তাদের জন্য যারা সস্তায় নিজেকে সেলিব্রিটি বানাতে চান...
লিখেছেন লিখেছেন আহাম্মেদ খালিদ ২৮ মে, ২০১৩, ০৩:২৩:২৬ দুপুর
আমার এক বন্ধু রুমন(বর্তমানে ইটালিতে আছে)খুবই ভদ্র আর সাদাসিধা টাইপের ছেলে ছিলো,মিরপুর ৭ নাম্বারে বাসা। সবাই এক সাথে আড্ডা দিতাম ঘুরতাম,আমাদের কয়েকজন বন্ধু ছিলো যাদেরকে মিরপুর এলাকায় মোটামুটি সবাই চিনতো রাজনৈতিক ক্যাডার হিসেবেই। তবে রুমনের তেমন কোন পরিচয় ছিলনা, তো একবার আড্ডার মাঝে ছোট একটা ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়ে গেলো আমাদের ঐ ক্যাডার টাইপ বন্ধুদের সাথে, বিষয়বস্তুটা ছিলো কাকে কত মানুষ চিনে বা ভয় পায়। তো শান্ত ভদ্র ছেলে রুমন হঠাত দাড়িয়ে বললো আমিও দেখিয়ে দিবো তোদের।
একদিন মিরপুর পল্লবী টাওয়ারের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় এক ছেলে এসে সালাম দিয়ে বললো ভাই, রুমন ভাই আমারে থাপ্পর মারসে, আমরাতো অবাক! বলে কি ? জানতে চাইলাম কেনো ? বললো আমি ৬ নাম্বার থেকে ১১ নাম্বার বাসস্ট্যান্ডে আসছিলাম তখন রুমন ভাই আমাকে ডাক দিলো আমি তাকে আপনাদের সাথে দেখেছি তাই আমি কাছে গেলাম সালাম দিলাম, সে আমাকে বলে তোর বাসা কই ? আমি বললাম সারে এগারো আর সাথে সাথেই আমাকে থাপ্পর মারলো আর থাপ্পর দিয়ে বলে যা, তোর এলাকায় গিয়ে বলিস আমি রুমন তোরে থাপ্পর দিসি, পারলে কি করবি করিস।
এমন ভাবে কয়েক দিনের মাঝে তার নামে প্রায় ১৫/২০ টা অভিযোগ আসলো, কিন্তু রুমনের কাছে জানতে চাইলে সে কথা এড়িয়ে যেতে থাকলো। আর ওদিকে তার বিরুদ্ধে সারা মিরপুরের গ্রুপ গুলিতে আলোচনা শুরু হয়ে গেলো কে এই রুমন। হঠাত একদিন তার বাসায় পুলিশ এসে হাজির, কি হইসে দেখার জন্য গেলাম, গিয়ে শুনি তার নামে চাঁদাবাজী মামলা হয়েছে সে নাকি কার কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেছে। এমন ভাবে ২ মাসের ভিতরে তার নামে ৮ টা মামলা হয়ে গেলো তার মধ্যে একটা আবার হত্যা মামলা। পরে জানলাম, সে তার বাসার সামনের রাস্তায় দাড়িয়ে বাইরের এলাকার যেই ছেলেকেই দেখতো তাকেই ডেকে এনে থাপ্পর মেরে মবতো আমি রুমন কি করবি পারলে করিস। এভাবে যাকে মারতো সে তার এলাকায় গিয়ে বন্ধুদের বলতো আমাকে ৭ নাম্বারের রুমনে মারসে আর এভাবেই তার নাম ছড়িয়ে পড়লো আর মিরপুর এলাকায় যত ক্রাইম হতো দেখা যেতো সেগুলি তার নামে করতো অনান্য ছেলেরা আর তাকে আসামী করে মামলা হতো। কিন্তু সেগুলির ১০ টার মধ্যে ২ টাতেও রুমনের কোন সম্পৃক্ততা থাকতোনা।
এক সময় দেখা গেলো পুলিশ প্রায় প্রতিদিনই তার বাসায় রেইড দেয়া শুরু করলো আর সে পালিয়ে বেড়াতে থাকলো। এর কিছুদিন পর তার বাবা তাকে জোর করে ইটালিতে পাঠিয়ে দেয়, এখনও সেখানে আছে মাঝে মাঝে দেশে আসে কিন্তু এলাকায় আসেনা, তার নামে এখনও মামলা চলছে...
আমার বন্ধুর গল্পটা (শর্টকাটে)এই কারনে বললাম যে, ফেসবুকে বা ব্লগে কিছু ছেলে/মেয়ে আছে যারা সস্তা পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য, নিজের গায়ে চুচিল ট্যাগ লাগানোর জন্য এমন এমন কাজ করে চলেছে যে নিজেরাই জানেনা তারা কোন পথে যাচ্ছে আর তাদের কি পরিনতি হবে। মনে রাখতে হবে সবার আগে আমার ধর্ম পরে দেশ। আমাকে আমেরিকার নাগরিকত্ব দিলেই আমি খৃষ্টান হয়ে যাবোনা বা আমাকে ইন্ডিয়ার নাগরিকত্ব দিলেই আমি হিন্দু হয়ে যাবনা। আমি যেই দেশেই থাকিনা কেন আমি মুসলিম মুসলিমই থাকবো। তাই আগে নিজের ধর্ম। যার কোন ধর্ম নেই সে আর নর্দমার কিট একই সমান, কথাটা ভুলে গেলে চলবেনা...
বিষয়: বিবিধ
১০৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন