মানবাধিকার থাকনা আটকে ভুক্তভোগীর গলে, তুমি আমি আছি ভাল সেটা হলেই চলে।
লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী ২৯ নভেম্বর, ২০১৩, ০২:৫০:২৫ দুপুর
সাভারের ঘটনা, তাজরিনের ঘটনা একদিকে সাময়িক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করলেও রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক অঙ্গনে এইটারই দরকার ছিল। এই ঘটনা আমাদেরকে হাজার মানুষ নিহতের শোক সহ্য করিয়ে দিয়েছে। আর তাই এখন শত মানুষের মৃত্যুও আমাদের মনে তেমন একটা রেখাপাত করবে না। যদি বলি ১০ জন, ঠিকই তো আছে, স্বাভাবিক। আর ১ জন ২ জন!!? আপনি আসলে একটা পাগল! আমি ভাবছি কয়েকশ। :/
গত কয়েকদিনে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন প্রায় বিশ জন মানুষ। প্রতিনিয়তই দেখি মারা যায়। মানুষের উপর গুলি চালানোর জন্যই যেন তাদেরকে রাখা হয়েছে।
বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্তৃক খুন, নিজ বাড়িতে অবস্থানরত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে বাইরে থেকে এসে খুন, আল্ট্রামডার্ন মেয়ের হাতে পিতামাতা খুন, নিজ বাড়িতে পিতামাতার সামনে তাদের একমাত্র সন্তানকে খুন, মার্কেটে খুন, নিজ কর্মস্থানে খুন, ময়লাস্তুপে লাশ, নদীতে, খালে, ড্রেনে, ম্যানহোলে লাশ, বস্তাবন্দী দশ টুকরা বিশ টুকরা লাশ। না একদম স্বাভাবিক আছি। রানা প্লাজার হাজার লাশ আমাকে তা সহ্য করিয়ে দিয়েছে। এখন যখন দেখি রানা প্লাজা তাজরীনের হতাহতদের ক্ষতিপুরণ এমনকি উক্তমাসের বেতনও তাদেরকে দেওয়া হয়নি, তখনও আমি স্বাভাবিক থাকি। বেতনের/বেতন বৃদ্ধির দাবীতে তারা আন্দোলন করলে আমার চেতনা তখন খাড়ায়া উঠে। এসব অরাজকতা মেনে নেওয়া যায় না। সঙ্গে আছেন ফুলিশ ভায়েরা। তা আর দেখছেন কী? অস্ত্র নিয়া রাস্তায় নাইমা পড়েন। আট হাজার কোটি টাকার অস্ত্র। তা সহজে ফুরাবার নয়।
অতঃপর ফুলিশ কর্তৃক গার্মেন্টস কর্মী গুলিবিদ্ধ, তাপ্পর মৃত্যু। ফুলিশ কর্তৃক পলিটেকনিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর মৃত্যু। সঙ্গে পুলিশের বুটের লাথি, লাঠির বাড়ি ফ্রী।
এত্ত গুলা মৃত্যু!!!! ঘাবড়াবেন্না প্লিজ, আমি একদম স্বাভাবিক আছি।
আগে মানবাধিকারের টিনের কলসীর টুং টাং আওয়াজ শোনা যেত। ইদানিং তাও শোনা যায়না। আন্ধা মিজান আফনি গেলেন কৈ? আফনারে খুব মিস করতেছি। না, মানবাধিকারের জন্যে কান্না করতে না। আফনারে মিস করতেছি নতুন কাউরে মানবাধিকার পদক দেওয়ার জন্যে। এখানে উল্লেখ্য যে, ২৮ ফেব্রুয়ারী আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায় পরবর্তী দুই দিনের সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে ১৫০+ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। তার কয়েকদিন পর আন্ধা মিজান মখালমকে মানবাধিকার পদক দিয়েছিলেন। তখন থেকে কেউ মরলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে একটা করে পদক দেওয়ার চিন্তা মাঝে মাঝে করি। ঐ যে বললাম, আমি স্বাভাবিক। কে মরল না মরল আমার কি! আমি ভাল আছি এইতো বেশ!!
আরে ইমো দেখে ভাববেন না আমি আবেগায়িত হয়ে গেছি। এটা আপনাদেরকে ইমোশোনাল ব্ল্যাকমেইলিং।
আইন শৃংখলা রক্ষায় সফল শালা মখারই বা কী দোষ!!? এই মখা যখন স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী হয়, তখন সে আরেক মখা সাহারাকে তার আদর্শ বানিয়েছিল, "স্বাধীনতার পর সবচেয়ে সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।" সেদিন তো জাতি কিছু বলেনি। বরং জাতি সেদিনই বুঝে গিয়েছিল ভবিষ্যত ভাল, সামনে আছে শুভ দিন।
মানবাধিকার থাকনা আটকে ভুক্তভোগীর গলে,
তুমি আমি আছি ভাল, সেটা হলেই চলে।
বিষয়: বিবিধ
১১২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন