বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক সম্পর্ক উষ্ণ
লিখেছেন লিখেছেন খাস খবর ০২ জুন, ২০১৭, ১০:০৩:৫১ রাত
-অহিদুজ্জামান
যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ পর্যায় রয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে বাণিজ্যিক রিলেশন বৃদ্ধি করতেও গভীরভাবে আগ্রহি ব্রিটেন।
বাংলাদেশ সম্পর্কিত যুক্তরাজ্য সরকারের সর্বশেষ মূল্যায়ণ প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। সম্প্রতি হাউস অফ কমন্সে এই মূল্যায়ণ প্রতিবেদনের উপর বিতর্ক শেষে সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন-উত্তরের আংশিক আলোচনা পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।
ইংল্যান্ডের পূর্ব ডার্বি শায়ের অঞ্চলের এরেওয়াস (Erewash) সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত কনজারভেটিব সদস্য ম্যাগি থ্রোপ (Maggie Throup) কমন্সের আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ও ইউকে'র মধ্যে অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক সম্পর্ক কতখানি জোরদার রয়েছে তার সাম্প্রতিক সময়ের মূল্যায়ণ জানতে চান।
এসময়ে পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি অলক শর্মা হাউস অফ কমন্সে জানান, বর্তমানে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ পর্যায় রয়েছে। আমরা বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ ক্রমবর্ধিষ্ণু বিনিয়োগকারী এবং বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক অনুদান দাতা দেশ।ব্রিটেনের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন দীর্ঘকালের যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিস ম্যাগি বলেন, আমি ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অভিভূত হয়েছি। তারা ব্রিটেনের অর্থনীতিতে বেশ অবদান রাখছেন।ইউরোপের বাইরে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা উচিত। আশাকরি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী আমার সঙ্গে এবিষয়ে একমত হবেন এবং বাংলাদেশর মতো উদীয়মান অপর দেশগুলোর সঙ্গেও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে পদক্ষেপ নিবেন।
মি.শর্মা বলেন, ''যুক্তরাজ্যে অর্ধ মিলিয়ন বাংলাদেশি রয়েছেন। অবশ্যই তারা ব্রিটিশ মুল্যবোধ, ঐতিহ্য, অর্থনীতি ও জীবন ধারায় অত্যন্ত ইতিবাচক অবদান রাখছেন। আমি মিস ম্যাগির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে একমত। তিনি জেনে খুশি হবেন যে, ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহিত হয়েছে এবং তা ত্বরান্বিত করতেও অনেক কাজ আমরা করছি। দেশটির বিজনেস ক্লাইমেট উন্নয়নে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছি।''
এসময়ে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির ড. লিসা ক্যামেরন (Dr Lisa Cameron, East Kilbride, Strathaven and Lesmahagow, SNP) বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বসে হতাহতের পর সম্প্রতিক যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে এখনো অবকাঠামো সংস্কার অসম্পূর্ণ।এতে ইঙ্গিত বহন করে যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেশটিতে এখনো দুর্বল পর্যায়। ভবন গুলোতে ফায়ার এলার্ম, জরুরি অবস্থায় বেড়িয়ে আসার ব্যবস্থারও উন্নয়ন তেমন হয়নি। বাংলাদেশে বৈশ্বিক কর্পোরেশানের বেলায় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিতের আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে ড. লিসা জানতে চান।
মি. শর্মা বলেন, মিস লিসা একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উত্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগের আমার সহকর্মীরা এ বিষয় নিয়ে সঠিকভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্য সরকার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
তবে ব্রিটিশ সরকারের মূল্যায়নে দেখা যায় যে ব্রিটিশ বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে যথেষ্ট আগ্রহী। কোম্পানির নিজস্ব গবেষণা রেফারেন্স উল্লেখ করে বলা হয়-'বাংলাদেশে লেবার মার্কেট প্রতিযোগিতা মূলকভাবে সস্তা।অভ্যন্তরীণ ভোক্তা মার্কেট বিশাল এবং তাদের ক্রয় ক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভৌগলিকভাবে চমৎকার সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। ফলে ব্রিটিশ বহুজাতিক কোম্পানি গুলো স্বল্প খরচে উৎপাদন করে চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মায়ানমার, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া সহ বিশাল এশিয়ান ভোক্তা মার্কেট সহজেই সরবরাহ করা সম্ভব।
তবে বলা হয়, দুর্বল অবকাঠামো এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট বাংলাদেশে বিনিয়োগের অন্যতম অন্তরায়। যদিও তেল-গ্যাস ও কয়লার অপার সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় এসম্ভাবনার দ্বার খুব শিগগির উন্মোচন হওয়ার নয়। এছাড়া রাজনৈতিক আত্মকলহ, অস্তিতিশীলতা, দুর্নীতি, সরকারের মন্ত্রণালয়ে গুলোতে সমন্ময় হীনতা সহ অনেক নেতিবাচক দিক উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
বিষয়: বিবিধ
৮২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন