শিশুদের সাথে সম্পর্ক হোক মধুরতর।।
লিখেছেন লিখেছেন অনল দুহিতা ১৯ জুন, ২০১৩, ০২:০৮:৫২ রাত
ছোটবেলায় যখন মহা উৎসাহে নতুন রোজা রাখা শুরু করেছি, তখন আম্মু বললেন, "শুধু রোজা রাখলেই হবেনা, তারাবীহ ও পড়তে হবে!"
সুতরাং কষ্ট লাগলেও আমরা তিন বোন আর প্রতিবেশির মেয়ে (আমার এক বছরের জুনিয়র।) জামাত করে প্রতিযোগীতা দিয়ে পড়তে আরম্ভ করলাম।
যথারীতি ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে আমার কি লাগবে সেটার লিস্ট ও তৈরী! আব্বুকে গিয়ে কি লাগবে সেটা গিয়ে বলতেই আব্বু বলল, "যা চাওয়ার আল্লাহর কাছে চাও, আল্লাহই দিবেন। একটু জোরে জ়োরে চাইবে আরকি।"
অতঃপর আমি বিশাল এক মুনাজাত দিয়ে যা দরকার আর যা দরকার নেই, সব চেয়ে ফেললাম। এদিকে বাসার সবাই তো হাসতে হাসতে শেষ। (আব্বু কেন জোরে জোরে চাইতে বলেছিলেন সেটা তখন বুঝিনি আরকি! )
এভাবে খুব কৌশলে আব্বু আমার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন যে, চাইতে হয় আল্লাহর কাছে।
আর যখন কোন খাবার নষ্ট করতাম, আব্বু কঠিনভাবে বলে দিতেন, এরা কিন্তু তোমার নামে আল্লাহর কাছে নালিশ করবে। সুতরাং আল্লাহ আমার উপর রাগ হবে, এই ভয়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলতাম! (ভয় মানে এই ভয় নয় যে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দেবেন, ভয় ছিল তিনি আমার প্রতি নারাজ হবেন।)
এই জিনিসটার কারণে আমি কখনোই কোন খাবার নষ্ট করতে পারিনা।
দুটো বিষয় শেয়ার করার কারণটা হল,
অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের শিক্ষা দিতে চান বকা দিয়ে কিংবা ভয় দেখিয়ে। কোন কাজে নিষেধ করতে গিয়ে বলে ফেলেন,
" এটা করলে কিন্তু আল্লাহ শাস্তি দিবে!"
"ওখানে কিন্তু ভুত আছে!/ বাঘ আছে কামড় দিবে।"
যেটা পরবর্তীতে অহেতুক ভীতির সৃষ্টি করে।
আল্লাহর সাথে বাচ্চাদের একটা মধুর সম্পর্ক তৈরী করে দেয়াটা কিন্তু অভিভাবকেরই দায়িত্ব। আর যে বাচ্চাটি ভুত, বাঘ-ভাল্লুককে ভয় পেয়ে বড় হয়, সে কিন্তু পরবর্তীতেও সে ভয়কে জয় করে খুব বড় কিছু করার সাহস করেনা।
যেসব পরিবারে বাবা-মা আর সন্তানের শৈশবের মতই মধুর সম্পর্ক বজায় থাকে বড় হলেও, তারা কিন্তু তুলনামূলক অপরাধপ্রবণতায় কম ভুগে আর স্নেহ ভালবাসার অভাব কম বোধ করে। যে অভাববোধ থেকে অনেক সময়ই ছেলে-মেয়েরা বাবা-মায়ের তুলনায় বন্ধুদের বেশি প্রাধান্য দেয়। যার ফলে পরস্পরের মধ্যে অনাকাংখিত দুরত্ব তৈরী হয়।
আবার অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোটাও অনেক সময় এ অভাববোধের কারণে হয়ে থাকে।
যেকোন বিষয় শিক্ষা দেয়ার মাধ্যম হোক ভালবাসা। আর শিশুদের সাথে সম্পর্ক হোক মধুরতর।
বিষয়: বিবিধ
১২৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন