কুকুরে যদি পায়ে কামড় দেয় তাহলে আমিও কি কুকুরের পায়ে কামড় দিতে পারি ?
লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ১০ এপ্রিল, ২০১৪, ০৭:৩৫:৫৬ সন্ধ্যা
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া "বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল" বিএনপিকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে পছন্দ করি। একসময় এই দলের হয়ে সক্রিয় রাজনীতির সাথেও জরিত ছিলাম। এখনও জাতীয়তাবাদের আদর্শেই অটুট আছি এবং থাকবো। এই দলটাকে খুব পছন্দ করি, এই দলের ভালো মন্দ নিজের ভালো লাগা মন্দ লাগার সাথে জড়িয়ে আছে।
বর্তমান বিএনপি'র অবস্থা অনেক নাজুক, বিএনপি এখন ধিরে চলো নীতিতে এগিয়ে চলেছে। আওয়ামী সরকারের লাগাম হীন স্বেচ্ছাচারিতার কারনে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত হওয়া উপজেলা নির্বাচনই তার প্রমান। যদি সুষ্ঠ ভাবে নির্বাচন হতো তাহলে আমার ধারনা আ'লীগ ৩০ টার বেশি উপজেলাতেও জয় লাভ করতে পারতো না। বিএনপির আন্দোলনের কারনেই হোক আর আ'লীগের স্বেচ্ছাচারিতা আর নির্যাতনের কারণেই হোক মানুষ আ'লীগের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো। আ'লীগের দিক থেকে মানুষের মন উঠে যাওয়ার পিছনে আরও একটা বড় কারণ কাজ করেছে সেটা হলো আ'লীগ নেতাদের যুক্তিহীন,লাগাম ছাড়া অশালীন বক্তব্য।
এমতাবস্থায় বিএনপি এতোদিন তাদের বক্তব্য বিবৃতিতে অনেক সংযমি আচরন করলেও উদানিং কিছু কিছু অতি উৎসাহী নেতারা তাদের বক্তব্যে খেই হারিয়ে ফেলছেন। কুকুরে যদি পায়ে কামড় দেয় তাহলে আমিও কি কুকুরের পায়ে কামড় দিতে পারি ? তাহলে আমার আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কোথায় ?
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান,যার মধ্যেশহীদ জিয়ার কিছুটা ছায়া আমি দেখেছি। হয়তো বাংলার কোটি কোটি জনতাও তার মধ্যে শহীদ জিয়ার ছায়া খুজে পেয়েছেন আর তাইতো উনার দেশে আশার অপেক্ষায় আজও প্রহর গুনে চলেছেন। একদিন বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবেন আর হাতে তুলে নিবেন জাতীয়তাবাদি শক্তির পতাকা,ফিরিয়ে দিবেন বাংলাদেশের মানুষের হারিয়ে যাওয়া সেই হাসি। তারেক রহমান বেশ অনেক বছর যাবত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশোনা, অর্জন করেছেন বার-এট-ল ডিগ্রী।
উনি বেশ অনেক বছর রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। গত দুই বছর যাবত উনি কিছু কিছু রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন এবং বক্তব্যও দিচ্ছেন ঠিক আগের মতই সাবলীল ভাবে যুক্তি সহকারে। তবে কিছুদিন আগে উনার দেয়া বক্তব্য "জিয়াউর রহমানই দেশের সর্বপ্রথম প্রেসিডেন্ট" নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার তৈরি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টারের সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি ‘বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান'শিরোনামে তিনি বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্য নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু আমার ছোট্ট বিবেকে যা বলে তা হলো "বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উনার এই ধরনের প্রতিহিংসা মূলক বক্তব্য পরিহার করা উচিৎ",কারণ আমরা জানি প্রতিহিংসা মূলক বক্তব্য আ'লীগের অলংকার। তাদের অলংকার তাদের গায়েই রাখতে দেয়া উচিৎ। সেটা নিয়ে যদি আমরাও টানাটানি করি তাহলে আ'লীগ আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য থাকলো কোথায় ?
উনার এই ধরনের বক্তব্যে অতি উৎসাহী কিছু নেতা নামক চাটুকারেরা সায়/উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। তারা উনাকে হয়তো বুঝিয়ে চলেছেন উনি এখন সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যমণিতে পরিনত হয়েছেন এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে। লন্ডনে বসেও আপনি এখন সবার দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারছেন। কিন্তু আমি বলবো না। উনি আবারও নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিগত বিএনপি আমলে হাওয়া ভবনে উনার চারপাশে যে ধরনের চাটুকারেরা জুটেছিলো আজ সূদুর লন্ডনেও জুটেছে ঠিক একই ধরনের চাটুকার। উনি যদি এই চাটুকারের দেয়াল ভেদ করে বেরিয়ে আসতে না পারে তাহলে উনি আবারও তলিয়ে যাবেন অতল গহ্বরে।
ফেসবুক সহ বিভিন্ন ব্লগে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলিতে অনেকেই মন্তব্য করছেন যে উনার বক্তব্য ঠিকই আছে,যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তবে আমি ভিন্নমত পোষন করছি। এই মূহুর্তে কোন ভাবেই উনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মূলক বক্তব্য দেয়া ঠিক হচ্ছেনা। সেটা যতই যুক্তি সম্পন্নই হোকনা কেনো। নিজেকে তুলে ধরার জন্য অথবা নিজেকে অনন্যসাধারণ করে তুলার জন্য আরও অনেক পন্থা রয়েছে। আশা করি উনি প্রতিহিংসা মূলক পথ পরিহার করেই চলবেন।
বাংলাদেশের মানুষ উনার দিকে চেয়ে আছেন। উনি একদিন ফিরে আসবেন এসে শুরু করবেন ভিন্নধারার এক রাজনীতি, যেখানে থাকবেনা কোন প্রতিহিংসা, যেখানে থাকবে ক্ষমা করার মহান আদর্শ। ভালোবাসা দিয়ে সকল ভেদাভেদ ভুলিয়ে দিয়ে সকলকে নিয়ে আসবেন এক ছাতার তলে। গড়ে তুলবেন সুজলা সুফলা শশ্য শ্যামল সোনার বাংলাদেশ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যারা নোংরা কথা বলে বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে নেতা বানায় ।
কাঁদায় নামলে ময়লার ভয় করলে চলবে না ।
ধন্যবাদ সুন্দর কমেন্টের জন্য
এক কথায় অসাম ||
মন্তব্য করতে লগইন করুন