"মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি" একটি উৎকৃষ্ট মূলা...

লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ৩১ আগস্ট, ২০১৩, ০৯:৩৮:০২ রাত

"আমাদের বাসার পাশে এক মুক্তিযোদ্ধা ছিলো যার ২ টা ছেলে,তাদের একজন কলেজের প্রফেসর আর অন্যজন বিজনেসম্যান। সেই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর আগে খুব কষ্ট পেয়ে মরেছে, রাস্তায় রাস্তায় মানুষের কাছে টাকা চেয়ে নিতো চা খাওয়ার জন্য কিন্তু বৃদ্ধ বাবাকে চা খাওয়ার পয়সাও তার ছেলেরা দিতোনা।

সেই মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসার টাকার অভাবে ধুকে ধুকে ঘরে পড়েই মারা গিয়েছে, এখন তার স্ত্রী খেয়ে না খেয়ে প্রচন্ড অবহেলায় এখনও জীবনটা চালিয়ে নিচ্ছেন। সরকার কি তাদের জন্য কিছু করতে পারেনা ? পারেনা তাদের জন্য ফ্রি চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে ?

যেখানে একজন ছেলে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে দেখাশোনা করেনা সেখানে তার নাতীরা আর কি করবে, নাতীদের জন্য কোটা। যত্তসব ফালতু নিয়ম। আমি আওয়ামীলীগের সার্পোটার,তবুও তাদের অনেক এক্টিভিটি আমার খুব খারাপ লাগে। প্লিজ কোটা পদ্ধতি বাতিল করা নিয়ে একটু লিখবেন।"

উপরের কথাগুলি এক ছোট বোনের,ইনবক্স করে কথাগুলি আমার সাথে শেয়ার করেছে। সে একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী, কম্পিউটার সাইন্সে বিএসসি করেছে কিন্তু সরকারের কোটা পদ্ধতির ধ্বংষকারী সিদ্ধান্তে আজ তারা চড়ম হতাশায় নিমজ্জিত। শুধু সে একা নয় তার মতো এমন উচ্চ শিক্ষিত অনেক তরুন-তরুনী আজ হাহাকার করছে আর ওদিকে সরকার কোটা পদ্ধতির নামে দলীয় ক্যাডারদের এনে বসিয়ে দিচ্ছে সেইসব জায়গায় যে জায়গায় বসার যোগ্যতা তাদের কোন কালেই ছিলোনা।

যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাবার কোটায় চাকুরি পেয়ে নিজের বাবাকেই দেখাশোনা করেনা এমনকি এক কাপ চা খাওয়ার পয়সাও তার হাতে দেয়না এমন সন্তানদের আবার কিসের কোটা ? হাঁ, সব সন্তান যে এমন হবে সেটাও বলছিনা। কোটা রাখেন তাদের জন্য ভালো কথা কিন্তু তাদের নাতিদের এখানে কেন টেনে আনছেন ?

কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে কি আপনারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখাচ্ছি এটা বুঝাতে চাচ্ছেন ? যদি তাই হয় তাহলে দেশে যত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আছে তাদেরকে খুজে বের করে করুন, তারা যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন তাদের ফ্রি চিকিৎসার ব্যাবস্থা করুন, যারা অভাব অনটনে আছেন তাদের সম্মানজনক জীবিকার ব্যাবস্থা করেদিন তাহলেই তাদেরকে যথাযথ সম্মান করা হবে।

বর্তমান "মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি"টা হলো মুক্তিযোদ্ধ নামক সিমপ্যাথীটাকে কাজে লাগিয়ে দলকে ভবিষ্যতে টিকিয়ে রাখার জন্য পথ রচনা করা। বর্তমানে শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করা মানুষ আওয়ামীলীগে নেই। বামরা আজ আওয়ামীলীগকে প্রায় গিলে ফেলেছে আর আস্তে আস্তে আওয়ামীলীগ পরিনত হচ্ছে এক তলা বিহীন ঝুড়ির মতো। আওয়ামীলীগকে টিকিয়ে রাখার জন্য একটা সরেস মূলা দরকার আর এই মূলাটাই হচ্ছে "মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি"

সময় থাকতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করুন, মৃত্যুর পর তার কফিন জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে, ফুল দিয়ে সাজিয়ে, বিগিউল বাজিয়ে লম্বা সেলুট ঠুকে কবরে নামিয়ে রেখে আসলেও তাদের কোন লাভ নাই...

বিষয়: বিবিধ

১৯৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File