সবচেয়ে মেধাবীদের ভান্ডার...
লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ০৭ মে, ২০১৪, ০৬:৪৮:৪৬ সন্ধ্যা
বেশ কিছু মানুষকে দেখলাম মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে আজেবাজে পোস্ট করছেন। বলছেন মাদ্রাসার ছাত্রদের মাথায় নাকি খালি গোবর ভরা। তাই কাছ থেকে দেখা কিছু কথা শেয়ার না করে বসে থাকতে পারলাম না।
আমার দেখামতে বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবীরা হলো যারা মাদ্রাসায় (কওমি) পড়ে। বিশেষ করে যারা হেফজ বিভাগে পড়ে। হেফজ বিভাগে পড়া একটা ছোট্ট ছেলে প্রতিদিন (মাত্র কয়েক ঘন্টায়) কমপক্ষে এক পৃষ্ঠা পবিত্র কোরআন মুখস্ত করে থাকে। কিছু কিছু বিশেষ মেধাবী থাকে যারা কয়েক পাতাও এক দিনে মুখস্ত করে ফেলে। শুধু মুখস্ত নয় দাড়ি,কমা,লম্বা,খাটো ও সঠিক উচ্চারণ সহ তারা মুখস্ত করে থাকে।
বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে মেধাবী বলতে বলে থাকে বুয়েট অথবা মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীদের। কিন্তু আমি বলবো একজন কওমি মাদ্রাসার ছাত্র বিশেষ করে হেফজ বিভাগের একজন ছাত্রকে যদি ভাগ করা হয় তাহলে সেখান থেকে ৫ জন বুয়েটের আর ৫ জন মেডিকেলের স্টুডেন্ট বের হয়ে আসবে। একজন বুয়েটের অথবা মেডিকেলের স্টুডেন্টকে কয়েক ঘন্টায় নয় পুরো এক দিনে এক পাতা পবিত্র কোরআন সঠিক উচ্চারন সহ মুখস্ত করে দিতে বলেন দেখি,দেখি সে পারে কিনা ? আমার বিশ্বাস আধা পাতাও মুখস্ত করতে পারবেনা।
অনেকেই বলতে পারেন, কই তাদের মেধার কোন বিকাশতো আমরা দেখতে পাইনা। হাঁ তাদের মেধার বিকাশ সচরাচর দেখা যায়না,কারণ তাদের মেধাকে কাজে লাগানোর মতো পরিবেশ বাংলাদেশে নেই। আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের মূল্যায়ন করছে, কিছুদিন আগেও বিশ্ব কোরআন প্রতিযোগীতায় প্রথন স্থান অধিকার করেছেন আমাদের দেশের ছোট্ট এক ভাই। মধ্যপ্রাচ্যের ছোট্ট একটা দেশ কাতার, এখানে একজন কোরআনে হাফেজ (আলেম না হলেও)যারা বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করছেন তাদেরকে সরকার শুধুমাত্র বাসা ভাড়া বাবদ ৮,০০০/= কাতারি রিয়েল প্রদান করে থাকে যা বাংলাদেশী টাকায় ১,৭০,৪০০/= টাকা। বেতন বোনাস তো বাদই দিলাম।শুধু দুনিয়াতে নয় তাদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আখেরাতে কি খাজানা রেখে দিয়েছেন সেটার বর্ণনা নাইবা করলাম।
সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্সে বিএসসি পাশ করা আমার দেখা অনেক ইন্জিনিয়ার আছে যারা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা মাইনে চাকুরি করছে। হাঁ তবে যেসব ইন্জিনিয়াররা দেশের বাইরে গিয়ে চাকুরির সুযোগ পাচ্ছে তারাও অনেক ভালো করছে। তারপরও মেধার দিক দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররাই সবথেকে এগিয়ে, এতে কোন ভুল নেই।
যারা আলেম উলামাদের নিয়ে উপহাস করেন তারা নিজেদের সাথেই প্রতারণা করেন। আর যে ব্যাক্তি নিজের সাথেই নিজে প্রতারণা করতে পারে তার মাঝে আর যাই থাকুক মনুষত্ববোধ নেই। উল্লেখ্য, থাবা বাবা নামক নরকের কিট যে কিনা আল্লাহ রাসূলকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলে গিয়েছে,নিজেকে নাস্তিক বলে গর্ববোধ করতো যে কিনা সমগ্র আলেম উলামাদের ঘৃণা করতো সেই থাবা বাবাকেও এক পর্যায়ে এসে সেই আলেমের সামনেই সারেন্ডার করতে হলো।
কিছু মানুষের ভেক ধারি শয়তান আছে আমাদের সমাজে, যারা নিজেদেরকে সুশিল/মুক্তমনা বলে ব্লগ,ফেসবুক বা মিডিয়াতে সেলিব্রেটি হতে চায়। তাদের বেশির ভাগই একটা রাজনৈতিক দলের ব্রেইনওয়াশ করা শিখানো বুলিই আওড়িয়ে যাচ্ছে। তারা একবারও নিজের আত্বার চিৎকার শুনছেনা, তাদের কানে সেই চিৎকার যাচ্ছেনা কখনও হয়তো যাবেও না। কারণ তাদের কানে দলীয় গোলামী নামক শিশা ঢেলে দেয়া হয়েছে। তাদের অন্তরকে কালিমা দিয়ে লেপে দেয়া হয়েছে।তাদেরকে বলতে চাই, বিরোধীতা করেন ভালো কথা কিন্তু খেয়াল রাখবেন বিরোধীতা করতে করতে মুসলমানের গন্ডির বাইরে না চলে যান।
সেইসব সুশিল!দের একটা কথা স্বরণ করিয়ে দিতে চাই, তোমরা কি মরবেনা ? মৃত্যু কি তোমাদের আলিঙ্গন করতে আসবেনা ? তোমরা কি একবারও খেয়াল করে দেখেছো যে তোমরা সঠিক উচ্চারণে কালেমা "লা ইলাহা ইল্লাললাহু মুহাম্মাদুর রাসূল উল্লাহ্ (স.)" বা "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম"পড়তে পারো কিনা ? যদি না পারেন তাহলে অন্তত কালেমা টা শিখে নিন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সামনে যখন দাড়াবেন তখন হয়তো এটাই হবে আপনার একমাত্র পূঁজি।
আর যদি নিজেকে সুশিল! নামক নাস্তিক দাবী করেন তাহলে এখনি উইল করে রাখেন যে,মৃত্যুর পর আপনাকে কি করা হবে ? কষ্ট! হয় সেই থাবাবাবার জন্য যে সারা জীবন আলেম উলামাদের হেয় প্রতিপণ্য করে গালাগালি করে গেলো আর তাকেই মৃত্যুর পর সেই আলেমের পায়ের নিচেই শুয়ে থাকতে হলো।
বিষয়: বিবিধ
১৭৮৩ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে আপনার যুক্তিগুলো অর্বাচীনের মত।
এই সব দুনিয়ার চাকচিক্য বিমুখ আলেম উলামাদের দ্বারা আল্লাহ দ্বীনের মূল ভিক্তিকে টিকিয়ে রেখেছেন । আলেম উলামাদের অবদান দুনিয়ার জন্য নয় আখেরাতের জন্য । তাদের কারনেই আজ ভারত আমেরিকা ইউরোপে ইসলামের আলো ছড়িয়ে পড়ছে ।
বুঝলাম না আপনার কথা। আলীমের পায়ের নিচে শুয়ে থাকলো কিভাবে? সেতো কবরে শুয়ে আছে।
মাথায় মগজ থাকা আর মেধাবী এক জিনিস নারে ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন