আসাদ ভাই আমি ভাল আছি।
আসাদ: পেলু কেমন আছ?
উওর না দিয়ে জান আংকেল আব্বু আমার জন্য একটা সুন্দর বল কিনেছে।
তাই। এই সময় অটো রিকশা যাইতে ছিল। আমি চালকে জিঞ্জাসা করলাম ফামগেট যাবে কি না? সেই বলে যাবে, তবে মিটারে যাবে না। ২০০ টাকা দিতে হবে। ভাড়া এক ধরনের বেশি চাওয়া হচ্ছে কিন্তু কিছু করার নাই। অফিসে দেরি হবে যাবে সুতারং উঠে গেলাম আল্লাহর নাম নিয়ে। যানবাহনের উঠার দোয়াটা জানিনা ।এক্ষেএে আল্লাহ নাম নেওয়া ছাড়া উপায় নাই। মুসলমান হিসেবে কতো কিছু শেখা দরকার তার যদি লিস্ট করি তাহলে মুসলমান ভাবতে কষ্ট হবে। তারপর চিন্তা করছি অফিসের প্রথম দিন কেমন যাবে? আমি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে গেলেও মূলত আমার দায়িত্ব চুরিরোধ করা। আর গত মাসে কোম্পানির গোডাইন থেকে এক কোটি টাকার মাল খোয়া গেছে। কাজটা অফিসের লোকের হাত ছিল। কোম্পানির টোটাল ৩ জন পরিচালক ও ৫ সহকারী পরিচালক তাদের ভেতর থেকে কেউ একজন করেছে না সবাই মিলে এই কাজ করেছে না অন্য কেউ জড়িত ছিল? গতকাল কোম্পানির চেয়ারম্যানের সাথে দীঘক্ষন কথা হয়েছে।তিনি মূলত এই ৮ জনের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। চিন্তা করতে করতে অফিসে এসে পৌছলাম।চলবে......................
বিষয়: বিবিধ
২২০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন