আসলেই এই লজ্জা কোথায় রাখি...
লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ৩০ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৪৬:৪৫ রাত
জাফর ইকবাল সাহেব আজ একটা কলাম লিখেছেন "এই লজ্জা কোথায় রাখি" শিরোনামে। উনার লিখাটা পড়তে পড়তে বেশ কয়েক জায়গায় থমকে গিয়েছি আর বার বার লিখার শুরুতে উনার দেয়া ছবিটা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম যে একজন মানুষ কত রুপ ধারন করতে পারে।
জাফর ইকবাল সাহেব অনেক শিক্ষিত! মানুষ, উনার ভুল ধরার মতো কোন যোগ্যতাই আমার নেই, তবে উনার লিখাটা পড়ে মনে কয়েকটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তার উত্তর তো উনার কাছে পাবোনা তাই আপনাদের সাথেই শেয়ার করলাম সেই কথা গুলি যা জাফর সাহেবকে বলতে চাই।
আমরা আসলেই "এই লজ্জা কোথায় রাখি"। যখন দেখি একজন ভাইস চ্যান্সেলর সরকারের পা চাঁটা গোলামের পরিচয় দিয়ে শত শত মানুষের সামনে আরেকজন সম্মানিত মানুষকে 'কুত্তার বাচ্চা' বলে গালি দেয় আর তার কাছেই আমাদের ভাই-বোন বা সন্তানদের জ্ঞান! অর্জন করতে পাঠাই।
জাফর সাহেব,আপনি বলেছেন: মানুষটি একজন ভাইস চ্যান্সেলর না হয়ে যদি একজন জুনিয়র লেকচারার কিংবা একজন অপরিচিত ছাত্রও হত, তাকেও একটা ঘরের মাঝে আটকে রাখা গুরুতর একটি অন্যায়। স্বাধীন একটা দেশে কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটা ঘরে জোর করে আটকে রাখা যায় না। আমি আইনের মানুষ নই কিন্তু আমার ধারণা দেশের আইনে এটা নিশ্চয়ই শান্তিযোগ্য অপরাধ।
জনৈক অধম: জাফর সাহেব আপনি কি ভুলে গেছেন আপনারই উস্কানিতে ২০০৫-২০০৬ সালে শাবি ভিসি মোসলেউদ্দিনের বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্ররা আর তখন আপনি সেই দিনের ঘটনা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখে উপভোগ করেছেন। কিন্তু আপনার কলমে কোন নীতি বাক্য সেদিন দেখিনি। "এই লজ্জা কোথায় রাখি"
জাফর সাহেব,আপনি বলেছেন: সাধারণ মানুষ যখন দেখে- এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা স্বাধীন দেশের একজন নাগরিককে জেলখানার মতো একটা ঘরে আটকে রেখেছে, তখন তারা নিশ্চয়ই হতবাক হয়ে যায়। সবচেয়ে বিচিত্র ব্যাপার হচ্ছে, এই পুরো প্রক্রিয়াটার নাম দেওয়া হচ্ছে ‘আন্দোলন’।
জনৈক অধম: ঢাকা শহরের লক্ষ লক্ষ মানুষকে জিম্মি করে শাহাবাগের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যে বিচিত্র কর্মকান্ড গুলি করেছিলেন সেই প্রক্রিয়াটারও কিন্তু নাম দিয়েছিলেন ‘আন্দোলন’। এবং আপনিও সেখানে গিয়ে সেই আন্দোলনে! অংশগ্রহন করেছিলেন। "এই লজ্জা কোথায় রাখি"
জাফর সাহেব,আপনি বলেছেন: মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সংগ্রামী সকল নেতৃবৃন্দকে আলোচনার জন্যে তার বাসায় ডেকে নিয়ে গেলেন। অর্থাৎ কোনো একজন মানুষকে জোর করে একটা ঘরে আটকে রাখা হলে কাউকেই কোনো ধরনের আইনি ঝামেলায় পড়তে হয় না। বরং দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী নিজের বাসায় তাদের ডেকে নিয়ে যায়। সোজা কথায় এতো বড় একটা অনৈতিক এবং বেআইনি বিষয়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে নৈতিক সমর্থন দেওয়া হয়।
জনৈক অধম: জ্বি জাফর সাহেব, ২৫ শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯ এ ঠিক এভাবেই আমাদের দেশের গর্ব সেনাবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তাদের যখন আন্দোলনের নামে মাথায় বন্ডুক ঠেকিয়ে জোর করে আটকে রেখেছিলো আর সেইসব সংগ্রামী! সকল নেতৃবৃন্দকে আলোচনার জন্যে প্রধানমন্ত্রী তার অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের আপ্যায়ন করে এসি রুমে বসে বৈঠক করেছিলো তখন আপনার লজ্জা কোথায় ছিলো ?
জাফর সাহেব,আপনি বলেছেন: আমি বহুকাল থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি তাই একটা জিনিষ জেনেছি, প্রকাশ্যে যে কথাগুলো বলা হয় সেগুলো সব সময় পুরো কথা নয়, আসল কথা নয়। প্রকাশ্য কথার পিছনে অপ্রকাশ্য কথা থাকে, গোপন এজেন্ডা থাকে। অনেক সময় দেখা গেছে সেগুলোই মূল ব্যাপার।
জনৈক অধম: জাফর সাহেব, আমি আপনার এই একটা কথার সাথে একমত পোষন করছি। আচ্ছা আপনি কি বলবেন বা বলার মতো সেই সাহস কি আপনার আছে যে, যোদ্ধাপরাধী নামক যে নাটকটা আপনারা করে যাচ্ছেন সেটার পিছনের গোপন এজেন্ডাটা কি ? "এই লজ্জা কোথায় রাখি"
জাফর সাহেব,আপনি বলেছেন: অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে, শাস্তি হবে। কিন্তু আগেই নিজেরা শাস্তি দিয়ে একজনকে তার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে সেটি কোন দেশের বিচার?
জনৈক অধম: জাফর সাহেব, প্রতিদিন দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিন্তু তাদের কথা লিখতে আপনার কলমে কালি আসেনি কিন্তু যখনই স্বজাতির(জাতে জাত/স্বভাবে স্বভাব মিললেই নাকি স্বজাতি বলে)আঘাত আসলো আর আপনার কলমে কালির বন্যা বইয়ে গেলো।"এই লজ্জা কোথায় রাখি"
সত্যিই এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখি যে, আজ আমাদের সমাজে কিছু উগ্র ইসলাম বিদ্ধেষী,নাস্তিক, সরকারের পা চাঁটা গোলামেরা আজ শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় ঢুকে পড়েছে। আর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মগজে ঢুকিয়ে দিচ্ছে মুক্তমনা/আধুনিকতার মোড়কে ধ্বংষের বীজ...
বিষয়: বিবিধ
১৮৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন