২৫ শে ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে রাত, মিডিয়ার ভূমিকা এবং জামায়াত!!!
লিখেছেন লিখেছেন জান্নাতের পথিক ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৩৮:৫৩ সন্ধ্যা
২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী বিডিআর জোয়ানদের বিদ্রোহ হয়েছিল। মনে করা হয় দুনিয়ার কোন যুদ্ধেতো তো নয়েই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও এতো সংখ্যক সেনা অফিসার হত্যার ঘটনা ঘটেনি।
এই ঘটনায় আমাদের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেই সম্পর্কে অনেকে অনেক ভাবে লেখালেখি করেছে।
মিডিয়া একটা জাতির চিন্তা চেতনা কতো দ্রুত পরিবর্তন করতে পারে তার প্রমাণ হচ্ছে, ২৫শে ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টিভি সংবাদ গুলো।
আমি সংবাদিকতা নিয়ে ছোট্ট একটা কোর্স করতেছি, তাই আমার দেখা বিডিআর বিদ্রোহের দিন মিডিয়ার ভূমিকা কেমন ছিলো, তা বলতে চাই।
ঐ দিন সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ আমার বড় ভাই তার অফিস থেকে কল দিয়ে বললো, টিভিতে দেখতো বিডিআররা নাকি বিদ্রোহ করছে!
সাথে সাথে টিভি অন করে দেখলাম, লাইভ দেখাচ্ছে পিলখানার ভিতর থেকে গোলাগুলির শব্দ।
সারাদিনই চেষ্টা করলাম প্রত্যেকটা চ্যানেলের সংবাদ দেখার। সংবাদ একটাই- বিডিআররা বিদ্রোহ করেছে, তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য। মিডিয়া অনেকটাই বিডিআর দের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করতে লাগলো। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও চলে যাচ্ছিল সেই দিনের সংবাদ-
" জানাজার আগে মিডিয়ার সমালোচনা। কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা বিডিআরের ঘটনার পর পরিবেশিত সংবাদের জন্য গণমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করেন। তারা বলেন, আর্মির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্যই যেন মিডিয়া সেখানে হাজির হয়েছিল। এসব ঘটনায় জানাজা কিছুটা বিলম্বিত হয়।(মানব জমিন, ২৮/০২/২০০৯)
এই সংবাদ গুলো সাধারন মানুষের মনে কতো বড় প্রভাব ফেলেছিলো তা আমি দেখেছি। অনেক সাধারণ মানুষ বলাবলি করতেছিলো- "আসলে বিদ্রোহটা ঠিকই আছে, সেনাবাহিনী থেকে যারা বিডিআরে গেছে তারা বিডিআর জোয়ানদের দিয়ে অনেক কাজ করায়,মাঝে মাঝে নির্যাতনও করে!!"
যতটুকু মনে পড়তেছে, ঐদিন সন্ধ্যার একুশে টিভির সংবাদে এক বিডিআর জোয়ানের মেয়ের সাক্ষাতকার প্রচার করা হয়, "সেনা অফিসাররা বিডিআর জোয়ানদের দাবি দাওয়া মানে না, কষ্ট করায়।" এই জাতিও কথা মেয়েটি বলেছিলো।
বড়ই আশ্চর্য জনক! সদর দফতরের ভিতরে অবস্থানরত সেনা অফিসাররা কি অবস্থায় আছে, বেচেঁ আছে নাকি মারা গেছে, সেই সম্পর্কে তেমন কোনো সংবাদই ছিলো না!
এতে সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্ট বিডিআর জোয়ানদের পক্ষে ছিলো।
২৫ তারিখ পেরিয়ে ২৬তারিখ এবার মিডিয়ার ভিন্ন রুপ!
মিডিয়া এখন সেনা অফিসারদের পক্ষে কথা বলা শুরু করলো। কারণ ততোক্ষণে সব জাগায় ছড়িয়ে গেছে, বিদ্রোহে অনেক সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে।
মিডিয়ার এই ভিন্নরুপের সঙ্গে সঙ্গে জনগনের মানসিকতার পরিবর্তনও চলে আসলো। এবার সাধারন মানুষের মুখে শুনতে দেখেছি, "পিলখানার বিদ্রোহে বাংলাদেশের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেলো, যা পূরণ হবার মতো নয়।"
মিডিয়া কতো তাড়াতাড়ি মানুষের চিন্তার জায়গা গুলোর পরিবর্তন করতে পারে, এ যেনো তারই প্রমাণ!
তিলকে তাল আর তালকে উধাও করে উপস্থাপন করা মিডিয়ার কাছে কোনো ব্যপারই না।
মিডিয়া জামায়াতের বিরুদ্ধে অবিরাম অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু সাধারন জনগন না বুঝেই বিশ্বাস করে ফেলতেছে। গত এক বছর ধরে নির্বিচারে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের গুলি করে মারতেছে, কিন্তু মিডিয়া বলতেছে, জামায়াত-শিবিরের তান্ডব চালিয়েছে, এই সময় এতজন মারা গেছে!
কতো বড় আহাম্মকি সংবাদ যে, জামায়াত-শিবিরই যদি তান্ডব চালায় তাহলে তাদেরই লোক কেনো মারা গেলো! অপর পক্ষের লোক কেনো মারা গেলো না?
"তিলকে তাল আর তালকে উধাও"
মিডিয়ার এই আশ্চর্য জনক শক্তিকে কেউই অস্বিকার করতে পারবে না।
আর তাই, সত্যাবলম্বীদের উচিত মিডিয়াকে নিজেদের করে নেওয়া।
আলহামদুলিল্লাহ্, জামায়াত-শিবির মিডিয়াতে এখন কাজের ব্যাপারে ১০০% পজিটিভ।
আল্লাহ তার দ্বীণের কাজকে এগিড়ে নেওয়ার জন্য মিডিয়াতেও আমাদের শক্তিশালী ভূমিকা রাখার তাওফিক দান করুক।
আমীন
https://www.facebook.com/mustafiz2009
বিষয়: বিবিধ
১৩০৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন