চাপাতি আর ৫৭ ধারার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন খাস খবর ২১ আগস্ট, ২০১৫, ০৬:৫৫:৪৫ সকাল
বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অবশ্যই সীমা থাকতে হবে। স্বাধীনতা মানে আমি যা খুশি তাই করলাম এটা বদ্ধপাগলামী ছাড়া কিছু নয়। কাউকে গালাগালি করা অপরাধ। শুধু বিশিষ্ট মানুষ নয় আমার মতো কোন আমজনতাকেও গালি দেয়া বা তাদের নামে কু্ৎসা রটানো পৃথিবীর সকল দেশেরে প্রচলিত আইনে অপরাধ।
কিন্তু সত্য বলতে কোথাও বাধা নেই। প্রচলিত আইনেও নয় এবং ধর্মীয় গ্রন্থসমূহেও নয়। বরং সকল ধর্মগ্রন্থে সত্য বলতে ব্যপকভাবে সকলকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এরজন্য উত্তম পুরষ্কার দেয়ার কথাই বলা হয়েছে। বলা হয়েছে মিথ্যা হচ্ছে বড় পাপ। সত্য লুকানো হচ্ছে জগণ্য পাপ। বাইবেলে বলা হয়েছে- 'সত্য তোমাদেরকে নাঙ্গা করবে।' বাইবেলের এই ঘোষণায় কর্তৃপক্ষ ভীত ছিলেন। কুরআনেও বলা হয়েছে- 'তোমরা সত্য বল সেই সত্য যদি তোমাদের বিরুদ্ধে যায়।' সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলো। যে মিথ্যা বলে আর যে সত্য লুকায় দু'জনই মুনেফেক। উভয়ের জন্যই রয়েছে কঠিন শাস্তি।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আসিফ মহিউদ্দিন সহ অন্যরা যদি ব্লগে মিথ্যা বা কুৎসা রটনা করে তার জন্য শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে তাদের মৃত্যুর পর। আর পৃথিবীর প্রচলিত আইনতো রয়েছেই।এটা যদি কেউ অশ্বিকার করে সে নিজেই ধর্মবিশ্বাসী নয়। লেখার জন্য চাপাতি দিয়ে খুন করার মতো জগণ্য কাজটি করার জন্য কোথায় বলা হয়েছে? বরং মানুষ হত্যা মহাপাপ অর্থাৎ যার কোন ক্ষমা নেই। এরজন্য শাস্তি পেতেই হবে। যদি ভিকটিমের যোগ্য উত্তরাধীকার খুনিকে স্বেচ্ছায় ক্ষমা করে না দেয়। মক্কাতে শিরচ্ছ্বেদের বিধান কার্যকর হচ্ছে। এটা কুরআন অনুযায়ী। সেক্ষেত্রে লেখার জন্য চাপাতি দিয়ে খুন করতে হবে আবার ৫৭ ধারায় শিকল বন্দি করতে হবে। দুটোই সমান। বাহ কী চমৎকার সভ্যতা! যারা এই ৫৭-চাপাতির ব্যবহার করছে তাদের কাছে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, 'নাস্তিক ব্লগারদের' কাছে কতদিন ধর্মের আহ্বান যৌক্তিক উপায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে? ধর্মপ্রচারের জন্য মুহাম্মাদ কী করেছিলেন? তাঁর পথ কী অনুসরণ কেউ করছে?
আসিফ মহিউদ্দিনের লেখা সম্পর্কে বলবো তিনি যা লিখেছেন তা 'দ্য লাইফ অব মুহাম্মাদ' গ্রন্থে আলোচনা হয়েছে হযরত মুহাম্মাদের ওফাতের পরপরই। মূল বইটি আরবিতে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে প্রায় ৩শ' বছর আগে। ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনেরও আগে এই বইটি লেখা হয়েছে। এছাড়া 'কিতাব আল মাগাজি' আরএকটি আরবি ঐতিহাসিক বই। সেখানেও ইসলামের নবি মুহাম্মাদের নেতৃত্বে সংগঠিত যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ঐতিহাসিক গেলিলিও এবিষয়ে আলোচনা করেছে। অতএব আসিফ মহিউদ্দিনকে গালি দেয়ার আগে এবই গুলো পড়া উচিৎ এবং কারো বুদ্ধির হিম্মত থাকলে সেভাবেই জবাব দেয়াটা মনে হয় আদব। ধর্মে অসভ্যতার কোন স্থান আছে বলে মনে হয় না।
যদি কেউ মনে করে আছে সেটা তারই ধর্ম। তা আমিও মানি না। ওটার আমিও নিকুচি করি। আর এজন্য খুনের হুমকিতে শালিন-শোভন ও যৌক্তিক বুদ্ধিভিত্তিক উপায় বাকস্বাধীনতা বন্ধ করা যাবে না। ৫৭-চাপাতিওলা ধর্ম কেউ মানে না। এটা মানবতা বিরোধী অপরাধ।
চলবে-
বিষয়: রাজনীতি
১৩৬৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইংরেজিতে এটাকে বলে - general statement.
কোনো বিষয়ে একটা পয়েন্ট তুলে ধরতে হলে কিছুটা হলেও তথ্য উপাত্ত তুলে ধরতে হয়
মন্তব্য করতে লগইন করুন