দিল্লীর গোয়েন্দা মিশনঃ প্রধানমন্ত্রী হাসিনা পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ১৩ নভেম্বর, ২০১৩, ০৬:৩৭:৪৮ সন্ধ্যা
ভূমিকাঃ ভারতের গোপন সিদ্ধান্ত এসেছে শেখ হাসিনা নিজের দখলে রাখা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। বিএনপির জনপ্রিয় নেতাদেরকে চিরুণী চালিয়ে গ্রেফতার করা হবে এবং আরোপিত অভিযোগে সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য করা হবে তাদেরকে।অনেক কে করা হবে গুম এবং খুন। সুবিধাজনক পরিস্থিতিতেই শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর পদ নিয়ে দেয়া হবে।অবশ্যই তা হবে আইন মেনে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে। সব সিনিয়ার ও জনপ্রিয় নেতাদের শাস্তি হয়ে যাবার পর বেগম জিয়ার নমিনেশন পাওয়ার লোক থাকবে প্রচুর,কিন্তু জিতে আসার মতো তেমন কাউকে মুক্ত রাখা হবেনা। এভাবে শেখ হাসিনার আরেকবার প্রধান মন্ত্রী হবার পথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা করেছে ভারত।
এই সিদ্ধান্ত সজিব জয়কে জানানো হয়েছে ৯ নভেম্বর রাতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের চার্জ দ্য এফেয়ার্সের বাসায় বৈঠকে।এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয় গুলশান -২ ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের পাশের বাড়ীতে। কারা এসেছিলেন ভারত হতেঃ দুই গাড়ীতে করে সশস্ত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এসেছিলেন সি বি আই এবং \'র\' এর টপ র্যাংকিং ৩জন কর্মকর্তা। এরা রওয়ানা হয়েছিলেন কলকাতা,বনগাঁও ক্যান্টনমেন্ট হতে।
(১) \'র\' এর কলকাতা ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া প্রধান
(২) সি বি আই এর কলকাতা ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া প্রধান
(৩) সি বি আই ডেপুটি ডাইরেক্টর র্যাংক পদমর্যাদার একজন বিশেষ কর্মকর্তা ছিলেন এই মিশনে যিনি বিশেষ গোয়েন্দা বিমানে দিল্লী হতে জরুরী ফাইল পত্র নিয়ে এসেছিলেন।
(৪) অপরজন ছিলেন ড্রাইভার এই গাড়ীতে। অন্য গাড়ীতে সশস্ত্র গার্ড ছিলেন ড্রাইভার সহ ৫জন।
ভারতীয় অতিথিরা সজিব জয়ের জন্যে তার বিশেষ পছন্দের প্রিয় উপহার ২ বোতল Johnnie Walker Blue Label সাথে করে নিয়ে আসেন। কখন কোন্ পথে তারা আসেনঃ এই বিশেষ মিশনের কর্মকর্তাগণ সরাসরি কলকাতার বনগাঁও ক্যান্টনমেণ্ট হতে বের হয়ে বেনাপোল সীমান্ত পার হন। আগে থেকে সব কিছু ব্যাবস্থা রাখায় তাদের সীমান্তে চেক করা হয়নি। তারা যশোহর হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট ও তারপর আরিচার ফেরী পার হয়ে সাভারের পথ ধরে গুলশান ২নং এ প্রবেশ করেন।ভারতীয় হাই কমিশনের এই বাড়ীটি রাশিয়ান দূতাবাসের পাশেই অবস্থিত।তারা পৌঁছেন রাত ১০:১৫মিনিটে। জয়ের সাথে দেখাঃ এরা পৌঁছানোর পর পর প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় এসে পৌঁছেন রাত ১০:৪৫মিনিটে। এস এস এফ এর ৪জন ছিলেন তার গার্ড। তারা ছিলেন জয়ের পেছনের গাড়ীতে। জয়ের গাড়ীতে ছিলেন সামনের সিটে বডিগার্ড এবং পেছনে তার সাথে সেক্রেটারী। কতক্ষণ কি করেন তারাঃ প্রায়ই পৌনে ২ঘণ্টা তারা সময় নেন আলাপ আলোচনা এবং ২বোতল ড্রিংক্স এবং ডিনার শেষ করতে। এরপর আবার তারা গিয়ে আলোচনার টেবেলে গিয়ে বসেন ফাইনাল ব্রিফিং দিতে। কথার নির্যাস হচ্ছে;
(ক) প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন
(খ)রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন।
(গ) প্রেসিডেন্ট বর্তমানে বসানো কর্মকর্তাদেরকে বদলি করবেননা
(ঘ) তাছাড়া আমরা আসবো পরিপূর্ণ সহযোগীতা এবং তদারকি করবো
(ঙ)আমাদের লোকরা যারা যেখানে আছে,সবাই দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাবে
(চ) শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিত করবো আমরাই।
এবিষয়ে কোন চিন্তা যেনো তিনি না করেন। ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিদায়ঃ রাত প্রায়ই ১২:৩০মিনিটে ডিনার শেষে করে ভারতীয় গোয়েন্দারা ফাইনাল ব্রিফিং দিতে বসেন ১:১০মিনিটে। তারপর ২:১০মিনিটে তারা বিদায় নিয়ে যে যার পথে রওয়ানা হন। এদের সাথে যুক্ত হওয়া ঢাকাস্থ হাইকমিশনের যে কজন ছিলেন, তারাও অতিথিদের কাছ থেকে বিদায় নেন। গাড়ী চালিয়ে ভোর ৬:৩০মিনিটে বনগাঁও গিয়ে গাড়ী থামানো হয়। ওখানে ১জনের বাসায় বাকি ২জন বিশ্রাম করেন। সকাল ১০:৩০মিনিটে গাড়ী কলকাতায় পৌঁছলে অপেক্ষমান বিশেষ বিমানে দিল্লীর পথে আকাশে উঠে যান দ্বিতীয় জন এবং আরেকজন কলকাতায় নিজের বাসায় যান। বিশেষ বিমানটি দিল্লী উড়ান বন্দর ছুঁতে সময় লাগে প্রায়ই ২ঘন্টা। ফর্মুলাটা ভারতে পরীক্ষিতঃ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীদেরকে জিতিয়ে আনবার প্রশ্নে জয়কে পুরো পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ভারতে দুই মূখ্য মন্ত্রী লালু প্রসাদ বিহারে এবং মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজারাট প্রদেশে প্রয়োগ করে সুফল অর্জন করা ফর্মূলাটি তাকে ছক করে ব্যাখ্যা করেন ভারতীয় গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞগণ।নিশ্চিত করা হয় বিরোধী দলকে অপরাধের শাস্তি দিয়ে দূর্বল করে করেই গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে বাংলাদেশে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সাথে শলা পরামর্শের আশায় শ্রীলংকা সম্মেলনে যাবার সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনা্র । ড:মনমোহন আসছেন না এই কমনওয়েলথ অন্তর্ভূক্ত রাষ্ট্র/সরকার সমূহের প্রধানদের এই সম্মেলনে। তবুও সম্মেলনে যাবেন তিনি। এখন সর্বশেষ গাইডলাইন চলে আসার পর প্রধানমন্ত্রী ১৪নভেম্বর শ্রীলংকা গিয়ে ১৬নভেম্বরে ফিরে আসার পর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেবেন। এই ঘোষণা বিএনপি নেতা বেগম জিয়াকে বেকায়দায় আটকাবেই এবং নিজের জনপ্রিয়তায় ও হাত তালি কুড়াবেন শেখ হাসিনা। আর এই পদত্যাগকে বেগম জিয়ার পক্ষে বিজয় বলেও প্রচারণার ব্যবস্থা বলে জোর প্রচার ও থাকবে। ক্ষেত্র প্রস্তুতির রাজনীতিঃ ইতিমধ্যে গত দুদিনে \'প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ হলেই সব সমাধান হয়ে যাবে\' বলে কিছু রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবী বড় গলায় এক ধরণের জনমত গড়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে পরিবেশ তৈরী করছেন। এদের এই নাটকীয় আগমণ রাজনীতির অঙ্গনে তাদেরকে সামান্য আলোচিতও করছে। এই নেতাদের পেছনে ভারতীয় কানেকশন থাকায় তাদের ও গণ সংযোগে কিছুটা ঘসামাজার সুযোগ লাভ হচ্ছে এবং নির্বাচনে আনুকুল্য পাবার কমিটমেন্টও আসছে। এই নেতাদের অতীত শেকড় আওয়ামীলীগের গোড়ায় থাকায় ঘোলা পানির কাছে জাল নিয়ে মাছ ধরার নানান হিসেব মিলানো কঠিণ হয়নি। তবে বেগম জিয়া তার জীবনের এই বয়সে এসে নিজের হিসেব কি ভূল করবেন? ধৈর্য এবং গভীর মনোযোগ সংকটকালে বড় জরুরী হাতিয়ার। দেখা যাক্ কে কত বেশী নেতৃত্বের যোগ্যতার অধিকারী।
( লেখক আবু জাফর মাহমুদঃ মুক্তিযোদ্ধাঃ জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও ল্যান্স সাংবাদিকঃ ১১/১১/১৩ – জাহিদ এফ. সরদার (সাদী)
বিষয়: বিবিধ
২০৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন